ফ্রান্সের পরমাণু বর্জ্যবাহী ট্রেন ঠেকাতে জার্মানিতে ব্যাপক বিক্ষোভ

ফ্রান্সের পরমাণু বর্জ্যবাহী একটি ট্রেনের পথরোধ করতে জার্মানিতে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছে। ফরাসি পরমাণু জ্বালানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আরেভার বর্জ্য নিয়ে গত বুধবার ট্রেনটি জার্মানির উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় গোরলেনবেনের একটি বর্জ্য সংরক্ষণাগারের উদ্দেশে রওনা হয়। ট্রেনটির গমন পথের বেশ কয়েক জায়গায় গত তিন দিন ধরে বিক্ষোভ হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া


যায়নি।পরিবেশবাদীরা দীর্ঘদিন ধরেই পরমাণু বর্জ্য সংরক্ষণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেন, গোরলেনবেনে সংরক্ষণাগারের তেজস্ক্রিয়া ছড়ানোর মাত্রা নিরাপত্তার সীমা ছাড়িয়ে গেছে। গত বছর থেকেই বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে। ফ্রান্সের পরমাণু বর্জ্যবাহী ট্রেনকে কেন্দ্র করে গত নভেম্বরেও সহিংসতা হয় জার্মানিতে। পুলিশের সঙ্গে সেবারও বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। গত মার্চে জাপানের ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্রে দুর্ঘটনার পর জার্মান সরকার ২০২২ সালের মধ্যে দেশটির পরমাণু স্থাপনা কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। ধারণা করা হচ্ছে, ফ্রান্স থেকে পরমাণু বর্জ্যের সর্বশেষ চালান এটি। তবে ২০১৪ সাল থেকে ব্রিটিশ একটি কম্পানি এ শহরে বর্জ্য সংরক্ষণ শুরু করতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত পরমাণু বর্জ্যবাহী ১১টি বগি নিয়ে ফ্রান্সের নরম্যান্ডি থেকে রওনা দেয় ট্রেনটি। যাত্রা শুরুর পর থেকেই ট্রেনটি শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মুখে পড়ে। গত শুক্রবার ভোরে ট্রেনটি জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলীয় নুনকারচেন শহরে ঢোকে। সেখানেও বিক্ষোভ হয়। নুনকারচেনের ১০০ কিলোমিটার দূরে হ্যাসলোচ, ডানেনবার্গ ও গোরলেনবেনে শহরে বিক্ষোভকারীরা রেলপথ বন্ধ করার চেষ্টা করে। ট্রেনের গতিরোধ করতে বিক্ষোভকারীরা বৃহস্পতিবার থেকে রেলপথের নুড়িপাথর সরাতে শুরু করে। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। শুক্রবার রাতেও বিক্ষোভকারী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিশের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
গোরলেনবেনে কয়েক শ বিক্ষোভকারীকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। গতকাল শনিবারও বিক্ষোভ কর্মসূচি ছিল। আয়োজকরা জানান, প্রায় ২০ হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দেবে বলে আশা করছেন তাঁরা। পরমাণু স্থাপনাবিরোধী সংগঠন আউসগেসথ্রয়েতার মুখপাত্র জোচেন স্টে বলেন, 'যখনই পরমাণু বর্জ্যবাহী ট্রেন আসবে, তার পথ বন্ধ করে দেওয়া হবে। বর্জ্যের পরিমাণ আমরা আর বাড়তে দিতে চাই না।' 'ক্যাস্টর সটার্ন' নামের আরেক সংগঠরের কর্মী হান্না স্পিগেল বলেন, 'ট্রেনটিকে বিপদে ফেলা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। আমরা এ ধরনের চালান আসাই বন্ধ করতে চাই।' সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.