পবিত্র কোরআনের আলো-মারইয়াম পুত্র মাসিহের আগমন বার্তা
৪৪. যা-লিকা মিন আম্বা-য়িল গাইবি নূহীহি ইলাইকা; ওয়ামা- কুনতা লাদাইহিম ইয্ ইউলক্বূনা আক্বলা-মাহুম আয়্যুহুম ইয়াকফুলু মারইয়ামা ওয়া মা-কুনতা লাদাইহিম ইয্ ইয়াখ্তাসিমূন। ৪৫. ইয্ ক্বা-লাতিল মালা-য়িকাতু ইয়া-মারইয়ামু ইন্নাল্লাহা ইউবাশ্শিরুকা বিকালিমাতিম্ মিনহু; ইছমুহুল মাছীহু য়ী'ছাব্নু মারইয়ামু ওয়াজীহান ফিদ্ দুনইয়া-ওয়াল আখিরাতি ওয়া মিনাল মুক্বার্রাবীন।
৪৬. ওয়া ইউকালি্লমু ন্না-ছা ফিল মাহ্দি ওয়াকাহ্লা ওঁয়ামিনাস্ সা-লিহীন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ৪৪-৪৬]
অনুবাদ
৪৪. (হে নবী) এ সবই তো আপনার না দেখা খবর, আমি আপনাকে ওহির মাধ্যমে এগুলো জানিয়েছি। আপনি তো সেখানে তাদের পাশে হাজির ছিলেন না_বিশেষ করে যখন মসজিদে আকসার পুরোহিতরা মারইয়ামের অভিভাবক কে হবেন, এটা নির্বাচনের জন্য লটারি হিসেবে কলম নিক্ষেপ করছিল। আপনি তাদের ওখানেও উপস্থিত ছিলেন না, যখন তারা এ ব্যাপারে বিতর্ক করছিল।
৪৫. যখন ফেরেশতারা মারইয়ামকে বলল, হে মারইয়াম! আল্লাহতায়ালা তোমাকে নিজস্ব এক বাণীর দ্বারা অর্থাৎ এক পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছেন_আর তার নাম হবে মাসিহ_মারইয়াম পুত্র ঈসা। দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই সে সম্মানিত হবে। আর সে হবে আল্লাহর সানি্নধ্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অন্যতম।
৪৬. সে দোলনায় থাকা অবস্থায় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। পরিণত বয়সেও সে তেমনি কথাই বলবে এবং সে হবে নেককার মানুষদের একজন।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে এবং আগের আয়াতের যুক্তি বিশ্লেষণ করে সেই কাহিনীর আরো কিছু নতুন তথ্য দেওয়া হচ্ছে। ইমরানের বংশধরদের কাহিনী_যার মধ্যে মহীয়সী নারী মারইয়াম, তাঁর মা, নবী জাকারিয়া (আ.) ও তাঁর পুত্র ইয়াহইয়া (আ.)-সহ অনেকের প্রসঙ্গ এসেছে। এসব ঘটনা তো রাসুল মুহাম্মদ (সা.) দেখেননি। তিনি এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না। আল্লাহতায়ালা ওহির মাধ্যমে এসব ঘটনার কথা তাঁকে জানাচ্ছেন। তাঁর কাছে এসব ঘটনা অদৃশ্য কাহিনী বা বিমূর্ত ধারণা মাত্র। আর এ কাহিনীর মধ্যে বাস্তব ঘটনার চেয়ে আধ্যাত্মিক উপলব্ধির বিষয়ই বেশি। আল্লাহতায়ালা আরো জানাচ্ছেন, এসব ঘটনার মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল, শিশু মারইয়ামের অভিভাবকত্ব নিয়ে বিতর্ক এবং এর ফয়সালা হিসেবে লটারি অনুষ্ঠানের ঘটনা। কোনো কোনো তাফসিরকারকের মতে, সেটা লটারি ছিল না বরং ছিল এক ধরনের মোজেজা।
মসজিদুল আকসার তাপস পুরোহিতরা অনেকেই আগ্রহী ছিলেন শিশু মারইয়ামের অভিভাবকত্ব গ্রহণের। তারা এ বিষয়টা ফয়সালা করতে না পেরে বিতর্ক করছিলেন। শেষে স্থির হলো, তারা প্রবহমান পানিতে নিজেদের কলম নিক্ষেপ করবেন, যাঁর কলম পানির টানে ভাটির দিকে না গিয়ে উজানের দিকে চলে আসবে তিনিই হবেন শিশু মারইয়ামের অভিভাবক। কলম নিক্ষেপের এ পরীক্ষায় হজরত জাকারিয়া (আ.)-এর কলম উজানের দিকে চলে এসেছিল।
প্রবহমান পানিতে নিক্ষেপকৃত কলম ভাটির দিকে যাবে_এটা প্রকৃতির নিয়ম। কলম উজানের দিকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক। এখানে কলম নিক্ষেপের কৌশলের কারণে কলম সাময়িকভাবে উজানের দিকে চলে আসতে পারে। লটারিতে হয়তো এমনই একটা কিছু ঘটে থাকতে পারে।
৪৫ নম্বর আয়াতে যে ঘটনাটির কথা বলা হয়েছে, সেটি মারইয়াম প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার পর। ফেরেশতারা এসে তাঁকে খবর দিল, আল্লাহতায়ালা তাঁকে নিজস্ব এক বাণী তথা তাঁর গর্ভে এক পুত্রসন্তানের খবর দিচ্ছেন। আর তাঁর সেই পুত্রের নাম হবে মাসিহ_তথা ঈসা ইবনে মারইয়াম। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত হবেন এবং তিনি হবেন আল্লাহর সানি্নধ্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অন্যতম। এটা হচ্ছে অলৌকিকভাবে ঈসা (আ.)-এর আগমনের সুস্পষ্ট বার্তা।
৪৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে জন্মাবস্থা থেকেই ঈসা (আ.)-এর মোজেজার প্রসঙ্গ। জন্মের পরই তিনি মায়ের কোলে বসে পূর্ণবয়স্কদের মতো জ্ঞানগর্ভ কথা বলছিলেন। তিনি বলছিলেন, 'আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছি জগৎবাসীকে সত্য ও জীবনের পথ দেখানোর জন্য। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তিনি অন্ধ লোকের চোখে হাত বুলিয়ে আল্লাহর কৃপায় দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারতেন, শ্বেত ও কুষ্ঠরোগীর গায়ে হাত বুলিয়ে তাদের আরোগ্য লাভ করিয়ে দিতে পারতেন। পরে ইহুদিরা তাঁকে নিজেদের নবী হিসেবে গ্রহণ করে নিতে পারেনি।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ
৪৪. (হে নবী) এ সবই তো আপনার না দেখা খবর, আমি আপনাকে ওহির মাধ্যমে এগুলো জানিয়েছি। আপনি তো সেখানে তাদের পাশে হাজির ছিলেন না_বিশেষ করে যখন মসজিদে আকসার পুরোহিতরা মারইয়ামের অভিভাবক কে হবেন, এটা নির্বাচনের জন্য লটারি হিসেবে কলম নিক্ষেপ করছিল। আপনি তাদের ওখানেও উপস্থিত ছিলেন না, যখন তারা এ ব্যাপারে বিতর্ক করছিল।
৪৫. যখন ফেরেশতারা মারইয়ামকে বলল, হে মারইয়াম! আল্লাহতায়ালা তোমাকে নিজস্ব এক বাণীর দ্বারা অর্থাৎ এক পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছেন_আর তার নাম হবে মাসিহ_মারইয়াম পুত্র ঈসা। দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানেই সে সম্মানিত হবে। আর সে হবে আল্লাহর সানি্নধ্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অন্যতম।
৪৬. সে দোলনায় থাকা অবস্থায় মানুষের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। পরিণত বয়সেও সে তেমনি কথাই বলবে এবং সে হবে নেককার মানুষদের একজন।
ব্যাখ্যা
এ আয়াতগুলোও আগের আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে এবং আগের আয়াতের যুক্তি বিশ্লেষণ করে সেই কাহিনীর আরো কিছু নতুন তথ্য দেওয়া হচ্ছে। ইমরানের বংশধরদের কাহিনী_যার মধ্যে মহীয়সী নারী মারইয়াম, তাঁর মা, নবী জাকারিয়া (আ.) ও তাঁর পুত্র ইয়াহইয়া (আ.)-সহ অনেকের প্রসঙ্গ এসেছে। এসব ঘটনা তো রাসুল মুহাম্মদ (সা.) দেখেননি। তিনি এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন না। আল্লাহতায়ালা ওহির মাধ্যমে এসব ঘটনার কথা তাঁকে জানাচ্ছেন। তাঁর কাছে এসব ঘটনা অদৃশ্য কাহিনী বা বিমূর্ত ধারণা মাত্র। আর এ কাহিনীর মধ্যে বাস্তব ঘটনার চেয়ে আধ্যাত্মিক উপলব্ধির বিষয়ই বেশি। আল্লাহতায়ালা আরো জানাচ্ছেন, এসব ঘটনার মধ্যে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল, শিশু মারইয়ামের অভিভাবকত্ব নিয়ে বিতর্ক এবং এর ফয়সালা হিসেবে লটারি অনুষ্ঠানের ঘটনা। কোনো কোনো তাফসিরকারকের মতে, সেটা লটারি ছিল না বরং ছিল এক ধরনের মোজেজা।
মসজিদুল আকসার তাপস পুরোহিতরা অনেকেই আগ্রহী ছিলেন শিশু মারইয়ামের অভিভাবকত্ব গ্রহণের। তারা এ বিষয়টা ফয়সালা করতে না পেরে বিতর্ক করছিলেন। শেষে স্থির হলো, তারা প্রবহমান পানিতে নিজেদের কলম নিক্ষেপ করবেন, যাঁর কলম পানির টানে ভাটির দিকে না গিয়ে উজানের দিকে চলে আসবে তিনিই হবেন শিশু মারইয়ামের অভিভাবক। কলম নিক্ষেপের এ পরীক্ষায় হজরত জাকারিয়া (আ.)-এর কলম উজানের দিকে চলে এসেছিল।
প্রবহমান পানিতে নিক্ষেপকৃত কলম ভাটির দিকে যাবে_এটা প্রকৃতির নিয়ম। কলম উজানের দিকে যাওয়াটা অস্বাভাবিক। এখানে কলম নিক্ষেপের কৌশলের কারণে কলম সাময়িকভাবে উজানের দিকে চলে আসতে পারে। লটারিতে হয়তো এমনই একটা কিছু ঘটে থাকতে পারে।
৪৫ নম্বর আয়াতে যে ঘটনাটির কথা বলা হয়েছে, সেটি মারইয়াম প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠার পর। ফেরেশতারা এসে তাঁকে খবর দিল, আল্লাহতায়ালা তাঁকে নিজস্ব এক বাণী তথা তাঁর গর্ভে এক পুত্রসন্তানের খবর দিচ্ছেন। আর তাঁর সেই পুত্রের নাম হবে মাসিহ_তথা ঈসা ইবনে মারইয়াম। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত হবেন এবং তিনি হবেন আল্লাহর সানি্নধ্যপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অন্যতম। এটা হচ্ছে অলৌকিকভাবে ঈসা (আ.)-এর আগমনের সুস্পষ্ট বার্তা।
৪৬ নম্বর আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে জন্মাবস্থা থেকেই ঈসা (আ.)-এর মোজেজার প্রসঙ্গ। জন্মের পরই তিনি মায়ের কোলে বসে পূর্ণবয়স্কদের মতো জ্ঞানগর্ভ কথা বলছিলেন। তিনি বলছিলেন, 'আমি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছি জগৎবাসীকে সত্য ও জীবনের পথ দেখানোর জন্য। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তিনি অন্ধ লোকের চোখে হাত বুলিয়ে আল্লাহর কৃপায় দৃষ্টিশক্তি ফিরিয়ে দিতে পারতেন, শ্বেত ও কুষ্ঠরোগীর গায়ে হাত বুলিয়ে তাদের আরোগ্য লাভ করিয়ে দিতে পারতেন। পরে ইহুদিরা তাঁকে নিজেদের নবী হিসেবে গ্রহণ করে নিতে পারেনি।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments