অভিমত ভিন্নমত

বেগুনবাড়ি-নিমতলী ট্র্যাজেডি: এভাবে আর কতকাল? পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড এবং বেগুনবাড়িতে পাঁচতলা ভবন উপড়ে পড়ার ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, ঢাকা শহরে বাস করা এখন কতখানি বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমরা বোঝার দরকার হলেও বুঝি না, মানার দরকার হলেও মানি না।


ঘটনা ঘটার পরই কেবল আমাদের সাময়িক টনক নড়ে। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই আমরা সব শোক ভুলে আগের মতোই ঝুঁকিপূর্ণ জীবনযাপনে ফিরে যাই।
আমরা দেশের কর্তাব্যক্তিদের বলতে শুনি পরিকল্পিত নগরায়ণের কথা। কত যে পরিকল্পনার কথা শোনা যায়। এটাই কি সেই পরিকল্পিত নগরায়ণ? ভবন ধসে পড়লে, বটগাছের মতো উপড়ে পড়লে কিংবা কাত হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা রাজউক সেটাকে অননুমোদিত, অবৈধ স্থাপনা ঘোষণা করে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করে। ধরে নেওয়া যাক, এখন পর্যন্ত যেসব ভবন সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সেগুলো অবশ্যই রাজউক অনুমোদিত। কিন্তু সেগুলোর মধ্য থেকে একটি ভবন যদি হেলে যায় বা ঢলে/উপড়ে পড়ে, তাহলে কী হবে? রাজউক তখন বলবে কি যে এটাও অননুমোদিত! কী চমৎকারভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছে আমাদের রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ! ভাঙলে তোমার, না ভাঙলে আমার! বাহ্!!
ঢাকা শহরে এমন অনেক ভবন ও ঘরবাড়ি আছে, যেগুলো রাজউকের কোনো অনুমোদন নেয়নি। কিছু স্থাপনা আছে, যেগুলো রাজউকের অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী তৈরি করা হয়নি। তিনতলার ভিতের ওপর ছয়তলা তোলা হয়েছে—এমন বাড়ি ও বাণিজ্যিক ভবন আছে ভূরি ভূরি। রাজউক ঠিকমতো তদারক করে না, অনেক সময় রাজউকের চোখের সামনেও অনুমোদিত নকশার বাইরে গিয়ে ভবন নির্মিত হয়, রাজউক কিছু বলে না। অথবা বলে না এ কারণে যে পেছনের দরজা দিয়ে হয়তো বোঝাপড়া চলে। ঘরবাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি নির্মাণের ক্ষেত্রে যে পরিমাণ ফাঁকা জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক, তা রাখা হয় না অনেক ক্ষেত্রেই। ফলে রাস্তাগুলো অনেক সরু। এমন অনেক পাড়া-মহল্লাও আছে, যেখানে দুটি রিকশাও পাশাপাশি চলতে পারে না। সেসব পাড়ায় প্রয়োজনের মুহূর্তে অ্যাম্বুলেন্স বা দমকল বাহিনীর বড় বড় গাড়ি কী করে ঢুকবে, এ বিবেচনা যেন কারোরই থাকে না। তাই ছোটখাটো দুর্ঘটনায়ই অনেক বেশি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি অনিবার্য হয়ে ওঠে। উদ্ধারকর্মীদের হিমশিম খেতে হয় এবং উদ্ধারকাজে বেশি সময় লাগে। স্থানীয় জনগণের সম্মিলিত সহযোগিতারও সুযোগ ঘটে না এলাকাগুলো অপরিসর ও ঘিঞ্জি হওয়ার কারণে। উৎসুক জনতা দাঁড়ালেই তো রাস্তাঘাট রুদ্ধ হয়ে যায়। তা ছাড়া দমকল বাহিনীর উদ্ধারকর্মীদেরও যথেষ্ট প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম থাকে না। না পারে জনগণ সহযোগিতা করতে, আর না পারে উদ্ধারকর্মীরা ঠিকমতো কাজ করতে। এ ছাড়া রাস্তার কিনারে থাকে তারের খাম্বা। সঙ্গে লাগোয়া বাড়ি, একটির সঙ্গে আরেকটির দূরত্ব মাঝের সীমানাপ্রাচীর মাত্র।
পুরান ঢাকার কথা বলাই বাহুল্য। এত সরু পথ যে বিপরীতগামী দুজন পথচারী পার হতে গেলে নালার ওপর এক পা তুলে সারমেয় হয়ে দাঁড়াতে হয়। বাসস্থানগুলো যত্রতত্র, অপরিকল্পিত, পাখির বাসার মতো তাকে-তাকে, ফাঁকে-ফোকরে। বিদ্যুতের তারগুলো দালানের একদম কাছে, হাত বাড়ালেই ধরা যায়। কোনো কোনো এলাকায় খাম্বার কাজটুকু করে দিচ্ছে বারান্দার গ্রিল। একেকটি খাম্বায় হাজার রকমের সংযোগের তার। কোনটা বিদ্যুতের তার, কোনটা টেলিফোনের আর কোনটা ডিশের, কোনটা ইন্টারনেটের তার, বোঝা মুশকিল। সেই তারের জটাজালের মধ্যে আবার কাক কিংবা শালিক বাসা বাঁধে। কাক তারে জড়িয়ে যায় এবং বিস্ফোরণ ঘটে। এভাবে ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণও ঘটে। এ রকম অবস্থায় যদি ভূমিকম্প হয়, তাহলে কী পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে, তা কি ভাবা যায়?
আমরা ধ্বংস হয়ে যাওয়া স্থাপনা পাব না, অকালে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের ফিরে পাব না। কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক হতে পারি, আমাদের চোখ খুলে যাওয়া উচিত। সুপরিকল্পিত উদ্যোগ নিলে এসব জটিল সমস্যার পুরো সমাধান না হলেও ঝুঁকি কিছুটা কমিয়ে আনা সম্ভব। পুরান ঢাকার ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়িগুলো ভেঙে পরিকল্পিভাবে আবাসন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। রাজউক সেখানকার ঘিঞ্জি পাড়াগুলোর জরাজীর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ ঘরবাড়ি ভেঙে সেসব জায়গায় বাসস্থান তৈরি করে মহল্লার বাসিন্দাদের মধ্যে জমির মালিকানার ভিত্তিতে ফ্ল্যাট বণ্টন করে দিতে পারে।
আইয়ুব আহমেদ দুলাল
সৌদি আরব।
ayubahmedd@gmail.com

জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্র চাই
প্রতিটি সভ্য দেশেই যেমন একটি ন্যাশনাল থিয়েটার থাকে, তেমনি থাকে একটি ‘ন্যাশনাল ফিল্ম সেন্টার’। এটা দুঃখজনক যে বাংলাদেশে আজও সেটা নেই। আমরা জেনে আনন্দিত হয়েছি যে, ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে একটা ‘সংস্কৃতিবলয়’ গড়ে তোলার ব্যবস্থা হচ্ছে। সে বলয়ে থিয়েটার, সংগীত, নৃত্য, যাত্রা—আমাদের সংস্কৃতির সব ধরনের মাধ্যমের জন্যই ব্যবস্থা থাকছে। তবে দুঃখিত হয়েছি জেনে যে সেই বলয়ে নেই কেবল চলচ্চিত্র। অথচ এই যুগে চলচ্চিত্র হচ্ছে সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী শিল্পমাধ্যম। নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় সংস্কৃতিবলয়ে সিনেমাকে রাখার ধারণাটা কেন যে এল না, তা আমার বোধগম্য নয়।
প্রস্তাবিত সংস্কৃতিবলয়ে অবশ্যই রাখা উচিত বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্র বা ন্যাশনাল ফিল্ম সেন্টার। এই চলচ্চিত্রকেন্দ্রটি হবে অনেকটাই কলকাতার নন্দন-এর মতো বা লন্ডনের টেমস নদীর পারে ব্রিটিশ ন্যাশনাল ফিল্ম সেন্টারের মতো। কল্পনা করুন তিনতলা একটি উঁচু বাড়ি, যেখানে থাকবে একাধিক প্রেক্ষাগৃহ। যেসব প্রেক্ষাগৃহে দেশ-বিদেশের ধ্রুপদি চলচ্চিত্রগুলো দেখানো হবে। এই ফিল্ম সেন্টারে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব, দেশি-বিদেশি সেরা পরিচালকদের ছবিগুলোর রেট্রোস্পেক্টিভ, চলচ্চিত্র বিষয়ে সেমিনার ও কর্মশালা। এখানে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্রবিষয়ক কর্মকাণ্ড অনুষ্ঠিত হবে। থাকবে চলচ্চিত্রসংক্রান্ত বই ও ডিভিডির সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। থাকবে কাফেটেরিয়া, যেখানে বসে আগামী দিনের চলচ্চিত্র-উৎসাহী তরুণ-তরুণীরা চলচ্চিত্র নিয়ে সৃজনশীল আলোচনা করবে।
বাংলাদেশ সরকারকে একটি জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্র একদিন গড়তেই হবে। ঢাকা শহরে খালি জায়গার সংকট রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে ঘিরে যে সংস্কৃতিবলয় গড়ে তোলা হচ্ছে, সেখানে জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্র গড়ে তোলার এখনো সুযোগ রয়েছে। দেশের সব সুস্থধারার চলচ্চিত্রের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাব যেন তাঁরা সংস্কৃতিবলয়ে চলচ্চিত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে ওই স্থানে অবশ্যই একটি জাতীয় চলচ্চিত্রকেন্দ্র গড়ে তোলেন।
তানভীর মোকাম্মেল
চলচ্চিত্রকার, ঢাকা।

১৪ বছর ধরে কল্পনা চাকমা কোথায়?
১২ জুন রাঙামাটির বাঘাইছড়ির মেয়ে কল্পনার চাকমা নিরুদ্দেশ হওয়ার ১৪ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাতে কল্পনা চাকমা অপহূত হন। তার পর থেকে তিনি নিরুদ্দেশ। কল্পনার চাকমার বাড়ির উত্তরে ও পশ্চিমে দুটি সেনাক্যাম্প ছিল। দুটি ক্যাম্পের মাঝখান থেকে কারা কীভাবে একটি মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে, এ প্রশ্নের উত্তর আজও মেলেনি।
কল্পনা চাকমা কোথায় আছেন, কেমন আছেন, তা কেউ জানে না। এভাবে চলে যাচ্ছে ১৪টি বছর। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন গভীর রাতে অপহরণ হওয়া এই পাহাড়ি মেয়ের খবর সে সময় দেশের প্রায় সব সংবাদপত্রে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছিল। অনেক ফলো-আপ প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছিল। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন ১৪ বছরেও প্রকাশ করা হয়নি। কী সুন্দর গণতান্ত্রিক একটি সভ্য দেশে পাহাড়ি মানুষ বেঁচে থাকে।
সে সময়ের প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন। পার্বত্যবাসীর পক্ষে তাঁর কাছে আকুল আবেদন, কল্পনা চাকমার কী পরিণতি হয়েছে, তা দেশাবাসীকে জানানোর পদক্ষেপ নিন। যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল, সেই কমিটি তদন্ত করেছিল কি না, করে থাকলে কী জানতে পেরেছিল, না আদৌ কিছু জানতে পারেনি—এসব আমরা জানতে চাই। একটি স্বাধীন সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশের একজন নারী নাগরিক নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন, রাষ্ট্র, তার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো—কেউই কিছুই উদ্ধার করতে পারল না দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে! এটা কি মেনে নেওয়া যায়। না, আমরা কল্পনা চাকমার হদিস জানতে চাই, তিনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন বা আদৌ আছেন কি না—আমরা জানতে চাই।
পাটটুরু টুরু চাকমা
patturu969@yahoo.com

বাজেট ও আত্মনির্ভরশীলতা
একটা সময় ছিল, যখন বাঙালির ছিল গোলাভরা ধান আর পুকুরভরা মাছ। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশ ছিল ‘সোনালি আঁশের দেশ’ নামে পরিচিত। আর আজ আমাদের জাতীয় বাজেট তৈরিতেও প্রয়োজন হয় বিদেশি অর্থের!
একসময় আমরা পরাধীন ছিলাম। বহু সংগ্রাম শেষে রক্তের বিনিময়ে অর্জন করেছি স্বাধীনতা। পেয়েছি সার্বভৌম গণতান্ত্রিক দেশ। কিন্তু সেই স্বাধীন-সার্বভৌম দেশেও সব মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি আসেনি; বরং দারিদ্র্যের কশাঘাতেই জর্জরিত অধিকাংশ মানুষ। উপর্যুপরি বিদেশি সহায়তা থেকে দেশকে মুক্ত করার কোনো উদ্যোগ আমাদের নেই; বরং আত্মনির্ভরশীল হওয়ার বদলে দিনে দিনে কেবল সাহায্যনির্ভরই হয়ে পড়েছি আমরা। বিদেশি সাহায্যে নির্ভরশীলতা প্রায় পরাধীনতার সমতুল্য।
কিন্তু এভাবে আর কতকাল? কবে আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হব? কবে আমরা মুক্তি পাব বিদেশি ঋণ আর কথিত বৈদিশিক সহযোগিতার নির্ভরতা থেকে?
আমাদের এবারের বাজেটে থাকুক অর্থনৈতিক আত্মনির্ভরশীলতা অজর্নের অঙ্গীকার। বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় উৎপাদনশীল খাতগুলোতে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। আমরা যেন পণ্য উৎপাদন করে নিজেদের চাহিদা মিটিয়েও বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি, সে লক্ষ্যে পরিকল্পনা ও উদ্যোগ নেওয়া হোক। বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে, এমন উদ্যোগ নেওয়া হোক। সেই সঙ্গে এমন উদ্যোগ নেওয়া জরুরি, যাতে করে মানুষের আয় বৃদ্ধি পায়। নজর দেওয়া হোক দেশি শিল্পের বিকাশের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির দিকে। পাটশিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করার দিকে বেশি নজর দেওয়া জরুরি। কারণ পরিবেশবান্ধব পণ্যের বাজার বিশ্বজুড়েই প্রসারিত হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজারে পাট ও পাটজাত পণ্যের চাহিদা বাড়ছে—এমন খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এ ছাড়া কৃষি খাতে উন্নয়ন করে আমরা যাতে অনেক কৃষিপণ্যও রপ্তানি করতে পারি, সে লক্ষ্যেও কাজ করা উচিত, নীতি নির্ধারণ করা উচিত। সর্বোপরি, যে বিশেষ খাতটির দিকে বেশি দৃষ্টি ও বেশি অর্থ বরাদ্দ করা উচিত তা হচ্ছে শিক্ষা খাত। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীই পারে দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে দেশকে মুক্ত করতে। দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হয়ে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জন করাই তো ছিল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য। সেই চূড়ান্ত লক্ষ্য অর্জনের দিকে দৃষ্টি রেখেই গৃহীত হোক এবারের জাতীয় বাজেট।
বন্দনা আমীর, ঢাকা।

ফেসবুক: সরকারকে ধন্যবাদ
হঠাৎ করে ফেসবুক বন্ধ করে দেওয়ার পর দেশজুড়ে যে ব্যাপক প্রতিবাদের ঝড় উঠেছিল, সরকার সেটাকে আমলে নিয়ে ফেসবুকের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এ জন্য সরকারকে অবশ্যই ধন্যবাদ জানাতে হয়। জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা সব গণতান্ত্রিক সরকারের কাছেই প্রত্যাশিত। কিন্তু অনেক সময় সেটা দেখা যায় না; সরকার জনমত উপেক্ষা করেও অনেক সিদ্ধান্ত নেয়। এই প্রবণতা ত্যাগ করা উচিত। বিশেষ করে তথ্যপ্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করে, জনগণের মতামত প্রকাশে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়, এমন সিদ্ধান্ত যেন কখনোই নেওয়া না হয়।
মোহাম্মদ হানিফ, ঢাকা।

খাগড়াছড়ি কলেজে শিক্ষকসংকট
আমরা খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। আমাদের কলেজে তীব্র শিক্ষকসংকট রয়েছে। আর যেসব শিক্ষককে এখানে বদলি করা হয়, তাঁরাও বেশির ভাগ সময় অনুপস্থিত থাকেন। ফলে আমাদের কলেজে শিক্ষার পরিবেশ অনেক দুর্বল। আমরা শুনেছি, সরকারি চাকরিজীবীদের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বদলি করে পাঠানো হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের একটি বিষয় ভাবা উচিত, যাঁদের শাস্তিমূলকভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাঠানো হচ্ছে, তাঁরা এখানে এসে কি আদৌ বদলাচ্ছেন? প্রজাতন্ত্রের বাছাই করা নীতিভ্রষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যদি ঢালাওভাবে এখানে পাঠানো হয়, তাহলে এখানকার প্রশাসন বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরিণতি কী হতে পারে, তা কি কেউ ভেবে দেখেছেন?
আমাদের কলেজে দীর্ঘদিন পর্যন্ত সমাজবিজ্ঞানের কোনো শিক্ষক ছিলেন না। অন্য বিভাগের শিক্ষক দিয়ে সমাজবিজ্ঞানের ক্লাস করানো হতো। দীর্ঘদিন পর আমরা সমাজবিজ্ঞানের একজন শিক্ষক পেয়েছি। কিন্তু তাঁর অতীত ইতিহাস আমাদের আনন্দিত করার পরিবর্তে আতঙ্কিতই করে তুলেছে। আগের কলেজে থাকার সময় তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধ ও নৈতিক স্খলনের অভিযোগ উঠেছিল। ২০০৪ সালে প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হলে সেখানকার তৎকালীন পৌর চেয়ারম্যান, ইউএনও এবং কলেজ কর্তৃপক্ষ এক সালিসি বৈঠকে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এলাকা ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছিল। তাঁর নানা অনৈতিক কার্যকলাপের কাহিনি ২০০৬ সালে কয়েকটি জাতীয় দৈনিক ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
শিক্ষক নামধারী এমন নীতিভ্রষ্ট ব্যক্তির কাছে কোনো ছাত্রী নিরাপদ নয়। শুধু তিনি নন, এই কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষকও খুনের মামলার আসামি ছিলেন। তাই আমাদের প্রশ্ন হলো, সরকার এমন নীতিভ্রষ্ট ব্যক্তিদের পার্বত্য অঞ্চলে পাঠিয়ে আমাদের কোন শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চায়? এমনিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম অনেক সমস্যাসংকুল পরিবেশে আবর্তিত। ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে যদি পার্বত্য চট্টগ্রামকে শাস্তিমূলক জোন বানানো হয়, তাহলে এখানকার শিক্ষার্থীরাও একদিন বিদ্যা অর্জনের পরিবর্তে নীতিভ্রষ্ট পথে এগিয়ে যেতে পারে।
তাই মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, তাঁরা যেন পার্বত্য চট্টগ্রামের কলেজগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেন। আর সরকার যেন আমাদের খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষকসংকট দূর করতে আশু পদক্ষেপ নেয়। আমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ চাই।
রিটন, সুমন, সোহেল, জুঁই, প্রজ্ঞা, দেবেশ, নির্মল
খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী, খাগড়াছড়ি।

কুষ্ঠরোগ: প্রাচীন আইনটি বাতিল হোক
সমাজ থেকে কুষ্ঠরোগীদের পৃথক রাখার জন্য বৃটিশ ভারতে ১৮৯৮ সালে লেপার্স অ্যাক্ট ১৮৯৮ নামে একটি আইন প্রণীত হয়। নিজ পরিবারেও ঠাঁই পেতেন না বলে কুষ্ঠরোগীরা এখানে-সেখানে পালিয়ে বেড়াতেন, ভিক্ষা করে কোনো রকমে মানবেতর জীবন কাটাতেন। সে সময়ের জন্য ওই আইনটির হয়তো প্রয়োজন ছিল। আইনটির বলে রোগীদের আটক করে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হতো এবং চিকিৎসা দেওয়া হত।
কিন্তু কুষ্ঠরোগের বর্তমান চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। কুষ্ঠ জীবাণুঘটিত একটি রোগ, মূলত ছোঁয়াচে নয়। এখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত কুষ্ঠের আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত সফল চিকিৎসা আছে। বাংলাদেশের সমস্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র, সদর হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, লেপ্রসি মিশনের সমস্ত ক্লিনিক ও হাসপাতালসহ কুষ্ঠ রোগীদের নিয়ে কর্মরত সমস্ত সংস্থায় বিনামূল্যে এর চিকিৎসা পাওয়া যায়।
কুষ্ঠরোগী ও তাদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি সমাজের অনেক মানুষ এখনও সেই পুরান অস্পৃশ্যতার মনোভাব পোষণ করেন। এখন জাতিসংঘ ঘোষিত মানবাধিকার সনদ, দেশের সংবিধান, জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধি মানুষের অধিকার সনদ ইত্যাদির আলোকে কুষ্ঠরোগীদের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আইন/নীতিমালা প্রয়োজন। গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘লেপার্স অ্যাক্ট ১৮৯৮ রিপিল বিল ২০১০’ উত্থাপিত হয়েছে। আশা করি বিলটি সংসদে গ্রহণের মধ্য দিয়ে লেপ্রসি অ্যাক্ট নামের পুরোনো আইনটির বিলোপ ঘটবে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে সাধারণ চিকিৎসা ব্যবস্থার মূলধারার সঙ্গে কুষ্ঠরোগের চিকিৎসাকেও সমন্বিত প্রয়োজন। পৃথিবীর অনেক দেশেই কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসাকে সাধারণ স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে একীভুত করা হয়েছে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে কুষ্ঠরোগী ও তাদের পরিবার-পরিজনদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া সকলের দায়িত্ব।
মার্টিন অধিকারী, ঢাকা।

সব সৃজনশীল শাখায় জাতীয় পুরস্কার চাই
৪ মে প্রথম আলোয় মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের ‘সব সৃজনশীল শাখায় জাতীয় পুরস্কার চাই’ শিরোনামের লেখাটি সময়োচিত ও বাস্তবসম্মত। চলচ্চিত্র ছাড়া বাংলাদেশের শিল্প-সংস্কৃতির অন্য শাখাগুলোর কর্মীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, এমনকি সামান্য স্বীকৃতি থেকেও বঞ্চিত।
মুহাম্মদ জাহাঙ্গীরের লেখাটির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলতে চাই, চলচ্চিত্রকে যেমন সরকার প্রতিবছর পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, তেমনি শিল্প-সংস্কৃতির অন্যান্য শাখাকেও প্রতিবছর সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া উচিত।
সরকার একটি পরিচালনামণ্ডলী গঠন করবে—যারা সারা বছরের কবিতা, গল্প, উপন্যাস, মঞ্চনাটক, টিভি নাটক, বেতার অনুষ্ঠান, গীতিকবিতা ইত্যাদি সংগ্রহ করে বিচার বিশ্লেষণ করে পুরস্কার ঘোষণা করবেন এবং চলচ্চিত্রের পুরস্কার বিতরণের মতো একটি রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী অথবা রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রদান করবেন।
বাংলা একাডেমীও প্রতিবছর রচিত গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, নাটকের পাণ্ডুলিপি আহ্বান করতে পারে। প্রতিটি শাখা থেকে বাছাই করে কমপক্ষে তিনটি বই প্রকাশ করবে। পাঁচটি ক্যাটাগরি থেকে ১৫টি বই প্রকাশিত হবে এবং সেসব প্রকাশিত বই নিয়ে বাংলা একাডেমী মেলায় আলাদা একটি স্টলের ব্যবস্থা করবে। মনোনীত প্রতিজন লেখককে পুরস্কার দেবে। এটা হবে অমর একুশে বইমেলার প্রণোদনা। লেখকেরা পাবেন স্বীকৃতি। এভাবে প্রতিটি সৃজনশীল শাখাকে প্রণোদনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে গেলে দেশ ও জাতি হবে সমৃদ্ধ।
মনি হায়দার
গল্পকার ও সংস্কৃতিকর্মী, রামপুরা, ঢাকা।

আইলা দেখার এক বছর পর
সেদিন ২৫ মে ২০০৯, সোমবার। সকাল থেকে আকাশ মেঘে ঢাকা। নদীতে প্রচণ্ড তুফান। পরদিন মঙ্গলবার আমার এসএসসি পরীক্ষার ফল। সেই আনন্দে সকাল থেকে বৃষ্টিতে ভিজছি আর মাঠে দৌড়াদৌড়ি করছি। দৌড়ে এক কিলোমিটার দূরে বাজারে চলে এলাম। মায়ের কথামতো কিনলাম কিছু মসলা ও তরকারি। ওয়াপদা রাস্তায় উঠে দেখি, রাস্তা সরু হয়ে এসেছে। নদীর জল উপচে রাস্তার ওপাশে এসে পড়ছে। ভিজতে ভিজতে বাড়ি পৌঁছালাম। মায়ের কাছে বললাম মাছ ধরার জালটি দিতে। সেই জাল নিয়ে বাড়ির পাশের ইটভাটার ইটের ফাঁকে ফাঁকে মাছ ধরলাম। বৃষ্টিতে টেংরা, কই খাল থেকে ডাঙায় উঠে এসেছে। বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে শীত করছিল। গোসল করে কাপড় পাল্টালাম। ছাতা মাথায় দিয়ে ওয়াপদা রাস্তার ওপর গিয়ে দেখলাম, যেসব মানুষের ঘরবাড়ি নদীর কিনারে, তাদের ঘরবাড়ি ইতিমধ্যে ভেঙেচুরে, দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। আমাদের বাড়ির সামনের ওয়াপদার জায়গাটি ভেঙে যাবে। লোকমুখে সংবাদ এল, দুর্গাবাটির বাঁধ ভেঙে গেছে; ঝাপা, কামালবাটির বাঁধ ভেঙে গেছে। বাবা বাইরে ছিলেন। ছুটে এসে বললেন, ‘সবকিছু গুছিয়ে নাও, বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে।’ ঠিক সেই মুহূর্তে দেখতে পেলাম, সাগরের উত্তাল ঢেউ যেমন বেগে চলে, ঠিক তেমনি ছুটে আসছে জল। আমি তাড়াতাড়ি কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে মা-বাবার সঙ্গে বাড়ি ছাড়লাম। কোনো দিন ভাবিনি যে আমার জীবনে এমন একটা পরিস্থিতি আসবে। পিচের রাস্তায় উঠতে না-উঠতেই বাড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বাড়িটি তলিয়ে গেল। দ্রুত হেঁটে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের গার্লস স্কুলে পৌঁছালাম। এটির দোতলায় আশ্রয় নিলাম। সেখানে অনেক লোক। পা রাখার জায়গা নেই। অনেকে সঙ্গে এনেছে হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল। মাকে দোতলায় রেখে আমি নিচতলায় এলাম বাবার খোঁজে। বাবা ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুলের মালামাল রক্ষা করা বাবার দায়িত্ব। ছয়টি কম্পিউটার তুলে দিলেন দোতলায়। এভাবে জিনিসপত্র রক্ষা করতে বাবা নিজের জীবনের মায়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। হঠাৎ স্কুলের নিচতলা প্রায় ডুবে গেল। বাবাকে অনুরোধ করলাম ওপরে ওঠার জন্য। তবু তিনি অফিসের কাজ করছিলেন। সন্ধ্যা হওয়ার আগেই পুরো এলাকা তলিয়ে গেছে। দুঃখ-দুর্দশার মাঝে হঠাৎ মনে পড়ল, আগামীকাল আমার পরীক্ষার ফল। মুঠোফোনটা বের করে মেসেজ পাঠালাম, কিন্তু কোনো খবর পাইনি। ফল তো বেরোবে আগামীকাল। আত্মীয়স্বজন মুঠোফোনে খবর পাঠাতে লাগল। কেউ গাছে উঠে বসে রয়েছে, কেউ ঘরের চালে। তারা তাদের জন্য নৌকা পাঠাতে বলছে, নইলে তারা বাঁচবে না। কিন্তু কীভাবে পাঠাব নৌকা? আমরাও তো এক প্রকার ভেসে আছি। চারপাশে জল আর জল। চোখে ঘুম, কিন্তু ঘুমানোর জায়গা নেই। পেটে ক্ষুধা, তবু খাওয়ার কথা মনে নেই। এই জনদুর্ভোগের মধ্যেও খবর আসছে, একদল চোর নৌকায় চড়ে বাড়ি বাড়ি চুরি করছে। কিন্তু দুর্ভোগে পড়া মানুষের তাতে কোনো দুঃখ নেই। তাদের তখন একটাই চাওয়া—জীবনটা। সারা রাত কাটালাম বসে থেকে। সকাল হলে কেউ কেউ তাদের বাড়ির দিকে রওনা দিচ্ছে। আমি আর আমার মা দোতলা থেকে নিচে নামলাম। কিন্তু কীভাবে রাস্তায় নামব। রাস্তায় তো কোমরসমান জল। তবু বাড়ির প্রতি টান। কিছু পথ যেতেই দেখলাম, বিভিন্ন গাছে, রাস্তার ধারে বিষাক্ত সাপ। সাংবাদিক, ক্যামেরাম্যানদের ভিড়; বিভিন্ন সংস্থার গাড়ি। চারপাশে স্বজন হারানোর আর্তনাদ। এসএসসির ফলে জিপিএ-৫ পেয়েও মনে সেদিন কোনো আনন্দ ছিল না। আনন্দ করব কার সঙ্গে। সবাই তো নিরানন্দে দিন কাটাচ্ছে।
তারপর এক বছর হয়ে গেল। এখন পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় ঘর তুলে বাস করছে। ঘরবাড়ি, জমি-জায়গা—সবকিছু এখনো জলের নিচে। জোয়ার এলে ডুবে যায়, ভাটা এলে জাগে। মেম্বার, চেয়ারম্যান থেকে সরকার পর্যন্ত কারও যেন খেয়াল নেই আমাদের প্রতি।
আমরা কি কোনো দিন বাড়ি ফিরতে পারব না?
সুরজিত মণ্ডল, শিক্ষার্থী, খুলনা।

No comments

Powered by Blogger.