সুজনের অনুষ্ঠানে অভিমত-নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরনে আন্তরিক হতে হবে

সরকারকে আগামী দেড় বছরে নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আন্তরিক হতে হবে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিরা সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানান।


‘দিনবদলের সনদ ও সরকারের সাড়ে তিন বছর’ শীর্ষক এই আলোচনায় সুজনের সহসভাপতি এম হাফিজউদ্দিন খান বলেন, সরকারের সব উদ্যোগই যে সফলতার মুখ দেখবে এমনটি নয়। তারা অঙ্গীকার বাস্তবায়নে আন্তরিক কি না, সেটাই বিবেচ্য বিষয়। তিনি বলেন, দুর্নীতি রোধে সরকারের আন্তরিকতার ঘাটতি রয়েছে।
কলাম লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, নির্বাচনের আগে অঙ্গীকার করতে সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা নিয়ে যে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের কোনো বিকল্প নেই।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মন্ত্রীদের অসংলগ্ন বক্তব্য সরকারকে বিপদে ফেলে দিচ্ছে। অপরদিকে বিরোধী দল দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করছে না। তিনি বলেন, ‘শোনা যাচ্ছে, আমরা নির্বাচনী আইন সংস্কারের যেসব প্রস্তাব রেখে এসেছিলাম, বর্তমান কমিশন তা আমলে নিচ্ছে না। তারা আমাদের প্রতিপক্ষ মনে করছে। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে এসব সুপারিশ করেছি, যা তাদের নেই। আমার সংশয় আছে বড় কোনো নির্বাচন হলে তারা তা সুষ্ঠুভাবে করতে পারবে কি না।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের দুর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত করছে। বৈদেশিক সাহায্য ও অনুদান যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে আমাদের দেশের উন্নয়নকার্যক্রমও শ্লথ হয়ে যাবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দিন দিন বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রও বৈরী আচরণ করছে, ভারতও কম যায় না। সীমান্তে প্রতিদিন মানুষ হত্যা হচ্ছে, তিস্তা চুক্তি হচ্ছে না। এর জন্য পররাষ্ট্রনীতির নতজানু মানসিকতাই দায়ী।
মূল প্রবন্ধে সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ক্ষমতাধরদের সম্পদের হিসাব আদায়, সরকারি দলের মদদে সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি-দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কার্যকরব্যবস্থা গ্রহণ, দলতন্ত্র ও ফায়দাতন্ত্র চর্চার অবসান, দুর্নীতি দমনকাজকে জোরদার করা—এমন কিছু কাজ সরকার হাতে নিতে পারত, মানুষের আস্থা অর্জনের জন্য। কিন্তু সরকার এসব ক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তিন বছরের মাথায় এসে সরকার তরুণ ও সচেতন নাগরিকদের সমর্থন হারিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সরকারের একগুঁয়েমির কারণে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে।
হাফিজউদ্দিন খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, সৈয়দ আবদুল মান্নান, হুমায়ূন কবির, চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, নুরুল হক মজুমদার প্রমুখ।

No comments

Powered by Blogger.