মোবাইল ফোনের গ্রাহক বাড়ছে দ্বিগুণ গতিতে by সজল জাহিদ

চার বছরে দেশে ৫ কোটি ১ লাখ ১২ হাজার নতুন মোবাইল গ্রাহক যোগ হয়েছে। বছরের হিসাবে তা দাঁড়ায় ১ কোটি ২৫ লাখ ২৮ হাজার। আর হিসাবটিকে দিনে নিয়ে এলে ২০০৭ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দিনে ৩৪ হাজার ৩২৩ জন নতুন গ্রাহক পেয়েছে ছয়টি মোবাইল ফোন অপারেটর। গত সপ্তাহে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) প্রকাশিত হিসাবে দেশে মোট কার্যকর মোবাইল সিম সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ২৪ লাখ


৪২ হাজার। ঠিক চার বছর আগে কার্যকর মোবাইল সিম ছিল ৩ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে সর্বশেষ দুই বছরে মোবাইল গ্রাহকের বৃদ্ধির হিসাব অত্যন্ত দ্রুত ছিল।
২০০৭-এর অক্টোবর পর্যন্ত পরের দুই বছরে যেখানে মাত্র ১ কোটি ৯০ লাখ ৭ হাজার নতুন গ্রাহক যোগ হয়েছে সেখানে পরের দুই বছরে গ্রাহক বৃদ্ধির হার প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত দেশ আরও ৩ কোটি ১০ লাখ নতুন গ্রাহক পেয়েছে। সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, আগামী দুই বছর পর এ হিসাব আরও সমৃদ্ধ হবে। তাছাড়া এ সময়ে সংখ্যা বিবেচনায় তারা অনেক বেশি সিম বিক্রি করলেও শেষ পর্যন্ত টিকে থেকেছে যেসব সিম কেবল তাদেরই বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য অপারেটর ভিত্তিক হিসাব করলে গ্রাহক বৃদ্ধির এই উচ্চহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব পাবে দেশের শীর্ষ অপারেটর গ্রামীণফোন। চার বছরে দুই লাখের বেশি গ্রাহক যোগ করে নিয়েছে তারা। ২০০৭ সালের অক্টোবর মাসের শেষে যেখানে তাদের গ্রাহক ছিল ১ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার, এখন সেটি ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার। এর মধ্যে শেষ দুই বছরে তারা নিয়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৯১ হাজার গ্রাহক। সর্বশেষ এক বছরে কেবল গ্রামীণফোনই দিনে ৩৬ হাজার ৬৮৭টি করে নতুন কার্যকর গ্রাহক পেয়েছে।
বাংলালিংক বরং ২০০৭ সালের শেষেও রবির চেয়ে পিছিয়ে ছিল। তখন বাংলালিংকের গ্রাহক ছিল ৬২ লাখ আর রবির ৬৬ লাখ। কিন্তু এখন উল্টো রবির চেয়ে ৭০ লাখ গ্রাহক বেশি রয়েছে মিসরভিত্তিক অপারেটরটির। এখন বাংলালিংক রয়েছে ২ কোটি ২৬ লাখ ৮১ হাজার গ্রাহকে। আর রবির গ্রাহক ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫৫ হাজার।
চার বছরে এয়ারটেল ৩৮ লাখ গ্রাহক পেয়ে গেলেও সবচেয়ে পুরনো অপারেটর সিটিসেল কিছুটা এগিয়ে গিয়েও আবার অনেকটাই পিছিয়ে গেছে। ২০০৭ সালের অক্টোবরে তাদের গ্রাহক ছিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার। ২০০৯ সালের অক্টোবর শেষে তারা ১৯ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক পর্যন্ত চলে গিয়েছিল। কিন্তু এই অক্টোবরের শেষে তাদের হাতে রয়েছে কেবল ১৭ লাখ ৩৬ হাজার গ্রাহক। নতুন গ্রাহক ধরার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকও সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। এখন তাদের গ্রাহক রয়েছে ১২ লাখ ৭ হাজার। কিন্তু অনেক সাড়াশব্দের পর শুরু করেও ২০০৭ সালের অক্টোবরের (৭ লাখ) পর আর তেমন বাড়তে পারেনি।
অপারেটরগুলোর গ্রাহক বৃদ্ধির এই যখন হার তখন মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, সামনের দিনে গ্রাহক বৃদ্ধির হিসাব আরও সমৃদ্ধ হবে। ইতিমধ্যে সিমপ্রতি ট্যাক্স ৮০০ টাকা থেকে কমে ৬০০ টাকা করায় গ্রাহক বৃদ্ধির হার আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।

No comments

Powered by Blogger.