আসছে বাজেট-নীতিনির্ধারকরা ভর্তুকি বৃদ্ধির পক্ষে অর্থমন্ত্রী নারাজ by আবুল কাশেম
আসন্ন বাজেটই নির্বাচনের আগে এ সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। তাই কৃষি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়কে ভোটের জন্য 'স্পর্শকাতর' মনে করে এসব খাতে ভর্তুকি বাড়ানোর পক্ষে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকরা।
তাই নির্বাচনের আগে কৃষি খাতে ব্যবহৃত সার ও সেচ খরচ না বাড়ানোর পাশাপাশি কমানোর চেষ্টা, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়তে না দেওয়া, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং ভর্তুকিমূল্যে আরো বেশি ওএমএস, ভিজিডি, ভিজিএফসহ অধিক মানুষের কাছে খাদ্য পেঁৗছে দেওয়ার মাধ্যমে বাজার স্থিতিশীল রাখাটাই আগামী অর্থবছরে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে চাচ্ছে সরকার। এতে নতুন অর্থবছরে ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। তবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নির্বাচনী চিন্তায় ভর্তুকি না বাড়িয়ে বরং সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা স্থিতিশীল রাখার পক্ষে। অর্থমন্ত্রী মনে করেন, বাজেটকে 'নির্বাচনী বাজেট' না করে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়ে তা প্রণয়ন করতে হবে।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, অর্থমন্ত্রীর হিসাব হলো, ভর্তুকি বাড়ানো হলে বাজেট ঘাটতিও বাড়বে। আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখতে আগ্রহী অর্থমন্ত্রী। এমনিতেই চলতি অর্থবছর ভর্তুকি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই অর্থবছরের ভর্তুকির ১১ হাজার কোটি টাকার দায় পড়বে আগামী অর্থবছরের ঘাড়ে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভর্তুকির পাশাপাশি বাজেট ঘাটতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। সে ঘাটতি পূরণ করতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২০ হাজার ১০০ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ও বাকি অর্থ বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২১ হাজার কোটি ও সঞ্চয়পত্র থেকে ছয় হাজার টাকা নেওয়ার কথা ছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার কারণে আগামী ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ব্যক্তি-শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হচ্ছে। আর ছোট ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের (টার্নওভার) ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। আর ৬০ লাখ টাকা থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ এবং দুই কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার ট্যাঙ্ ধার্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্লাস্টিকে তৈরি পাইপ (পিভিসি পাইপ) বিদেশ থেকে আমদানি করার ক্ষেত্রে বর্তমান অর্থবছরে কোনো ধরনের সম্পূরক শুল্ক নেই। এ ধরনের পাইপ আমদানির ক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে প্রতিবারের মতো এ বছর রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক আর বাড়ানো হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে এসব গাড়ির ওপর সম্পূরক শুল্ক অনেক বেড়েছে। ফলে এগুলোর আমদানি ব্যয় নতুন গাড়ির দামের প্রায় সমান হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোনো ধরনের গাড়ির ওপরই শুল্ক বাড়ছে না। তবে গাড়ির দাম ও শুল্ক সমন্বয় করা হলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কমত। সেটাও আগামী বাজেটে হচ্ছে না।
সম্প্রতি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বারবার ভর্তুকি কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। বলেছেন, সরকার বিদ্যুতে কোনো ভর্তুকি দেবে না। জ্বালানি তেলেও না। পর্যায়ক্রমে এসব সেবার মূল্য সমন্বয় করা হবে। ইতিমধ্যে জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ের জন্য একটি নীতিমালা তৈরির কাজও শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে পড়ে সরকার কয়েক দফা জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে এসব পণ্যে ভর্তুকি কমাতে আরো দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ঋণদাতাদের আপত্তি সত্ত্বেও কৃষি খাতে ভর্তুকি থাকবে।
চলতি ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও সারের দাম বৃদ্ধি এবং ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে উচ্চদরে বিদ্যুৎ কিনে তা কমদামে বিক্রির কারণে এ বছর ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এত বেশি টাকার ভর্তুকি এ অর্থবছরে টানার সক্ষমতা নেই অর্থমন্ত্রীর।
সম্প্রতি অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে আলোচনাকালে অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে মোট ভর্তুকি দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এ বছর ২৯ হাজার কোটি দেওয়া হবে। আর ভর্তুকির বাকি ১১ হাজার কোটি টাকার দায় থাকবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে।
বিভিন্ন সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেই বলেছেন, এ বছর বাজেটের আকার হবে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মতো। আগামী ৭ জুন বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরবেন তিনি। আগামী অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ৭.২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য তাঁর। আগামী ২৮ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাস হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মতে, অর্থমন্ত্রীর হিসাব হলো, ভর্তুকি বাড়ানো হলে বাজেট ঘাটতিও বাড়বে। আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে রাখতে আগ্রহী অর্থমন্ত্রী। এমনিতেই চলতি অর্থবছর ভর্তুকি লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এই অর্থবছরের ভর্তুকির ১১ হাজার কোটি টাকার দায় পড়বে আগামী অর্থবছরের ঘাড়ে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, ভর্তুকির পাশাপাশি বাজেট ঘাটতিও নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে নতুন অর্থবছরের বাজেটে। প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ৫০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে। সে ঘাটতি পূরণ করতে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২০ হাজার ১০০ কোটি টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ৯ হাজার ১৫০ কোটি টাকা ও বাকি অর্থ বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকির মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ২১ হাজার কোটি ও সঞ্চয়পত্র থেকে ছয় হাজার টাকা নেওয়ার কথা ছিল।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ার কারণে আগামী ২০১২-২০১৩ অর্থবছরে ব্যক্তি-শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা এক লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হচ্ছে। আর ছোট ব্যবসায়ীদের সুবিধা দেওয়ার জন্য ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত লেনদেনের (টার্নওভার) ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে। আর ৬০ লাখ টাকা থেকে দুই কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে ২ শতাংশ এবং দুই কোটি থেকে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনের ক্ষেত্রে ৩ শতাংশ হারে টার্নওভার ট্যাঙ্ ধার্য করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্লাস্টিকে তৈরি পাইপ (পিভিসি পাইপ) বিদেশ থেকে আমদানি করার ক্ষেত্রে বর্তমান অর্থবছরে কোনো ধরনের সম্পূরক শুল্ক নেই। এ ধরনের পাইপ আমদানির ক্ষেত্রে আগামী অর্থবছরে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। তবে প্রতিবারের মতো এ বছর রিকন্ডিশন্ড গাড়ির শুল্ক আর বাড়ানো হচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে এসব গাড়ির ওপর সম্পূরক শুল্ক অনেক বেড়েছে। ফলে এগুলোর আমদানি ব্যয় নতুন গাড়ির দামের প্রায় সমান হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরের বাজেটে কোনো ধরনের গাড়ির ওপরই শুল্ক বাড়ছে না। তবে গাড়ির দাম ও শুল্ক সমন্বয় করা হলে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম কমত। সেটাও আগামী বাজেটে হচ্ছে না।
সম্প্রতি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বারবার ভর্তুকি কমানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। বলেছেন, সরকার বিদ্যুতে কোনো ভর্তুকি দেবে না। জ্বালানি তেলেও না। পর্যায়ক্রমে এসব সেবার মূল্য সমন্বয় করা হবে। ইতিমধ্যে জ্বালানির মূল্য সমন্বয়ের জন্য একটি নীতিমালা তৈরির কাজও শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। ঋণদাতা সংস্থা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চাপে পড়ে সরকার কয়েক দফা জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ ও সারের দাম বাড়িয়েছে। ভবিষ্যতে এসব পণ্যে ভর্তুকি কমাতে আরো দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, ঋণদাতাদের আপত্তি সত্ত্বেও কৃষি খাতে ভর্তুকি থাকবে।
চলতি ২০১১-২০১২ অর্থবছরে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ২০ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেল ও সারের দাম বৃদ্ধি এবং ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলভিত্তিক বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে উচ্চদরে বিদ্যুৎ কিনে তা কমদামে বিক্রির কারণে এ বছর ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। এত বেশি টাকার ভর্তুকি এ অর্থবছরে টানার সক্ষমতা নেই অর্থমন্ত্রীর।
সম্প্রতি অর্থনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সঙ্গে আলোচনাকালে অর্থসচিব ড. মোহাম্মদ তারেক জানিয়েছেন, চলতি অর্থবছরে মোট ভর্তুকি দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এ বছর ২৯ হাজার কোটি দেওয়া হবে। আর ভর্তুকির বাকি ১১ হাজার কোটি টাকার দায় থাকবে নতুন অর্থবছরের বাজেটে।
বিভিন্ন সময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নিজেই বলেছেন, এ বছর বাজেটের আকার হবে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার মতো। আগামী ৭ জুন বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরবেন তিনি। আগামী অর্থবছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হচ্ছে ৭.২ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৭ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য তাঁর। আগামী ২৮ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পাস হতে পারে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
No comments