কাঁধে ব্যথা হলে
অনেক কারণে কাঁধে ব্যথা হতে পারে। যেমন_ আঘাত পাওয়া, হাড় ভেঙে যাওয়া, পেশি টান, লিগামেন্ট ইনজুরি এবং কিছু রোগ। যেমন_ পেরি আর্থোসিস, বিভিন্ন ধরনের আর্থ্রাইটিস, গাউট ইত্যাদি। অনেকদিন ব্যথা থাকলে কাঁধ শক্ত হয়ে যেতে পারে। তবে যাদের ডায়াবেটিস থাকে তাদেরই বেশি দেখা যায়। এ রোগকে জমাট কাঁধ বা ফ্রজেন সোল্ডার নামে অভিহিত করা যায়। অনেক সময় হার্ট ডিজিজের পর বা স্ট্রোকের পর কাঁধ শক্ত হয়ে যেতে পারে।
কাঁধের অস্থি সংযোগের ব্যথা সাধারণত বৃদ্ধ বয়সে দেখা যায়। এই ব্যথার কারণে রোগী নড়াচড়া কম করে, ফলে তা জমাট কাঁধে রূপ নেয়।
উপসর্গ : কাঁধের অস্থি সংযোগস্থলে ব্যথা হয় এবং কোনো কাজ করতে গেলে এ ব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। কাঁধের অস্থি সংযোগ জমাট হওয়ার কারণে হাত নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয়। কাঁধের অস্থি সংযোগ স্থানের ব্যথা রাতের বেলায় বেড়ে যায় এবং কখনও কখনও ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যায়। প্রাত্যহিক কাজ যেমন_ চুল আঁচড়ানো, পিঠ চুলকানো, জামা গায়ে দেওয়া, বাথরুমে পানি ব্যবহার করা ইত্যাদিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
চিকিৎসা :বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসা এ রোগের জন্য প্রয়োগ করা হয়। যেমন_
ব্যথা উপশমকারী ওষুধ এবং ব্যথা থাকা অবস্থায় মাংসপেশি শিথিলকারক ওষুধ যেমন_ ডায়াজিপাম খাওয়া যেতে পারে। সর্বক্ষেত্রে একমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক নির্দিষ্ট মাত্রায় সঠিক নিয়মে ওষুধ খেতে হবে।
বিভিন্ন প্রকার তাপ এ রোগে প্রয়োগ করা হয়। যেমন_ ক. ডিপ হিট_ সর্ট ওয়েভ ডায়াথার্মি, মাইক্রো ওয়েভ ডায়াথার্মি ও আলট্রাসাউন্ড থেরাপি। খ. সুপারফিসিয়াল হিট_ যেমন ইনফ্রারেড থেরাপি এবং ক্ষেত্রবিশেষে ইলেকট্রো থেরাপি দেওয়া যেতে পারে।
থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ :জমাট কাঁধ রোগে বিভিন্ন প্রকার থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করা একান্ত প্রয়োজন। থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ একজন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে করতে হবে। তিনি এসব ব্যায়ামের মাত্রা ও ধরন, রোগের অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেবেন। ব্যথা বেশি থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না বরং বিশ্রাম নিতে হবে। এ রোগে করণীয় ব্যায়াম যেমন_
কডম্যান এক্সারসাইজ : রোগী সামনের দিকে এমনভাবে ঝুঁকবে যেন তার মেরুদণ্ড সমান্তরালভাবে ও হাত দুটি নিচের দিকে শিথিলভাবে ঝুলে থাকে। এবার দু'হাত একসঙ্গে নির্দেশমতো সোজাসুজি এবং আড়াআড়িভাবে নড়াতে হবে। এবার ঝুলন্ত অবস্থায় হাত দুটি বৃত্ত আকারে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং বিপরীত দিকে ঘুরাতে হবে।
ওয়ালক্লাইমবিং এক্সারসাইজ : বাড়ির দরজা বা দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে দু'হাতের আঙুল দিয়ে আস্তে আস্তে দরজা বা দেয়াল বেয়ে যত দূর সম্ভব দু'হাত ওপরে ওঠাতে হবে।
পুলি এক্সারসাইজ : একটা ছোট পুলির মধ্যে একটা নাইলনের দড়ি ঝুলিয়ে দিতে হবে। এবার দড়ির দু'প্রান্ত দু'হাত দিয়ে ধরে নির্দেশ মতো ওঠাতে ও নামাতে হবে। সব ব্যায়ামই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে। কতবার করবেন, কীভাবে করবেন সবকিছু চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
কাঁধে ব্যথা ও জমাট কাঁধ রোগীর জন্য
পরামর্শ : ঘাড়ে ছোট নরম একটা বালিশ ব্যবহার করবেন। জমাট কাঁধের দিকে ভর করে ঘুমাবেন না। মেরুদণ্ড সোজা রেখে সব কাজ করবেন। ভারী কোনো জিনিস যেমন_ বেশি ওজনের বাজারের থলি, এক বালতি পানি, বাচ্চা ছেলেমেয়ে কোলে নেওয়া ইত্যাদি কাজ করবেন না। টিউবওয়েল চেপে পানি উঠাবেন না। পিঁড়িতে বসে কোনো কাজ যেমন_ মাছ কাটা, শাকসবজি কাটা ইত্যাদি করবেন না। ব্যথা থাকা অবস্থায় কোনো মালিশ এবং ব্যায়াম করবেন না। ডায়াবেটিস রোগ থাকলে অবশ্যই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সর্বোপরি কাঁধে ব্যথা হলে বা কাঁধ জমাট
হলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ থাকুন।
ডো. এমএ শাকুর
বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন
বিএসএমএমইউ (পিজি হাসপাতাল)
উপসর্গ : কাঁধের অস্থি সংযোগস্থলে ব্যথা হয় এবং কোনো কাজ করতে গেলে এ ব্যথা প্রচণ্ড আকার ধারণ করে। কাঁধের অস্থি সংযোগ জমাট হওয়ার কারণে হাত নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয়। কাঁধের অস্থি সংযোগ স্থানের ব্যথা রাতের বেলায় বেড়ে যায় এবং কখনও কখনও ব্যথার কারণে ঘুম ভেঙে যায়। প্রাত্যহিক কাজ যেমন_ চুল আঁচড়ানো, পিঠ চুলকানো, জামা গায়ে দেওয়া, বাথরুমে পানি ব্যবহার করা ইত্যাদিতে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
চিকিৎসা :বিভিন্ন প্রকার চিকিৎসা এ রোগের জন্য প্রয়োগ করা হয়। যেমন_
ব্যথা উপশমকারী ওষুধ এবং ব্যথা থাকা অবস্থায় মাংসপেশি শিথিলকারক ওষুধ যেমন_ ডায়াজিপাম খাওয়া যেতে পারে। সর্বক্ষেত্রে একমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক নির্দিষ্ট মাত্রায় সঠিক নিয়মে ওষুধ খেতে হবে।
বিভিন্ন প্রকার তাপ এ রোগে প্রয়োগ করা হয়। যেমন_ ক. ডিপ হিট_ সর্ট ওয়েভ ডায়াথার্মি, মাইক্রো ওয়েভ ডায়াথার্মি ও আলট্রাসাউন্ড থেরাপি। খ. সুপারফিসিয়াল হিট_ যেমন ইনফ্রারেড থেরাপি এবং ক্ষেত্রবিশেষে ইলেকট্রো থেরাপি দেওয়া যেতে পারে।
থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ :জমাট কাঁধ রোগে বিভিন্ন প্রকার থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ করা একান্ত প্রয়োজন। থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ একজন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে করতে হবে। তিনি এসব ব্যায়ামের মাত্রা ও ধরন, রোগের অবস্থা অনুযায়ী নির্ধারণ করে দেবেন। ব্যথা বেশি থাকলে ব্যায়াম করা যাবে না বরং বিশ্রাম নিতে হবে। এ রোগে করণীয় ব্যায়াম যেমন_
কডম্যান এক্সারসাইজ : রোগী সামনের দিকে এমনভাবে ঝুঁকবে যেন তার মেরুদণ্ড সমান্তরালভাবে ও হাত দুটি নিচের দিকে শিথিলভাবে ঝুলে থাকে। এবার দু'হাত একসঙ্গে নির্দেশমতো সোজাসুজি এবং আড়াআড়িভাবে নড়াতে হবে। এবার ঝুলন্ত অবস্থায় হাত দুটি বৃত্ত আকারে ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং বিপরীত দিকে ঘুরাতে হবে।
ওয়ালক্লাইমবিং এক্সারসাইজ : বাড়ির দরজা বা দেয়ালের সামনে দাঁড়িয়ে দু'হাতের আঙুল দিয়ে আস্তে আস্তে দরজা বা দেয়াল বেয়ে যত দূর সম্ভব দু'হাত ওপরে ওঠাতে হবে।
পুলি এক্সারসাইজ : একটা ছোট পুলির মধ্যে একটা নাইলনের দড়ি ঝুলিয়ে দিতে হবে। এবার দড়ির দু'প্রান্ত দু'হাত দিয়ে ধরে নির্দেশ মতো ওঠাতে ও নামাতে হবে। সব ব্যায়ামই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করতে হবে। কতবার করবেন, কীভাবে করবেন সবকিছু চিকিৎসকের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে।
কাঁধে ব্যথা ও জমাট কাঁধ রোগীর জন্য
পরামর্শ : ঘাড়ে ছোট নরম একটা বালিশ ব্যবহার করবেন। জমাট কাঁধের দিকে ভর করে ঘুমাবেন না। মেরুদণ্ড সোজা রেখে সব কাজ করবেন। ভারী কোনো জিনিস যেমন_ বেশি ওজনের বাজারের থলি, এক বালতি পানি, বাচ্চা ছেলেমেয়ে কোলে নেওয়া ইত্যাদি কাজ করবেন না। টিউবওয়েল চেপে পানি উঠাবেন না। পিঁড়িতে বসে কোনো কাজ যেমন_ মাছ কাটা, শাকসবজি কাটা ইত্যাদি করবেন না। ব্যথা থাকা অবস্থায় কোনো মালিশ এবং ব্যায়াম করবেন না। ডায়াবেটিস রোগ থাকলে অবশ্যই রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। সর্বোপরি কাঁধে ব্যথা হলে বা কাঁধ জমাট
হলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সুস্থ থাকুন।
ডো. এমএ শাকুর
বাত, ব্যথা ও প্যারালাইসিস বিশেষজ্ঞ
সহযোগী অধ্যাপক, ফিজিক্যাল মেডিসিন
বিএসএমএমইউ (পিজি হাসপাতাল)
No comments