কৃষিতে নারীর সংখ্যা বাড়লেও কমছে পুরুষশ্রমিক by আশরাফ আলী
কৃষিতে দিন দিন নারীশ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও কমছে পুরুষশ্রমিক। গত একদশকে
দেশে কৃষি খাতে অংশগ্রহণকারী নারীশ্রমিকের সংখ্যা ৩৭ লাখ থেকে বেড়ে ৮০
লাখে দাঁড়িয়েছে।
শ্রমশক্তিতে এ বৃদ্ধির হার ১১৬ শতাংশ।
অথচ এ সময় কৃষি খাতে পুরুষশ্রমিকের অংশগ্রহণ কমেছে ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।
বর্তমানে দেশে এক কোটি বিশ লাখ নারীশ্রমিক রয়েছেন। দেশের অর্থনৈতিক
কার্যক্রমের সাথে যুক্ত এসব নারীশ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী।
যারা মূলত কৃষি, বন, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছচাষ ইত্যাদি কৃষিকাজে
নিয়োজিত রয়েছেন। যদিও এসব নারীশ্রমিকের ৭২ শতাংশই আবার ‘অবৈতনিক’
পারিবারিক নারীশ্রমিক, যার মধ্যে ৮১ শতাংশ নারীই গৃহকর্মে সরাসরি অবদান
রাখছেন। সার্বিকভাবে কৃষিতে নারীর অবদান থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের
স্বীকৃতি দেয়া হয়নি।
শ্রমশক্তির সংজ্ঞানুযায়ী ২৯ শতাংশ নারীই শুধু শ্রমশক্তির অংশ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার যোগ্যতা ছুঁয়েছেন। বাকিরা নিশ্চিতভাবে নানান অবৈতনিক পারিবারিক কাজে নিয়োজিত থাকার পরও শ্রমশক্তির শক্ত অংশ হিসেবে অদৃশ্যই থাকছেন। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কৃষিতে নারীশ্রমিক বা কিষানীকে ‘শ্রমিক’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। ুধার বিরুদ্ধে সংগ্রামরত এসব নারীর অবদানের স্বীকৃতি সব সময় আলোচনার বাইরেই থেকেছে। দেশের কৃষি অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী ও নারী নেত্রীরা তাদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে কৃষিতে পুরুষশ্রমিক কমার হারের চেয়ে নারীশ্রমিক বাড়ার হার কয়েক গুণ বেশি। পুরুষের পাশাপাশি নারীশ্রমিকরা সমানতালে কাজ করলেও তাদের কম মজুরি দেয়া হয়। কোনো েেত্র পুরুষশ্রমিকের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মজুরিতে নারীশ্রমিক পাওয়া যায়। অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় এবং ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে অংশ নেয়া যায়। তা ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারের কর্তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসার চালাতে। ফলে বাড়তি রোজগারের আশায় পরিবারের পুরুষ সদস্য নারী সদস্যকে কৃষিকাজে নিয়োজিত রেখে অন্য কাজে চলে যাচ্ছেন। এসব কারণে গ্রামীণ নারীরা কৃষিশ্রমে জড়িয়ে পড়ছেন, যার অধিকাংশই আবার মজুরিবহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। সংখ্যাধিক্যের কারণে নিয়োজিত কিষানীকে ঠকিয়ে কম মজুরি দেয়ার প্রবণতাও সমানভাবে চলছে।
যদিও দেশের কৃষকদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যাতথ্য থাকলেও কিষানীদের কোনো সংখ্যাতথ্য সরকারের কৃষি বিভাগের কাছে নেই। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রদত্ত এক কোটি ৩৯ লাখ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও কতজন কিষানী এই ‘কৃষক কার্ড’ পেয়েছেন সংশিষ্টরা তা জানে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের কৃষি ও কিষান-কিষানীর সার্বিক উন্নতির স্বার্থে সরকারকে ‘সামগ্রিক কৃষি সংস্কার কর্মসূচি’ জরুরিভিত্তিতে হাতে নিতে হবে। সেই সাথে গ্রামীণ নারীশ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রায় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের কাছে কৃষিতথ্য পৌঁছে দেয়ার বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ তারা যুগ যুগ ধরে অব্যাহতভাবে কৃষিতে অবদান রাখলেও রাষ্ট্রে তাদের কোনো স্বীকৃতি মেলেনি।
গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযানের (সিএসআরএল) ২০১২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫-০৬ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশের এক কোটি ২০ লাখ নারীশ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলত কৃষি, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছচাষ ইত্যাদি কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০০৯-১০ সময়ে কৃষি, বন ও মৎস্য খাতে অংশগ্রহণকারী নারীর সংখ্যা ৩৭ লাখ থেকে বেড়ে প্রায় ৮০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এ বৃদ্ধির হার ১১৬ শতাংশ।
যদিও শ্রমবাজারে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ থাকলেও নিয়োজিত নারীশ্রমিকের প্রায় ৭২ শতাংশই অবৈতনিক পারিবারিক নারীশ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ এ সময় এ খাতে পুরুষশ্রমিকের সংখ্যা কমেছে দুই দশমিক তিন শতাংশ। ২০০২-০৩ সময়ের চেয়ে কৃষি-বন-মৎস্য খাতে পুরুষশ্রমিকের অংশগ্রহণ কমেছে প্রায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।
কৃষিতে নারীশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিএসআরএলের জেন্ডার গ্রুপের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, কম মজুরি সত্ত্বেও অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে অংশ নেয়া যায়Ñ এসব কারণে গ্রামীণ নারীরা কৃষিতে শ্রম দিচ্ছেন, যার অধিকাংশই মজুরিবহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। দেশের ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ নারী কৃষিসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত। কৃষিতে তাদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত দেয়া হয় না। কৃষিতে নারীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এর সাথে সরকারের নীতি-কৌশলের ব্যাপক যোগসূত্র রয়েছে। কৃষি খাতে গতিশীল দিকনির্দেশনার অন্যতম একটি উদ্যোগ ‘কৃষক কার্ড’ বিতরণ। কৃষকপর্যায়ে প্রণোদনা দেয়ার েেত্র শনাক্তকরণ পরিচয়বাহী ‘কৃষক কার্ড’ থাকায় সরকারি কৃষিসেবা গ্রহণের পথ সুগম হয়েছে। এসব কারণে কৃষিতে কিষানীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরি। কর্মজীবী নারীর প্রধান শিরিন আখতার বলেন, নারী কৃষিশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কৃষক হিসেবে তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের গতিও শ্লথ হয়ে পড়বে। সিএসআরএলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮১ শতাংশ নারী গৃহকর্মে সরাসরি অবদান রাখছেন। তাদের অনেকে কিষানী, তবে তা শ্রমশক্তির বিবেচনায় অদৃশ্য। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে যারা শ্রমশক্তির বাইরে পড়েছেন, তাদের ৬৫ শতাংশ ছাত্র হিসেবে দিব্যি স্বীকৃত! শুধু নারীরই যেন স্বীকৃতির দরকার নেই।
শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষ যারা কাজ করছেন, কাজ করছেন না কিন্তু কাজ খুঁজছেনÑ জনগোষ্ঠীর এমন অংশকেই শ্রমশক্তি হিসেবে ধরা হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে এক কোটি ২০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, বন ও মৎস্য খাতেই যুক্ত হয়েছে ৩০ লাখ কর্মসংস্থান। অর্থনীতির উদ্বৃত্ত শ্রমের ধারণায় কৃষিতে পারিবারিক শ্রমের প্রাধান্য থাকায় শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা কখনো কখনো শূন্য হয়ে দাঁড়ায়। কৃষিতে নতুন কর্মসংস্থান নতুন কাজের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও তা একই সাথে বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে কৃষিখাতের গতিশীলতা, কৃষিতে ন্যায্য মজুরি অথবা কৃষিশ্রমিকের বাজারে প্রবেশগম্যতা কিছুতেই নিশ্চিত করে না।
শ্রমশক্তির সংজ্ঞানুযায়ী ২৯ শতাংশ নারীই শুধু শ্রমশক্তির অংশ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার যোগ্যতা ছুঁয়েছেন। বাকিরা নিশ্চিতভাবে নানান অবৈতনিক পারিবারিক কাজে নিয়োজিত থাকার পরও শ্রমশক্তির শক্ত অংশ হিসেবে অদৃশ্যই থাকছেন। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য কৃষিতে নারীশ্রমিক বা কিষানীকে ‘শ্রমিক’ হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে তাদের কোনো স্বীকৃতি নেই। ুধার বিরুদ্ধে সংগ্রামরত এসব নারীর অবদানের স্বীকৃতি সব সময় আলোচনার বাইরেই থেকেছে। দেশের কৃষি অর্থনীতিবিদ, উন্নয়নকর্মী ও নারী নেত্রীরা তাদের ‘শ্রমিক’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে কৃষিতে পুরুষশ্রমিক কমার হারের চেয়ে নারীশ্রমিক বাড়ার হার কয়েক গুণ বেশি। পুরুষের পাশাপাশি নারীশ্রমিকরা সমানতালে কাজ করলেও তাদের কম মজুরি দেয়া হয়। কোনো েেত্র পুরুষশ্রমিকের চেয়ে প্রায় অর্ধেক মজুরিতে নারীশ্রমিক পাওয়া যায়। অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় এবং ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে অংশ নেয়া যায়। তা ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কষাঘাতে জর্জরিত পরিবারের কর্তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংসার চালাতে। ফলে বাড়তি রোজগারের আশায় পরিবারের পুরুষ সদস্য নারী সদস্যকে কৃষিকাজে নিয়োজিত রেখে অন্য কাজে চলে যাচ্ছেন। এসব কারণে গ্রামীণ নারীরা কৃষিশ্রমে জড়িয়ে পড়ছেন, যার অধিকাংশই আবার মজুরিবহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। সংখ্যাধিক্যের কারণে নিয়োজিত কিষানীকে ঠকিয়ে কম মজুরি দেয়ার প্রবণতাও সমানভাবে চলছে।
যদিও দেশের কৃষকদের সুনির্দিষ্ট সংখ্যাতথ্য থাকলেও কিষানীদের কোনো সংখ্যাতথ্য সরকারের কৃষি বিভাগের কাছে নেই। রাষ্ট্রীয় প্রণোদনার অংশ হিসেবে প্রদত্ত এক কোটি ৩৯ লাখ কৃষক কার্ড বিতরণ করা হলেও কতজন কিষানী এই ‘কৃষক কার্ড’ পেয়েছেন সংশিষ্টরা তা জানে না।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশের কৃষি ও কিষান-কিষানীর সার্বিক উন্নতির স্বার্থে সরকারকে ‘সামগ্রিক কৃষি সংস্কার কর্মসূচি’ জরুরিভিত্তিতে হাতে নিতে হবে। সেই সাথে গ্রামীণ নারীশ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার রায় প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ ও তাদের কাছে কৃষিতথ্য পৌঁছে দেয়ার বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ তারা যুগ যুগ ধরে অব্যাহতভাবে কৃষিতে অবদান রাখলেও রাষ্ট্রে তাদের কোনো স্বীকৃতি মেলেনি।
গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযানের (সিএসআরএল) ২০১২ সালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৫-০৬ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী দেশের এক কোটি ২০ লাখ নারীশ্রমিকের প্রায় ৭৭ শতাংশই গ্রামীণ নারী, যারা মূলত কৃষি, পশুপালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছচাষ ইত্যাদি কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১৯৯৯-২০০০ থেকে ২০০৯-১০ সময়ে কৃষি, বন ও মৎস্য খাতে অংশগ্রহণকারী নারীর সংখ্যা ৩৭ লাখ থেকে বেড়ে প্রায় ৮০ লাখে দাঁড়িয়েছে। এ বৃদ্ধির হার ১১৬ শতাংশ।
যদিও শ্রমবাজারে নারীর অধিকতর অংশগ্রহণ থাকলেও নিয়োজিত নারীশ্রমিকের প্রায় ৭২ শতাংশই অবৈতনিক পারিবারিক নারীশ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ এ সময় এ খাতে পুরুষশ্রমিকের সংখ্যা কমেছে দুই দশমিক তিন শতাংশ। ২০০২-০৩ সময়ের চেয়ে কৃষি-বন-মৎস্য খাতে পুরুষশ্রমিকের অংশগ্রহণ কমেছে প্রায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ।
কৃষিতে নারীশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সিএসআরএলের জেন্ডার গ্রুপের সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি বলেন, কম মজুরি সত্ত্বেও অন্য কাজের সুযোগ সীমিত হওয়ায় ঘরের কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে অংশ নেয়া যায়Ñ এসব কারণে গ্রামীণ নারীরা কৃষিতে শ্রম দিচ্ছেন, যার অধিকাংশই মজুরিবহির্ভূত পারিবারিক শ্রম। দেশের ৭৭ শতাংশ গ্রামীণ নারী কৃষিসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত। কৃষিতে তাদের অবদান থাকলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত দেয়া হয় না। কৃষিতে নারীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এর সাথে সরকারের নীতি-কৌশলের ব্যাপক যোগসূত্র রয়েছে। কৃষি খাতে গতিশীল দিকনির্দেশনার অন্যতম একটি উদ্যোগ ‘কৃষক কার্ড’ বিতরণ। কৃষকপর্যায়ে প্রণোদনা দেয়ার েেত্র শনাক্তকরণ পরিচয়বাহী ‘কৃষক কার্ড’ থাকায় সরকারি কৃষিসেবা গ্রহণের পথ সুগম হয়েছে। এসব কারণে কৃষিতে কিষানীর অবদানের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি অত্যন্ত জরুরি। কর্মজীবী নারীর প্রধান শিরিন আখতার বলেন, নারী কৃষিশ্রমিকদের শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কৃষক হিসেবে তার প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের গতিও শ্লথ হয়ে পড়বে। সিএসআরএলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৮১ শতাংশ নারী গৃহকর্মে সরাসরি অবদান রাখছেন। তাদের অনেকে কিষানী, তবে তা শ্রমশক্তির বিবেচনায় অদৃশ্য। কিন্তু পুরুষদের মধ্যে যারা শ্রমশক্তির বাইরে পড়েছেন, তাদের ৬৫ শতাংশ ছাত্র হিসেবে দিব্যি স্বীকৃত! শুধু নারীরই যেন স্বীকৃতির দরকার নেই।
শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী মানুষ যারা কাজ করছেন, কাজ করছেন না কিন্তু কাজ খুঁজছেনÑ জনগোষ্ঠীর এমন অংশকেই শ্রমশক্তি হিসেবে ধরা হয়। সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত এক দশকে এক কোটি ২০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, বন ও মৎস্য খাতেই যুক্ত হয়েছে ৩০ লাখ কর্মসংস্থান। অর্থনীতির উদ্বৃত্ত শ্রমের ধারণায় কৃষিতে পারিবারিক শ্রমের প্রাধান্য থাকায় শ্রমের প্রান্তিক উৎপাদনশীলতা কখনো কখনো শূন্য হয়ে দাঁড়ায়। কৃষিতে নতুন কর্মসংস্থান নতুন কাজের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিলেও তা একই সাথে বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে কৃষিখাতের গতিশীলতা, কৃষিতে ন্যায্য মজুরি অথবা কৃষিশ্রমিকের বাজারে প্রবেশগম্যতা কিছুতেই নিশ্চিত করে না।
No comments