চরাচর-কোনো কোনো বৃক্ষ ক্ষতিও করে by আশিকুর রহমান
আবহমানকালের বিস্তীর্ণ প্রাকৃতিক বনাঞ্চল উজাড় করার পর এখন কৃত্রিম বনায়ন করতে দেশের সর্বত্র নির্বিচারে লাগানো হচ্ছে বেশ কিছু বিদেশি প্রজাতির কাঠজাতীয় গাছ। কয়েক দশক ধরে বনায়ন কর্মসূচিতে স্থান পাচ্ছে এসব গাছ।
এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ইউক্যালিপটাস (Soondias duleis), ইপিল ইপিল (Leucaena leucoceohala) ও আকাশমণি (Acacea auriculiformis)। ইউক্যালিপটাস ও আকাশমণি মেরু অঞ্চলের নিকটবর্তী প্রচণ্ড শীতের দেশে ক্রমবর্ধনশীল গাছ হলেও বাংলাদেশের উজ্জ্বল সূর্যালোক আর নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়ায় তা দ্রুত বেড়ে ওঠে। তাই ফল ও ঔষধি গাছের পরিবর্তে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থকরী কাঠের গাছ হিসেবে এসব গাছ খুব সহজেই এ দেশে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে সক্ষম হয়। পরিবেশবিজ্ঞানীরা বলেন, বিদেশি গাছের বনায়ন পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে ইউক্যালিপটাস, ইপিল ইপিল ও আকাশমণি বায়ুমণ্ডল ও মাটি থেকে অত্যধিক পরিমাণে পানি শুষে নিয়ে পরিবেশকে উষ্ণ করে তোলে। ফলে প্রকৃতি হয়ে ওঠে রুক্ষ। এসব গাছের ছায়া ও আর্দ্রতা নেই। এ কারণে মরুকরণ প্রক্রিয়া দ্রুততর হয়। বিদেশি গাছ জীববৈচিত্র্যের জন্যও ক্ষতিকর। বিদেশি গাছের বনায়ন শুধু পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করছে তা-ই নয়, একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্যের প্রতিও হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশে ক্রমবর্ধমান জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় প্রত্যক্ষভাবে প্রমাণ করেছে, বিদেশি গাছের বনায়নই এর জন্য দায়ী। কেননা বিদেশি গাছের ফুলের পরাগের এলার্জেন দেশি গাছের ফুলের পরাগের তুলনায় ভয়াবহভাবে প্রতিক্রিয়াসম্পন্ন_এ অভিমত চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের। যেসব দেশ থেকে এসব গাছের চারা ও বীজ আমদানি করা হয় সেখানেও এখন আর এসব গাছ তেমন একটা লাগানো হয় না। তা ছাড়া বিদেশি গাছের কাঠ তেমন একটা টেকসই ও মূল্যবান নয়।
প্রায় ১০ কোটি বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগে উদ্ভিদজগতের বিবর্তনে অপুষ্পক সপুষ্পক উদ্ভিদে রূপান্তরিত হয়। ওই সময় পুষ্পরাশির পরাগ রেণু বায়ুমণ্ডলে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। পরাগ রেণুর এ প্রভাবকে বিজ্ঞানীরা 'ইমিউনোলজিক্যাল হাইপারসেনসেটিভ অব পোলেন প্রোটিন' নামে আখ্যায়িত করেন। এ হাইপারসেনসেটিভের কারণে তখন মেরুদণ্ডী প্রাণীদের অনেক প্রজাতিই পরাগ সহনীয় ক্ষমতার অভাবে মহামারিতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। পৃথিবীতে পরাগ রেণু আবির্ভাবের পর মেরুদণ্ডী প্রাণীদের বেশ কিছু প্রজাতি পরাগসহিষ্ণুতা অর্জনে বিবর্তিত হয়ে বর্তমানে স্তন্যপায়ী মেরুদণ্ডী প্রাণিকুলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। মানুষের পরাগসহিষ্ণুতাও দীর্ঘকালের বিবর্তনে গড়ে ওঠা একটি বিশেষ দেহক্ষমতা। এ ক্ষমতাবলে ভৌগোলিক অবস্থানভেদে একেক অঞ্চলের মানুষের মধ্যে একেক বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদের পরাগসহিষ্ণুতা গড়ে ওঠে। ভৌগোলিক ভিন্নতায় উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য যেমন ভিন্ন, তেমনি মানুষের এই সহনীয়তার এবং পরাগের প্রতি সংবেদনশীলতার প্রতিক্রিয়াও হয় ভিন্ন। এ বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিদেশি সব প্রজাতির গাছই কোনো না কোনোভাবে পরিবেশ অথবা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আশিকুর রহমান
প্রায় ১০ কোটি বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগে উদ্ভিদজগতের বিবর্তনে অপুষ্পক সপুষ্পক উদ্ভিদে রূপান্তরিত হয়। ওই সময় পুষ্পরাশির পরাগ রেণু বায়ুমণ্ডলে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। পরাগ রেণুর এ প্রভাবকে বিজ্ঞানীরা 'ইমিউনোলজিক্যাল হাইপারসেনসেটিভ অব পোলেন প্রোটিন' নামে আখ্যায়িত করেন। এ হাইপারসেনসেটিভের কারণে তখন মেরুদণ্ডী প্রাণীদের অনেক প্রজাতিই পরাগ সহনীয় ক্ষমতার অভাবে মহামারিতে বিলুপ্ত হয়ে যায়। পৃথিবীতে পরাগ রেণু আবির্ভাবের পর মেরুদণ্ডী প্রাণীদের বেশ কিছু প্রজাতি পরাগসহিষ্ণুতা অর্জনে বিবর্তিত হয়ে বর্তমানে স্তন্যপায়ী মেরুদণ্ডী প্রাণিকুলের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য নিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছে। মানুষের পরাগসহিষ্ণুতাও দীর্ঘকালের বিবর্তনে গড়ে ওঠা একটি বিশেষ দেহক্ষমতা। এ ক্ষমতাবলে ভৌগোলিক অবস্থানভেদে একেক অঞ্চলের মানুষের মধ্যে একেক বৈশিষ্ট্যের উদ্ভিদের পরাগসহিষ্ণুতা গড়ে ওঠে। ভৌগোলিক ভিন্নতায় উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য যেমন ভিন্ন, তেমনি মানুষের এই সহনীয়তার এবং পরাগের প্রতি সংবেদনশীলতার প্রতিক্রিয়াও হয় ভিন্ন। এ বিষয়ের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলো। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, বিদেশি সব প্রজাতির গাছই কোনো না কোনোভাবে পরিবেশ অথবা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
আশিকুর রহমান
No comments