ঘুম ভাঙেনি বাংলা একাডেমীর by শফিকুল ইসলাম
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় নানা অসঙ্গতি থাকলেও ঘুম ভাঙেনি বাংলা একাডেমী
কর্তৃপক্ষের। গ্রন্থমেলার নীতি লঙ্ঘন করে একশ্রেণীর মুনাফালোভী প্রকাশক
নিষিদ্ধ ও বিদেশী লেখকের বই বিক্রি করেই চলেছেন।
এতে
ঠকছেন গ্রন্থমেলায় আসা ক্রেতা সাধারণ। এ ছাড়া গ্রন্থমেলার নানা অসঙ্গতি
রয়েছে। গত কয়েক দিনে গ্রন্থমেলায় ঘুরে ক্রেতা-দর্শক ও কিছু প্রকাশকের
কাছ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশকেরা বলছেন, অমর একুশে
গ্রন্থমেলার আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমীকে ক্রেতা ও প্রকৃত প্রকাশকদের
স্বার্থে প্রয়োজনীয় জরুরি পদক্ষেপ নেয়া উচিত। গতকাল অমর একুশে বইমেলার
ছিল ষষ্ঠ দিন। গ্রন্থমেলাও ছিল ফাঁকা। তবে পরে এ দৃশ্য পাল্টে যায়।
বিক্রিও হয় ভালো।
এ দিকে দুই বছর আগে রবীন্দ্রসমগ্র দেয়ার নামে পাঠক ও ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেছেপাঠক সমাবেশ নামের একটি প্রকাশনা সংস্থা। ইচ্ছামতো মূল্য বাড়িয়ে পাঠকের হাতে ২৫ খণ্ডের রবীন্দ্র সমগ্র দেয়ার নামে টাকা তুলে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সময়মতো তা পাঠকের হাতে দিতে ব্যর্থ হয়েছে পাঠক সমাবেশ।
মেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ফোন রিসিভ করেননি।
মেলার অসঙ্গতি : গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী দিনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শুধু প্রকাশকদের নিয়ে এ বছর বইমেলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। হয়েছেও তাই। তবুও নানা অসঙ্গতি চোখে পড়ে। গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিনেও প্রকাশকেরা বলছেন, বইমেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতি লঙ্ঘন হচ্ছে। এমন কিছু স্টল আছে যারা এক ইউনিট পাওয়ার যোগ্য না তাদের দেয়া হয়েছে দুই ইউনিট। এ ছাড়া একাডেমীর বাইরের রাস্তায় কোনো ধরনের দোকান না বসার ঘোষণা দিয়েছিল একাডেমী। কিন্তু আণবিক কমিশন থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে এবং পুষ্টি ভবনের সামনে থেকে শুরু করে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন হকারেরা। এতে লোকসমাগমে বিঘœ ঘটছে। এসবের প্রতি খেয়াল নেই মেলা কর্তৃপক্ষের।
বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ও বাইরের বই : এ দিকে গ্রন্থমেলায় পাইরেটেড, বিদেশী ও শিশুদের জন্য ক্ষতিকর এমন বই বিক্রি চলছে দেদার। নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের বই বিক্রি নিষিদ্ধ গ্রন্থমেলায়। কিন্তু বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া নেই। জানা গেছে, বিদেশী লেখকের বই এবং নিষিদ্ধ বই বিক্রি করে এমন প্রকাশনার মধ্যে রয়েছেÑ পরবাসী প্রকাশনী, অবসর প্রকাশনী, আল আমিন, নবযুগ, নওরোজ কিতাব বিতান, জ্যোৎস্না, পালক ও আবিষ্কার অন্যতম। অবসর প্রকাশনী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লেখক বিভূতিভূষণ ও মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত বিভিন্ন বই বিক্রি করে। ও দিকে আবিষ্কার নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা গ্রন্থমেলায় লুকিয়ে নিষিদ্ধ ডোরেমন বই বিক্রি করছে।
পাঠক সমাবেশের প্রতারণা : দুই বছর আগে টাকা নিয়েও পাঠকের হাতে বই তুলে দিতে পারেনি পাঠক সমাবেশ। রবীন্দ্রসমগ্র নামে ২৫ খণ্ডের বইসেট পাঠকের কাছে দেয়ার জন্য দুই বছর আগে অগ্রিম টাকা নেয় তারা। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৯ খণ্ড বের করেছে। শুরুতে পাঁচ হাজার, এরপর দাম বৃদ্ধি করতে করতে এখন ২৫ হাজার টাকা নিচ্ছে তারা। আগে যাদের কাছে টাকা নিয়ে বই দিতে পারেনি ফের নতুন করে টাকা নিচ্ছে তারা।
ভুক্তভোগী ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাঠক সমাবেশের মালিক অগ্রিম টাকা নিয়ে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেছে। তারা ফ্যাট বাসা ও গাড়ি কিনেছে। তবে পাঠক সমাবেশের সিইও শহীদুল ইসলাম বিজু বলেন, ‘আমরা অগ্রিম টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত উনিশ খণ্ড দিয়েছি। বাকিগুলোও দেয়া হবে।’ তবে বইগুলোর কাগজের মান খুব একটা ভালো না।
গতকালের নতুন বই : গতকাল গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিনে মোট ১০০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ছয়টির। নতুন বইয়ের মধ্যে গল্প ১১টি, উপন্যাস ১৬টি, প্রবন্ধ তিনটি, কবিতা ২৪টি, গবেষণা একটি, জীবনী ছয়টি, ধর্মীয় চারটি ও রাজনীতি দু’টি। নতুন বইয়ের মধ্যে অন্য প্রকাশ থেকে শাহাবুদ্দীন নাগরীর নির্বাচিত ১০০ কবিতা, আহমদ থেকে আউয়াল চৌধুরীর উপন্যাস চাঁদের আলোয় একটি মেয়ে, ইতি প্রকাশনী থেকে মাহমুদুর রহমানের জয় আসলে ভারতের, জাগৃতি থেকে তাহা ইয়াসমিনের নজরুল যে কবিতার জন্য জেল খেটেছিলেন, আহসান কবিরের উপন্যাস মার কাছে যাব, আমিনুর রহমান সুলতানের সম্পাদনায় মাসিক মোহাম্মদী প্রসঙ্গ রোকেয়া, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রচিত রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের মতোই, ঐতিহ্য থেকে এ কে এম শোয়েব ও ফাহমিদা ইয়াসমিনের সম্পাদিত যুক্তিপত্র বিতর্ক শিল্পের সহজ পাঠ, সামারা তিন্নির ভৌতিক গল্প ভৌতিকতা, কামাল পাশার গল্পগ্রন্থ এবং তনুমা, আগামী থেকে ফাহমিদুল হকের চলচ্চিত্র সমালোচনা, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন থেকে সিরাজ উদ্দিন সাথী রচিত হলি সিটি মক্কা, সূচিপত্র থেকে গোলাম মাওলা রনির নির্বাচিত কলাম, কাকলী থেকে হাফিজ আল ফারুকীর ম্যাডাম ৪২০, ফারহানা সুলতানার উপন্যাস বন্ধুত্বের ভালোবাসা অন্যতম।
মেলমঞ্চে গতকাল : গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিন ছিল গতকাল। এ দিন বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ‘দ্বিজেন্দ্রলাল রায়; সার্ধশত জন্মবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খালেদ হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক মাহবুবুল হক, কথাশিল্পী মহীবুল আজিজ, অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর ও ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু। সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক পবিত্র সরকার।
প্রাবন্ধিক বলেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতা-গান-নাটকে দেশপ্রেম মূর্ত হয়ে উঠেছে শতধা-বৈচিত্র্যে। রবীন্দ্রনাথের প্রায় সমকালীন কবিদের মধ্যে দ্বিজেন্দ্রলাল সেই বিরল কবি, যিনি পূর্বাপর স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল থাকতে পেরেছেন।
আলোচকেরা বলেন, বাংলা সাহিত্যের পঞ্চকবির অন্যতম কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বাংলা নাটকে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। তার রচিত একগুচ্ছ ঐতিহাসিক নাটক বাংলা নাটকের আধুনিক অভিমুখ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সামাজিক কুসংস্কার, মানবচরিত্রের অসঙ্গতি কাব্য ও গানে তার আক্রমণের বিষয় ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার কালজয়ী গান ছিল আমাদের অনন্ত প্রেরণার উৎস।
অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, স্বজাত্যবোধ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে সঙ্কীর্ণ করেনি বরং বিশ্ববোধের সঞ্চার করেছে। পুরাণকে তিনি অন্বিত করেছেন সমকালীন যুগযন্ত্রণার সাথে। শুধু সার্ধশত জন্মবর্ষে নয়; দেশপ্রেমে-নতুন ধারার কাব্য-নাটক-গানের সূত্রে তিনি আমাদের নিত্য স্মরণীয় নাম।
মেলামঞ্চে আজকের অনুষ্ঠান : আজ বৃহস্পতিবার গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় ‘কমল দাশগুপ্ত : জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন করুণাময় গোস্বামী। আলোচনায় অংশ নেবেন আ বা ম নুরুল আনোয়ার, সৈয়দ আবদুল হাদী ও খায়রুল আলম সবুজ। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ দিকে দুই বছর আগে রবীন্দ্রসমগ্র দেয়ার নামে পাঠক ও ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেছেপাঠক সমাবেশ নামের একটি প্রকাশনা সংস্থা। ইচ্ছামতো মূল্য বাড়িয়ে পাঠকের হাতে ২৫ খণ্ডের রবীন্দ্র সমগ্র দেয়ার নামে টাকা তুলে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু সময়মতো তা পাঠকের হাতে দিতে ব্যর্থ হয়েছে পাঠক সমাবেশ।
মেলা সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ফোন রিসিভ করেননি।
মেলার অসঙ্গতি : গত বছর অমর একুশে গ্রন্থমেলার সমাপনী দিনে সংবাদ সম্মেলনে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শুধু প্রকাশকদের নিয়ে এ বছর বইমেলা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। হয়েছেও তাই। তবুও নানা অসঙ্গতি চোখে পড়ে। গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিনেও প্রকাশকেরা বলছেন, বইমেলায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে নীতি লঙ্ঘন হচ্ছে। এমন কিছু স্টল আছে যারা এক ইউনিট পাওয়ার যোগ্য না তাদের দেয়া হয়েছে দুই ইউনিট। এ ছাড়া একাডেমীর বাইরের রাস্তায় কোনো ধরনের দোকান না বসার ঘোষণা দিয়েছিল একাডেমী। কিন্তু আণবিক কমিশন থেকে শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি সংলগ্ন রাস্তার দুই পাশে এবং পুষ্টি ভবনের সামনে থেকে শুরু করে দোয়েল চত্বর পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন হকারেরা। এতে লোকসমাগমে বিঘœ ঘটছে। এসবের প্রতি খেয়াল নেই মেলা কর্তৃপক্ষের।
বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ ও বাইরের বই : এ দিকে গ্রন্থমেলায় পাইরেটেড, বিদেশী ও শিশুদের জন্য ক্ষতিকর এমন বই বিক্রি চলছে দেদার। নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের বই বিক্রি নিষিদ্ধ গ্রন্থমেলায়। কিন্তু বাংলা একাডেমী কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া নেই। জানা গেছে, বিদেশী লেখকের বই এবং নিষিদ্ধ বই বিক্রি করে এমন প্রকাশনার মধ্যে রয়েছেÑ পরবাসী প্রকাশনী, অবসর প্রকাশনী, আল আমিন, নবযুগ, নওরোজ কিতাব বিতান, জ্যোৎস্না, পালক ও আবিষ্কার অন্যতম। অবসর প্রকাশনী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লেখক বিভূতিভূষণ ও মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত বিভিন্ন বই বিক্রি করে। ও দিকে আবিষ্কার নামে একটি প্রকাশনা সংস্থা গ্রন্থমেলায় লুকিয়ে নিষিদ্ধ ডোরেমন বই বিক্রি করছে।
পাঠক সমাবেশের প্রতারণা : দুই বছর আগে টাকা নিয়েও পাঠকের হাতে বই তুলে দিতে পারেনি পাঠক সমাবেশ। রবীন্দ্রসমগ্র নামে ২৫ খণ্ডের বইসেট পাঠকের কাছে দেয়ার জন্য দুই বছর আগে অগ্রিম টাকা নেয় তারা। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৯ খণ্ড বের করেছে। শুরুতে পাঁচ হাজার, এরপর দাম বৃদ্ধি করতে করতে এখন ২৫ হাজার টাকা নিচ্ছে তারা। আগে যাদের কাছে টাকা নিয়ে বই দিতে পারেনি ফের নতুন করে টাকা নিচ্ছে তারা।
ভুক্তভোগী ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পাঠক সমাবেশের মালিক অগ্রিম টাকা নিয়ে ক্রেতার সাথে প্রতারণা করেছে। তারা ফ্যাট বাসা ও গাড়ি কিনেছে। তবে পাঠক সমাবেশের সিইও শহীদুল ইসলাম বিজু বলেন, ‘আমরা অগ্রিম টাকা নিয়ে এখন পর্যন্ত উনিশ খণ্ড দিয়েছি। বাকিগুলোও দেয়া হবে।’ তবে বইগুলোর কাগজের মান খুব একটা ভালো না।
গতকালের নতুন বই : গতকাল গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিনে মোট ১০০টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। এর মধ্যে মোড়ক উন্মোচন করা হয় ছয়টির। নতুন বইয়ের মধ্যে গল্প ১১টি, উপন্যাস ১৬টি, প্রবন্ধ তিনটি, কবিতা ২৪টি, গবেষণা একটি, জীবনী ছয়টি, ধর্মীয় চারটি ও রাজনীতি দু’টি। নতুন বইয়ের মধ্যে অন্য প্রকাশ থেকে শাহাবুদ্দীন নাগরীর নির্বাচিত ১০০ কবিতা, আহমদ থেকে আউয়াল চৌধুরীর উপন্যাস চাঁদের আলোয় একটি মেয়ে, ইতি প্রকাশনী থেকে মাহমুদুর রহমানের জয় আসলে ভারতের, জাগৃতি থেকে তাহা ইয়াসমিনের নজরুল যে কবিতার জন্য জেল খেটেছিলেন, আহসান কবিরের উপন্যাস মার কাছে যাব, আমিনুর রহমান সুলতানের সম্পাদনায় মাসিক মোহাম্মদী প্রসঙ্গ রোকেয়া, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী রচিত রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের মতোই, ঐতিহ্য থেকে এ কে এম শোয়েব ও ফাহমিদা ইয়াসমিনের সম্পাদিত যুক্তিপত্র বিতর্ক শিল্পের সহজ পাঠ, সামারা তিন্নির ভৌতিক গল্প ভৌতিকতা, কামাল পাশার গল্পগ্রন্থ এবং তনুমা, আগামী থেকে ফাহমিদুল হকের চলচ্চিত্র সমালোচনা, অ্যাডর্ন পাবলিকেশন থেকে সিরাজ উদ্দিন সাথী রচিত হলি সিটি মক্কা, সূচিপত্র থেকে গোলাম মাওলা রনির নির্বাচিত কলাম, কাকলী থেকে হাফিজ আল ফারুকীর ম্যাডাম ৪২০, ফারহানা সুলতানার উপন্যাস বন্ধুত্বের ভালোবাসা অন্যতম।
মেলমঞ্চে গতকাল : গ্রন্থমেলার ষষ্ঠ দিন ছিল গতকাল। এ দিন বিকেল ৪টায় মেলার মূল মঞ্চে ‘দ্বিজেন্দ্রলাল রায়; সার্ধশত জন্মবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খালেদ হোসাইন। আলোচনায় অংশ নেন অধ্যাপক মাহবুবুল হক, কথাশিল্পী মহীবুল আজিজ, অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর ও ড. শাহাদাৎ হোসেন নিপু। সভাপতিত্ব করেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশিষ্ট ভাষাবিজ্ঞানী অধ্যাপক পবিত্র সরকার।
প্রাবন্ধিক বলেন, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের কবিতা-গান-নাটকে দেশপ্রেম মূর্ত হয়ে উঠেছে শতধা-বৈচিত্র্যে। রবীন্দ্রনাথের প্রায় সমকালীন কবিদের মধ্যে দ্বিজেন্দ্রলাল সেই বিরল কবি, যিনি পূর্বাপর স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল থাকতে পেরেছেন।
আলোচকেরা বলেন, বাংলা সাহিত্যের পঞ্চকবির অন্যতম কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় বাংলা নাটকে যোগ করেছেন নতুন মাত্রা। তার রচিত একগুচ্ছ ঐতিহাসিক নাটক বাংলা নাটকের আধুনিক অভিমুখ তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। সামাজিক কুসংস্কার, মানবচরিত্রের অসঙ্গতি কাব্য ও গানে তার আক্রমণের বিষয় ছিল। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তার কালজয়ী গান ছিল আমাদের অনন্ত প্রেরণার উৎস।
অধ্যাপক পবিত্র সরকার বলেন, স্বজাত্যবোধ দ্বিজেন্দ্রলাল রায়কে সঙ্কীর্ণ করেনি বরং বিশ্ববোধের সঞ্চার করেছে। পুরাণকে তিনি অন্বিত করেছেন সমকালীন যুগযন্ত্রণার সাথে। শুধু সার্ধশত জন্মবর্ষে নয়; দেশপ্রেমে-নতুন ধারার কাব্য-নাটক-গানের সূত্রে তিনি আমাদের নিত্য স্মরণীয় নাম।
মেলামঞ্চে আজকের অনুষ্ঠান : আজ বৃহস্পতিবার গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে বিকেল ৪টায় ‘কমল দাশগুপ্ত : জন্মশতবার্ষিক শ্রদ্ধাঞ্জলি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন করুণাময় গোস্বামী। আলোচনায় অংশ নেবেন আ বা ম নুরুল আনোয়ার, সৈয়দ আবদুল হাদী ও খায়রুল আলম সবুজ। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সন্ধ্যায় থাকছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
No comments