কানাডায় এক বছর by মোঃ মোতাহের খালেদ
অভিবাসন প্রক্রিয়া শেষ হতে লেগেছিল মাত্র কয়েক মাস (২০০৮ ফেব্রুয়ারির পর নতুন আইনের আওতায়)। আনন্দ, শঙ্কা, প্রত্যাশার দোলায় দুলতে দুলতে শেষমেশ ৯ এপ্রিল ২০১০-এ পা রাখলাম কানাডায়। এখানে আসার আগে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতাকে মানদণ্ড ধরে ক্যাটাগরি ৪১৩১-এর আওতায় সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
স্বভাবতই প্রত্যাশা ছিল, এসেই মানসম্মত চাকরি পেতে কোনো বেগ পেতে হবে না, অন্তত আমার স্ত্রী কিছু একটা জোগাড় করে নিতে পারবে। কিন্তু দিন গড়াতে থাকল আর বাস্তবতা তার রূঢ় রূপ নিয়ে হাজির হলো সামনে। বুঝতে পারলাম, সময় লাগবে। গত এক বছর ধরে কী পড়ব, কোথায় পড়ব, কী কাজ করব_ এসব ভাবতেই সময় চলে গেল। রাস্তাঘাট চেনা ছাড়া করা হয়নি কিছুই। এরই ফাঁকে আত্মীয়-স্বজনের গাড়িতে ও বাস-সাবওয়ে ধরে অনেক জায়গা ঘুরে ফেলেছি। নিজের গাড়ি না থাকলেও হাইওয়েগুলো চেনা হয়ে গেছে। মেট্রোপাস থাকার সুবাদে টরন্টোর এমাথা থেকে ওমাথা, অর্থাৎ সাবওয়েতে কিপলিং থেকে ম্যাককাওয়ান আর ফিঞ্চ থেকে ডাউনসভিউ খামাখা ঘুরে বেড়িয়েছি। যেখানে ইচ্ছা নেমে আবারও সাবওয়ে বা বাস ধরে অনির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে রওনা হয়েছি, গিয়েছি শেষ স্টপেজ পর্যন্ত। মিসিসাগা, রিচমন্ড হিল, ব্র্যাম্পটন, মার্কহ্যাম, ভন_ সর্বত্রই একাধিকবার যাওয়া হয়েছে।
এদেশের সংস্কৃতির সবচেয়ে যা ভালো লেগেছে তা হলো অন্যকে সহায়তা, বয়স্কদের সম্মান করা, পারস্পরিক বিশ্বাস, দাফতরিক কাজে অহেতুক আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অনুপস্থিতি, অন্যের কথা শোনার ব্যাপারে সীমাহীন ধৈর্য ইত্যাদি। ভালো লাগেনি উচ্চমাত্রার বাড়িভাড়া, চাকরির অনিশ্চয়তা, তথ্য প্রদানের ব্যাপারে অজ্ঞতা অথবা সহজবোধ্য কোনো বিষয়কে অযথা জটিল রূপ দেওয়া বা বুঝতে না পারা, ঠাণ্ডার প্রকোপ, পরম খামখেয়ালি আবহাওয়া ইত্যাদি।
প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সবুজ-শ্যামলিমা ছেড়ে কানাডায় আর দু'দিন পরই আমার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। ক'দিন আগে পার হয়ে আসা জন্মদিনের কথাই ভুলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কেন যেন এ তারিখটি আমার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে আছে। সম্ভবত এর সঙ্গে দেশ ছেড়ে আসার স্মৃতি জড়িয়ে আছে বলেই ভুলিনি। ইদানীং কর্তৃত্ব হারাচ্ছে বলেই হয়তোবা বিদায়ী শীতের দিনগুলো কেমন যেন মুখ গোমড়া করে থাকে, কখনও মেঘ কখনওবা সূর্য আর বাতাসের দাপট তো আছেই। গৃহকাতরতা বাড়ছে, মনে পড়ছে বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজন সর্বোপরি প্রিয় মাটির কথা। বলে রাখা ভালো, বছর ঘোরার আগেই একটি পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্সে আমার ভর্তির সুযোগ হয়েছে, আর হুট করে গত ৪ এপ্রিল একটা রিসার্চ সেন্টারে চাকরিও হয়ে গেছে, আজ থেকে প্রশিক্ষণ।
হ প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, ল্যাংগুয়েজ ডিপার্টমেন্ট
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
kmdmotaher@yahoo.com
এদেশের সংস্কৃতির সবচেয়ে যা ভালো লেগেছে তা হলো অন্যকে সহায়তা, বয়স্কদের সম্মান করা, পারস্পরিক বিশ্বাস, দাফতরিক কাজে অহেতুক আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অনুপস্থিতি, অন্যের কথা শোনার ব্যাপারে সীমাহীন ধৈর্য ইত্যাদি। ভালো লাগেনি উচ্চমাত্রার বাড়িভাড়া, চাকরির অনিশ্চয়তা, তথ্য প্রদানের ব্যাপারে অজ্ঞতা অথবা সহজবোধ্য কোনো বিষয়কে অযথা জটিল রূপ দেওয়া বা বুঝতে না পারা, ঠাণ্ডার প্রকোপ, পরম খামখেয়ালি আবহাওয়া ইত্যাদি।
প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের সবুজ-শ্যামলিমা ছেড়ে কানাডায় আর দু'দিন পরই আমার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান। ক'দিন আগে পার হয়ে আসা জন্মদিনের কথাই ভুলে গিয়েছিলাম, কিন্তু কেন যেন এ তারিখটি আমার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে আছে। সম্ভবত এর সঙ্গে দেশ ছেড়ে আসার স্মৃতি জড়িয়ে আছে বলেই ভুলিনি। ইদানীং কর্তৃত্ব হারাচ্ছে বলেই হয়তোবা বিদায়ী শীতের দিনগুলো কেমন যেন মুখ গোমড়া করে থাকে, কখনও মেঘ কখনওবা সূর্য আর বাতাসের দাপট তো আছেই। গৃহকাতরতা বাড়ছে, মনে পড়ছে বাবা-মা, আত্মীয়-পরিজন সর্বোপরি প্রিয় মাটির কথা। বলে রাখা ভালো, বছর ঘোরার আগেই একটি পোস্টগ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা কোর্সে আমার ভর্তির সুযোগ হয়েছে, আর হুট করে গত ৪ এপ্রিল একটা রিসার্চ সেন্টারে চাকরিও হয়ে গেছে, আজ থেকে প্রশিক্ষণ।
হ প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান, ল্যাংগুয়েজ ডিপার্টমেন্ট
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ
kmdmotaher@yahoo.com
No comments