আওয়ামী লীগ : আখাউড়া, কসবা-'মেয়র যন্ত্রণা' by বিশ্বজিৎ পাল বাবু
দলের আর অবস্থা কী? আমাদের মাঝে শুধু প্রতিহিংসা। কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না। অভাব আছে সমন্বয়ের। তাই মেয়র পদ হারাতে হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সামনে আমাদের জন্য আরো কঠিন সময় আসবে।'_দলের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে এভাবেই বললেন আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. ইকবাল হোসেন। ক্ষোভের সঙ্গে তিনি আরো বলেন, 'এভাবে আওয়ামী লীগের মতো একটি দল চলতে পারে না।
তবে এগুলো নিয়ে আমরা কথা বললে খুব একটা লাভ হবে বলেও মনে হয় না।' আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে সমন্বয়হীনতার কথা স্বীকার করলেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন বাবুল। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, 'কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কমিটিগুলোর সম্মেলন করার কথা। শুনেছি, সেই মোতাবেক দু-একটি ইউনিয়নে সম্মেলন হচ্ছে। কিন্তু আমার মতো দলের অনেকেই এ ব্যাপারে অবগত নন।'
মেয়র পদ হারানোর ব্যাপারেও নিজেদের দ্বিধা-দ্বন্দ্বকে দায়ী করে মনির হোসেন বলেন, 'আশা করি এবার একক প্রার্থী দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে পারব। সদ্য প্রয়াত মেয়র হাসান খানের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠে এ লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করব।'
এদিকে, দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা ফারাক আছে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগেও। দলের প্রয়োজনে ঠিক কতদিন ধরে নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে বসেন না, এ সংক্রান্ত তথ্য নেই অনেক নেতার কাছেই। দলের একটি কার্যালয় থাকলেও সেখানে বসেন না কেউ। তিন-চারজন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয় ঘিরেই জমে ওঠে দলের আড্ডা।
গত পৌর নির্বাচনে আখাউড়ার মতো কসবায়ও মেয়র পদটি চলে গেছে বিএনপিপ্রার্থীর দখলে। এ নিয়ে কসবায় রয়েছে নানা রকম গুঞ্জন। অনেকে মনে করেন, এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের আন্তরিকতাসহ সমন্বয়হীনতার অভাব দায়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, 'কসবা আওয়ামী লীগে রাজনীতির পরিবেশ নেই। আমাদের দলের নেতারা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নয়, কথা বলেন নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। ফলে মেয়র পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। দলের সভা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। দলীয় কার্যালয় থাকলেও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অফিস ঘিরেই বসে যত আড্ডা। এমনকি সংসদ সদস্য এসেও ওই অফিসেই বসেন।'
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ সংসদীয় আসনের কসবা-আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে যে চরম সমন্বয়হীনতা বিরাজ করছে, তা নেতা-কর্মীদের কথা থেকেই বোঝা যায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই দুই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে এনে যেমন উজ্জীবিত ছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা, ঠিক তেমনিভাবে হতাশ হয়েছেন পৌর মেয়রের পদ দুটি হারিয়ে। এক ধরনের 'মেয়র যন্ত্রণা'য় ভুগছে গোটা দল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, 'এখন মূলত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয় দলীয় সংসদ সদস্য এবং দলের সভাপতি ও সম্পাদকের মতামতের ভিত্তিতে। তাই আমরা কোনো কথা বলি না। এ ছাড়া সাত বছর হলো বর্তমান কমিটির বয়স। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে একটা গা-ছাড়া ভাব ও হতাশা নেমে এসেছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা একজন প্রার্থী দিতে না পারায় মেয়র পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। এবারও একজন প্রার্থী দেওয়া যাবে বলে মনে হয় না। কেননা, আমাদের নেতাদের মাঝে ছাড় দেওয়ার কোনো মানসিকতা নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন সংসদ নির্বাচনের পর পরই হওয়ায় আওয়ামী লীগের 'জোয়ারের' কারণে তখন পার পাওয়া গেছে।"
কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নেই। পৌর মেয়র নির্বাচনটি এলাকা ইজমে হওয়ায় কসবায় ধরে রাখা যায়নি।'
প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে 'মেয়র যন্ত্রণা'র বিষয়টি উঠে আসে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গাজী আবদুল মতিনের বক্তব্যে। আওয়ামী লীগ এখন সুসংগঠিত কি না এবং দলের বর্তমান অবস্থা কী_এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সুসংঠিত হলে কি আর মেয়র পদটি হাতছাড়া হতো। আমাদের নেতারা নিজের দিকটা দেখে বেশি।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন আস্তে আস্তে সমস্যা কাটিয়ে উঠছি। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হয়েছে। যারা এই সম্মেলন সম্পর্কে জানে না বলছে, তারা আসলে আবেগপ্রবণ। বিষয়টি না জানার তো কিছু নেই। প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলন করার আগে সভাপতি ও সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়। আর উপজেলা আওয়ামী লীগের কেউ এমন কথা বলে থাকলে বোধ হয় তাঁরা পত্রিকা পড়েন না। কেননা, পত্রিকায় তো এ বিষয়ক কেন্দ্রীয় নির্দেশনার খবর বেরিয়েছে।'
প্রসঙ্গত, বিগত পৌর নির্বাচনে আখাউড়ায় বিএনপিপ্রার্থী এন এম হাসান খান বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা তাকজিল খলিফা কাজল। হাসান খান গত ১৫ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কসবায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে মো. ইলিয়াস মেয়র নির্বাচিত হন।
মেয়র পদ হারানোর ব্যাপারেও নিজেদের দ্বিধা-দ্বন্দ্বকে দায়ী করে মনির হোসেন বলেন, 'আশা করি এবার একক প্রার্থী দিয়ে জয় ছিনিয়ে আনতে পারব। সদ্য প্রয়াত মেয়র হাসান খানের মৃত্যুর শোক কাটিয়ে উঠে এ লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করব।'
এদিকে, দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে একটা ফারাক আছে কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগেও। দলের প্রয়োজনে ঠিক কতদিন ধরে নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে বসেন না, এ সংক্রান্ত তথ্য নেই অনেক নেতার কাছেই। দলের একটি কার্যালয় থাকলেও সেখানে বসেন না কেউ। তিন-চারজন শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয় ঘিরেই জমে ওঠে দলের আড্ডা।
গত পৌর নির্বাচনে আখাউড়ার মতো কসবায়ও মেয়র পদটি চলে গেছে বিএনপিপ্রার্থীর দখলে। এ নিয়ে কসবায় রয়েছে নানা রকম গুঞ্জন। অনেকে মনে করেন, এ জন্য দলের নেতা-কর্মীদের আন্তরিকতাসহ সমন্বয়হীনতার অভাব দায়ী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, 'কসবা আওয়ামী লীগে রাজনীতির পরিবেশ নেই। আমাদের দলের নেতারা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে নয়, কথা বলেন নিজ দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। ফলে মেয়র পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। দলের সভা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। দলীয় কার্যালয় থাকলেও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের অফিস ঘিরেই বসে যত আড্ডা। এমনকি সংসদ সদস্য এসেও ওই অফিসেই বসেন।'
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ সংসদীয় আসনের কসবা-আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগে যে চরম সমন্বয়হীনতা বিরাজ করছে, তা নেতা-কর্মীদের কথা থেকেই বোঝা যায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ওই দুই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদ বাগিয়ে এনে যেমন উজ্জীবিত ছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা, ঠিক তেমনিভাবে হতাশ হয়েছেন পৌর মেয়রের পদ দুটি হারিয়ে। এক ধরনের 'মেয়র যন্ত্রণা'য় ভুগছে গোটা দল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, 'এখন মূলত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত হয় দলীয় সংসদ সদস্য এবং দলের সভাপতি ও সম্পাদকের মতামতের ভিত্তিতে। তাই আমরা কোনো কথা বলি না। এ ছাড়া সাত বছর হলো বর্তমান কমিটির বয়স। দীর্ঘদিন সম্মেলন না হওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মাঝে একটা গা-ছাড়া ভাব ও হতাশা নেমে এসেছে।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "সুযোগ থাকা সত্ত্বেও আমরা একজন প্রার্থী দিতে না পারায় মেয়র পদটি হাতছাড়া হয়ে গেছে। এবারও একজন প্রার্থী দেওয়া যাবে বলে মনে হয় না। কেননা, আমাদের নেতাদের মাঝে ছাড় দেওয়ার কোনো মানসিকতা নেই। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচন সংসদ নির্বাচনের পর পরই হওয়ায় আওয়ামী লীগের 'জোয়ারের' কারণে তখন পার পাওয়া গেছে।"
কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম বলেন, 'আমাদের মাঝে কোনো বিভেদ নেই। পৌর মেয়র নির্বাচনটি এলাকা ইজমে হওয়ায় কসবায় ধরে রাখা যায়নি।'
প্রতিহিংসার আগুনে পুড়ে 'মেয়র যন্ত্রণা'র বিষয়টি উঠে আসে আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গাজী আবদুল মতিনের বক্তব্যে। আওয়ামী লীগ এখন সুসংগঠিত কি না এবং দলের বর্তমান অবস্থা কী_এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'আমরা সুসংঠিত হলে কি আর মেয়র পদটি হাতছাড়া হতো। আমাদের নেতারা নিজের দিকটা দেখে বেশি।'
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন আস্তে আস্তে সমস্যা কাটিয়ে উঠছি। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ড পর্যায়ের সম্মেলন শুরু হয়েছে। যারা এই সম্মেলন সম্পর্কে জানে না বলছে, তারা আসলে আবেগপ্রবণ। বিষয়টি না জানার তো কিছু নেই। প্রতিটি ওয়ার্ডে সম্মেলন করার আগে সভাপতি ও সম্পাদককে চিঠি দেওয়া হয়। আর উপজেলা আওয়ামী লীগের কেউ এমন কথা বলে থাকলে বোধ হয় তাঁরা পত্রিকা পড়েন না। কেননা, পত্রিকায় তো এ বিষয়ক কেন্দ্রীয় নির্দেশনার খবর বেরিয়েছে।'
প্রসঙ্গত, বিগত পৌর নির্বাচনে আখাউড়ায় বিএনপিপ্রার্থী এন এম হাসান খান বিজয়ী হন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগ নেতা তাকজিল খলিফা কাজল। হাসান খান গত ১৫ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। কসবায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে মো. ইলিয়াস মেয়র নির্বাচিত হন।
No comments