শিক্ষক ধর্মঘটে বুয়েটে অচলাবস্থা, আজ সভা

শিক্ষকদের ধর্মঘটের কারণে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) অচলাবস্থা বিরাজ করছে। শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬০ থেকে ৬৫ বছর করার দাবিতে গত ২২ নভেম্বর থেকে ক্লাস বর্জন করে আসছে বুয়েট শিক্ষক সমিতি। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষক সমিতি মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। বুয়েটের ইতিহাসে দাবি আদায়ের জন্য এ ধরনের ধর্মঘট আগে কখনো ঘটেনি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।


গতকাল শনিবার বুয়েটের সিন্ডিকেট কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বিষয়টি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় শিক্ষক সমিতি তাদের কর্মবিরতি অব্যাহত রেখে আজ রবিবার সকাল ১১টায় জরুরি সাধারণ সভা ডেকেছে বলে কালের কণ্ঠকে জানিয়েছেন বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আতাউর রহমান। তিনি বলেন, আজকের সাধারণ সভা থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। অন্যদিকে নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার দাবিতে গত বুধবার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। সিনিয়র শিক্ষকরা যেন বর্তমান প্রশাসনের অনৈতিক কার্যক্রমের প্রতিবাদ করতে না পারে সেজন্য ৬৫ বছর বয়সসীমা পেছানোর জন্য প্রশাসন চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ শিক্ষক সমিতির। সমিতির সভাপতি অধ্যাপক জয়নুল আবেদীন বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের জন্য আমি আন্দোলন করছি।'
জানা যায়, ২০০৮ সালে বুয়েটের শিক্ষকদের বয়সসীমা ৬৫ চালুর জন্য আবেদন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তখন বিষয়টি অনুমোদন পায়নি। কিন্তু এ বছরের ২৩ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বয়সসীমা ৬৫ বছর করার ঘোষণা দেন। এতে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ সুবিধা লাভ করছেন। কিন্তু বুয়েট এখনো এটি অর্জনে সক্ষম হয়নি। বুয়েট সংবিধির ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শিক্ষকদের চাকরির বয়সসীমা ৬০ বছর।
বুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী গত ২৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ফেডারেশনের কাছে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করেছেন। অথচ বুয়েট প্রশাসন চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণাও বাস্তবায়ন করছে না। এ বিষয়ে বুয়েট উপাচার্য এস এম নজরুল ইসলাম বলেন, 'গত ১৮ অক্টোবর শিক্ষকদের বয়সসীমা ৬৫ বছরে উন্নীত করার জন্য সিন্ডিকেটে পাসের পর তা শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। জবাবে ২১ নভেম্বর মন্ত্রণালয় থেকে পত্র মারফত জানানো হয়েছে, সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। অতএব, আমি তো সরকারের ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ অমান্য করতে পারি না।'

No comments

Powered by Blogger.