একজন লোধা এবং ক্রসফায়ার by সাজেদুল হক
কৌশল হয়তো বদলাচ্ছে। সংখ্যা নিয়েও বিতর্ক আছে। নামে আছে ভিন্নতা। তবে গল্প একই। মৌলিক অধিকারের মধ্যে সবচেয়ে মৌলিক বেঁচে থাকার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন আদম সন্তান। কেউ মারা যাচ্ছেন ‘বন্দুকযুদ্ধে’, কেউ ‘ক্রসফায়ারে’। কেউ আবার হঠাৎ হঠাৎ উধাও হয়ে যাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক আইন যাকে অভিহিত করছে গুম বলে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অবশ্য এ নামে আপত্তি। নাম যাই হোক বাংলাদেশে গত ১৪ বছর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিদ্যমান বাস্তবতা অস্বীকারের জো নেই। এটাও হয়তো সত্য শুরুর দিকে এই ধরনের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। যদিও জাতির কোন কোন বিবেক সে সময়ও এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। কারণ বিচার পাওয়ার অধিকার সবচেয়ে জঘন্য অপরাধীরও রয়েছে। সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেয়া হয়েছে, ‘ফৌজদারি অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচার লাভের অধিকারী হইবেন।’ তবে বাংলাদেশে সে অধিকার এখন ভূলুণ্ঠিত। নানা তকমা দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কেড়ে নিচ্ছে জীবন। বাংলাদেশের হাইকোর্টে গত আট বছরে এ নিয়ে বেশকিছু রিট দায়ের করা হয়েছে। অন্তত ছয়টি রিটে হাইকোর্ট রুলও জারি করে। কিন্তু একটি রুলেরও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। কোন আইনি দিকনির্দেশনাও আসেনি আদালতের তরফে। অথচ একই ধরনের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার ঐতিহাসিক নির্দেশনা দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি আর এম লোধা ও বিচারপতি রোহিন্তন নরিমানের বেঞ্চ সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছে, কোন ব্যক্তি অপরাধমূলক কাজ করলেও তার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। সংঘর্ষের নাম করে তাদের মেরে ফেলা যায় না। এনকাউন্টারের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড রোধে একগুচ্ছ নির্দেশনাও জারি করে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। এপ্রিল মাসের শেষদিকে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিচারপতি রাজেন্দ্র মাল লোধা। তিনি আর এম লোধা নামেই পরিচিত। চলতি মাসেই অবসরে যাবেন তিনি। তবে এ স্বল্প মেয়াদেই মানবাধিকার আর গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার পক্ষে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন এই প্রধান বিচারপতি। ২০ বছরেরও বেশি সময় বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে ১৯৭৩ সালে রাজস্থান হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে শুরু করেছিলেন কর্মজীবনের। গত আগস্টেই বিচারপতি আর এম লোধার নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ রাজনীতিতে দাগি অপরাধীদের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে আদালতের অবস্থান স্পষ্ট করে। একটি জনস্বার্থ মামলার পর্যবেক্ষণে বলা হয়, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে কিংবা মামলা চলছে- এমন ব্যক্তিদের মন্ত্রী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন না বলেই আশা করা যায়। প্রধানমন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে দাগিদের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দেয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে রুলের নিষ্পত্তি নেই: পুলিশি হেফাজতে কথিত সন্ত্রাসী টুন্ডা ইসমাইলের নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০০৬ সালের ২৫শে মে রিট করা হয় হাইকোর্টে। সে সময় হাইকোর্ট রুলও জারি করেছিল। আট বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। এখনও এ রুলের শুনানি শুরু হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমন আরও তিনটি রুল শুনানি ছাড়াই পড়ে আছে। এর মধ্যে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছিল স্বপ্রণোদিত হয়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ২০০৬ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিল মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেছিল। রুলে জানতে চাওয়া হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের জীবনের নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা হবে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আরেকটি রিট আবেদন করা হয় ২০০৯ সালের ২৯শে জুন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও কর্মজীবী নারী যৌথভাবে রিট আবেদনটি করে। ক্রসফায়ার কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিল। এ রুলেরও এখন পর্যন্ত শুনানি শুরু হয়নি। ২০০৯ সালের ১৭ই নভেম্বর বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান ও বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আরেকটি রুল জারি করে। রুলের জবাব দিতে র্যাবের মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র সচিব ও র্যাব ৮-এর তখনকার অধিনায়ককে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল আদালত। ২০১০ সালের ১৪ই নভেম্বর এই রুলের শুনানি শুরুর কথা ছিল। নির্ধারিত দিনে আদালতের কাছে সময় চান এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ক্রসফায়ার বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশ দিয়ে ২০১০ সালের ৩রা জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে আদালত। এরই মধ্যে বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান ও বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়ে যায়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়াও গুম নিয়ে দু’টি রুল হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে রাত সোয়া ১২টায় আশুলিয়ার নবীনগরে হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে নিখোঁজ হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবির নেতা আল মুকাদ্দাস ও মুহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ। তাদেরকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে দাবি করে তাদের পরিবারের সদস্যরা হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট দায়ের করেন। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি আদালত এ নিয়ে রুল জারি করেছিল। বিচারপতি মো. আবদুল আউয়াল এবং বিচারপতি আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুলটির শুনানি শুরু হয়। র্যাবের মহাপরিচালক হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানান, সংস্থাটি মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহকে আটক করেনি। তবে র্যাব মহাপরিচালকের এ জবাবে হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট তলব করেছিল। তদন্ত কর্মকর্তার জবাবও হাইকোর্টকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। পরে আইজিপিকে তলব করে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই আদেশে বলা হয়, ‘আদালতের আদেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেস ডায়েরিসহ আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কেস ডায়েরি দেখে তদন্ত সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ কিছু পাওয়া যায়নি। রিটের শুনানিতে উঠে এসেছে যে, অভিযোগে বর্ণিত র্যাব সদস্যদের দ্বারা দুই ব্যক্তিকে অপহরণের কিছু সময় আগে তারা মোবাইল ফোনে অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। মোবাইল ফোন কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তারা কাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তাদের নাম-ঠিকানা দেয়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তদন্ত কর্মকর্তা ওই ব্যক্তিদের যাচাই করেননি এবং কি বিষয়ে তারা কথা বলেছেন, তা-ও জানার চেষ্টা করেননি। রিট আবেদনকারীদের অভিযোগ, র্যাব সদস্যরা তাদের দুই স্বজনকে আটক করে রেখেছে। আমরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি তাদের উদ্ধারে র্যাব ক্যাম্পে গিয়েছেন কিনা। তদন্ত কর্মকর্তা এ প্রশ্নে চুপ ছিলেন। তদন্তের অগ্রগতি শোচনীয়। এ অবস্থায় তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া জানার জন্য আইজিপির হাজির হওয়া প্রয়োজন।’ কিন্তু পরে হাইকোর্টের এ আদেশ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি স্থগিত করে দেন। এ কারণে আইজিপিকে আর হাজির হতে হয়নি। এখনও এ রুলটিরও নিষ্পত্তি হয়নি। সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯শে এপ্রিল বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে হাজির করা নিয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। ইলিয়াসের স্ত্রীর দায়ের করা এক হেবিয়াস কর্পাস রিটে হাইকোর্ট ওই রুল জারি করেছিল। এ রুলটিও এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে রুলের নিষ্পত্তি নেই: পুলিশি হেফাজতে কথিত সন্ত্রাসী টুন্ডা ইসমাইলের নিহত হওয়ার ঘটনায় ২০০৬ সালের ২৫শে মে রিট করা হয় হাইকোর্টে। সে সময় হাইকোর্ট রুলও জারি করেছিল। আট বছরের বেশি সময় পার হয়েছে। এখনও এ রুলের শুনানি শুরু হয়নি। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে এমন আরও তিনটি রুল শুনানি ছাড়াই পড়ে আছে। এর মধ্যে হাইকোর্ট একটি রুল জারি করেছিল স্বপ্রণোদিত হয়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ২০০৬ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিল মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন এবং বিচারপতি মামনুন রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ রুল জারি করেছিল। রুলে জানতে চাওয়া হয়েছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের জীবনের নিরাপত্তা কেন নিশ্চিত করা হবে না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আরেকটি রিট আবেদন করা হয় ২০০৯ সালের ২৯শে জুন। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও কর্মজীবী নারী যৌথভাবে রিট আবেদনটি করে। ক্রসফায়ার কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছিল। এ রুলেরও এখন পর্যন্ত শুনানি শুরু হয়নি। ২০০৯ সালের ১৭ই নভেম্বর বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান ও বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে আরেকটি রুল জারি করে। রুলের জবাব দিতে র্যাবের মহাপরিচালক, স্বরাষ্ট্র সচিব ও র্যাব ৮-এর তখনকার অধিনায়ককে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল আদালত। ২০১০ সালের ১৪ই নভেম্বর এই রুলের শুনানি শুরুর কথা ছিল। নির্ধারিত দিনে আদালতের কাছে সময় চান এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। ক্রসফায়ার বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশ দিয়ে ২০১০ সালের ৩রা জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করে আদালত। এরই মধ্যে বিচারপতি এএফএম আবদুর রহমান ও বিচারপতি মো. ইমদাদুল হক আজাদের বেঞ্চের এখতিয়ার পরিবর্তন হয়ে যায়। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ছাড়াও গুম নিয়ে দু’টি রুল হাইকোর্টে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। ২০১২ সালের ৪ঠা ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে রাত সোয়া ১২টায় আশুলিয়ার নবীনগরে হানিফ পরিবহনের একটি বাস থেকে নিখোঁজ হন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রশিবির নেতা আল মুকাদ্দাস ও মুহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ। তাদেরকে র্যাব গ্রেপ্তার করেছে দাবি করে তাদের পরিবারের সদস্যরা হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট দায়ের করেন। গত ১৫ই ফেব্রুয়ারি আদালত এ নিয়ে রুল জারি করেছিল। বিচারপতি মো. আবদুল আউয়াল এবং বিচারপতি আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুলটির শুনানি শুরু হয়। র্যাবের মহাপরিচালক হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানান, সংস্থাটি মুকাদ্দাস ও ওয়ালিউল্লাহকে আটক করেনি। তবে র্যাব মহাপরিচালকের এ জবাবে হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়নি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট তলব করেছিল। তদন্ত কর্মকর্তার জবাবও হাইকোর্টকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। পরে আইজিপিকে তলব করে আদেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। ওই আদেশে বলা হয়, ‘আদালতের আদেশ অনুযায়ী মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কেস ডায়েরিসহ আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কেস ডায়েরি দেখে তদন্ত সম্পর্কে তাৎপর্যপূর্ণ কিছু পাওয়া যায়নি। রিটের শুনানিতে উঠে এসেছে যে, অভিযোগে বর্ণিত র্যাব সদস্যদের দ্বারা দুই ব্যক্তিকে অপহরণের কিছু সময় আগে তারা মোবাইল ফোনে অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। মোবাইল ফোন কোম্পানিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল তারা কাদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তাদের নাম-ঠিকানা দেয়ার জন্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তদন্ত কর্মকর্তা ওই ব্যক্তিদের যাচাই করেননি এবং কি বিষয়ে তারা কথা বলেছেন, তা-ও জানার চেষ্টা করেননি। রিট আবেদনকারীদের অভিযোগ, র্যাব সদস্যরা তাদের দুই স্বজনকে আটক করে রেখেছে। আমরা তদন্ত কর্মকর্তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি তাদের উদ্ধারে র্যাব ক্যাম্পে গিয়েছেন কিনা। তদন্ত কর্মকর্তা এ প্রশ্নে চুপ ছিলেন। তদন্তের অগ্রগতি শোচনীয়। এ অবস্থায় তদন্তের পুরো প্রক্রিয়া জানার জন্য আইজিপির হাজির হওয়া প্রয়োজন।’ কিন্তু পরে হাইকোর্টের এ আদেশ আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি স্থগিত করে দেন। এ কারণে আইজিপিকে আর হাজির হতে হয়নি। এখনও এ রুলটিরও নিষ্পত্তি হয়নি। সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৯শে এপ্রিল বিএনপির নিখোঁজ সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীকে হাজির করা নিয়ে রুল জারি করে হাইকোর্ট। ইলিয়াসের স্ত্রীর দায়ের করা এক হেবিয়াস কর্পাস রিটে হাইকোর্ট ওই রুল জারি করেছিল। এ রুলটিও এখন পর্যন্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
No comments