আজও তাঁর নিত্য আসা-যাওয়া by গোলাম রাব্বানী
১৯৮৯ সালে আতিকুল হক চৌধুরীর হাত ধরে টিভি নাটকে অভিষেক নুসরাত ইয়াসমিন টিসার। ছিলেন ঢাকা পদাতিকের সদস্য। আজও টিভি পর্দায় টিসার আনাগোনা। তিনি মেঘের মতো আসেন আর যান। তাঁকে নিয়ে লিখেছেন গোলাম রাব্বানী, ছবি তুলেছেন তারেক আজিজ নিশক।
তখন ক্লাস এইটে। মেয়েটি একদল বান্ধবী নিয়ে হাজির হলো রামপুরা টিভি ভবনে। আতিকুল হক চৌধুরী দেখলেন মেয়েটিকে। নিলেন স্ক্রিন টেস্ট। ঘটে গেল ঘটনাটা। আতিকুল হক চৌধুরীর 'অন্বেষণ' নাটক দিয়েই অভিনয়-জীবনের সূত্রপাত হলো নুসরাত ইয়াসমিন টিসার। এভাবেই একটি সরল ফিচার লেখার শুরুটা হতে পারে। কিন্তু সরল ফিচার লেখার মতো মানুষের জীবনটা যদি সরল রৈখিক হতো, তাহলে তো মজাই হতো। অভিনেত্রী টিসার অভিনয়-জীবনটাও সরল হতে পারেনি। তা নানা কারণেই। চেয়েছিলেন কণ্ঠশিল্পী হতে। ছায়ানটে গানও শিখেছিলেন। কিন্তু হলেন অভিনেত্রী। গানটা রইল নিজের জন্যই। 'নদী থেকে সমুদ্র' এবং 'ফিরে পাওয়া'সহ অসংখ্য টিভি নাটক করে ১৯৮৯ সালের দিকে বিটিভির দর্শকদের আচ্ছন্ন করে রেখেছিলেন তিনি। শুধু কি তাই, ঢাকার মঞ্চে ঢাকা পদাতিকের সদস্য হয়ে 'বিষাদ সিন্ধু', 'আমিনা সুন্দরী' ও 'জনতার শত্রু' নাটকে নিজের অভিনয় কারিশমা দিয়ে মাতিয়ে তুলেছিলেন মঞ্চপাড়া। তারপর? তারপর, যার আর কোনো পর নেই, সবই আপন। হঠাৎ করেই অনুপস্থিত টিসা। টানা দীর্ঘ আট বছর। অনুপস্থিতির লাল কালিতে যেন ঢেকে গেলেন তিনি। সংসার নামের পর্দার আড়ালে লুকালেন এই অভিনেত্রী। শুধু কি সংসারের কারণেই এই অনুপস্থিতি, নাকি অন্য কিছু? একটু হাসলেন। তারপর বললেন, 'অনেকেই অনেক কিছু ভাবতে পারে। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমি সংসারে সময় দিতে চেয়েছি। পুরোটা সময়। সংসার হলো, সন্তান হলো, স্বামী-সংসার_সবকিছু নিয়েই ব্যস্ত হয়ে পড়লাম। ইচ্ছা করলেও অভিনয়ে সময় দিতে পারতাম না। এই আট বছর আমি টেলিভিশন পর্যন্ত দেখিনি।' অভিনয় থেকে সরলেও অভিনয় কি তাঁর কাছ থেকে সরতে পারে? পারেনি। তাই বার বার ফিরে এসেছেন তিনি রঙ্গমঞ্চের ময়দানে। আট বছর পর ফিরেই তিনি 'শ্যাওলা', 'লাল নীল বেগুনী', 'ঝুট ঝামেলা'_এসব ধারাবাহিকের মাধ্যমে নিজের অস্তিত্ব জানান দিলেন। আবার পুরোদমে গাড়ি চলতে থাকল। একক এবং টেলিফিল্মগুলোতে আবার দেখা যেতে থাকল টিসাকে। তিনি বলেন, 'আট বছর পর আমার শুরুটা কিন্তু বেশ আওয়াজ দিয়েই হয়েছে। একসঙ্গে অনেক কাজ নিয়ে আমি হাজির হয়েছিলাম। আমার পরিচিতজন, বন্ধু এবং ভক্তরাও দেখেছি বেশ ভালোভাবেই আমাকে ওয়েলকাম জানিয়েছে। এটা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।' এই রেশটা বেশি দিন রইল না। আবারও তিনি দলছুট হলেন। নিভে গেল স্পটলাইট। কারণ একটাই, সংসার। তবে আশার কথা হলো, আবারও ফিরেছেন ময়মনসিংহের এই মেয়ে। এরই মধ্যে শুটিং করেছেন নূরুল আলম আতিকের ধারাবাহিক 'রবীন্দ্রনাথের গল্পগুচ্ছ' এবং কামাল খানের 'নিশিগন্ধা'য়। নাহিদ আহমেদ পিয়াল, কাজী শাহীদুল ইসলাম এবং আশরাফি মিঠুসহ বেশ কয়েকজন পরিচালকের নির্দেশনায় কাজ করেছেন। বিটিভিতে প্রচার হচ্ছে তাঁর অভিনীত ধারাবাহিক 'পদ্মপাতার জল'। আবার কবে উধাও হবেন? এবার একটু জোরেই হাসলেন। বললেন, 'এটা তো বলতে পারছি না। তবে ইচ্ছা আছে নিয়মিত কাজ করার। পরিচালক আর দর্শকরা আমাকে কিভাবে নেবেন, সেটাও দেখার বিষয়। আর আমি চাইলেই সব ধরনের কাজ করতে পারব না। সবার ভালোবাসা পেলে কিছু ভালো কাজ করতে চাই।'
এরই মধ্যে তিনি ঈদের জন্য আতিকুল হক চৌধুরীর 'সোনার খাঁচা' এবং মাহফুজ আহমেদের 'মায়ের কাছে যাবো' নাটক দুটিতে অভিনয় করেছেন। আরো কিছু নাটকের কথা চলছে। আর, কিছু নাটকের শুটিং শুরু করবেন ঈদের পর থেকে। নিয়মিত না হলেও দর্শকরা টিসাকে এখন মাঝেমধ্যেই টিভি পর্দায় দেখতে পারবেন।
এরই মধ্যে তিনি ঈদের জন্য আতিকুল হক চৌধুরীর 'সোনার খাঁচা' এবং মাহফুজ আহমেদের 'মায়ের কাছে যাবো' নাটক দুটিতে অভিনয় করেছেন। আরো কিছু নাটকের কথা চলছে। আর, কিছু নাটকের শুটিং শুরু করবেন ঈদের পর থেকে। নিয়মিত না হলেও দর্শকরা টিসাকে এখন মাঝেমধ্যেই টিভি পর্দায় দেখতে পারবেন।
No comments