কামার সমপ্রদায়ের ব্যস্ত সময় এখন by নজরুল ইসলাম
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কোটচাঁদপুরের
কামার সমপ্রদায়ের কারিগরেরা চাপাতি, ছুরি, দাঁ-বটি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার
করছেন। পশু কোরবানি ও মাংস তৈরিতে অতি প্রয়োজনীয় এসব ধারালো অস্ত্রের
চাহিদা মতো সরবরাহের জন্য কামার সমপ্রদায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। বছরের
অন্যান্য সময়ের চেয়ে কোরবানি ঈদের সময় কামার সমপ্রদায়ের কাজের চাপ অনেকটা
বেড়ে যায়। সেই সঙ্গে বাড়ে তাদের আয় রোজগারও। কামার সমপ্রদায়ের সঙ্গে আলাপে
জানা যায়, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি তথা কয়লার অপ্রতুলতায়
বেড়েছে এর দাম।
তারা বলেন, বেড়েছে লোহার দাম। লোহা ও কয়লার দাম বেড়ে চললেও সেই তুলনায় চাপাতি, ছুরি, দাঁ-বটি সহ কামার শিল্পের পণ্যের দাম বাড়েনি। ফলে কামার সমপ্রদায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে পৈতৃক পেশা পরিবর্তন করছে। কোটচাঁদপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার সাবদারপুর, এলাঙ্গী, বলুহর, কুশনা ও দোড়া ইউনিয়নে প্রায় দুই শতাধিক কামার পরিবারের বসবাস। আসন্ন কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে তাদের পেশায় এসেছে ব্যস্ততা। তাদের হাঁপর হাঁতুড়ি পেটার টুং-টাং শব্দে মুখর কামারশালাগুলো। কামার সমপ্রদায়ের কারিগরদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। অথচ তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। পৌর এলাকার সরকারি কলেজ রোডের স্বপন কর্মকার জানান, তার স্বর্গীয় পিতা জিতেন কর্মকারের হাত ধরেই তার এ পেশায় আসা। তবে তার দুই সন্তান এ পেশায় আসুক তা তিনি চান না। এ পেশার প্রতি তার এ অবজ্ঞা থেকে ছেলে দুটিকে তিনি লেখাপড়া করাচ্ছেন। ফুলবাড়ি গ্রামের সন্তোষ কর্মকার জানান, কামার শিল্পের অতি প্রয়োজনীয় কয়লা, লোহা ও ফাইলের দাম দিনে দিনে বেড়েই চলেছে। অথচ তাদের উৎপাদিত পণ্যের দাম আগের মতোই রয়ে গেছে। এতে তারা আর্থিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে এ শিল্পকে টেকসই করে গড়ে তোলা সম্ভব বলে তারা মনে করেন।
No comments