বাংলাদেশে আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতি দরকার
বাংলাদেশ অনেক কিছুতেই প্রথম এবং এখানে অনেক কিছুই হয় বেশি বেশি। এই দেশ
যেমন বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ, তেমনি বিশ্বে সম্ভবত অন্য কোনো দেশই এত
দীর্ঘ দিন নারী শাসনে ছিল না।
এই দেশটি এখন দক্ষিণ এশিয়ার
বৃহত্তম অবকাঠামো পদ্মা সেতু প্রকল্পটি বাদ দিয়ে পারমাণবিক বিদ্যুতের
দিকে ঝুঁকেছে। বুধবার আন্তর্জাতিক প্রভাবশালী ইকোনমিস্ট পত্রিকার অনলাইন
সংখ্যায় ‘স্পেন্ডিং ইন বাংলাদেশ : দ্য মোস্ট বাকস ফর দ্য বিগেস্ট ব্যাঙ’
শিরোনামের প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়। এতে রুশ সহায়তায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ
কেন্দ্রের নির্মাণের নানা সমস্যার কথাও তুলে ধরা হয়। প্রবন্ধে বলা হয়
বাংলাদেশে ১/১১-এর পরিস্থিতির মতো কোনো আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবেলার
প্রস্তুতি থাকা দরকার।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনটির প্রায় পুরো অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
বিশ্বে সবাইকে হারিয়ে দেয়ার রেকর্ডের অভাব নেই বাংলাদেশের। এটা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বর্ধিষ্ণু নগরী হিসেবে পরিগণিত। দেশটি পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি সময় শাসন করেছে নারীরা। সম্ভবত বিশ্বের অন্য কোথাও এত বেশি দিন নারী নেতৃত্বের উদাহরণ নেই। অন্য কোনো দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এত বেশি নাগরিক নিহত হয়নি। বিস্ময়কর অগ্রগতি সত্ত্বেও ৫৩ মিলিয়ন বাংলাদেশী, যা জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
জানুয়ারি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দাতাদের অর্থায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পের ঠিকানা ছিল। প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য পদ্মা সেতুটি বিশ্বের দীর্ঘতম হতো; কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য। বাংলাদেশ সরকার ৩১ জানুয়ারি বিশ্বব্যাংক থেকে ওই প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে ১২ শ’ কোটি ডলারের সস্তা ঋণ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। কোনো একটি দেশকে এটাই ছিল বিশ্বব্যাংকের বৃহত্তম ঋণ প্রস্তাব। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বিশ্বব্যাংক প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবেন না বলে ঘোষণা করার (তিনি উদাহরণ হিসেবে পদ্মা সেতুর কথা বলেছিলেন) এক দিন পর বাংলাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশের জবাবটা ছিল দৃশ্যত ধন্যবাদ, আমি এতে আগ্রহী নই। বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারের পর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সাথে চলমান আলোচনারও অবসান হয়। বাংলাদেশ যেহেতু আন্তর্জাতিক ঋণসংস্থা থেকে ঋণ নিতে পারছে না, তাই সরকারের আপসহীন অবস্থানের আপাত নিট ফলাফল হলো ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন তিন কোটি মানুষকে আরো অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এই মুহূর্তে সেতুটির কথা ভুলে যান। মনে হচ্ছে, সরকার অন্য দিকে ঝুঁকে গেছে। গত বছর বাংলাদেশ তার প্রথম উপগ্রহের অর্ডার দিয়েছে। আর গত সপ্তাহে প্রথম সাবমেরিন কেনার কথা ঘোষণা করেছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ এযাবৎকালের মধ্যে একক প্রকল্পে সর্বাধিক পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের কথা বলার মাধ্যমে।
অর্ধশতাব্দী আগে পাকিস্তান আমলে ওই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন বাংলাদেশ সরকার ওই প্রকল্পে একজন অর্থদাতা পেয়েছে। তিনি হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের অন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের তুলনায় পুতিনের শর্তাবলী বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের কাছে আর্থিকভাবে নিকৃষ্ট হলেও রাজনৈতিকভাবে অপ্রতিরোধ্য প্রতীয়মান হয়েছে।
এটা এমন এক দেশ যেখানে এই ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করে দুই শাসক পরিবারের দুই নেত্রীসহ রাজনীতিকদের কারারুদ্ধ করেছিল এবং সামরিক বাহিনী সমর্থিত প্রশাসন বসিয়েছিল। সে কারণে পরিবেশের আকস্মিকতা মোকাবেলার প্রস্তুতি থাকা দরকার। বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক প্লান্টগুলোর জন্য খরচ পড়বে মোটামুটি ২০০ কোটি ডলার থেকে ৪০০ কোটি ডলার। তবে রাশিয়া প্রকল্পটি শুরুর জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক কোম্পানি রোসাটম বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল রূপপুরে দু’টি প্লান্ট নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। সব কিছু ঠিকঠাক মতো চললে এশিয়ার সপ্তম দেশ হিসেবে (চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের পর) বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টের অধিকারী হবে।
তাহলে এটা কত খারাপ আইডিয়া?
প্রথমে যে কথাটি বলা দরকার তা হলো, বাংলাদেশ যে মারাত্মক জ্বালানি সমস্যায় ভুগছে, তা অনেকটাই অজ্ঞাত থেকে গেছে। বিশ্বব্যাংকের ভাষ্যমতে, বিশ্বের আর কোথাও বিদ্যুতের জন্য ব্যবসা এত কঠিন হয় না। ব্যাংকটির ‘ডুয়িং বিজনেস সার্ভে’-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ১৮৫টি দেশের মধ্যে ১৮৫তম স্থানে রাখা হয়েছে। ৬০ ভাগ লোকই বিদ্যুৎ সুবিধা পায় না।
সমস্যার মতো সমাধানও যদি বিশাল হয়, তাহলে বলা যায়, দু’টি পারমাণবিক প্লান্ট থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি বেশ শুভ সূচনাই বলা যায়। রাশিয়ান প্লান্ট দু’টির উৎপাদন বর্তমান সরবরাহ ঘাটতি পূরণ করতে পারে। তা ছাড়া ২০২০ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দিকেও বিশাল পদক্ষেপ হবে এটা।
বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সঙ্কট নিরসনের অনিবার্য সমাধান হতে পারে মিয়ানমার বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়লা ও গ্যাস উভয়টি আমদানি। কিন্তু সেটা কি নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টের মতো সুন্দর শোনায়? বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো খুব বেশি একমত হয় না, তবে পারমাণবিক বিদ্যুতের ধারণাটি সম্ভবত উভয় পক্ষই পছন্দ করে।
বাংলাদেশ কোনোভাবেই নিজস্বভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। রাশিয়া তেজস্ক্রিয় জ্বালানি রড জোগান দেবে। তবে বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারতের (প্রস্তাবিত স্থান থেকে দেশটি মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে) জনগণ পারমাণবিকসামগ্রীর নিরাপদ পরিবহন দাবি করতে পারে। রডগুলো চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যেসব সড়ক দিয়ে যাবে, সেগুলো বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণসংহারক হিসেবে পরিচিত।
আর পারমাণবিকসামগ্রীগুলো যদি ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার ওপর দিয়ে পরিবহন করতে হবে, তবে সেগুলোকে পদ্মা পাড়ি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে সরকার যদি সেতুটি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বানাতে চীনকে রাজি করাতে না পারে, তবে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক-জ্বালানির প্রথম চালানটি নৌকায় করে নিতে হবে।
ইকোনমিস্টের প্রতিবেদনটির প্রায় পুরো অংশ এখানে তুলে ধরা হলো।
বিশ্বে সবাইকে হারিয়ে দেয়ার রেকর্ডের অভাব নেই বাংলাদেশের। এটা বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। রাজধানী ঢাকা এখন বিশ্বের সবচেয়ে বর্ধিষ্ণু নগরী হিসেবে পরিগণিত। দেশটি পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশি সময় শাসন করেছে নারীরা। সম্ভবত বিশ্বের অন্য কোথাও এত বেশি দিন নারী নেতৃত্বের উদাহরণ নেই। অন্য কোনো দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থায় সীমান্তে প্রতিবেশী দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে এত বেশি নাগরিক নিহত হয়নি। বিস্ময়কর অগ্রগতি সত্ত্বেও ৫৩ মিলিয়ন বাংলাদেশী, যা জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে।
জানুয়ারি মাসের শেষ দিন পর্যন্ত দাতাদের অর্থায়নে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্পের ঠিকানা ছিল। প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ ৩০০ কোটি ডলার ব্যয়ে নির্মিতব্য পদ্মা সেতুটি বিশ্বের দীর্ঘতম হতো; কিন্তু জাতির দুর্ভাগ্য। বাংলাদেশ সরকার ৩১ জানুয়ারি বিশ্বব্যাংক থেকে ওই প্রকল্পে অর্থায়নের প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেয়। এর ফলে ১২ শ’ কোটি ডলারের সস্তা ঋণ প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। কোনো একটি দেশকে এটাই ছিল বিশ্বব্যাংকের বৃহত্তম ঋণ প্রস্তাব। বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বিশ্বব্যাংক প্রকল্পগুলোতে দুর্নীতি প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দেবেন না বলে ঘোষণা করার (তিনি উদাহরণ হিসেবে পদ্মা সেতুর কথা বলেছিলেন) এক দিন পর বাংলাদেশ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
বাংলাদেশের জবাবটা ছিল দৃশ্যত ধন্যবাদ, আমি এতে আগ্রহী নই। বিশ্বব্যাংকের ঋণ প্রত্যাহারের পর এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সাথে চলমান আলোচনারও অবসান হয়। বাংলাদেশ যেহেতু আন্তর্জাতিক ঋণসংস্থা থেকে ঋণ নিতে পারছে না, তাই সরকারের আপসহীন অবস্থানের আপাত নিট ফলাফল হলো ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন তিন কোটি মানুষকে আরো অপেক্ষা করতে হবে।
তবে এই মুহূর্তে সেতুটির কথা ভুলে যান। মনে হচ্ছে, সরকার অন্য দিকে ঝুঁকে গেছে। গত বছর বাংলাদেশ তার প্রথম উপগ্রহের অর্ডার দিয়েছে। আর গত সপ্তাহে প্রথম সাবমেরিন কেনার কথা ঘোষণা করেছে। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ এযাবৎকালের মধ্যে একক প্রকল্পে সর্বাধিক পরিমাণ অর্থ ব্যয়ের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের কথা বলার মাধ্যমে।
অর্ধশতাব্দী আগে পাকিস্তান আমলে ওই প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল। এখন বাংলাদেশ সরকার ওই প্রকল্পে একজন অর্থদাতা পেয়েছে। তিনি হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। বাংলাদেশের অন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের তুলনায় পুতিনের শর্তাবলী বাংলাদেশের রাজনীতিবিদদের কাছে আর্থিকভাবে নিকৃষ্ট হলেও রাজনৈতিকভাবে অপ্রতিরোধ্য প্রতীয়মান হয়েছে।
এটা এমন এক দেশ যেখানে এই ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করে দুই শাসক পরিবারের দুই নেত্রীসহ রাজনীতিকদের কারারুদ্ধ করেছিল এবং সামরিক বাহিনী সমর্থিত প্রশাসন বসিয়েছিল। সে কারণে পরিবেশের আকস্মিকতা মোকাবেলার প্রস্তুতি থাকা দরকার। বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক প্লান্টগুলোর জন্য খরচ পড়বে মোটামুটি ২০০ কোটি ডলার থেকে ৪০০ কোটি ডলার। তবে রাশিয়া প্রকল্পটি শুরুর জন্য ৫০ কোটি ডলার ঋণ দিতে রাজি হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক কোম্পানি রোসাটম বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল রূপপুরে দু’টি প্লান্ট নির্মাণ ও পরিচালনা করবে। সব কিছু ঠিকঠাক মতো চললে এশিয়ার সপ্তম দেশ হিসেবে (চীন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও পাকিস্তানের পর) বাংলাদেশ পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টের অধিকারী হবে।
তাহলে এটা কত খারাপ আইডিয়া?
প্রথমে যে কথাটি বলা দরকার তা হলো, বাংলাদেশ যে মারাত্মক জ্বালানি সমস্যায় ভুগছে, তা অনেকটাই অজ্ঞাত থেকে গেছে। বিশ্বব্যাংকের ভাষ্যমতে, বিশ্বের আর কোথাও বিদ্যুতের জন্য ব্যবসা এত কঠিন হয় না। ব্যাংকটির ‘ডুয়িং বিজনেস সার্ভে’-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে ১৮৫টি দেশের মধ্যে ১৮৫তম স্থানে রাখা হয়েছে। ৬০ ভাগ লোকই বিদ্যুৎ সুবিধা পায় না।
সমস্যার মতো সমাধানও যদি বিশাল হয়, তাহলে বলা যায়, দু’টি পারমাণবিক প্লান্ট থেকে দুই হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়ার বিষয়টি বেশ শুভ সূচনাই বলা যায়। রাশিয়ান প্লান্ট দু’টির উৎপাদন বর্তমান সরবরাহ ঘাটতি পূরণ করতে পারে। তা ছাড়া ২০২০ সাল নাগাদ ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের দিকেও বিশাল পদক্ষেপ হবে এটা।
বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি সঙ্কট নিরসনের অনিবার্য সমাধান হতে পারে মিয়ানমার বা মধ্যপ্রাচ্য থেকে কয়লা ও গ্যাস উভয়টি আমদানি। কিন্তু সেটা কি নিজস্ব পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্লান্টের মতো সুন্দর শোনায়? বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো খুব বেশি একমত হয় না, তবে পারমাণবিক বিদ্যুতের ধারণাটি সম্ভবত উভয় পক্ষই পছন্দ করে।
বাংলাদেশ কোনোভাবেই নিজস্বভাবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না। রাশিয়া তেজস্ক্রিয় জ্বালানি রড জোগান দেবে। তবে বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারতের (প্রস্তাবিত স্থান থেকে দেশটি মাত্র ২৫ কিলোমিটার দূরে) জনগণ পারমাণবিকসামগ্রীর নিরাপদ পরিবহন দাবি করতে পারে। রডগুলো চট্টগ্রাম বন্দর থেকে যেসব সড়ক দিয়ে যাবে, সেগুলো বিশ্বের সবচেয়ে প্রাণসংহারক হিসেবে পরিচিত।
আর পারমাণবিকসামগ্রীগুলো যদি ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার ওপর দিয়ে পরিবহন করতে হবে, তবে সেগুলোকে পদ্মা পাড়ি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে সরকার যদি সেতুটি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে বানাতে চীনকে রাজি করাতে না পারে, তবে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক-জ্বালানির প্রথম চালানটি নৌকায় করে নিতে হবে।
No comments