একটি বাড়ি একটি খামার-এভাবে দারিদ্র্য দূর হবে না
একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সুফল অসচ্ছলদের চেয়ে সচ্ছলরা বেশি পাচ্ছে_ সরাইল উপজেলা থেকে শনিবার সমকালের লোকালয় পাতায় এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অসচ্ছলদের জন্য সরকারের গৃহীত এ প্রকল্পটিতে অনিয়ম ও দুর্নীতি অনেক। প্রতিবেদনে বলা হয়_ প্রকল্পের অনেক গরু, মুরগি, ঢেউটিনসহ অন্যান্য উপকরণ বিত্তশালীরা বাগিয়ে নিয়েছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক প্রভাব ও অর্থের বিনিময়ে বিত্তশালীরা নিজেদের নাম
অসচ্ছলদের তালিকায় তুলে গরিবের জন্য দেয় সুবিধা আত্মস্থ করেছেন। শুধু সরাইল উপজেলায় যে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে তা নয়। এ প্রকল্প সম্পর্কে আরও অনেক উপজেলায় নয়ছয় হওয়ার খবর মাঝে মধ্যেই প্রকাশ পায়। এ ব্যাপারে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ এখনও পরিলক্ষিত হয়নি। সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে এ প্রকল্পের মাধ্যমে গরিবদের মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের ব্যবস্থাই শুধু নয়, তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলাও। কিন্তু একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সুযোগ সন্ধানীর লোভের কারণে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য ব্যর্থ হতে বসেছে। বিগত চারদলীয় সরকারের আমলেও গরিবদের স্বকর্মসংস্থানের জন্য ছাগল পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে, ছাগল পালনের অর্থ দলীয় ক্যাডার ও অবস্থাপন্নদের পকেটে গেছে। ফলে সরকারের বিপুল অর্থ কার্যত টাউট-বাটপারদের পকেটস্থ হয়। বর্তমান সরকারের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের অবস্থাও যদি ছাগল পালন প্রকল্পের মতো হয় তাহলে সরকারের দারিদ্র্য দূরীকরণের টার্গেট পূরণ হবে না। সরাইলে এই প্রকল্পের গরু, মুরগি ও ঢেউটিনসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ অবস্থাপন্নদের হাতে চলে যাওয়ার জন্য দায়ীদের শনাক্ত করা কঠিন কাজ নয়। এলাকার নির্বাচিত সাংসদ ও নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকল্পটি নিয়ে অনিয়ম হয়েছে বলে প্রকারান্তরে স্বীকারও করেছেন। তাই প্রকৃত দোষীদের কাছ থেকে প্রকল্পের আত্মসাৎকৃত অর্থমূল্য আদায় করে অসচ্ছলদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। একটি ঘর একটি খামার প্রকল্পের সাফল্যের ওপর আংশিকভাবে হলেও নির্ভর করছে সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি সফল হওয়ার বিষয়টি। অতএব, অগ্রাধিকার ভিত্তিতেই এই প্রকল্পের সুফল যাতে অসচ্ছল মানুষই পায় তার ব্যবস্থা সরকারেরই করা উচিত।
No comments