এনআইডি-নির্ভর নিরাপত্তা পরিকল্পনা আপাতত বন্ধ-এটি এখনই বাধ্যতামূলক করা যাবে না : ইসি by কাজী হাফিজ
জাতীয় পরিচয়পত্রনির্ভর নানামুখী নিরাপত্তাব্যবস্থা বাস্তবায়নের যেসব পরিকল্পনা রাষ্ট্রের গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরে নিয়ে আসছে, আপাতত সেগুলো হচ্ছে না। আইন মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশন এখনই বাধ্যতামূলকভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্যবহারের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
গতকাল বুধবার এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে নির্বাচন কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে এই মর্মে জানিয়ে দেওয়া হবে, বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা ও সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে এনআইডির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না। দেশের সব নাগরিককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার পরই এ ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। কমিশনের বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ গতকাল এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, আইন অনুসারে সাধারণভাবে দেশের সব নাগরিককে এনআইডি না দেওয়া পর্যন্ত এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রলায়ের এই মতামত নির্বাচন কমিশনকে জানালে কমিশন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দিয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ এ সিদ্ধান্তের ফলে মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি, হুমকি দেওয়া, উত্ত্যক্ত করা- এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডসহ ফোনের নানামুখী অপব্যবহার বন্ধে বিটিআরসির মাধ্যমে বিভিন্ন গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এনআইডিনির্ভর যে পরিকল্পনা নিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা।
কয়েক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটর, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের প্রতিনিধিদের বৈঠক চলছে। গতকাল বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তিন মাস পর থেকে কোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকের পরিচয় ভুয়া হলে বা উপযুক্তভাবে পরিচয় যাচাই না করে কাউকে গ্রাহক করা হলে, ওই অপারেটরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিন মাস পর থেকে মোবাইল ফোনের সিম কিনলেই তা সঙ্গে সঙ্গে চালু করা যাবে না। আগে গ্রাহকের পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। অর্থাৎ উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও 'পোস্ট অ্যাক্টিভেটেড' সিম বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মোবাইল অপারেটরদের এমন একজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এনআইডি যদি বাধ্যতামূলক না হয়, তাহলে গ্রাহকরা তাদের পরিচয় সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য-প্রমাণ দাখিল করবে। সেগুলো সঠিক কি না তা যাচাইয়ে এনআইডির অনলাইন ভেরিফিকেশনের মতো তেমন কোনো সুযোগও নেই। এ পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে গ্রাহক নিবন্ধন আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।'
বিষয়টি সম্পর্কে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এনআইডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক না করা হলে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত অন্য কোনো পরিচয়-প্রমাণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। মোবাইল ফোনের বিষয়টি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গেও সম্পর্কিত। আমরা যদি সঠিক পরিচয় ছাড়া মোবাইল ফোন যে কারো হাতে তুলে দিই, তাহলে কাউকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা যাবে না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে।'
এদিকে উন্নতমানের এনআইডি এবং এ-সংক্রান্ত নির্ভুল ডেটাবেজ ও নেটওয়ার্ক তৈরিতে বিশ্বব্যাংক থেকে ১৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের পুরোটা পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। বিশ্বব্যাংক চলতি বছরের শুরুতে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পরামর্শমতো এ-সংক্রান্ত আইনের সংশোধন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা না হলে তাদের পক্ষে ওই ঋণের টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দুজন শিক্ষকের সহায়তায় 'জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন-২০১০' সংশোধন এবং এ আইনের আওতায় বিধিমালার খসড়া প্রস্তুত করলেও তা বিশ্বব্যাংক পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেনি। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তা সংশোধন করতে পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ এবং ধর্ম পরিচয় সংগ্রহ না করার পরামর্শও রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের পছন্দমতো আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঋণের আংশিক অর্থে প্রকল্পটি কোনো রকমে চালু রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার মো. শাহ নেওয়াজ এ বিষয়ে কালের কণ্ঠকে জানান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় জানায়, আইন অনুসারে সাধারণভাবে দেশের সব নাগরিককে এনআইডি না দেওয়া পর্যন্ত এর ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা যাবে না। অর্থ মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রলায়ের এই মতামত নির্বাচন কমিশনকে জানালে কমিশন বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে চিঠি দিয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
নির্বাচন কমিশনের সর্বশেষ এ সিদ্ধান্তের ফলে মোবাইল ফোনে চাঁদাবাজি, হুমকি দেওয়া, উত্ত্যক্ত করা- এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডসহ ফোনের নানামুখী অপব্যবহার বন্ধে বিটিআরসির মাধ্যমে বিভিন্ন গোয়েন্দা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এনআইডিনির্ভর যে পরিকল্পনা নিয়েছিল, তা বাস্তবায়ন কঠিন হবে বলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধারণা।
কয়েক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটর, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও র্যাবের প্রতিনিধিদের বৈঠক চলছে। গতকাল বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান মো. গিয়াসউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তিন মাস পর থেকে কোনো মোবাইল অপারেটরের গ্রাহকের পরিচয় ভুয়া হলে বা উপযুক্তভাবে পরিচয় যাচাই না করে কাউকে গ্রাহক করা হলে, ওই অপারেটরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিন মাস পর থেকে মোবাইল ফোনের সিম কিনলেই তা সঙ্গে সঙ্গে চালু করা যাবে না। আগে গ্রাহকের পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে। অর্থাৎ উন্নত দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও 'পোস্ট অ্যাক্টিভেটেড' সিম বিক্রির ব্যবস্থা করতে হবে।
ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, মোবাইল অপারেটরদের এমন একজন প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এনআইডি যদি বাধ্যতামূলক না হয়, তাহলে গ্রাহকরা তাদের পরিচয় সম্পর্কে নানা ধরনের তথ্য-প্রমাণ দাখিল করবে। সেগুলো সঠিক কি না তা যাচাইয়ে এনআইডির অনলাইন ভেরিফিকেশনের মতো তেমন কোনো সুযোগও নেই। এ পরিস্থিতিতে সঠিকভাবে গ্রাহক নিবন্ধন আমাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে।'
বিষয়টি সম্পর্কে বিটিআরসি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) জিয়া আহমেদ গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'এনআইডি ব্যবহার বাধ্যতামূলক না করা হলে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত অন্য কোনো পরিচয়-প্রমাণের ব্যবস্থা থাকতে হবে। মোবাইল ফোনের বিষয়টি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার সঙ্গেও সম্পর্কিত। আমরা যদি সঠিক পরিচয় ছাড়া মোবাইল ফোন যে কারো হাতে তুলে দিই, তাহলে কাউকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনা যাবে না। রাষ্ট্রের নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হবে।'
এদিকে উন্নতমানের এনআইডি এবং এ-সংক্রান্ত নির্ভুল ডেটাবেজ ও নেটওয়ার্ক তৈরিতে বিশ্বব্যাংক থেকে ১৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের পুরোটা পাওয়ার বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়। বিশ্বব্যাংক চলতি বছরের শুরুতে নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দিয়েছে, তাদের পরামর্শমতো এ-সংক্রান্ত আইনের সংশোধন ও বিধিমালা প্রণয়ন করা না হলে তাদের পক্ষে ওই ঋণের টাকা দেওয়া সম্ভব হবে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দুজন শিক্ষকের সহায়তায় 'জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন-২০১০' সংশোধন এবং এ আইনের আওতায় বিধিমালার খসড়া প্রস্তুত করলেও তা বিশ্বব্যাংক পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেনি। এ বিষয়ে বিশ্বব্যাংক সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে তা সংশোধন করতে পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসরণ এবং ধর্ম পরিচয় সংগ্রহ না করার পরামর্শও রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্বব্যাংকের পছন্দমতো আইন প্রণয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঋণের আংশিক অর্থে প্রকল্পটি কোনো রকমে চালু রয়েছে।
No comments