ইমনের অভিনয়ে খুশি হলেন পরিচালক by সুদীপ কুমার দীপ

ফডিসির ডিজিটাল সাউন্ড কমপ্লেক্সের সামনে চলছিল জি সরকারের 'জান' ছবির শুটিং। শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন ইমন, নতুন নায়িকা বিন্দিয়া ও কয়েকজন ফাইটার। স্পট ঘুরে লিখেছেন সুদীপ কুমার দীপ ইমনকে আজ বেশ খুশি লাগছে। চারপাশে ১০-১২ জন সুন্দরী মেয়েও ঘোরাঘুরি করছে। সবাই যেন হুকুমের অপেক্ষায়। সুযোগ পেলেই ইমনের সেবা করতে প্রস্তুত তারা। অবশ্য ইমনের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই!


তিনি আয়নায় বারবার নিজের মেকআপ-গেটআপ ঠিক আছে কি না, তা পরখ করছেন। কিন্তু এত সব মেয়ে তাঁর আশপাশে কী করছে? তা ছাড়া সাজগোজ দেখে মনে হচ্ছে, অভিনয় করার জন্যই ওরা এখানে এসেছে। বিষয়টি কী_ইমনকে প্রশ্ন করতেই তিনি একটু লজ্জা পেলেন। তারপর যত দোষ নন্দ ঘোষ ভঙ্গিতে বললেন, 'অপেক্ষা করুন, সবই দেখতে পাবেন। এগুলো আমার কারিশমা নয়, সবই পরিচালকের নির্দেশ।' একটু দূরে চোখে পড়ল জি সরকারকে। এরই মধ্যে একজন প্রডাকশন বয় এসে ইমনের হাতে একটি হকিস্টিক ধরিয়ে দিয়ে কানে কানে কিছু একটা বললেন। কানাকানি দেখে শুটিং দেখতে আসা লোকজন ভাবলেন, নায়কের অতি কাছে যাওয়ার শাস্তি বুঝি এবার স্বয়ং নায়কের হাতেই পেতে হবে। ব্যাপারটা আসলে তা নয়। একটু পরেই শুটিংয়ে অংশ নেবেন ইমন। আর দৃশ্যের প্রয়োজনেই হকিস্টিকটা লাগবে তাঁর। নায়িকা বিন্দিয়ার মেকআপ নেওয়াও ততক্ষণে শেষ। ইমন ও বিন্দিয়াকে দৃশ্যটি বোঝাতে শুরু করলেন পরিচালক। বললেন, 'ইমন, তুমি বিন্দিয়াকে বারবার বিরক্ত করো। পথে-ঘাটে যেখানে পাও ওকে থামিয়ে ভালোবাসার কথা বলো। ও তোমার এমন ব্যবহারে অতিষ্ঠ। তাই বাধ্য হয়ে তোমাকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য গুণ্ডা পাঠিয়েছে। কিন্তু তুমি তাদের হকিস্টিক মেরে উল্টো বিন্দিয়ার কাছে এসেছ। বিন্দিয়াকে দেখে প্রথমে তোমার ভাবখানা এমন হবে যে, তুমি ওকে খুন করে ফেলবে। ও নিজেও তোমাকে দেখে মনে করবে, তুমি ওকে মারতে এসেছ। প্রচণ্ড ভয় পাবে। কিন্তু তুমি ওকে না মেরে নিজের কপালে আঘাত করবে। এখন এটুকুই শুটিং করব।' ইমন ও বিন্দিয়া দুজনই পরিচালকের কথায় সায় দিলেন। শুরু হলো শুটিং। বিন্দিয়া এবার কয়েকজন বান্ধবীকে নিয়ে কলেজের সিঁড়িতে (ডিজিটাল সাউন্ড কমপ্লেঙ্) আড্ডা দেওয়ার ভঙ্গিতে দাঁড়ালেন। ইমন বেশ দূর থেকে একটি হকিস্টিক হাতে এগিয়ে এলেন। তাঁর চোখমুখ দিয়ে যেন আগুন ছুটছে। বিন্দিয়া আঁতকে উঠলেন। ইমন চিৎকার করে বললেন, 'আমি তো তোমাকে ভালোবাসি, আর তাই তোমাকে এক পলক দেখার জন্য কারণে-অকারণে সামনে গিয়ে দাঁড়াই। কিন্তু সেই অপরাধে তুমি আমাকে মেরে ফেলতে চাইলে? তুমি রক্ত দেখতে চাও, না? দেখ। যত খুশি রক্ত দেখ এবার।' সঙ্গে সঙ্গে হকিস্টিকটা দিয়ে নিজের মাথায় আঘাত করলেন ইমন। পরিচালক কাট বলে চিৎকার করে উঠলেন। হাততালি দিতে দিতে ইমনের কাছে গিয়ে বললেন, 'এর আগেও অনেকের সঙ্গে কাজ করেছি। কিন্তু তুমি যেভাবে আজকাল একবারেই সব দৃশ্য টেক দিচ্ছ, সত্যিই আমি অভিভূত।' পরিচালকের এমন আনন্দে উপস্থিত অন্যরাও খুব খুশি হলেন। ইমনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন তাঁরা।

No comments

Powered by Blogger.