মিরসরাই ট্র্যাজেডির এক বছর-বন্ধুকে মনে পড়ে... by শারফুদ্দীন কাশ্মীর
‘কখনো ক্লাসের পড়া কিংবা অঙ্ক না পারলে আমরা ধ্রুবর সাহায্য নিতাম। সে হাসিমুখে আমাদের বুঝিয়ে দিত। এখনো স্যাররা কোনো কঠিন প্রশ্ন করলে ধ্রুবর কথা মনে পড়ে। ধ্রুব তো এখন না-ফেরার দেশে। সে তো আর কখনো ফিরবে না, পড়াও বুঝিয়ে দেবে না।’
মিরসরাইয়ের আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র রূপেশ বড়ুয়া এটুকু বলেই থেমে যায়। বাঁ হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখ মোছে। পাশে বসে থাকা এমরান হোসেনের চোখও টলোমলো। গত বছরের ১১ জুলাই বন্ধু ধ্রুব নাথের সঙ্গে তারা দুজনও খেলা দেখতে গিয়েছিল। চালকের অসাবধানতায় সৈদালী এলাকায় ট্রাকটি খাদে পড়ে গেলে নিহত হয় ধ্রুবসহ আরও ৪৪ জন শিশু-কিশোর। সে ঘটনায় আহত হয়েছিল রূপেশ ও এমরান।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে এমরান বলে, ধ্রুবসহ কয়েকজন বন্ধুর উৎসাহে তারা ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল। কথা ছিল, খেলা দেখে একসঙ্গে তারা ফিরবে। কিন্তু সেটা আর হলো না।
রূপেশ ও এমরানের মতো দশম শ্রেণীর মো. আরিফ হোসেন; অষ্টম শ্রেণীর মো. বোরহান উদ্দীন, রিয়াজ উদ্দীন, নয়ন দাশ, বাসুদেব, মো. হাবিব উল্লাহ্, মেহেদী হাসান, বিপুল দাশ, আবদুল্লাহ আল মামুন; সপ্তম শ্রেণীর সৌমিক বড়ুয়া, মো. আশিক রিজভি; ষষ্ঠ শ্রেণীর সৌমেন পোদ্দার, তাপস চক্রবর্তী, নাজমুল হুদা ও পুষন দেবনাথ সেদিনের ঘটনায় আহত হয়েছিল। শারীরিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও এখনো সেদিনের ভয়াল স্মৃতি তাড়া করে ফেরে তাদের। মনে পড়ে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের কথা।
সেদিনের ঘটনাটা এখনো মনে হানা দেয় বলে জানায় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র পুষন দেবনাথ। সে বলে, ‘খুব জোরে মিনিট্রাকটি চালাচ্ছিল চালক (মূলত সে ছিল চালকের সহকারী) মো. মফিজ উদ্দীন। বড়তাকিয়া আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকার কাছাকাছি পৌঁছালে চালক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। এরপর ট্রাকটি খাদে পড়ে যায়।’ কীভাবে তুমি বেঁচে গেলে? এই প্রশ্নের উত্তরে পুষন বলে, ‘আমাকে এক বড় ভাই পানি থেকে টেনে তুলেছিলেন। তারপর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফিরে যাই।’
আবুতোরাব বিদ্যালয়ে এখন যারা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী, তাদের প্রত্যেকেরই সহপাঠী বন্ধু নিহত হয়েছে গত বছরের দুর্ঘটনায়। চালক মফিজের এত কম সাজা হওয়ায় খুশি নয় তারা কেউই। উল্লেখ্য, চালক মফিজের মাত্র পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। আবুতোরাবের শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হোক। এ জন্য প্রচলিত আইন সংস্কার করারও দাবি জানায় তারা।
শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে গিয়ে অনেক সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষকেরাও। বিদ্যালয়ে এখনো এমন ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাফর সাদেক বলেন, ‘শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে গেলে যখন নিহত ছাত্রদের কথা মনে পড়ে তখন পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। কিছুক্ষণ পাঠদান বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীরা চুপ করে থাকে। শ্রেণীকক্ষে স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে সময় লাগে।’ জাফর সাদেক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ হবার নয়।’
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে এমরান বলে, ধ্রুবসহ কয়েকজন বন্ধুর উৎসাহে তারা ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল। কথা ছিল, খেলা দেখে একসঙ্গে তারা ফিরবে। কিন্তু সেটা আর হলো না।
রূপেশ ও এমরানের মতো দশম শ্রেণীর মো. আরিফ হোসেন; অষ্টম শ্রেণীর মো. বোরহান উদ্দীন, রিয়াজ উদ্দীন, নয়ন দাশ, বাসুদেব, মো. হাবিব উল্লাহ্, মেহেদী হাসান, বিপুল দাশ, আবদুল্লাহ আল মামুন; সপ্তম শ্রেণীর সৌমিক বড়ুয়া, মো. আশিক রিজভি; ষষ্ঠ শ্রেণীর সৌমেন পোদ্দার, তাপস চক্রবর্তী, নাজমুল হুদা ও পুষন দেবনাথ সেদিনের ঘটনায় আহত হয়েছিল। শারীরিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারলেও এখনো সেদিনের ভয়াল স্মৃতি তাড়া করে ফেরে তাদের। মনে পড়ে হারিয়ে যাওয়া বন্ধুদের কথা।
সেদিনের ঘটনাটা এখনো মনে হানা দেয় বলে জানায় ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র পুষন দেবনাথ। সে বলে, ‘খুব জোরে মিনিট্রাকটি চালাচ্ছিল চালক (মূলত সে ছিল চালকের সহকারী) মো. মফিজ উদ্দীন। বড়তাকিয়া আবুতোরাব সড়কের সৈদালী এলাকার কাছাকাছি পৌঁছালে চালক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। এ সময় তিনি মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। এরপর ট্রাকটি খাদে পড়ে যায়।’ কীভাবে তুমি বেঁচে গেলে? এই প্রশ্নের উত্তরে পুষন বলে, ‘আমাকে এক বড় ভাই পানি থেকে টেনে তুলেছিলেন। তারপর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বাড়ি ফিরে যাই।’
আবুতোরাব বিদ্যালয়ে এখন যারা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী, তাদের প্রত্যেকেরই সহপাঠী বন্ধু নিহত হয়েছে গত বছরের দুর্ঘটনায়। চালক মফিজের এত কম সাজা হওয়ায় খুশি নয় তারা কেউই। উল্লেখ্য, চালক মফিজের মাত্র পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। আবুতোরাবের শিক্ষার্থীদের দাবি, এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হোক। এ জন্য প্রচলিত আইন সংস্কার করারও দাবি জানায় তারা।
শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে গিয়ে অনেক সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শিক্ষকেরাও। বিদ্যালয়ে এখনো এমন ঘটনা ঘটে। এ প্রসঙ্গে আবুতোরাব উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জাফর সাদেক বলেন, ‘শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করতে গেলে যখন নিহত ছাত্রদের কথা মনে পড়ে তখন পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। কিছুক্ষণ পাঠদান বন্ধ থাকে। শিক্ষার্থীরা চুপ করে থাকে। শ্রেণীকক্ষে স্বাভাবিকতা ফিরে আসতে সময় লাগে।’ জাফর সাদেক দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেন, ‘আমাদের যে ক্ষতি হয়ে গেল তা পূরণ হবার নয়।’
No comments