আন্দোলন দমনে জরুরি অবস্থা!
থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নেতা সুথেপ থাগসুবান গতকাল ব্যাংককের কেন্দ্রস্থলে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন। রয়টার্স |
থাইল্যান্ডে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন বন্ধে জরুরি অবস্থা ঘোষণার কথা ‘সক্রিয়ভাবে’ বিবেচনা করছে সরকার। গতকাল সোমবার থাইল্যান্ডের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান পারাধর্ন পাত্তানতাবুতর এ কথা জানান। থাই উপপ্রধানমন্ত্রীও একই রকম আভাস দিয়েছেন। সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে মনে হলেও দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের অন্তত ১২টি প্রদেশে সরকারি কার্যালয়গুলো অবরোধ করে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। থাই জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রধান পারাধর্ন বলেন, ‘আমরা জরুরি আইন জারির বিষয়টি নিয়ে ভাবছি।
সরকার, সামরিক বাহিনী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সবাই জরুরি আইন জারির বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।’ প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার সঙ্গে বৈঠকের পরই পারাধর্ন এ কথা জানান। পারাধর্ন বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তাঁরা বিভিন্ন স্থানে সরকারি কার্যালয়গুলো বন্ধ করে দেবেন। তাঁরা বলছেন, এটা প্রতীকী আন্দোলন। কার্যালয়ে ঢুকে অবস্থান নিয়ে আবার ছেড়ে চলে যাবেন। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের এই অবস্থানের পরিবর্তন হলে অর্থাৎ স্থায়ীভাবে কার্যালয় বন্ধ করে দিলে অস্থিরতা বাড়বে। তখন আমরা জরুরি আইনের আশ্রয় নেব।’ জরুরি আইন জারি হলে থাইল্যান্ডের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর ক্ষমতা বাড়বে। সংস্থাগুলো তখন কারফিউ জারি, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের আটক, গণমাধ্যমের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ ও রাজনৈতিক সমাবেশ নিষিদ্ধ করতে পারবে। উপপ্রধানমন্ত্রী সুরাপং টোভিস্কাচাইকুল গতকাল বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা বাড়ানোর জন্য জরুরি আইন জারি করা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না, আরও সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হোক।’
সরকারি কর্মকর্তারা জানান, দক্ষিণাঞ্চলে সরকারবিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ১২টি প্রদেশে সরকারি কার্যালয়গুলো অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয়ে ঢুকতেও বাধা দেওয়া হচ্ছে। সেন্টার ফর অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব পিস অ্যান্ড অর্ডারের মুখপাত্র আনুচা রোমায়ানান বলেন, বিক্ষোভকারীরা তাঁদের কার্যালয়ের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন। কার্যালয়ের বাইরে থেকে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ভেতরে অবস্থানরত কর্মীদের বেরিয়ে যাওয়ারও আহ্বান জানাচ্ছেন বিক্ষোভকারীরা। গত শুক্র ও রোববার সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশে গ্রেনেড বিস্ফোরণে একজন নিহত ও অনেকেই আহত হন। থাই প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রার পদত্যাগের দাবিতে প্রায় দুই মাস ধরে আন্দোলন করছেন সরকারবিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, ইংলাক তাঁর ভাই ২০০৬ সালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার ওপর নির্ভর করেই দেশ পরিচালনা করছেন। ফলে দুর্নীতি বেড়ে গেছে। এএফপি।
No comments