সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী-যা কিছু করার আমাদের এ বাজেটেই করতে হবে by আহমেদ নূর
'আগামী বাজেটে সরকারের সব প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্য থাকবে। কারণ ওটি হবে মহাজোট সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পূর্ণাঙ্গ শেষ বাজেট। এরপর আমরা আরেকটি বাজেট দিতে পারব, তবে সেটি বাস্তবায়নে মাত্র ছয় মাস সময় পাওয়া যাবে। কাজেই আমাদের যা কিছু করার এ বাজেটেই করতে হবে।'
সিলেটে কালের কণ্ঠকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারের এমন অবস্থানের কথা তুলে ধরেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেট হবে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের বাজেট। বাজেটে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অধিক গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া গুরুত্ব থাকবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কী কী করতে চেয়েছিলাম, কী কী করেছি, আর কী কী করতে চাই_তার একটা হিসাব-নিকাশ থাকবে নতুন বাজেটে।' তবে তিনি আগামী বাজেটকে নির্বাচনী বাজেট বলতে নারাজ। অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের মনে রাখতে হবে, এটি একটি রাজনৈতিক সরকারের বাজেট। কিন্তু নির্বাচনী বাজেট বলতে যা বোঝায় এটি তা নয়।' দেশ ও জনগণের কল্যাণ এবং উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েই বাজেট প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবাহ বৃদ্ধির আশা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরো বিকাশ ঘটবে। এতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে, মুদ্রাস্ফীতি কমবে এবং রপ্তানি বাড়বে।
জিডিপি ৭.২ শতাংশ : আসছে বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ভর্তুকি বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের অধিক ঋণ নেওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ইত্যাদি কারণে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে এবং এর চাপ সাধারণ মানুষের ওপর পড়ে। মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে আগামী বাজেটে সরকারের ব্যাংক ঋণ কমানো, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রায় সব ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়বে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বাজেটে একটা বিশেষ বরাদ্দও রাখা হবে।
ভর্তুকি কমানো হবে : আগামী বাজেটে সার্বিকভাবে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, হয়তো এ খাতে মোট অঙ্ক কমবে না, তবে আনুপাতিকভাবে ভর্তুকি কমবে। ভর্তুকি সুবিধা ধনী-গরিব সমানভাবেই পায় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'কৃষি বাজেটের পুরোটাই ভর্তুকি। দুই দিকে এ ভর্তুকি দিতে হয়। একটা হচ্ছে কৃষিতে, আর অন্যটি খাদ্যে।' চলতি অর্থবছরে কৃষি খাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, এটাকে 'অসাধারণ' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে কৃষি খাতে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এর আকার অনেক বেড়ে গেছে। এবারের মতো ভর্তুকি আগামী বাজেটে দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে আগামী বাজেটে পোলট্রি শিল্পকে সহায়তার জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দামের ওপর। চলতি অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারের মূল্য বাড়লেও সরকার দাম না বাড়িয়ে ভর্তুকি বাড়িয়েছে। জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে সারের মূল্যের সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এবার কতটা ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সারে ভর্তুকি প্রদানের ব্যাপারে এবার একটা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কারণ কার্ড সিস্টেম চালু থাকায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলে ভর্তুকি সরাসরি কৃষকের হাতে পেঁৗছে, কিন্তু সারের ক্ষেত্রে এটা নেই।
বাড়ছে করের আওতা : আগামী অর্থবছরে কোনো খাতেই নতুনভাবে করারোপ না করা হলেও করের আওতা বাড়ানো হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। কর আদায় অনেক বাড়বে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাজেটে অধিকসংখ্যক মানুষকে যাতে কর দিতে বাধ্য করা যায়, সে জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ জন্য উপজেলা পর্যায়েও কর কার্যক্রম সমপ্রসারণ করা হবে। তবে প্রত্যেক টিআইএনধারীর ওপর বাধ্যতামূলকভাবে কর আরোপ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নানা কারণে অনেককেই টিআইএন নম্বর করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সে করের আওতায় রয়েছে।
আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আদায় করা সম্ভব জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আদায়ে অনেক নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অর্থপাচার রোধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা, পরিবহন খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, মোবাইল কম্পানিগুলোর কাছ থেকে সঠিক পরিমাণে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার জন্য বাজেটে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে।
করপোরেট ট্যাঙ্ কমবে না : আগামী বাজেটে করপোরেট ট্যাঙ্ কমানো সম্ভব হবে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'দেশে করপোরেট ট্যাঙ্রে হার বেশি। তবে এ বছর তা কমানো সম্ভব হবে না। কারণ এটি একটি ঝামেলার ব্যাপার। এক জায়গায় হাত দিলে অন্য জায়গায় সমস্যা দেখা দেয়। তাই সরকারের এই শেষ সময়ে এসে এটা করতে চাই না। তবে বাজেটে এ ব্যাপারে হয়তো একটা দিকনির্দেশনা থাকবে, যাতে করে পরবর্তী সরকার এসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।'
বাজেটের আকার বাড়বে : আগামী বাজেটের আয়তন আরো বাড়বে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রায় এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি বা কম হতে পারে বাজেটের অঙ্ক। তাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে উন্নয়ন খাতের জন্য। চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী বাজেটের আকার প্রায় ১৭ শতাংশ বাড়বে। তিনি জানান, খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে কৃষি খাতে বাজেট বাড়তে পারে। কৃষি খাতের পুরোটাই প্রণোদনা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, কৃষি ও গ্রামীণ অবকাঠামো মিলে এবার এ খাতে অন্যান্য বছরের তুলনায় বরাদ্দ বেশিই হবে। তা ছাড়া দেশের পোলট্রি শিল্প, ভুট্টা, বিট এবং বিনোদন ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থনীতিতে কিছু ঝুঁকি ছিল; তবে দক্ষতার সঙ্গে সেসব ঝুঁকি মোকাবিলা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অভিজ্ঞতা থেকেই বাজেট প্রণয়ন করা হবে। বাজেটে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিধবা ও মাতৃত্বকালীন ভাতার মতো সুবিধাভোগীদের সংখ্যা অবশ্যই বাড়বে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতকে। নতুন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য থাকবে। দেশের অর্থনীতি ভালো রয়েছে এবং দিন দিন ভালোর দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে আগের তুলনায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন দিন তা আরো বাড়ছে। আরো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আসছে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হবে। বর্তমান সরকার তথ্য-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটি ডিজিটাল দেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সে লক্ষ্যে আসছে বাজেটে তথ্য-প্রযুক্তি খাতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'সেটা বাজেটেই জানতে পারবেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।'
অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেট হবে বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি পূরণের বাজেট। বাজেটে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং জনগণের কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অধিক গুরুত্ব পাবে। এ ছাড়া গুরুত্ব থাকবে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে কী কী করতে চেয়েছিলাম, কী কী করেছি, আর কী কী করতে চাই_তার একটা হিসাব-নিকাশ থাকবে নতুন বাজেটে।' তবে তিনি আগামী বাজেটকে নির্বাচনী বাজেট বলতে নারাজ। অর্থমন্ত্রী বলেন, 'আমাদের মনে রাখতে হবে, এটি একটি রাজনৈতিক সরকারের বাজেট। কিন্তু নির্বাচনী বাজেট বলতে যা বোঝায় এটি তা নয়।' দেশ ও জনগণের কল্যাণ এবং উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েই বাজেট প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে বলেও তিনি দাবি করেন। আগামী অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ সম্পদের প্রবাহ বৃদ্ধির আশা প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতির আরো বিকাশ ঘটবে। এতে সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন হবে, মুদ্রাস্ফীতি কমবে এবং রপ্তানি বাড়বে।
জিডিপি ৭.২ শতাংশ : আসছে বাজেটে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭.২ শতাংশ। এ ছাড়া মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। ভর্তুকি বৃদ্ধি ও ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের অধিক ঋণ নেওয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ইত্যাদি কারণে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিলে মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে এবং এর চাপ সাধারণ মানুষের ওপর পড়ে। মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে আগামী বাজেটে সরকারের ব্যাংক ঋণ কমানো, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রায় সব ক্ষেত্রে বরাদ্দ বাড়বে বলে জানান তিনি। এ ছাড়া দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বাজেটে একটা বিশেষ বরাদ্দও রাখা হবে।
ভর্তুকি কমানো হবে : আগামী বাজেটে সার্বিকভাবে ভর্তুকির পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, হয়তো এ খাতে মোট অঙ্ক কমবে না, তবে আনুপাতিকভাবে ভর্তুকি কমবে। ভর্তুকি সুবিধা ধনী-গরিব সমানভাবেই পায় উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'কৃষি বাজেটের পুরোটাই ভর্তুকি। দুই দিকে এ ভর্তুকি দিতে হয়। একটা হচ্ছে কৃষিতে, আর অন্যটি খাদ্যে।' চলতি অর্থবছরে কৃষি খাতে যে পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে, এটাকে 'অসাধারণ' হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে কৃষি খাতে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি রাখা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে এর আকার অনেক বেড়ে গেছে। এবারের মতো ভর্তুকি আগামী বাজেটে দেওয়া সম্ভব হবে না। তবে আগামী বাজেটে পোলট্রি শিল্পকে সহায়তার জন্য একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হতে পারে বলে জানান তিনি।
সারে ভর্তুকি প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, এটা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দামের ওপর। চলতি অর্থবছরে আন্তর্জাতিক বাজারে ইউরিয়াসহ অন্যান্য সারের মূল্য বাড়লেও সরকার দাম না বাড়িয়ে ভর্তুকি বাড়িয়েছে। জ্বালানির মূল্যের সঙ্গে সারের মূল্যের সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এবার কতটা ভর্তুকি দেওয়া সম্ভব হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে সারে ভর্তুকি প্রদানের ব্যাপারে এবার একটা কৌশল নির্ধারণ করতে হবে। কারণ কার্ড সিস্টেম চালু থাকায় বিদ্যুৎ ও ডিজেলে ভর্তুকি সরাসরি কৃষকের হাতে পেঁৗছে, কিন্তু সারের ক্ষেত্রে এটা নেই।
বাড়ছে করের আওতা : আগামী অর্থবছরে কোনো খাতেই নতুনভাবে করারোপ না করা হলেও করের আওতা বাড়ানো হবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। কর আদায় অনেক বাড়বে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, বাজেটে অধিকসংখ্যক মানুষকে যাতে কর দিতে বাধ্য করা যায়, সে জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ জন্য উপজেলা পর্যায়েও কর কার্যক্রম সমপ্রসারণ করা হবে। তবে প্রত্যেক টিআইএনধারীর ওপর বাধ্যতামূলকভাবে কর আরোপ করা হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, নানা কারণে অনেককেই টিআইএন নম্বর করার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সে করের আওতায় রয়েছে।
আগামী অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার কোটি টাকা। এই লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আদায় করা সম্ভব জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজস্ব আদায়ে অনেক নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অর্থপাচার রোধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা, পরিবহন খাত থেকে রাজস্ব আয় বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ, মোবাইল কম্পানিগুলোর কাছ থেকে সঠিক পরিমাণে রাজস্ব আদায় নিশ্চিত করার জন্য বাজেটে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে।
করপোরেট ট্যাঙ্ কমবে না : আগামী বাজেটে করপোরেট ট্যাঙ্ কমানো সম্ভব হবে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'দেশে করপোরেট ট্যাঙ্রে হার বেশি। তবে এ বছর তা কমানো সম্ভব হবে না। কারণ এটি একটি ঝামেলার ব্যাপার। এক জায়গায় হাত দিলে অন্য জায়গায় সমস্যা দেখা দেয়। তাই সরকারের এই শেষ সময়ে এসে এটা করতে চাই না। তবে বাজেটে এ ব্যাপারে হয়তো একটা দিকনির্দেশনা থাকবে, যাতে করে পরবর্তী সরকার এসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে সহজ হয়।'
বাজেটের আকার বাড়বে : আগামী বাজেটের আয়তন আরো বাড়বে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রায় এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি বা কম হতে পারে বাজেটের অঙ্ক। তাতে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকবে উন্নয়ন খাতের জন্য। চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী বাজেটের আকার প্রায় ১৭ শতাংশ বাড়বে। তিনি জানান, খাদ্য নিরাপত্তার অংশ হিসেবে কৃষি খাতে বাজেট বাড়তে পারে। কৃষি খাতের পুরোটাই প্রণোদনা উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, কৃষি ও গ্রামীণ অবকাঠামো মিলে এবার এ খাতে অন্যান্য বছরের তুলনায় বরাদ্দ বেশিই হবে। তা ছাড়া দেশের পোলট্রি শিল্প, ভুট্টা, বিট এবং বিনোদন ক্ষেত্রে বিশেষ প্রণোদনা বরাদ্দ দেওয়া হবে। অর্থনীতিতে কিছু ঝুঁকি ছিল; তবে দক্ষতার সঙ্গে সেসব ঝুঁকি মোকাবিলা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ অভিজ্ঞতা থেকেই বাজেট প্রণয়ন করা হবে। বাজেটে বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিধবা ও মাতৃত্বকালীন ভাতার মতো সুবিধাভোগীদের সংখ্যা অবশ্যই বাড়বে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যুতের চাহিদার সঙ্গে সরবরাহ বাড়ানো জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বিদ্যুৎ খাতকে। নতুন বাজেটে বিদ্যুৎ খাতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্য থাকবে। দেশের অর্থনীতি ভালো রয়েছে এবং দিন দিন ভালোর দিকে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, দেশে আগের তুলনায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে। দিন দিন তা আরো বাড়ছে। আরো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে আসছে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখা হবে। বর্তমান সরকার তথ্য-প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটি ডিজিটাল দেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, সে লক্ষ্যে আসছে বাজেটে তথ্য-প্রযুক্তি খাতেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'সেটা বাজেটেই জানতে পারবেন। সে পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।'
No comments