থাইল্যান্ডে জরুরি অবস্থা জারি
থাইল্যান্ডের
রাজধানী ব্যাংকক ও পার্শ্ববর্তী প্রদেশগুলোতে ৬০ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা
করেছে দেশটির সরকার। আজ থেকে জরুরি অবস্থা কার্যকর হওয়ার ঘোষণা দিয়েছে
কর্তৃপক্ষ।
চলমান অস্থিরতা মোকাবিলা করার জন্য সরকার এ
সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি করার ফলে সরকার উত্তেজনাপূর্ণ
পরিস্থিতি মোকাবিলায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার সুযোগ পাবে। প্রধানমন্ত্রী
ইংলাক সিনাওয়াত্রাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার জন্য সরকারবিরোধী
বিক্ষোভকারীরা রাজধানী ব্যাংককের বেশ কিছু স্থান অবরোধ করে রেখেছে। সুথেপ
থাউগসুবানের নেতৃত্বে তারা ব্যাংকক শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছে। অবস্থান
নিয়েছে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে। বিরোধীদের অভিযোগ ইংলাকের সরকার মূলত
পরোক্ষভাবে পরিচালনা করছে নির্বাসিত সাবেক নেতা ও তার ভাই থাকসিন
সিনাওয়াত্রা। ইংলাক বিরোধীদের পদত্যাগ দাবি প্রত্যাখ্যান করে ২রা
ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের ডাক দিয়েছে। গতকাল ক্যাবিনেটের বৈঠকের পর জরুরি
অবস্থা জারি করার ঘোষণা দেয়া হয়। প্রাথমিকভাবে বিরোধীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি
শান্তিপূর্ণ থাকলেও এ সপ্তাহে পরপর দুবার সমাবেশে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা
ঘটে। রোববারের গ্রেনেড হামলায় আহত হয় কমপক্ষে ২৮ জন। পরিস্থিতি ক্রমে সহিংস
রূপ নেয়ার কারণেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। উপ-প্রধানমন্ত্রী
সুরাপং তোভিচাকচাইকুল বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আইন প্রয়োগ
করার জন্য জরুরি অধ্যাদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্যাবিনেট। জরুরি
অধ্যাদেশের অধীনে সরকার চাইলে মিডিয়ার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করতে পারবে,
নিষিদ্ধ করতে পারবে জনসমাবেশ। প্রয়োজনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই আটক করতে
পারবে সন্দেহভাজন যে কাউকে। সাধারণত পুলিশ ও সেনাবাহিনী জরুরি অবস্থা
প্রয়োগ করে থাকে। তবে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত পুলিশকে
মুখোমুখি অবস্থানে যাওয়া থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছিল। আর সেনা কমান্ডাররা
স্পষ্ট জানিয়েছিলেন তারা সরকার ও সরকারবিরোধীদের মধ্যকার তিক্ত দ্বন্দ্বের
অংশ হতে চান না। জরুরি অধ্যাদেশ প্রয়োগের বিষয়টি তত্ত্বাবধান করবেন
শ্রমমন্ত্রী শার্লেম ইউবামরাং। তিনি বলেন, থাইল্যান্ড আন্তর্জাতিক
মানদণ্ডের অধীনেই পদক্ষেপ নেবে। কোন প্রকার বল প্রয়োগ করা হবে না বলে তিনি
আশ্বাস দেন। বিরোধীদের ছত্রভঙ্গ করার কোন পরিকল্পনা এখনও সরকারের নেই বলে
তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, আমরা এখনও কারফিউর ঘোষণা দেই নি। জাতীয়
নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান প্যারাদর্ন পাত্তানাতাবুত’কে উদ্ধৃতি দিয়ে
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে সমাবেশ কর্মসূচির মোকাবিলা করার
জন্য যথেষ্ট পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সম্ভবত
বিরোধীদের প্রতিবাদ কর্মসূচি নিষিদ্ধ করার ক্ষেত্রে জরুরি অধ্যাদেশ ব্যবহার
করা হতে পারে। উল্লেখ্য, ঘোষিত নির্বাচনের তারিখ জরুরি অবস্থার সময়সীমার
মধ্যে পড়ে। নির্বাচন অনুষ্ঠান করার মতো শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আদৌ আছে কিনা সে
বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
No comments