হাওরাঞ্চলে শিক্ষার দুরবস্থা
বাস্তবতা বিবেচনায় ভিন্ন শিক্ষা পরিকল্পনা প্রয়োজনসাতটি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা নিয়ে গঠিত হাওরাঞ্চল। সেখানকার কয়েক লাখ শিশু এখনো প্রকৃত অর্থে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। এর প্রধান কারণ, বিদ্যালয়ের দুর্গমতা। সেখানে একটি কথা প্রচলিত আছে, 'শুকনায় পাও, বর্ষায় নাও_সাহস থাকলে স্কুলে যাও।' ফলে বহু শিশু জীবনে কোনোদিন স্কুলের চৌকাঠই মাড়ায় না। আবার কোনো কোনো মা-বাবা ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করার ইচ্ছা নিয়ে স্কুলে
পাঠালেও প্রথম বা দ্বিতীয় শ্রেণীর বেশি তারা আর শিক্ষা চালিয়ে যেতে পারে না। ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের শিক্ষার অবস্থা আরো খারাপ।
বিশাল হাওরাঞ্চলে অনেক দূরে দূরে টুকরো টুকরে উঁচু ভূমিতে রয়েছে ছোট ছোট জনবসতি বা গ্রাম। বর্ষায় জনবসতিগুলোর চারদিকে থাকে অথৈ পানি। তখন কোনো একটি উঁচু ভূমিতে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য নৌকাই হচ্ছে একমাত্র বাহন। হাওরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ খুবই দরিদ্র। তাদের ছেলেমেয়েদের পক্ষে প্রতিদিন নৌকা ভাড়া দিয়ে স্কুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া পরিবারের অন্যান্য কাজেও চলাচলের জন্য নৌকা প্রয়োজন। নৌকায় চলাচলেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আবার শীতকালে হাওরগুলো যখন শুকিয়ে যায় তখন পায়ে হেঁটে যেতে হয় দূর-দূরান্তের স্কুলগুলোতে। সেটা কোনো সড়ক পথে নয়। মাঠের ওপর দিয়ে, কখনো কাদাপানি দিয়ে। কখনো জামা ভিজিয়ে ছোট ছোট খাল পেরিয়েও যেতে হয়। তাই ছোট শিশুদের জন্য স্কুলে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। স্কুলে পড়াশোনা এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে একটি শিশুর প্রায় সারাটা দিনই কেটে যায়। এই পুরো সময়টা তাদের না খেয়ে কাটাতে হয়। তা-ও ছোট শিশুদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। এসব কারণের অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হয় না। শুধু শিক্ষার্থীদেরই অসুবিধা হয় না, শিক্ষকদেরও যাতায়াতে খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়। বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষিত লোকজন কম হওয়ায় দূরের শিক্ষকদেরই এসব স্কুলে নিয়োগ দিতে হয়। তাঁরা যে বেতন পান, তাতে বর্ষাকালে নৌকা ভাড়া করে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করা তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আবার শুকনার সময়ও এত দূরের পথ পায়ে হেঁটে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করা খুবই কষ্টকর। তাই হাওরের স্কুলগুলো মোটেও নিয়মিত নয়। এতেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হয়।
তাই হাওরের স্কুলগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং হাওরাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সমতলের স্কুলের চেয়ে ভিন্ন পরিকল্পনা নিতে হবে। সেখানে বিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে এবং শিক্ষকদের থাকার মতো ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব নৌযান থাকতে হবে এবং সেগুলো দিয়ে বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসতে হবে। শীতকালেও যোগাযোগব্যবস্থা যথাসম্ভব উন্নত করতে হবে। সর্বোপরি শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। একটি শিশু সারা দিন না খেয়ে কাটাবে_এটা কোনোমতেই কাম্য নয়। হাওরাঞ্চল দেশকে যা দেয়, সেই তুলনায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে হাওরাঞ্চল পায় খুবই কম। অন্তত হাওরের দরিদ্র বাসিন্দাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা কিছুটা উদারতার পরিচয় অবশ্যই দিতে পারি এবং দেওয়াটাই উচিত।
বিশাল হাওরাঞ্চলে অনেক দূরে দূরে টুকরো টুকরে উঁচু ভূমিতে রয়েছে ছোট ছোট জনবসতি বা গ্রাম। বর্ষায় জনবসতিগুলোর চারদিকে থাকে অথৈ পানি। তখন কোনো একটি উঁচু ভূমিতে গড়ে ওঠা বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য নৌকাই হচ্ছে একমাত্র বাহন। হাওরাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ খুবই দরিদ্র। তাদের ছেলেমেয়েদের পক্ষে প্রতিদিন নৌকা ভাড়া দিয়ে স্কুলে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। তা ছাড়া পরিবারের অন্যান্য কাজেও চলাচলের জন্য নৌকা প্রয়োজন। নৌকায় চলাচলেরও পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। আবার শীতকালে হাওরগুলো যখন শুকিয়ে যায় তখন পায়ে হেঁটে যেতে হয় দূর-দূরান্তের স্কুলগুলোতে। সেটা কোনো সড়ক পথে নয়। মাঠের ওপর দিয়ে, কখনো কাদাপানি দিয়ে। কখনো জামা ভিজিয়ে ছোট ছোট খাল পেরিয়েও যেতে হয়। তাই ছোট শিশুদের জন্য স্কুলে যাওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। স্কুলে পড়াশোনা এবং যাওয়া-আসা মিলিয়ে একটি শিশুর প্রায় সারাটা দিনই কেটে যায়। এই পুরো সময়টা তাদের না খেয়ে কাটাতে হয়। তা-ও ছোট শিশুদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর। এসব কারণের অভিভাবকরা শিশুদের স্কুলে পাঠাতে উৎসাহিত হয় না। শুধু শিক্ষার্থীদেরই অসুবিধা হয় না, শিক্ষকদেরও যাতায়াতে খুবই অসুবিধায় পড়তে হয়। বিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকায় শিক্ষিত লোকজন কম হওয়ায় দূরের শিক্ষকদেরই এসব স্কুলে নিয়োগ দিতে হয়। তাঁরা যে বেতন পান, তাতে বর্ষাকালে নৌকা ভাড়া করে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করা তাঁদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। আবার শুকনার সময়ও এত দূরের পথ পায়ে হেঁটে প্রতিদিন স্কুলে আসা-যাওয়া করা খুবই কষ্টকর। তাই হাওরের স্কুলগুলো মোটেও নিয়মিত নয়। এতেও শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হয়।
তাই হাওরের স্কুলগুলো সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং হাওরাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারগুলোর শিশুদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সমতলের স্কুলের চেয়ে ভিন্ন পরিকল্পনা নিতে হবে। সেখানে বিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে এবং শিক্ষকদের থাকার মতো ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। বিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব নৌযান থাকতে হবে এবং সেগুলো দিয়ে বর্ষাকালে শিক্ষার্থীদের স্কুলে নিয়ে আসতে হবে। শীতকালেও যোগাযোগব্যবস্থা যথাসম্ভব উন্নত করতে হবে। সর্বোপরি শিশুদের জন্য বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা থাকতে হবে। একটি শিশু সারা দিন না খেয়ে কাটাবে_এটা কোনোমতেই কাম্য নয়। হাওরাঞ্চল দেশকে যা দেয়, সেই তুলনায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে হাওরাঞ্চল পায় খুবই কম। অন্তত হাওরের দরিদ্র বাসিন্দাদের সুশিক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা কিছুটা উদারতার পরিচয় অবশ্যই দিতে পারি এবং দেওয়াটাই উচিত।
No comments