ইসলামের দৃষ্টিতে ধূমপান by মাওলানা শাহ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান

ইসলাম সুস্থ বিবেক ও মানসিক উৎকর্ষ নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ করে মস্তিষ্কের বিকৃতি ঘটায়, অর্থের অপচয় হয়। মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয় এমন কোনো দ্রব্য গ্রহণ ইসলামের আদর্শবিরোধী। আল্লাহ মানুষের জন্য যা কল্যাণকর, পবিত্র, উত্তম ও উপাদেয় তা তিনি হালাল করে দিয়েছেন।


আল্লাহপাক বলেছেন_ 'পবিত্র বস্তু থেকে তোমাদের যা জীবিকা হিসেবে দিয়েছি, তোমরা তাহা আহার কর।' (সুরা তাহা-৮১)। মানুষের জন্য যা কল্যাণকর তা গ্রহণ করতেই হবে। আর যা অকল্যাণকর তা বর্জন করতে হবে। এ ধরনের অসংখ্য আদেশ-নিষেধ পবিত্র কোরআনে, হাদিসে থাকা সত্ত্বেও এবং বর্তমান আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণা ফলাফলের নানা বাস্তব উদাহরণ আমাদের সামনে থাকলেও অনেকেই তা মানে না। ধূমপানে কোনো উপকারিতা নেই, বরং রয়েছে নানা ধরনের অপকারিতা।
ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। ধূমপানের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কারসিনোজেন, যা দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা শরীরের বিভিন্ন টিস্যুর সংস্পর্শে আসে এবং এতে ক্যান্সারের সম্ভাবনা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন 'সি' শরীরের অক্সিজেন পরিবহনে সহায়তা করে এবং এর অনেক উপকারী ভূমিকা আছে। কিন্তু ধূমপানের ফলে এই উপকারী ভিটামিনটি নষ্ট হয়ে যায়। হাড়ের ক্যালসিয়াম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রক্তনালির স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট হয়ে যায়। জিহ্বার স্বাদগ্রহণ ক্ষমতা কমে যায়, দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি কমে যায়, বয়স্ক লোকদের মতো শরীরের চামড়া কুঁচকে যায় ইত্যাদি। সিগারেট, চুরুট, বিড়ি, হুক্কা ইত্যাদির পোড়া তামাকের উগ্র গন্ধ যে কত বিরক্তির তা অধূমপায়ী মাত্রই অনুধাবন করতে পারেন। দুর্গন্ধ নিয়ে আল্লাহপাকের ইবাদত করা নিষিদ্ধ। মহানবী (সা.) বলেন_ 'যে ব্যক্তি দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য খায় সে যেন (ওই অবস্থায়) মসজিদের নিকটবর্তীও না হয়।' ধূমপান মানুষকে বদভ্যাসে আসক্ত করে। সব ধরনের আসক্তি হারাম। মহানবী (সা.) বলেন_ 'যাবতীয় নেশার বস্তু হারাম।'
ইসলামের শিক্ষা ও বিধান পুরোপুরি মেনে চললে ধূমপান বর্জন করা সহজ হয়। আসুন, আমরা ধূমপান বন্ধে সবাই
এগিয়ে আসি।

No comments

Powered by Blogger.