স্বপ্নের পালে হাওয়া by পুলিন চাকমা,
অবশেষে রাঙামাটির বরকলবাসীর স্বপ্নের পালে হাওয়া লেগেছে। বরকল সদরের ফাইল্যাতলী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কলেজ ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট। আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হবে এর নির্মাণকাজ।১৯২৩ সালে ব্রিটিশ আমলে বরকল থানা স্থাপিত হয়। কিন্তু দীর্ঘ ৮৮ বছরেও উপজেলায় গড়ে ওঠেনি কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এ সময়ে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে দু'বার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমন্বয়ের
অভাবে তা আলোর মুখ দেখেনি। সমন্বয়ের সেই অভাব দূর করতেই এবার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন দীর্ঘদিনের অধরা স্বপ্ন পূরণ করতে। এ উদ্যোগ সফল হলে দুর্গম এ এলাকার মানুষ শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেকদূর এগিয়ে যাবে বলে মনে করছে সচেতন মহল।
যে কারণে বিফল দু'বারের চেষ্টা
১৯৯৫ সালে প্রথম কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে কলেজের জায়গা নির্বাচন করে মাটি কাটার কাজও শুরু হয়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে যায় এ উদ্যোগ। এরপর ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর সুবলং ইউনিয়নের নারিকেল বাগান এলাকায় টিনশেডের ঘর তৈরি করে কলেজ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নিরাপত্তার অজুহাতে বিফল হয় সেবারের চেষ্টাও।
উপকৃত হবে দুস্থ ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা
উপজেলায় বরকল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বিল ছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বরুণা ছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সুবলং উচ্চ বিদ্যালয় নামে পাঁচটি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিবছর গড়ে দু'শতাধিক ছাত্রছাত্রী এসএসসি পাস করে। তবে এদের মধ্যে যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো শুধু তারাই উপজেলার বাইরে গিয়ে ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। বাকিদের লেখাপড়ার পাট সেখানেই চুকে যায়। এখানে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে অর্থাভাবে যারা দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে পারেন না তাদের জন্য সুবিধা হবে। অপরদিকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর অনেক শিক্ষার্থীকে নানা কারণে মাঝপথে লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়। ঝরেপড়া এসব শিক্ষার্থীর জন্যই নিঃসন্দেহে সহায়তার হাত বাড়াবে উপজেলায় স্থাপিত হতে যাওয়া কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
স্বপ্নের পেছনে যারা
কলেজ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে জমি দান করেছেন স্থানীয় বাচ্চু মারমা, গুনু কুমার চাকমা, মংলাচিং মারমা ও যুগেন্দ্র বিকাশ চাকমা। অপরদিকে ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য দুই একর জমি দিয়েছেন কিয়াংপাড়া গ্রামের সাজাইপ্রু মারমা। স্বেচ্ছাশ্রমে ওই দুই স্থানের জঙ্গল পরিষ্কার ও মাটি কাটার কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অবকাঠামোসহ সার্বিক বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) ও রাঙামাটির সেক্টর বিজিবি। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে স্থানীয়ভাবে আর্থিক তহবিল গড়ে তোলার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন খাত থেকে কিছু কিছু বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের সহায়তা করবে উপজেলার এলজিইডি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস।
বিজয় দিবসে শুরু স্বপ্নের পথে যাত্রা
কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এলাকার সুশীল সমাজ তিনবার আলোচনায় বসে। সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) কনফারেন্স কক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফ উদ্দিন আহম্মদের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বিদায়ী অধিনায়ক লে. কর্ণেল সৈয়দ সায়েদিস সাকলায়েন (পিএসসি), নবাগত লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, ছোট হরিণা ১৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বিদায়ী লেঃ কর্নেল মেহেদি হাসান, নবাগত লেঃ কর্নেল জয়নাল আবেদীন, রাঙামাটির সেক্টর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ নুরুল হুদা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কমলজ্যোতি চাকমা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রায়সোনা চাকমা, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী সুরেন্দ্র লাল চাকমা, ৩নং আইমাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামরতন চাকমা, বরকল ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাত কুমার চাকমা, ভূষণছড়া ইউপি চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার চাকমা, সুবলং ইউপি চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা, মংসিংএ মগ, মংলাচিং মারমা, সাজাইপ্রু মারমা, গুনু কুমার চাকমা, যুগেন্দ্র বিকাশ চাকমা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ফাইজুল ইসলাম, বরকল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক প্রতিময় চাকমা, বরকল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবেশ ধন চাকমা, সমাজকর্মী উৎপল চাকমা, জ্ঞান তালুকদার, সাংবাদিক পুলিন বিহারী চাকমা ও বিজিবির সাবেক নায়েক মোঃ নুরু। সভায় 'বরকল কলেজ' নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটের জমি পরিদর্শন করেন রাঙামাটি বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো নুরুল হুদা।
সূত্র জানায়, ভূমিদাতাদের মধ্যে যারা দুস্থ তাদের তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া তাদের ছেলেমেয়ে কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটে বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে।
এদিকে নির্মিতব্য প্রতিষ্ঠান দুটির নকশা উপজেলা এলজিইডি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস তৈরি করবে বলে জানা গেছে। ওই দু'প্রতিষ্ঠানের জন্য দু'জন দক্ষ প্রিন্সিপাল নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠান দুটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হবে।
যে কারণে বিফল দু'বারের চেষ্টা
১৯৯৫ সালে প্রথম কলেজ স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমে কলেজের জায়গা নির্বাচন করে মাটি কাটার কাজও শুরু হয়। তবে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতি ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে থমকে যায় এ উদ্যোগ। এরপর ১৯৯৭ সালে শান্তিচুক্তির পর সুবলং ইউনিয়নের নারিকেল বাগান এলাকায় টিনশেডের ঘর তৈরি করে কলেজ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে নিরাপত্তার অজুহাতে বিফল হয় সেবারের চেষ্টাও।
উপকৃত হবে দুস্থ ও ঝরে পড়া শিক্ষার্থীরা
উপজেলায় বরকল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, বিল ছড়া উচ্চ বিদ্যালয়, বরুণা ছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজাছড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সুবলং উচ্চ বিদ্যালয় নামে পাঁচটি উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে। যেখান থেকে প্রতিবছর গড়ে দু'শতাধিক ছাত্রছাত্রী এসএসসি পাস করে। তবে এদের মধ্যে যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো শুধু তারাই উপজেলার বাইরে গিয়ে ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। বাকিদের লেখাপড়ার পাট সেখানেই চুকে যায়। এখানে কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে অর্থাভাবে যারা দূরে গিয়ে লেখাপড়া করতে পারেন না তাদের জন্য সুবিধা হবে। অপরদিকে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর অনেক শিক্ষার্থীকে নানা কারণে মাঝপথে লেখাপড়া বন্ধ করে দিতে হয়। ঝরেপড়া এসব শিক্ষার্থীর জন্যই নিঃসন্দেহে সহায়তার হাত বাড়াবে উপজেলায় স্থাপিত হতে যাওয়া কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
স্বপ্নের পেছনে যারা
কলেজ নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে জমি দান করেছেন স্থানীয় বাচ্চু মারমা, গুনু কুমার চাকমা, মংলাচিং মারমা ও যুগেন্দ্র বিকাশ চাকমা। অপরদিকে ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার জন্য দুই একর জমি দিয়েছেন কিয়াংপাড়া গ্রামের সাজাইপ্রু মারমা। স্বেচ্ছাশ্রমে ওই দুই স্থানের জঙ্গল পরিষ্কার ও মাটি কাটার কাজ করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। অবকাঠামোসহ সার্বিক বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) ও রাঙামাটির সেক্টর বিজিবি। প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে স্থানীয়ভাবে আর্থিক তহবিল গড়ে তোলার কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন খাত থেকে কিছু কিছু বরাদ্দ নিয়ে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের সহায়তা করবে উপজেলার এলজিইডি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস।
বিজয় দিবসে শুরু স্বপ্নের পথে যাত্রা
কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে এলাকার সুশীল সমাজ তিনবার আলোচনায় বসে। সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের (বিজিবি) কনফারেন্স কক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান সন্তোষ কুমার চাকমার সভাপতিত্বে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইফ উদ্দিন আহম্মদের পরিচালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ২৬ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বিদায়ী অধিনায়ক লে. কর্ণেল সৈয়দ সায়েদিস সাকলায়েন (পিএসসি), নবাগত লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, ছোট হরিণা ১৮ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের বিদায়ী লেঃ কর্নেল মেহেদি হাসান, নবাগত লেঃ কর্নেল জয়নাল আবেদীন, রাঙামাটির সেক্টর বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোঃ নুরুল হুদা, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান কমলজ্যোতি চাকমা, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রায়সোনা চাকমা, উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, সহকারী প্রকৌশলী সুরেন্দ্র লাল চাকমা, ৩নং আইমাছড়া ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামরতন চাকমা, বরকল ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাত কুমার চাকমা, ভূষণছড়া ইউপি চেয়ারম্যান দীলিপ কুমার চাকমা, সুবলং ইউপি চেয়ারম্যান তরুণ জ্যোতি চাকমা, মংসিংএ মগ, মংলাচিং মারমা, সাজাইপ্রু মারমা, গুনু কুমার চাকমা, যুগেন্দ্র বিকাশ চাকমা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ ফাইজুল ইসলাম, বরকল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষক প্রতিময় চাকমা, বরকল আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবেশ ধন চাকমা, সমাজকর্মী উৎপল চাকমা, জ্ঞান তালুকদার, সাংবাদিক পুলিন বিহারী চাকমা ও বিজিবির সাবেক নায়েক মোঃ নুরু। সভায় 'বরকল কলেজ' নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটের জমি পরিদর্শন করেন রাঙামাটি বিজিবির সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মো নুরুল হুদা।
সূত্র জানায়, ভূমিদাতাদের মধ্যে যারা দুস্থ তাদের তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া তাদের ছেলেমেয়ে কলেজ ও ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটে বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে।
এদিকে নির্মিতব্য প্রতিষ্ঠান দুটির নকশা উপজেলা এলজিইডি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস তৈরি করবে বলে জানা গেছে। ওই দু'প্রতিষ্ঠানের জন্য দু'জন দক্ষ প্রিন্সিপাল নিয়োগের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিকে। আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠান দুটির নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হবে।
No comments