খাদ্য গুদাম নিয়ে লড়াই-রাজনীতির মোক্ষ কি লুটপাট?
বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদাম এখন ক্ষমতাসীন দলের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীর লড়াইয়ের উপলক্ষ হয়েছে। খাদ্য গুদামটি কোন এক পক্ষের নিয়ন্ত্রণে যাবে নাকি উভয় পক্ষ সমঝোতার ভিত্তিতে এটির নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখবে_ তা নির্ধারণের জন্যই চলছে শক্তির মহড়া। এতে নাগরিক শান্তি যেমন বিঘি্নত হচ্ছে, তেমনি গুদামের খাদ্যশস্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি এমন এক নাজুক পর্যায়ে পেঁৗছে যে, সেখানে পুলিশ পর্যন্ত মোতায়েন করতে হয়েছে।
মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত রিপোর্টে দেখা যায়, মূলত গুদামে আনা ও বিতরণ করা বিভিন্ন প্রকল্প ও টিআরের গম সস্তায় কিনে বেশি দামে বাজারে বিক্রির মাধ্যমে উপার্জিত বিপুল অঙ্কের অর্থের মালিক কে বা কোন গ্রুপ হবে সেটি নিয়েই ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের লড়াই। অথচ প্রকল্প ও টিআরের জন্য বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য এভাবে খোলাবাজারে বিক্রি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। এসব খাদ্যশস্য বরাদ্দ দেওয়া হয় নির্দিষ্ট প্রকল্প বা গ্রামীণ রাস্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য। অথচ গুদাম থেকে বরাদ্দকৃত খাদ্যশস্য বের হওয়ার পর এর দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানরা সেগুলোর অধিকাংশ ক্ষমতাসীনদের চাপে শেষ পর্যন্ত কম দামে বিক্রি করে দিয়ে নিজেদের জান ও সম্মান বাঁচান। এভাবে এলাকার সাধারণ মানুষের জানার মধ্যে ও প্রশাসনের নাকের ডগা দিয়েই উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানমুখী কর্মকাণ্ডবিরোধী লুটপাট চলে আসছে। বড় কথা, এটি ক্ষমতাসীন দলের লোকেরাই করছে। ফলে রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের প্রতি মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে। মেহেন্দীগঞ্জ খাদ্য গুদামের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া শুভ লক্ষণ নয়। এর অবসান সবার কাম্য। যারা এভাবে উন্নয়ন প্রকল্প ও টিআরের খাদ্যশস্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
No comments