ঈশ্বরগঞ্জে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস-স্কুল ভবন নির্মাণে বিলম্ব কেন?

দেশের একটি পুরনো বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুল ঘরের অভাবে এখন খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে। এ জন্য শিক্ষকদেরও শিক্ষার্থীদের পাঠদান করতে গিয়ে অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কিন্তু এরপরও গৌরীপুর-ঈশ্বরগঞ্জ সড়কের পাশে অবস্থিত সোহাগী ইউনিয়নের তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির বিগত শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে।


সমকালের গত শুক্রবারের লোকালয় পাতায় প্রকাশিত এ সম্পর্কিত রিপোর্টটিতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের বই, খাতা, কলমের সঙ্গে প্রতিদিন পাঠ নেওয়ার জন্য বস্তা, চট, পুরনো পত্রিকা সঙ্গে করে আনা-নেওয়া করতে হয় বসার জন্য। দূরের শিক্ষার্থীদের যাত্রার বিড়ম্বনার সঙ্গে এই বাড়তি কষ্ট সত্ত্বেও তাদের শিক্ষার প্রতি অনুরাগ সত্যিই প্রশংসার যোগ্য। অসুবিধা সত্ত্বেও স্কুলটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য শিক্ষকদের আপ্রাণ চেষ্টা ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হতে অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু যাদের স্কুলটির উন্নয়ন ও শিক্ষার অবস্থা পর্যবেক্ষণের কথা, সেই শিক্ষা দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে ঢিলেঢালা ভাব সত্যিই হতাশাজনক। ১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রাথমিক বিদ্যালয়টি একটি নতুন ভবন পায় ১৯৯৪ সালে। কিন্তু সেটি ১৭ বছরের মাথায় এসে এতটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে যে, শিক্ষার্থীদের জন্য এটি মরণফাঁদ হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে যথানিয়মেই নিলামে বিক্রি করে দেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে পুরনো ভবনের স্থলে নতুন ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত ও সে অনুযায়ী ব্যয়-বরাদ্দ এসে যাওয়ার কথা। কিন্তু শিক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নতুন ব্যয়-বরাদ্দের কোনো তথ্য তার জানা নেই। এতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন জাগে, শিক্ষা কর্মকর্তার এ ব্যাপারে কোনো দায়দায়িত্ব কি নেই! আমরা অবিলম্বে ঈশ্বরগঞ্জের তারাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ব্যয়-বরাদ্দ করে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য শিক্ষা বিভাগের প্রতি আহ্বান জানাই। প্রয়োজনে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা উচিত হবে। অনেক স্থানে যেখানে বিদ্যালয় ভবন দাঁড়িয়ে থাকলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও পাসের হার সন্তোষজনক নয়, সেখানে খোলা আকাশের নিচে চার শতাধিক শিক্ষার্থী ক্লাস করেও ভালো ফল করছে_ এটা উৎসাহব্যঞ্জক।

No comments

Powered by Blogger.