ভারত-গণতন্ত্রের ঘাড়ে দুর্নীতির ভূত by কুলদীপ নায়ার
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় দুর্নীতি এতই গতানুগতিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এগুলো আর খবরও হয় না। মানুষও দুর্নীতির সঙ্গে বসবাসকেই স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছে। তার মানে এই না যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের অসন্তোষ নেই। কিন্তু শীর্ষস্থানীয় নেতাদের এর সঙ্গে জড়িত হতে দেখে তারা বুঝে নেয়, হয়তো এর কোনো প্রতিকার নেই।
সরকারের বাসনপত্রের আলমিরা থেকে একের পর এক দুর্নীতি-কেলেঙ্কারির হাঁড়ি ধপাস ধপাস করে পড়ায় ভারত অস্থির হয়ে উঠেছে। ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং অপেক্ষাকৃত মুক্ত গণমাধ্যম একসময় প্রতিবেশী দেশগুলোতেও আস্থার সঞ্চার করেছিল। আর এখন নিজস্বতা না হারিয়েই সেসব রাষ্ট্রও ভারতের দুর্নীতির রথে উঠে পড়তে সক্ষম হবে। আবার ভারতে দুর্নীতিবিরোধী বড় পদক্ষেপ তাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে প্রেরণা দেবে।
বহু ঢাকঢোল পেটানো লোকপাল বিল আবারও মুলতবি হওয়ায় ভারতীয়দের মতো তারাও বড় রকমের নাড়া খেল। গত ৪২ বছর যাবৎ এই বিলের কপালে এটাই ঘটছে। এ সময়ের সরকারগুলো, যাদের বেশির ভাগই ছিল কংগ্রেসের, একের পর এক অজুহাত দিয়ে শাসক ও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের বিচারের মুখোমুখি করার আইন ঠেকিয়ে রাখছে। এমনকি লোকসভা থেকে এটা পাস হয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আলোচনায় উঠলেও, মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার অজুহাতে গত নভেম্বরে সরকার বৈঠকটি স্থগিত করে দেয়। এবারও সেই একই নাটক করা হয়েছে, তবে পাণ্ডুলিপিতে সামান্য কিছু বদল এসেছে।
রাজ্যসভায় চোখের সামনে এই নাটকের একের পর এক দৃশ্য উন্মোচিত হতে দেখেছি। রুদ্ধ নিঃশ্বাসে আমি সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। সেদিই চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য বিলটা পেশ করা হয়। একটা আপত্তির জায়গা হলো, রাজ্যগুলো কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যের লোকযুক্ত পদে নিয়োগ হোক তা চায় না। তারা মনে করে, নিজেদের এলাকার দুর্নীতি দূর করার কর্তৃপক্ষ তারা ছাড়া অন্য কারও হওয়া উচিত নয়।
জেদাজেদির আরও কিছু বিন্দু রয়েছে। যেমন, এক. কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের নিয়ন্ত্রণ থাকা, এবং দুই. লোকপাল নিয়োগের জন্য একটি নির্বাচকমণ্ডলী গঠন (বর্তমানে এই মণ্ডলীতে সরকারের মনোনীত ব্যক্তিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ)। আশা করা হয়েছিল, ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এই দুটি বিষয় নিয়েই গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নেবে। এমনকি তারা এ-ও বলেছিল যে সংসদের বাজেট অধিবেশন চলাকালেই ‘শক্তিশালী লোকপাল বিল’ সংসদে পাস হবে। সংসদ অধিবেশন শেষ হলো মঙ্গলবার, কিন্তু কোনো পদক্ষেপই দেখা গেল না।
এই বিরক্তিকর নাটকের প্রথম দৃশ্য দেখা গেল তখন, যখন মুলায়াম সিং যাদবের দল সমাজবাদী পার্টি লোকপাল বিলকে পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এটা ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাত। কংগ্রেস যে বিলটা পাস করতে চায় না, দৃশ্যত প্রস্তাবটি ছিল তার নজির। অন্যদিকে জনগণ যেহেতু এই বিল পাস হওয়া না-হওয়া দিয়েই কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরোধিতা পরীক্ষা করতে চায়, সেহেতু তারা দেখাতে চায় যে বিল পাসের ব্যাপারে তারা মরিয়া।
রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা অরুণ জেটলি সেখানে উপস্থিত থাকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেছেন, সরকার বিলটা কি চায় নাকি চায় না? ড. মনমোহন সিং নির্বিকারভাবে বসে ছিলেন। কিন্তু থলের বিড়াল বেরিয়ে গেল তখনই, যখন সরকার সিলেক্ট কমিটি নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা দেখাতে শুরু করল। এখান থেকেই দ্বিতীয় দৃশ্য তৈরি হলো, যেখানে সরকারের ষড়যন্ত্রী কাজকারবার ধরা পড়ল। সরকারের পদক্ষেপের বিষয়টি ভোটে দেওয়া হলে দেখা গেল, কোনো বিরোধিতা নেই।
জেটলি সরকারের সোচ্চার প্রতিপক্ষ হলেও এ ব্যাপারে একদম সরকারপন্থী। একই ভূমিকায় নেমেছে বিজেপিও। বোঝা যায়, মুলায়াম সিং যাদব কংগ্রেসকে বাঁচিয়েছেন, কারণ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতিবিরোধী মামলা ঝুলে আছে। সরকার যখনই দেখবে মুলায়াম সিং লাইনের বাইরে চলে যাচ্ছেন তখনই তারা মামলাগুলো সক্রিয় করে দেবে। সবচেয়ে বেশি হতহম্ভ হয়ে গেলাম বিজেপির ভোল পাল্টানো দেখে। কেন তারা কংগ্রেসের বিরোধিতা করল না তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমি কখনো দেখিনি যে প্রধান বিরোধী দল লোকপাল বিলের ভবিষ্যৎ জানতে টেলিভিশনের পর্দায় চোখ লাগিয়ে থাকা লাখো কোটি মানুষের চোখের সামনে এভাবে ডিগবাজি খাচ্ছে!
একটা ব্যাখ্যা আমাকে দেওয়া হয়েছে, যখন বিলটা ভোটে দেওয়া হলো সে সময় বিজেপির যথেষ্টসংখ্যক সদস্য পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন না। প্রশ্নটা এই না যে বিজেপি সরকারের চালকে নস্যাৎ করতে পারল কি পারল না। বিজেপি লোকপাল বিল সমর্থনে নিষ্ঠার পরিচয় দেয় কি না, সেটাই ছিল প্রশ্ন। সত্যিকার পরীক্ষার সময়ই বিজেপি গুটিয়ে গেল। এখন তারা যত হট্টগোলই করুক না কেন, তাদের মুখোশ খুলে পড়েছে।
এখন জনগণেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। বামপন্থী ছাড়া আর কেউ লোকপাল চায় না। তারা ভয়ে আছে যে তাহলে তাদের নেতারা ধরা পড়ে যাবে এবং শাস্তি পাবে। আন্না হাজারের আন্দোলন মনে হয় সরকারের অনুরোধে বন্ধ না হলেই ভালো হতো। সে সময় সমগ্র সংসদ সরকারকে বাধ্য করেছিল আন্না হাজারের কাছে এই বার্তা পাঠাতে যে সংসদ শক্তিশালী লোকপাল বিলের পক্ষে।
কোনো সন্দেহ নেই আমার, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২৫ জুলাই থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হলে জনপ্রিয়তা পাবে। যে জনঅসন্তোষ হাজারের মূল শক্তি, তা এখনো নিঃশেষিত হয়নি। আমার একমাত্র দুঃখ এই, হাজারের চারপাশে এত বেশি অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজন জড়ো হয়েছে যে একটি সৎ ও ধর্মনিরপেক্ষ জোট পুনর্গঠন করা কঠিন হবে।
এই বেলায় কালোটাকা বিষয়ে সরকারি শ্বেতপত্র হয়তো কাজে আসবে। বিদেশে কী পরিমাণ কালোটাকা পাচার করা হয়েছে তার কোনো সরকারি হিসাব দেওয়া হয়নি। তার পরও সরকার অর্থ উদ্ধারের জন্য একবারের জন্য কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো ফল না পাওয়া সত্ত্বেও অতীতেও এই চেষ্টা করা হয়েছে। সত্যি যে, আবাসন, সোনা ও পুঁজিবাজার সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমের ওপর এসব খাতের হর্তাকর্তাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
কয়েকটি রাজ্যে তো মন্ত্রীরা নিজেরাই জড়িত। রাজনৈতিক কারণে সরকারের পক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব না হলেও, লোকপাল সেটা পারতেন। এটাই হয়তো কারণ, যে জন্য সংসদের উচ্চকক্ষে লোকপাল বিল নিয়ে এত নাটক করা হলো। ক্ষমতাসীন কংগ্রেস, বিজেপি ও অন্যান্য দলগুলোর বোঝা উচিত যে তারা একসঙ্গে সব মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় সাংবাদিক।
বহু ঢাকঢোল পেটানো লোকপাল বিল আবারও মুলতবি হওয়ায় ভারতীয়দের মতো তারাও বড় রকমের নাড়া খেল। গত ৪২ বছর যাবৎ এই বিলের কপালে এটাই ঘটছে। এ সময়ের সরকারগুলো, যাদের বেশির ভাগই ছিল কংগ্রেসের, একের পর এক অজুহাত দিয়ে শাসক ও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গদের বিচারের মুখোমুখি করার আইন ঠেকিয়ে রাখছে। এমনকি লোকসভা থেকে এটা পাস হয়ে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির আলোচনায় উঠলেও, মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার অজুহাতে গত নভেম্বরে সরকার বৈঠকটি স্থগিত করে দেয়। এবারও সেই একই নাটক করা হয়েছে, তবে পাণ্ডুলিপিতে সামান্য কিছু বদল এসেছে।
রাজ্যসভায় চোখের সামনে এই নাটকের একের পর এক দৃশ্য উন্মোচিত হতে দেখেছি। রুদ্ধ নিঃশ্বাসে আমি সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি। সেদিই চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের জন্য বিলটা পেশ করা হয়। একটা আপত্তির জায়গা হলো, রাজ্যগুলো কেন্দ্রের মাধ্যমে রাজ্যের লোকযুক্ত পদে নিয়োগ হোক তা চায় না। তারা মনে করে, নিজেদের এলাকার দুর্নীতি দূর করার কর্তৃপক্ষ তারা ছাড়া অন্য কারও হওয়া উচিত নয়।
জেদাজেদির আরও কিছু বিন্দু রয়েছে। যেমন, এক. কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের নিয়ন্ত্রণ থাকা, এবং দুই. লোকপাল নিয়োগের জন্য একটি নির্বাচকমণ্ডলী গঠন (বর্তমানে এই মণ্ডলীতে সরকারের মনোনীত ব্যক্তিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ)। আশা করা হয়েছিল, ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এই দুটি বিষয় নিয়েই গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নেবে। এমনকি তারা এ-ও বলেছিল যে সংসদের বাজেট অধিবেশন চলাকালেই ‘শক্তিশালী লোকপাল বিল’ সংসদে পাস হবে। সংসদ অধিবেশন শেষ হলো মঙ্গলবার, কিন্তু কোনো পদক্ষেপই দেখা গেল না।
এই বিরক্তিকর নাটকের প্রথম দৃশ্য দেখা গেল তখন, যখন মুলায়াম সিং যাদবের দল সমাজবাদী পার্টি লোকপাল বিলকে পুনর্বিবেচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। এটা ছিল বিনা মেঘে বজ্রপাত। কংগ্রেস যে বিলটা পাস করতে চায় না, দৃশ্যত প্রস্তাবটি ছিল তার নজির। অন্যদিকে জনগণ যেহেতু এই বিল পাস হওয়া না-হওয়া দিয়েই কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরোধিতা পরীক্ষা করতে চায়, সেহেতু তারা দেখাতে চায় যে বিল পাসের ব্যাপারে তারা মরিয়া।
রাজ্যসভার বিরোধীদলীয় নেতা অরুণ জেটলি সেখানে উপস্থিত থাকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেছেন, সরকার বিলটা কি চায় নাকি চায় না? ড. মনমোহন সিং নির্বিকারভাবে বসে ছিলেন। কিন্তু থলের বিড়াল বেরিয়ে গেল তখনই, যখন সরকার সিলেক্ট কমিটি নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা দেখাতে শুরু করল। এখান থেকেই দ্বিতীয় দৃশ্য তৈরি হলো, যেখানে সরকারের ষড়যন্ত্রী কাজকারবার ধরা পড়ল। সরকারের পদক্ষেপের বিষয়টি ভোটে দেওয়া হলে দেখা গেল, কোনো বিরোধিতা নেই।
জেটলি সরকারের সোচ্চার প্রতিপক্ষ হলেও এ ব্যাপারে একদম সরকারপন্থী। একই ভূমিকায় নেমেছে বিজেপিও। বোঝা যায়, মুলায়াম সিং যাদব কংগ্রেসকে বাঁচিয়েছেন, কারণ তাঁর নিজের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি দুর্নীতিবিরোধী মামলা ঝুলে আছে। সরকার যখনই দেখবে মুলায়াম সিং লাইনের বাইরে চলে যাচ্ছেন তখনই তারা মামলাগুলো সক্রিয় করে দেবে। সবচেয়ে বেশি হতহম্ভ হয়ে গেলাম বিজেপির ভোল পাল্টানো দেখে। কেন তারা কংগ্রেসের বিরোধিতা করল না তা আমাদের বোধগম্য নয়। আমি কখনো দেখিনি যে প্রধান বিরোধী দল লোকপাল বিলের ভবিষ্যৎ জানতে টেলিভিশনের পর্দায় চোখ লাগিয়ে থাকা লাখো কোটি মানুষের চোখের সামনে এভাবে ডিগবাজি খাচ্ছে!
একটা ব্যাখ্যা আমাকে দেওয়া হয়েছে, যখন বিলটা ভোটে দেওয়া হলো সে সময় বিজেপির যথেষ্টসংখ্যক সদস্য পার্লামেন্টে উপস্থিত ছিলেন না। প্রশ্নটা এই না যে বিজেপি সরকারের চালকে নস্যাৎ করতে পারল কি পারল না। বিজেপি লোকপাল বিল সমর্থনে নিষ্ঠার পরিচয় দেয় কি না, সেটাই ছিল প্রশ্ন। সত্যিকার পরীক্ষার সময়ই বিজেপি গুটিয়ে গেল। এখন তারা যত হট্টগোলই করুক না কেন, তাদের মুখোশ খুলে পড়েছে।
এখন জনগণেরই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে। বামপন্থী ছাড়া আর কেউ লোকপাল চায় না। তারা ভয়ে আছে যে তাহলে তাদের নেতারা ধরা পড়ে যাবে এবং শাস্তি পাবে। আন্না হাজারের আন্দোলন মনে হয় সরকারের অনুরোধে বন্ধ না হলেই ভালো হতো। সে সময় সমগ্র সংসদ সরকারকে বাধ্য করেছিল আন্না হাজারের কাছে এই বার্তা পাঠাতে যে সংসদ শক্তিশালী লোকপাল বিলের পক্ষে।
কোনো সন্দেহ নেই আমার, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী ২৫ জুলাই থেকে আবারও আন্দোলন শুরু হলে জনপ্রিয়তা পাবে। যে জনঅসন্তোষ হাজারের মূল শক্তি, তা এখনো নিঃশেষিত হয়নি। আমার একমাত্র দুঃখ এই, হাজারের চারপাশে এত বেশি অনাকাঙ্ক্ষিত লোকজন জড়ো হয়েছে যে একটি সৎ ও ধর্মনিরপেক্ষ জোট পুনর্গঠন করা কঠিন হবে।
এই বেলায় কালোটাকা বিষয়ে সরকারি শ্বেতপত্র হয়তো কাজে আসবে। বিদেশে কী পরিমাণ কালোটাকা পাচার করা হয়েছে তার কোনো সরকারি হিসাব দেওয়া হয়নি। তার পরও সরকার অর্থ উদ্ধারের জন্য একবারের জন্য কর মওকুফের ঘোষণা দিয়েছে। সুনির্দিষ্ট কোনো ফল না পাওয়া সত্ত্বেও অতীতেও এই চেষ্টা করা হয়েছে। সত্যি যে, আবাসন, সোনা ও পুঁজিবাজার সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমের ওপর এসব খাতের হর্তাকর্তাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।
কয়েকটি রাজ্যে তো মন্ত্রীরা নিজেরাই জড়িত। রাজনৈতিক কারণে সরকারের পক্ষে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব না হলেও, লোকপাল সেটা পারতেন। এটাই হয়তো কারণ, যে জন্য সংসদের উচ্চকক্ষে লোকপাল বিল নিয়ে এত নাটক করা হলো। ক্ষমতাসীন কংগ্রেস, বিজেপি ও অন্যান্য দলগুলোর বোঝা উচিত যে তারা একসঙ্গে সব মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না।
ইংরেজি থেকে অনূদিত
কুলদীপ নায়ার: ভারতীয় সাংবাদিক।
No comments