এই মুহূর্তের করণীয় by ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন
মঙ্গলবার বেলা ১২.০৮ মিনিটে আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ যে রায়টি উচ্চারণ করলেন, তা প্রত্যাখান করেছে
দেশবাসী। কাদের মোল্লার মত ৭১-এর ঘাতক, যারা গণহত্যা ও ধর্ষণের মত
যুদ্ধাপরাধ করেছে,
মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে, তাদের
যথাযোগ্য শাস্তির জন্য প্রতিক্ষার ৪২টি বেদনাদায়ক বছর অপেক্ষা করেছে যারা,
তাদের হৃদয়ে কঠিন আঘাত হানা হয়েছে। তারা টেলিভিশনে দেখেছে রায়ের পর নরাধম
কাদের মোল্লার বিজয় চিহ্ন। ঘাতক কাদের মোল্লার ফাঁসি হবে। কবি
মেহেরুনন্নেছার পরিবার, মিরপুরের আলোকদি গ্রামের ৩৩০জন মানুষ যারা এই
যুদ্ধাপরাধীর কারণে জীবন দিয়েছেন, তাদের পরিবার বর্গ, সূদুর সুইডেন প্রবাসী
বৃদ্ধ শহিদুল হক মামা যিনি বিচার চলাকালে নিজে এসে স্বাক্ষী দিয়েছিলেন,
গভীর প্রত্যাশা নিয়ে আবারো দেশে এসে মঙ্গলবার কোর্টরুমে বসে ছিলেন। তাদের
সকলকে গভীর বেদনাহত করেছে, বিক্ষুব্ধ করেছে এই রায়।
একই সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি দেশের তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’, তাদের ‘উচ্চবর্গীয় তাত্বিকগণ’, ‘আইনের শাসন’, ‘স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য বিচার’, ‘গণতন্ত্র’, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’, ‘যুদ্ধাপরাধী ও তাদের হাতে আক্রান্ত উভয়ের সমঅধিকার’, ইত্যাদি নিয়ে বড় বড় তত্ত্বের কথা বলেন, এবং যা শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত ড্রইং রুম এবং ফেসবুকের চৌহদ্দিতে আটকে থাকে, তারা জনগণের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে পুঁজি করে নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছেন অবিশ্বাসের বিষবাষ্প, জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে চাইছেন। বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।
এখন করণীয় কি? আমরা কোন পথে এগুবো? ‘জনসাধারণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলো কে’?, ‘সরকার ও জামায়াতের মধ্যে আঁতাত হয়ে গেছে’। এসব প্রশ্নের কানাগলিতে আন্দোলনমুখি জনগণকে আটকে রাখার যে কৌশল নিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে ব্যর্থ করে দিতেই হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে যথা সময়ে কারণ সত্য প্রকাশিত হবে। এই মূহুর্তে আমাদের লক্ষ্য হতে হবে সরকারের হাতে যে কয়টি মাস আছে, তাকে এমনভাবে কাজে লাগানো যাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসমূহ সত্যিকারের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এই ‘কাজে লাগানো’ করা বলতে আমরা বুঝব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও ক্ষমতাসীন সরকারকে ‘চাপযুক্ত’ কার্যকর সহযোগিতা করা। এমন সহযোগিতাই এই মুহূর্তের একমাত্র পথ। মনে রাখতে হবে, অন্যকেউ নয় বর্তমান সরকারই গণমানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে শুধু নয়, শত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তাকে চালু রেখেছে। জামায়েত ও তার মিত্ররা চাইছে আমাদের মধ্যে বিরোধ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে। আমরা সে ফাঁদে পা দেব না। আমরা ‘চাপযুক্ত সহযোগিতা’ দেব সরকারকে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে। আমরা সরকারকে বলবো জামায়েত এবং তার মিত্রদের নীলনকশার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে। সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একযোগে এদের বিরুদ্ধে নিয়োজিত করতে। সাধারণ মানুষের জানমালের রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে।
আসুন আমরা শাহবাগে যারা প্রতিরোধ রচনা করেছে তাদের সঙ্গে যোগ দেই। জামায়াতকে ও তার মিত্রদের প্রতিরোধ করি। সকড়গুলোকে আগলে রাখি। আওয়ামীলীগ ও ১৪ দলীয় জোটকে আহ্বান জানাই, শাহবাগের প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে। যদি সরকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আমরা নিরন্তন এই বার্তা দিয়ে যাই যে আমরা কতটা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখান করছি কাদের মোল্লার রায়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের পরবর্তি রায়গুলো এমন মানহীনভাবে দিতে পারবেন না। আসুন, আমরা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক রাজনীতির হাতকে শক্তিশালী করি। এখনই সময়। বন্ধুরা ‘আইনের শাসন’-এর নামে যে সবসময় ‘ন্যায়’ বিচার পাওয়া যায় না তা কাদের মোল্লা’র বিচারের রায়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। ‘জনগণের আদালতের’ ভাষা নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পড়তে পারবেন। চলুন জামায়াত ও তাদের মিত্রদের রাস্তায় প্রতিরোধ করি। পরাজিত করি। ’৭১ সালে পরাজিত করেছি’, এবারেও ও পরাজিত করবো। চলুন মুক্তিযুদ্ধের কালজয়ী রণধ্বনি ‘জয় বাংলা’ সরবে উচ্চরণ করি।
অধ্যাপক মোঃ আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
একই সঙ্গে আমরা লক্ষ্য করছি দেশের তথাকথিত ‘সুশীল সমাজ’, তাদের ‘উচ্চবর্গীয় তাত্বিকগণ’, ‘আইনের শাসন’, ‘স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য বিচার’, ‘গণতন্ত্র’, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা’, ‘যুদ্ধাপরাধী ও তাদের হাতে আক্রান্ত উভয়ের সমঅধিকার’, ইত্যাদি নিয়ে বড় বড় তত্ত্বের কথা বলেন, এবং যা শীতাতপ-নিয়ন্ত্রিত ড্রইং রুম এবং ফেসবুকের চৌহদ্দিতে আটকে থাকে, তারা জনগণের পুঞ্জিভূত ক্ষোভকে পুঁজি করে নতুন করে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছেন। বাতাসে ছড়িয়ে দিচ্ছেন অবিশ্বাসের বিষবাষ্প, জনগণের ঐক্যে ফাটল ধরাতে চাইছেন। বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।
এখন করণীয় কি? আমরা কোন পথে এগুবো? ‘জনসাধারণের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করলো কে’?, ‘সরকার ও জামায়াতের মধ্যে আঁতাত হয়ে গেছে’। এসব প্রশ্নের কানাগলিতে আন্দোলনমুখি জনগণকে আটকে রাখার যে কৌশল নিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা তাকে ব্যর্থ করে দিতেই হবে। এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে যথা সময়ে কারণ সত্য প্রকাশিত হবে। এই মূহুর্তে আমাদের লক্ষ্য হতে হবে সরকারের হাতে যে কয়টি মাস আছে, তাকে এমনভাবে কাজে লাগানো যাতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালসমূহ সত্যিকারের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এই ‘কাজে লাগানো’ করা বলতে আমরা বুঝব আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও ক্ষমতাসীন সরকারকে ‘চাপযুক্ত’ কার্যকর সহযোগিতা করা। এমন সহযোগিতাই এই মুহূর্তের একমাত্র পথ। মনে রাখতে হবে, অন্যকেউ নয় বর্তমান সরকারই গণমানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে শুধু নয়, শত ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে তাকে চালু রেখেছে। জামায়েত ও তার মিত্ররা চাইছে আমাদের মধ্যে বিরোধ ও অবিশ্বাস সৃষ্টি করতে। আমরা সে ফাঁদে পা দেব না। আমরা ‘চাপযুক্ত সহযোগিতা’ দেব সরকারকে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে। আমরা সরকারকে বলবো জামায়েত এবং তার মিত্রদের নীলনকশার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে। সকল আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে একযোগে এদের বিরুদ্ধে নিয়োজিত করতে। সাধারণ মানুষের জানমালের রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে।
আসুন আমরা শাহবাগে যারা প্রতিরোধ রচনা করেছে তাদের সঙ্গে যোগ দেই। জামায়াতকে ও তার মিত্রদের প্রতিরোধ করি। সকড়গুলোকে আগলে রাখি। আওয়ামীলীগ ও ১৪ দলীয় জোটকে আহ্বান জানাই, শাহবাগের প্রতিবাদ-প্রতিরোধকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে। যদি সরকার ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আমরা নিরন্তন এই বার্তা দিয়ে যাই যে আমরা কতটা দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখান করছি কাদের মোল্লার রায়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাদের পরবর্তি রায়গুলো এমন মানহীনভাবে দিতে পারবেন না। আসুন, আমরা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক রাজনীতির হাতকে শক্তিশালী করি। এখনই সময়। বন্ধুরা ‘আইনের শাসন’-এর নামে যে সবসময় ‘ন্যায়’ বিচার পাওয়া যায় না তা কাদের মোল্লা’র বিচারের রায়ের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। ‘জনগণের আদালতের’ ভাষা নিশ্চয়ই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পড়তে পারবেন। চলুন জামায়াত ও তাদের মিত্রদের রাস্তায় প্রতিরোধ করি। পরাজিত করি। ’৭১ সালে পরাজিত করেছি’, এবারেও ও পরাজিত করবো। চলুন মুক্তিযুদ্ধের কালজয়ী রণধ্বনি ‘জয় বাংলা’ সরবে উচ্চরণ করি।
অধ্যাপক মোঃ আনোয়ার হোসেন, উপাচার্য, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।
No comments