চালচিত্র-রাজনীতিতে ব্যক্তিগত আক্রমণের সংস্কৃতি দুই দেশের সম্পর্ক, মমতা ও তিস্তা প্রসঙ্গ by শুভ রহমান

মরা গভীর বেদনা ও ক্ষোভের সঙ্গেই লক্ষ করছি, সম্প্রতি রাজনীতিতে ব্যক্তিগত প্রসঙ্গ আমাদের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তিকে দারুণভাবে মসিলিপ্ত করে ফেলছে। রাজনৈতিক বাক্যবিনিময় করতে গিয়ে আমরা যেন সভ্যতার গণ্ডি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি।


আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও রাজনীতিকে আমরা কোন নর্দমায় নামিয়ে আনছি, নতুন প্রজন্ম আমাদের কাছ থেকে কী শিক্ষা গ্রহণ করবে_তা আমরা ভেবে দেখছি বলে মনে হয় না। দেশে ছাত্র এবং যুবসমাজের নিজেদের মধ্যে হানাহানি, মারামারি লেগেই আছে এবং এর ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘটনা ঘটছে। সম্প্রতি দেশের দুটি মেডিক্যাল কলেজ বন্ধ ঘোষিত হয়েছে।
রাজনীতিতে পরস্পরের বিরুদ্ধে কটুবাক্যবিনিময়, বিষোদগার আগেও ছিল, কিন্তু সর্বাংশে তা ছিল রাজনৈতিক-'উইট' ও 'হিউমার'ও বুদ্ধির দীপ্তিতে উজ্জ্বল থাকত বলেই তা অশালীন মনে হতো না। যেমন জিন্নাহ এবং ফজলুল হকের কথা আমরা জানি। অবিভক্ত ভারতে মতবিরোধের কারণে জিন্নাহ সাহেব শেরেবাংলাকে মুসলিম লীগ থেকে বহিষ্কার করে দিয়ে ঘোষণা করেন, Faylul Haque is finished forever (ফজলুল হক চিরতরে খতম)। জিন্নাহ সাহেবের মৃত্যুর পর এক যুগেরও বেশি সময় হক সাহেব বেঁচে ছিলেন এবং (তাঁর নিজের ভাষায়) ১৯৫৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে মুসলিম লীগকে 'পদ্মা-মেঘনা দিয়ে সমুদ্রে ভাসিয়ে দিয়েছিলেন।' [জহুর হোসেন চৌধুরীর দরবার-ই-জহুর, পৃষ্ঠা ১০৩ দ্রষ্টব্য।] একটা স্ট্যান্ডার্ড ছিল তখন রাজনৈতিক আক্রমণের; কিন্তু এখন যেন আর কোনোই মান থাকছে না। তখনকার বক্তব্য রাজনৈতিক পরিভাষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। একমাত্র চট্টগ্রামের ফ কা চৌধুরীর (ফজলুল কাদের চৌধুরী, সা কা চৌধুরীর বাবা) মুখেই জনসভায় 'সুক্কুইজ্যা কডে' বলে দলীয় কর্মীদের হাঁকডাক করে পেশিশক্তির ব্যবহারে উন্মত্ত হওয়ার কথা ইতিহাসে রয়েছে। তাঁর সুযোগ্য সন্তান বর্তমানে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে আটক ও ট্রাইব্যুনালে বিচারের সম্মুখীন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সা কা চৌধুরী) বিভিন্ন সময়কার অশ্লীল-অশ্রাব্য কথাবার্তার ব্যবহার সেই ধারাকে আঁকড়ে থেকেছে। মুসলিম লীগের আমলে লাঠিসোটা নিয়ে প্রতিপক্ষের জনসভা ভাঙা, জনসভায় সাপ-ব্যাঙ ছেড়ে দেওয়া, এনএসএফের গুণ্ডা খোকা, পাঁচ পাত্তুর হিংস্র ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ মোনায়েম খান ও শাসক মুসলিম লীগের রাজনীতিকে শেষ পর্যন্ত আঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করেছিল। এর পর দীর্ঘ সময় গেছে, আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতি ক্রমেই পরিশ্রুত ও পরিশীলিত হয়ে এসেছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দুই প্রধান নেত্রীর আমলে তা যেন আজ আবার রাজনৈতিক গণ্ডি অতিক্রম করে ক্রমেই ব্যক্তিগত আক্রমণের পর্যায়েই চলে যেতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এর পরিণতির কথা ভেবে শঙ্কিতই বোধ করছেন।
একশ্রেণীর নিম্নরুচির মানুষ প্রধান দুই নেত্রীর তথাকথিত বাহাসের মধ্যে এক ধরনের অশালীন রস পেতে পারে, কিন্তু তারই অধঃগামিতা আমাদের গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তিকে ক্রমেই যেন কলুষিত করে চলেছে এবং তরুণ সমাজকে প্রভাবিত ও প্ররোচিত করছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ব্যাপারে সময় থাকতে সতর্ক না হলে শাসক দল ও বিরোধী দল উভয়েরই রাজনৈতিক মান দেশ-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ হবে। দুই নেত্রীর মধ্যে রাজনৈতিক বাহাস যতক্ষণ পর্যন্ত রাজনৈতিক গণ্ডির মধ্যে থাকছে, ততক্ষণ তা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হবে; কিন্তু তার নিচে নামলে, একেবারে নগ্নভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণের ও অসহিষ্ণুতার পর্যায়ে চলে যেতে থাকলে সামগ্রিকভাবে দেশের আবহাওয়াকে তা বিষিয়ে তুলবে এবং গণতান্ত্রিক রাজনীতির মানের অবনতি ঘটিয়ে ছাড়বে। এখন যেন তা-ই হচ্ছে। অন্য কোনো দেশে এ রকম ঘটে না।
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া দেশে আবার সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদ ফিরিয়ে আনতে চাইছেন, তখন তা সম্পূর্ণভাবে একটি রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবেই মূল্যায়িত হবে; বিশেষ করে, বিরোধীদলীয় নেতার প্রকাশ্য ও সুস্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন এবং আটক যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তি দাবি ও যুদ্ধাপরাধের বিচার বাতিল করার সম্পূর্ণ অযৌক্তিক দাবির পরিপ্রেক্ষিতে। এ অবস্থায় তাঁকেই যুদ্ধাপরাধী বলে অভিযুক্ত করলে সেটাও রাজনৈতিক বক্তব্যই হবে। সেদিক থেকে বিরোধী দল যখন শাসক মহাজোটকে ফ্যাসিবাদ বলে গাল দেয়, তখনো তা রাজনৈতিক বক্তব্য হিসেবেই গণ্য হতে পারে। কিন্তু বিরোধী নেতা যখন ধর্মীয় মৌলবাদী অপশক্তিকে তোয়াজ করতে সাম্প্রদায়িক বিষোদ্গার করে প্রধানমন্ত্রীর ওপর দেবীর আরাধনা করার দোষারোপ করে বসেন, তাঁর ধর্মবিশ্বাস নিয়েই প্রশ্ন তোলেন, তখন তা ব্যক্তিগত সাম্প্রদায়িক ও নোংরা আক্রমণের পর্যায়ে গিয়ে কুৎসিত আকার ধারণ করে। আবার এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী ডিফেন্সিভ বক্তব্য দিতে গিয়ে অনেকটা ব্যক্তিগত ও আক্রমণাত্মক বক্তব্যই দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক বক্তব্য থাকেনি। অথচ প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে সম্মানিত হয়ে যে উচ্চতায় উন্নীত হয়েছেন, সেখান থেকে তাঁর কোনো নিম্নরুচির বাহাসে নামা সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে বিষিয়ে উঠছে রাজনৈতিক অঙ্গন। একবার সমালোচনা সে পর্যায়ে চলে গেলে তার প্রত্যুত্তরও আর শ্লীল থাকে না এবং এভাবে রাজনীতি দ্রুত নিম্নগামী হয়ে ব্যক্তিগত অশ্রাব্য কটুকাটব্যের মধ্যে চলে গিয়ে গোটা গণতান্ত্রিক রাজনীতিকেই যেন কলুষিত করে ফেলতে উদ্যত হয়েছে। কার নানা কী, কার মা-বাবার কবর কোথায়-এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ও অবান্তর বিতর্ক কিছুতেই দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎকে আর উজ্জ্বল রাখার পর্যায়ে থাকে না। দেশের সাধারণ মানুষের কোনো স্বার্থও নেই এসব বাহাসে। বস্তুত সচেতন দেশবাসী মাত্রই এ অবস্থাকে অত্যন্ত গর্হিত ও অস্বাস্থ্যকর বলেই মনে করছেন। এর আগে অতীতেও খালেদা জিয়া বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে ফেনী পর্যন্ত ভারতের দখলে চলে যাবে, ভারতীয় পতাকা উড়বে, মসজিদে উলুধ্বনি দেওয়া হবে_এসব আক্রমণ চালান। আমরা অবিলম্বে রাজনীতির এ অধোগামিতা রোধ করে তাকে স্বচ্ছ ও রুচিশীল, সাম্প্রদায়িকতামুক্ত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। বেশ দীর্ঘকাল আগেই পাশ্চাত্য মিডিয়ায় দুই নেত্রীর কলহ-বিতর্ককে দুর্ভাগ্যজনকভাবে 'ব্যাট্ল্ অব বিগাম্স্' বা দুই বেগমের লড়াই বলে নিন্দা করা হয়েছে। অথচ আজ পর্যন্ত আমাদের দুই শিবিরের নেতৃত্ব সম্বিৎ ফিরে পায়নি। পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যেও আমরা দীর্ঘকাল সাবেক ক্ষমতাসীন সিপিএম এবং বিরোধী দল তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে রাজনৈতিক বিতর্ক হতে দেখেছি, কিন্তু চরম পর্যায়ে গিয়েও কখনো তা শালীনতাবর্জিত বা একেবারে ব্যক্তিগত প্রসঙ্গে নেমে আসতে দেখা যায়নি। একটি সচেতন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি কাজ না করলেই তথাকথিত রাজনৈতিক বিতর্ক আর রাজনৈতিক না থেকে ব্যক্তিগত কাদা ছোড়াছুড়ির পর্যায়ে চলে যেতে পারে। স্মর্তব্য, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে সংসদ অধিবেশনে বিরোধী নেতা খালেদা জিয়া প্রতিপক্ষ সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে 'বেয়াদব চুপ' বলে যে ধমক দেন, সেই থেকেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রশ্নবিদ্ধ হয়। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, পরমতসহিষ্ণুতা ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিই মাত্র রাজনৈতিক বিতর্ককে রাজনৈতিক রাখতে পারে, সে সচেতনতাটুকু ভবিষ্যতে অক্ষুণ্ন থাকবে-দেশবাসী এটাই কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করছে।
মমতা ও তিস্তা
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রে গিয়ে দিল্লিতে শনিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে আধা ঘণ্টা একান্ত বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফরের পর তাঁর সঙ্গে এটাই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম সাক্ষাৎ। সেদিক থেকে সাংবাদিক মহলসহ অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল, দুজনের মধ্যে তিস্তা চুক্তি নিয়েও আলোচনা হবে। কিন্তু তা নাকি হয়নি বলে বৈঠক শেষে মমতা নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি নাকি পশ্চিমবঙ্গের সিপিএমকে নির্বাচনে পাঁচ মাস আগে পর্যুদস্ত করার পর কেন্দ্রের কাছ থেকে এ যাবৎ বিভিন্ন সেক্টরের জন্য কোনো আর্থিক সাহায্য না পাওয়ার দরুন শুধু ক্ষোভ প্রকাশই করেছেন। মমতা দিলি্লতে জাতীয় উন্নয়ন পরিষদের বৈঠকে অন্য রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন।
এদিকে রবিবারের কালের কণ্ঠ খবর দিয়েছে, কিছু মানুষ তিস্তা চুক্তি নিয়ে জটিলতা তৈরি করছে বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ তুলেছেন। তিনি অবশ্য কাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন, তা বোঝা যায়নি। তাঁর বক্তব্য-দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে এবং থাকবে।
কালের কণ্ঠের কলকাতা প্রতিনিধির ডেসপাচ অনুযায়ী, গত ৩ সেপ্টেম্বর মমতা তাঁর ঢাকা সফর বাতিলের কথা জানালে প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষর স্থগিত হয়ে যায়। এ নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে টানাপড়েন শুরু হয়।
ঢাকায় এক ট্যাবলয়েডে অবশ্য বলা হয়েছে, দিল্লির বৈঠকের সময় মমতা ব্যানার্জি ড. মনমোহনকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি দ্রুত হচ্ছে না। ইতিমধ্যে অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আঙ্গরপোতা-দহগ্রাম ছিটমহল পরিদর্শনে গেলে মমতা ব্যানার্জি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে বাংলাদেশে যে প্রত্যাশা জন্ম নিয়েছিল, মমতা উপস্থিত না হওয়ায় তা পূরণ হয়নি। ফলে এ নিয়ে নতুন করে দুই দেশের কূটনৈতিক মহলে টানাপড়েন শুরু হয়। তবে দিলি্লতে সাংবাদিকদের কাছে দুই দেশের সম্পর্ক প্রসঙ্গে মমতার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ আশ্বস্ত্ত বোধ করছে। মমতা 'তিনবিঘা করিডরের অনুষ্ঠান কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয় ছিল এবং আমাদের কিছু করার ছিল না' বলে বিষয়টি হয়তো এড়িয়েই গেছেন। তবে পূজা উপলক্ষে শেখ হাসিনাকে শাড়ি ও মিষ্টি উপহার পাঠানো তাঁর দুই দেশের সুসম্পর্ক অক্ষুণ্ন রাখার মনোভাবের প্রতিফলন বলে বিশ্লেষকরা মন্তব্য করেছেন।
ড. মনমোহনের সফরের পর, আমরা মনে করি, দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, সীমান্ত সমস্যা, ছিটমহল সমস্যা, ট্রানজিট, সমুদ্রসীমা-সব বিষয়েই সুসমাধানের গ্যারান্টি হচ্ছে দুই দেশের মধ্যে সুসম্পর্ক। মমতা সেই ইতিবাচক মনোভাবেরই প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
কাঁকড়াবিছে ছেড়ে দিলে চলবে না
ইতিমধ্যে ঢাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় ও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে এক সম্মেলন আয়োজিত হয়েছে। 'বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক' শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক রতন খাসনবীশ মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বিশিষ্ট কজন শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিক আলোচনায় অংশ নেন। প্রবন্ধকার বলেছেন, বন্ধুর সঙ্গে থাকতে হবে বন্ধুর মতো। তার বিছানার নিচে কাঁকড়াবিছে ছেড়ে দিলে চলবে না, অন্য কিছু দিয়ে বন্ধুত্বের পরিমাপ করলে হবে না। তিনি বলেন, আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে উভয় অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। তিনি সমালোচনার সুরে বলেন, মমতা ব্যানার্জি পারস্পরিক সম্পর্ক বোঝেন না, তিনি কেবল তিস্তা নিয়ে রাজনীতি করতে পারেন। তাঁকে তিনি 'অস্থিরমতি', 'চঞ্চলমতি' বলে উল্লেখ করেন। এদিকে টিভি চ্যানেলে বিএনপির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোর্শেদ খান বক্তব্য দিয়েছেন, তিস্তা চুক্তি না-হওয়া বাংলাদেশ সরকারেরই ব্যর্থতা, মমতার নয়। দুই দেশের সম্পর্ক-বিষয়ক এ সম্মেলনে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক ড. জয়তী ভট্টাচার্য বলেন, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো অনেক ধরনের প্রয়োজনীয় পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানি করে বাণিজ্য ভারসাম্য সৃষ্টি করছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়গুলো একত্র করে সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। পারস্পরিক স্থায়ী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার চিন্তা না করলে কখনোই সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হবে না।
আমরা জানি, দুই দেশের সৎ প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কই নয়, স্থায়ী সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পক্ষেই দুই দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক মহল একটা দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছে। তিস্তা চুক্তিসহ সব বিষয়ের সুষ্ঠু মীমাংসার জন্য আমরা একে স্বাগত জানাই।
২৫.১০.২০১১

No comments

Powered by Blogger.