কক্সবাজার উপকূলের ১০ লাখ মানুষ চরম ঝুঁকিতে-১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন, প্লাবিত হচ্ছে ৫৩ গ্রাম by আব্দুল কুদ্দুস
কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন অবস্থায় রয়েছে। এতে অন্তত ৫৩টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ।
এ বর্ষায় এসব ভাঙা বাঁধ মেরামত করা না হলে জোয়ারের পানিতে আরও অনেক গ্রাম তলিয়ে যাওয়াসহ ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হচ্ছে। জেলার উপকূলীয় এলাকার প্রায় ১০ লাখ মানুষ চরম ঝুঁকিতে দিন কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ছোট হয়ে আসছে কুতুবদিয়া: ১৯৬০ সালে কুতুবদিয়ার আয়তন ছিল ৫৪ বর্গকিলোমিটার। গত চার যুগে সাগরে বিলীন হতে হতে বর্তমানে তা ২৭ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। বাকি ২৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার অস্তিত্ব নিয়ে এখন শঙ্কিত এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড়, সিডর, নার্গিস, রেশমি, আইলা ও সর্বশেষ লায়লার প্রভাবে উপজেলার চারদিকে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে। বিশেষ করে আলী আকবরডেইল এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হওয়ায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটি সাগরে তলিয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দ্বীপের চারদিকে স্থাপিত পাউবোর ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় চার কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় ২০ কিলোমিটার। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় লায়লার প্রভাবে সাগর উত্তাল হলে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতায় কয়েক ফুট বেড়ে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের আটটি, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের তিনটি, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের দুটি, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের চারটি ও বড়ঘোপ ইউনিয়নের দুটিসহ ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। শতশত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পাশের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
তাবলেরচর গ্রামের জেলে হামিদুর রহমান জানান, ‘জোয়ার এলে বসতবাড়ি যখন ডুবে যায়, তখন পরিবারের সদস্য নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে আবার বসতবাড়িতে আশ্রয় নিই। সম্ভবত পুরো বর্ষাকালটা আমাদের এভাবেই কাটাতে হবে।’
কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম শাহরিয়ার চৌধুরী জানান, দ্বীপের চারদিকে স্থাপিত পাউবোর ৪০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে অর্ধেক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্বীপের দেড় লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত এক লাখ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কুতুবদিয়া পাউবোর কর্মকর্তা (এসও) আবদুস সাত্তার জানান, কুতুবদিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৩৯ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা চলছে। কিন্তু বর্ষার সময় কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। কারণ এসময় সাগর উত্তাল থাকে।
ঘুম নেই ধলঘাটার মানুষের চোখে: ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে মহেশখালী উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন ধলঘাটার প্রায় ৪০ হাজার মানুষের চোখে এখন ঘুম নেই। কারণ দ্বীপের পশ্চিম ও উত্তর পাশে প্রায় ১৬ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নেই। ইতিমধ্যে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়িসহ তিন হাজার একরের ফসলি জমি সাগরগর্ভে তলিয়ে গেছে। ১৯৯০ সালে এ ইউনিয়নের আয়তন ছিল ৩৭ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে মাত্র ১২ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল আহমদ জানান, এ ইউনিয়নে পাউবোর ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১৬ কিলোমিটার বাঁধ একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে প্রায় ছয় কিলোমিটার ভাঙাবাঁধ মেরামত ও বাঁধের পাশে স্থায়ী সিসি ব্লক বসানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সিইআরপির (উপকূলীয় জরুরি বেড়িবাঁধ মেরামত প্রকল্প) আওতায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এ পর্যন্ত বাঁধ হয়নি।
এ ছাড়াও উপজেলার মাতারবাড়ি, হোয়ানক, শাপলাপুর ইউনিয়নে প্রায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় সম্পূর্ণ বাঁধ বিলীন রয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার।
পাউবো মহেশখালী শাখা কর্মকর্তা (এসও) মাসুদুর রহমান জানান, ভাঙা বাঁধগুলো জরুরিভিত্তিতে মেরামত করে জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। বর্ষার পর শুষ্ক ভাঙা বাঁধ স্থায়ী ভাবে নির্মাণ করা হবে।
ঝুঁকির মুখে মেরিন ড্রাইভ সড়ক
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি বর্তমানে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে সড়কের কলাতলী, বড়ছড়া, হিমছড়িসহ বিভিন্ন এলাকার সাত-আটটি অংশে ভাঙন ধরেছে। বালির বস্তা ও সিসি ব্লক ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
শহরের ফদনারডেইল ও নাজিরাটেক চরাঞ্চলের অবস্থা আরও ভয়াবহ। কয়েক হাজার মানুষ জোয়ারের সময় বসতবাড়ি ছেড়ে পাশের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও লোকজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নেয়।
কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান সরওয়ার কামাল জানান, সাগরে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখা দিলেই এ চরাঞ্চলে বসবাসরত ৫০ হাজারের বেশি ভাসমান মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। জলোচ্ছ্বাস থেকে এঁদের রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না।
ভাঙছে শাহপরীর দ্বীপের বেড়িবাঁধ
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিক মিয়া জানান, উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে নির্মীয়মাণ সাড়ে চার কোটি টাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাঁধের কয়েকটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেলে দ্বীপের ৪০ হাজার মানুষকে রক্ষা করা কঠিন হবে।
৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন বেড়িবাঁধ রয়েছে ৫১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। বর্ষার আগে ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত সম্ভব না হলে উপকূলের ১০ লাখ মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পাউবো কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মান্নান জানান, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে উপকূলের বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করা হয়। কিন্তু বাঁধ রক্ষার জন্য সৃজিত উপকূলীয় প্যারাবনগুলো কেটে ফেলায় জোয়ারের আঘাতে বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে যাচ্ছে।
ছোট হয়ে আসছে কুতুবদিয়া: ১৯৬০ সালে কুতুবদিয়ার আয়তন ছিল ৫৪ বর্গকিলোমিটার। গত চার যুগে সাগরে বিলীন হতে হতে বর্তমানে তা ২৭ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে। বাকি ২৭ বর্গকিলোমিটার এলাকার অস্তিত্ব নিয়ে এখন শঙ্কিত এলাকাবাসী।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড়, সিডর, নার্গিস, রেশমি, আইলা ও সর্বশেষ লায়লার প্রভাবে উপজেলার চারদিকে প্রায় ১২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়েছে। বিশেষ করে আলী আকবরডেইল এলাকার প্রায় তিন কিলোমিটার বাঁধ বিলীন হওয়ায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটি সাগরে তলিয়ে গেছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দ্বীপের চারদিকে স্থাপিত পাউবোর ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় চার কিলোমিটার বাঁধ সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও প্রায় ২০ কিলোমিটার। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় লায়লার প্রভাবে সাগর উত্তাল হলে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চতায় কয়েক ফুট বেড়ে আলী আকবর ডেইল ইউনিয়নের আটটি, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের তিনটি, দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের দুটি, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের চারটি ও বড়ঘোপ ইউনিয়নের দুটিসহ ২১টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এসব গ্রামে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি কয়েক ফুট পানির নিচে তলিয়ে যায়। শতশত মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পাশের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
তাবলেরচর গ্রামের জেলে হামিদুর রহমান জানান, ‘জোয়ার এলে বসতবাড়ি যখন ডুবে যায়, তখন পরিবারের সদস্য নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে হয়। ভাটার সময় পানি নেমে গেলে আবার বসতবাড়িতে আশ্রয় নিই। সম্ভবত পুরো বর্ষাকালটা আমাদের এভাবেই কাটাতে হবে।’
কুতুবদিয়া বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি ও উত্তর ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আ স ম শাহরিয়ার চৌধুরী জানান, দ্বীপের চারদিকে স্থাপিত পাউবোর ৪০ কিলোমিটার বাঁধের মধ্যে অর্ধেক ঝুঁকিপূর্ণ। দ্বীপের দেড় লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত এক লাখ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। কুতুবদিয়া পাউবোর কর্মকর্তা (এসও) আবদুস সাত্তার জানান, কুতুবদিয়ার ভাঙা বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ৩৯ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্প নেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগের চেষ্টা চলছে। কিন্তু বর্ষার সময় কাজ শুরু করা সম্ভব নয়। কারণ এসময় সাগর উত্তাল থাকে।
ঘুম নেই ধলঘাটার মানুষের চোখে: ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের ভয়ে মহেশখালী উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন ধলঘাটার প্রায় ৪০ হাজার মানুষের চোখে এখন ঘুম নেই। কারণ দ্বীপের পশ্চিম ও উত্তর পাশে প্রায় ১৬ কিলোমিটার প্রতিরক্ষা বেড়িবাঁধ নেই। ইতিমধ্যে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়িসহ তিন হাজার একরের ফসলি জমি সাগরগর্ভে তলিয়ে গেছে। ১৯৯০ সালে এ ইউনিয়নের আয়তন ছিল ৩৭ বর্গকিলোমিটার। বর্তমানে মাত্র ১২ কিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল আহমদ জানান, এ ইউনিয়নে পাউবোর ৩২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১৬ কিলোমিটার বাঁধ একেবারেই বিলীন হয়ে গেছে। গত বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে প্রায় ছয় কিলোমিটার ভাঙাবাঁধ মেরামত ও বাঁধের পাশে স্থায়ী সিসি ব্লক বসানোর জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড সিইআরপির (উপকূলীয় জরুরি বেড়িবাঁধ মেরামত প্রকল্প) আওতায় ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও এ পর্যন্ত বাঁধ হয়নি।
এ ছাড়াও উপজেলার মাতারবাড়ি, হোয়ানক, শাপলাপুর ইউনিয়নে প্রায় ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসব এলাকায় সম্পূর্ণ বাঁধ বিলীন রয়েছে প্রায় তিন কিলোমিটার।
পাউবো মহেশখালী শাখা কর্মকর্তা (এসও) মাসুদুর রহমান জানান, ভাঙা বাঁধগুলো জরুরিভিত্তিতে মেরামত করে জলোচ্ছ্বাস ঠেকানোর চেষ্টা চলছে। বর্ষার পর শুষ্ক ভাঙা বাঁধ স্থায়ী ভাবে নির্মাণ করা হবে।
ঝুঁকির মুখে মেরিন ড্রাইভ সড়ক
কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি বর্তমানে ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে সড়কের কলাতলী, বড়ছড়া, হিমছড়িসহ বিভিন্ন এলাকার সাত-আটটি অংশে ভাঙন ধরেছে। বালির বস্তা ও সিসি ব্লক ফেলেও ভাঙন ঠেকানো যাচ্ছে না।
শহরের ফদনারডেইল ও নাজিরাটেক চরাঞ্চলের অবস্থা আরও ভয়াবহ। কয়েক হাজার মানুষ জোয়ারের সময় বসতবাড়ি ছেড়ে পাশের ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও লোকজনের বাসাবাড়িতে আশ্রয় নেয়।
কক্সবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান সরওয়ার কামাল জানান, সাগরে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস দেখা দিলেই এ চরাঞ্চলে বসবাসরত ৫০ হাজারের বেশি ভাসমান মানুষের জীবনে দুর্ভোগ নেমে আসে। জলোচ্ছ্বাস থেকে এঁদের রক্ষার জন্য স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ সম্ভব হচ্ছে না।
ভাঙছে শাহপরীর দ্বীপের বেড়িবাঁধ
টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিক মিয়া জানান, উত্তাল সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে নির্মীয়মাণ সাড়ে চার কোটি টাকার বেড়িবাঁধ ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ইতিমধ্যে বাঁধের কয়েকটি অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বেড়িবাঁধটি ভেঙে গেলে দ্বীপের ৪০ হাজার মানুষকে রক্ষা করা কঠিন হবে।
৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ
স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, কক্সবাজারের বিভিন্ন উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) আওতাধীন বেড়িবাঁধ রয়েছে ৫১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে প্রায় ১৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে আরও ৬০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। বর্ষার আগে ভাঙা ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ মেরামত সম্ভব না হলে উপকূলের ১০ লাখ মানুষ ক্ষতির সম্মুখীন হবে।
পাউবো কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল মান্নান জানান, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা খরচ করে উপকূলের বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও মেরামত করা হয়। কিন্তু বাঁধ রক্ষার জন্য সৃজিত উপকূলীয় প্যারাবনগুলো কেটে ফেলায় জোয়ারের আঘাতে বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে যাচ্ছে।
No comments