সালমান-ক্যাটরিনার সফল ঈদ
একটাই কথা। একটাই সুর। বলিউড এখন শুনছে বাঘের গর্জন। প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক থেকে টেলিভিশন সাংবাদিক, রেডিও জকি, ওয়েবসাইট, ফেসবুক, টুইটার থেকে চায়ের কাপ—সবার একটাই আলোচনার বিষয়—সালমান ‘টাইগার’ খান। কেউ কেউ আবার এই উন্মাদনার নাম দিচ্ছেন ‘সালম্যানিয়া’।
সালমান-ক্যাটরিনা জুটির নতুন ছবি এক থা টাইগার হ্যারিকেনের মতো তাণ্ডব রচনা করেছে বলিউডে। আরাধ্য ‘ব্লকবাস্টার হিট’ শব্দ দুটিও ফিকে মনে হবে এই ছবির সাফল্যের পাশে। সালমানের এই ছবির কারণে এ সপ্তাহে মুক্তি পাওয়া বানসালির শিরি ফরহাদ কি তো নিকাল পাড়ি ছবির ভাগ্যে জুটেছে অমাবস্যার অন্ধকার। ছবির মান ভালো হওয়ার পরও ফারাহ খান-বোমান ইরানিকে দেখতে কাকপক্ষীও যাচ্ছে না থিয়েটারে। সবাই এখন ‘মাশাল্লাহ মাশাল্লাহ’ গানের তালে তালে সালমান-ক্যাটরিনার জাদু উপভোগ করতে ব্যস্ত। সালম্যানিয়ার উত্তাপ এখন এতটাই বেশি, প্রযোজকেরা ব্ল্যাংক চেক নিয়ে ধরনা দিচ্ছেন খান সাহেবের বাড়িতে। এর মধ্যে প্রযোজক সুভাষ ঘাই, সাজিদ নাদিয়াদওয়ালা, রমেশ তৌরানি—তিন পরিচালক তাঁদের পরবর্তী ছবিতে ১০০ কোটি রুপি পারিশ্রমিকেরও প্রস্তাব দিয়ে এসেছেন সালমানকে। এর মধ্যে একটি ছবিও যদি সালমান সই করেন, তবে তিনিই হবেন উপমহাদেশের একমাত্র অভিনেতা, যাঁর পারিশ্রমিক ছবি পিছু ১০০ কোটি রুপি! ৩০ কোটি থেকে ১০০ কোটি রুপির এই উত্থান যশরাজ ফিল্মসের এক থা টাইগার-এর বদৌলতেই। যদিও এর আগে ওয়ান্টেড, দাবাং, রেডি, বডিগার্ডও রেকর্ড ভাঙচুর করে দিয়েছিল; তবে টাইগারের গর্জন সালমানের আগের ছবিগুলো থেকে কয়েক গুণ বেশি। প্রথম দিনেই এক থা টাইগার ভেঙে দিয়েছে সর্বকালের সব হিসাব-নিকাশ। এর আগে প্রথম দিনে সবচেয়ে বেশি ব্যবসার রেকর্ড গড়েছিল সালমানেরই বডিগার্ড (২২ কোটি রুপি)। এক থা টাইগার-এর প্রথম দিনের আয় ৩১ কোটি রুপি! হিন্দি ছবির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবি বডিগার্ড শুধু ভারত থেকে তিন মাসে আয় করেছিল ১৪৮ কোটি রুপি! এক থা টাইগার্ল-এর মাত্র নয় দিনে আয় ১৫৫ কোটি। এভাবে চলতে থাকলে হিন্দি ছবির সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি থ্রি ইডিয়টস-এর ২০২ কোটি রুপির ভারত থেকে আয়ের রেকর্ডও ছুঁয়ে ফেলবে সালমানের টাইগার। থ্রি ইডিয়টস অবশ্য বহির্বিশ্ব এবং অন্যান্য সব স্বত্ব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আয় করেছে ৩৭৬ কোটি রুপি। এক থা টাইগার ১১ দিনে সব মিলিয়ে আয় করেছে ২০২ কোটি ৭৭ লাখ রুপি।
এসব হিসাব-কিতাবের গল্প শোনাতে গেলে সালমান অবশ্য খুব একটা উচ্ছ্বসিত হন না। তাঁর উচ্ছ্বাস অন্যখানে, ‘আমার ভক্তরা আমার ছবির গল্প পছন্দ করেছে; আমার অভিনয়, ক্যাটরিনার সঙ্গে আমার জুটি পছন্দ করেছে—এটাই আমার জন্য আনন্দের বিষয়। বৈষয়িক রুপি-ডলারের গল্প শুনতে আমার ভালো লাগে না।’ কিন্তু প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন আসেই। সালমানের একের পর এক ছবি যে রেকর্ড ভাঙচুর করে চলেছে, কারণ কী? ২০০৯-এর আগে তো সালমানের অসংখ্য ছবি ফ্লপ হয়েছে। হঠাৎ দর্শক তাঁকে এতটা পছন্দ করছে কেন? ‘কারণটা খুবই সহজ। আমি আগে অন্যের অনুরোধে, আবেগি হয়ে, বন্ধুবান্ধবের দিকে তাকিয়ে অনেক ছবি করেছি। অনেক ছবিতে না বুঝে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছি। তবে এখন থেকে আমি শুধু দর্শকের কথা ভাবি। দর্শক আমাকে কোন ধরনের চরিত্রে চায়, আমি এখন দর্শকের শিরা-উপশিরা ধরতে পারি। যুবরাজ, মিস্টার ঔর মিসেস খান্না, কিউকি, দিল নে জিসে আপনা কাহা—এসব ছবিতে আমি শুধু দর্শকদের ত্যক্ত করেছি। কিন্তু দর্শক আমার রোম্যান্টিক চরিত্র আর দেখতে চায় না। অ্যাকশন হিরো হিসেবে আমি তাদের বেশি পছন্দ। তাই আমি এখন প্রতিটি ছবিতেই নিত্যনতুন অ্যাকশন রাখার চেষ্টা করি।’ নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে চুরমার করছেন সালমান। গর্ব হয় না? সালমান বলেন, ‘গর্ব হতো, যদি চাঁদে যেতাম কিংবা দুরারোগ্য জটিল ক্যানসারের কোনো চিকিৎসা আবিষ্কার করতাম। টলমলে শোবিজ ওয়ার্ল্ডে কোনো কিছু নিয়েই বেশি উচ্ছ্বাস কিংবা হতাশা দেখানোর কিছু নেই। সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী।’
ক্যাটরিনা কাইফ এই প্রথম সালমানের বিপরীতে বড় মাপের সাফল্য পেলেন। তার চেয়েও বড় কথা, ক্যাটরিনার প্রথম কোনো ছবি ১০০ কোটির ওপর ব্যবসা করল। সালমানকে নিশ্চয়ই এর কৃতিত্ব দেবেন ক্যাট? ‘সালমান না থাকলে আমার কিছুই হতো না—এ কথা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ভাগ্যই আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। সালমান তো জেরিন খান, স্নেহা উল্লালকেও অনেক সহযোগিতা করেছেন। কই, তাঁরা তো কিছুই করতে পারেননি। এটা ঠিক, প্রত্যেকের ক্যারিয়ারের শুরুতেই একজন পিলারের প্রয়োজন হয়। সালমান ছিলেন আমার সেই পিলার। তবে আমি অভিনয় শেখা এবং অভিনয় উপভোগ করাটা শিখেছি অক্ষয় কুমারের কাছ থেকে। শুধু সালমান-অক্ষয়ই বা কেন, প্রতিটি ছবি থেকে শিখে-পড়েই আমি আজকের অবস্থানে এসেছি। ভুলে যাবেন না, এর জন্য আমাকে দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। ভাষা শিখতে হয়েছে। হিন্দি ছবির নায়িকাদের মতো বডি ল্যাংগুয়েজ রপ্ত করতে হয়েছে। ফিল্মি নাচ শিখতে হয়েছে। এক থা টাইগার-এর জন্য নিজের স্টান্ট নিজেই করেছি। অ্যাকশনও শিখতে হয়েছে।’
সালমান-ক্যাটরিনা দুজনই মুসলিম। তাঁরা বলেন, এক থা টাইগার ছিল ঈদে ভক্তদের জন্য তাঁদের উপহার। আগামী বছর ঈদেও সালমান আসছেন শের খান নিয়ে, ক্যাটরিনা আসবেন ধুম থ্রি নিয়ে। তখন অবশ্য জমবে অন্য লড়াই, হবে অন্য গল্প।
রুম্মান রশীদ খান
পিটিআই, হিন্দুস্তান টাইমস, রেডিফ, মিড ডে, বলিউড হাঙ্গামা, বক্স অফিস ইন্ডিয়া, বিজন্যাস অব সিনেমা ডটকম অবলম্বনে
এসব হিসাব-কিতাবের গল্প শোনাতে গেলে সালমান অবশ্য খুব একটা উচ্ছ্বসিত হন না। তাঁর উচ্ছ্বাস অন্যখানে, ‘আমার ভক্তরা আমার ছবির গল্প পছন্দ করেছে; আমার অভিনয়, ক্যাটরিনার সঙ্গে আমার জুটি পছন্দ করেছে—এটাই আমার জন্য আনন্দের বিষয়। বৈষয়িক রুপি-ডলারের গল্প শুনতে আমার ভালো লাগে না।’ কিন্তু প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন আসেই। সালমানের একের পর এক ছবি যে রেকর্ড ভাঙচুর করে চলেছে, কারণ কী? ২০০৯-এর আগে তো সালমানের অসংখ্য ছবি ফ্লপ হয়েছে। হঠাৎ দর্শক তাঁকে এতটা পছন্দ করছে কেন? ‘কারণটা খুবই সহজ। আমি আগে অন্যের অনুরোধে, আবেগি হয়ে, বন্ধুবান্ধবের দিকে তাকিয়ে অনেক ছবি করেছি। অনেক ছবিতে না বুঝে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেছি। তবে এখন থেকে আমি শুধু দর্শকের কথা ভাবি। দর্শক আমাকে কোন ধরনের চরিত্রে চায়, আমি এখন দর্শকের শিরা-উপশিরা ধরতে পারি। যুবরাজ, মিস্টার ঔর মিসেস খান্না, কিউকি, দিল নে জিসে আপনা কাহা—এসব ছবিতে আমি শুধু দর্শকদের ত্যক্ত করেছি। কিন্তু দর্শক আমার রোম্যান্টিক চরিত্র আর দেখতে চায় না। অ্যাকশন হিরো হিসেবে আমি তাদের বেশি পছন্দ। তাই আমি এখন প্রতিটি ছবিতেই নিত্যনতুন অ্যাকশন রাখার চেষ্টা করি।’ নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে চুরমার করছেন সালমান। গর্ব হয় না? সালমান বলেন, ‘গর্ব হতো, যদি চাঁদে যেতাম কিংবা দুরারোগ্য জটিল ক্যানসারের কোনো চিকিৎসা আবিষ্কার করতাম। টলমলে শোবিজ ওয়ার্ল্ডে কোনো কিছু নিয়েই বেশি উচ্ছ্বাস কিংবা হতাশা দেখানোর কিছু নেই। সবকিছুই ক্ষণস্থায়ী।’
ক্যাটরিনা কাইফ এই প্রথম সালমানের বিপরীতে বড় মাপের সাফল্য পেলেন। তার চেয়েও বড় কথা, ক্যাটরিনার প্রথম কোনো ছবি ১০০ কোটির ওপর ব্যবসা করল। সালমানকে নিশ্চয়ই এর কৃতিত্ব দেবেন ক্যাট? ‘সালমান না থাকলে আমার কিছুই হতো না—এ কথা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ভাগ্যই আমাকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। সালমান তো জেরিন খান, স্নেহা উল্লালকেও অনেক সহযোগিতা করেছেন। কই, তাঁরা তো কিছুই করতে পারেননি। এটা ঠিক, প্রত্যেকের ক্যারিয়ারের শুরুতেই একজন পিলারের প্রয়োজন হয়। সালমান ছিলেন আমার সেই পিলার। তবে আমি অভিনয় শেখা এবং অভিনয় উপভোগ করাটা শিখেছি অক্ষয় কুমারের কাছ থেকে। শুধু সালমান-অক্ষয়ই বা কেন, প্রতিটি ছবি থেকে শিখে-পড়েই আমি আজকের অবস্থানে এসেছি। ভুলে যাবেন না, এর জন্য আমাকে দিন-রাত কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। ভাষা শিখতে হয়েছে। হিন্দি ছবির নায়িকাদের মতো বডি ল্যাংগুয়েজ রপ্ত করতে হয়েছে। ফিল্মি নাচ শিখতে হয়েছে। এক থা টাইগার-এর জন্য নিজের স্টান্ট নিজেই করেছি। অ্যাকশনও শিখতে হয়েছে।’
সালমান-ক্যাটরিনা দুজনই মুসলিম। তাঁরা বলেন, এক থা টাইগার ছিল ঈদে ভক্তদের জন্য তাঁদের উপহার। আগামী বছর ঈদেও সালমান আসছেন শের খান নিয়ে, ক্যাটরিনা আসবেন ধুম থ্রি নিয়ে। তখন অবশ্য জমবে অন্য লড়াই, হবে অন্য গল্প।
রুম্মান রশীদ খান
পিটিআই, হিন্দুস্তান টাইমস, রেডিফ, মিড ডে, বলিউড হাঙ্গামা, বক্স অফিস ইন্ডিয়া, বিজন্যাস অব সিনেমা ডটকম অবলম্বনে
No comments