দেশকে ৮ প্রদেশে ভাগ করতে হবে, এরশাদ চান প্রাদেশিক সরকার ঢাকায় জনসংখ্যার চাপ ও মামলাজট কমবে
দেশকে আট প্রদেশে ভাগ করে প্রাদেশিক সরকার
পদ্ধতি প্রচলনের প্রস্তাব দিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।
সেই সঙ্গে প্রাদেশিক সরকার পরিচালনার একটি রূপরেখা তুলে ধরেছেন তিনি।
প্রস্তাব অনুযায়ী দেশে আটটি প্রাদেশিক সরকার থাকবে। প্রাদেশিক পরিষদ হবে
৬শ' সদস্যের। প্রতিটি প্রদেশে থাকবে হাইকোর্ট। কেন্দ্রীয় সরকারের রাজধানী
হবে ঢাকায়। কেন্দ্রীয় সরকার একজন গবর্নরের মাধ্যমে প্রাদেশিক সরকারের
কার্যক্রম তদারকি করবে। শনিবার হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পার্টির প্রাদেশিক
সরকার বাসত্মবায়ন কমিটি আয়োজিত 'বাংলাদেশে প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতির
পরিকল্পনা' শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব প্রসত্মাবনা তুলে ধরেন।
এরশাদের প্রসত্মাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন সেমিনারে অংশ নেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, বৃদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেছেন, প্রাদেশিক সরকার বাসত্মবানের কোন বিকল্প নেই। এ পদ্ধতির বাসত্মবায়ন ঘটাতে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে এ পদ্ধতি বাসত্মবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। প্রসত্মাবনা নিয়ে যেতে হবে মানুষের কাছে। জনমত গঠন করতে হবে। দেশের প্রধান দু'দলকে বাধ্য করাতে হবে প্রসত্মাবনা সমর্থন করতে। জবাবে এরশাদ বলেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাদেশিক সরকারের বিকল্প নেই। জীবনের শেষ প্রানত্মে এসে আমি কাউকে ভয় করি না। ভাল কিছু করে যেতে চাই। তিনি প্রাদেশিক সরকারের পৰে যুক্তি দিয়ে বলেন, এটা হলে গোটা দেশে উন্নয়নের ভারসাম্য নিশ্চিত হবে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ব্যবস্থার প্রচলন আছে। নানা সঙ্কটের কারণে আগামী ২০ বছর পর বাংলাদেশের ভবিষ্যত কি হবে কেউ জানে না। তাই প্রাদেশিক সরকার হলে সবাই নিজের এলাকার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে পারবে। বেকার সমস্যা কমবে। উন্নতি হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। ঢাকায় জনসংখ্যার চাপ কমবে। আদালতে কমবে মামলাজট। অবসান হবে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার। এরশাদের প্রসত্মাবিত প্রদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গ, বরেন্দ্র, জাহাঙ্গীরনগর, জালালাবাদ, চট্টলা, ময়নামতি, জাহানাবাদ ও চন্দ্রদ্বীপ।
বিন্যাসে উত্তরবঙ্গ প্রদেশের ৮ জেলার মধ্যে রয়েছে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়। প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রসত্মাব করা হয়েছে রংপুর। বরেন্দ্র প্রদেশের আট জেলার মধ্যে রয়েছে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, নওয়াবগঞ্জ, জায়পুরহাট, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ। প্রসত্মাবিত প্রাদেশিক রাজধানী রাজশাহী। ১২ জেলা নিয়ে প্রসত্মাব করা হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ। এ প্রদেশের জেলাগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর। এর প্রাদেশিক রাজধানী হবে ময়মনসিংহ। চার জেলা নিয়ে প্রসত্মাব করা হয়েছে জালালাবাদ জেলা। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। প্রাদেশিক রাজধানী হবে সিলেট। ৫ জেলা নিয়ে চট্টলা প্রদেশে থাকছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবন। প্রাদেশিক রাজধানী হবে চট্টগ্রাম। ৬ জেলা নিয়ে ময়নামতি প্রদেশে থাকছে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিলস্না ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। প্রাদেশিক রাজধানী থাকবে কুমিলস্না। ১২ জেলার জাহানাবাদ প্রদেশে থাকছে খুলনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, যশোর, নড়াইল, সাতৰীরা ও বাগেরহাট। প্রাদেশিক রাজধানী থাকবে খুলনায়। ৯ জেলার চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশে থাকছে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ভোলা ও বরগুনা। এরশাদ বলেন, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রসত্মাবনা দিচ্ছি না। দেশের প্রয়োজনে ও বাসত্মবতার নিরিখে প্রসত্মাব দেয়া হচ্ছে। প্রসত্মাবনায় সকলের মতামত দেয়ার অধিকার আছে।
প্রসত্মাবনায় ঢাকা হবে কেন্দ্রীয় ফেডারেল সরকারের রাজধানী। প্রেসিডেন্ট থাকবেন রাষ্ট্রের প্রধান। প্রধানমন্ত্রী হবেন সরকারপ্রধান। কেন্দ্রীয় সরকারে থাকবে ৩শ' আসন। প্রত্যেক প্রদেশের থাকবে নিজস্ব প্রাদেশিক পরিষদ। এরশাদ বলেন, প্রাদেশিক সরকার হলে কেন্দ্রীয় সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যসত্ম থাকবে না। শিৰা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরম্ন করে সবকিছুর বিকেন্দ্রীকরণ হবে; কমবে যানজট। হবে পরিবেশের উন্নয়ন। ঢাকা কেন্দ্রিক মানুষের যাতায়াত কমবে; লাঘব হবে বেকার সমস্যার। দেশে গড়ে উঠবে আটটি বড় বড় শহর।
সেমিনারে তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেন, প্রাদেশিক সরকার করে সব সমস্যার সমাধান মিলবে না। তবুও এর প্রয়োজন আছে। সংবিধান নিয়ে নতুন করে চিনত্মা ও সংবিধানের আমূল পরিবর্তন জরম্নরী। দেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার প্রবর্তন না হলে ভোট জালিয়াতি কমবে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ জরম্নরী। প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন করতে হলে সংবিধান কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। প্রকৃত রাজনৈতিক নেতা সৃষ্টি করতে হলে দেশে প্রাদেশিক শাসন প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা প্রচলনের ৰেত্রে অনেক সম্ভাবনা আছে। সমস্যার দিক থেকে ৮টি প্রদেশ হলে আরও প্রদেশ করার দাবি উঠবে, পুরো সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে, রাজস্ব আদায়ে সমস্যা বাড়বে। তবে প্রাদেশিক হলেও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখতে হবে। দেশে এ মুহূর্তে প্রাদেশিক সরকার চালু করতে পারলে জাতির জন্য বড় অর্জন হবে। তিনি বলেন, এরশাদ আমলের করা স্থানীয় সরকার বর্তমানে খর্ব হলেও তিনি কথা বলছেন না। বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ঘন ঘন সংবিধান পরিবর্তন করলে জাতির মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। তাই সবকিছু ঠিক করে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থার পরিবর্তন জরম্নরী। কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার অবসান জরম্নরী। প্রাদেশিক সরকার গঠনে অর্থের প্রয়োজন নেই। তবে বটতলায় থেকে এরশাদ সাহেব প্রাদেশিক সরকার করতে পারবেন না। বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান বলেন, আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক। একদিন হয়ত প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন সবাই অনুভব করবেন। জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে আমাদের ছেলেরা আধুনিক সরকার ব্যবস্থার প্রচলনসহ নগরায়ন নিয়ে কাজ করলেও তারা আমাদের দেশে মতামত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে না। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম বলেন, প্রাদেশিক সরকারব্যবস্থা প্রচলনের কোন বিকল্প নেই। সাবেক উপদেষ্টা ও ইন্ডিপেন্ডেন্টের সম্পাদক মাহবুব উল আলম বলেন, স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা জোরদার না করলে প্রাদেশিক ব্যবস্থা কাজে আসবে না। তাই ৰমতা বিকেন্দ্রীকরণ জরম্নরী। অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, ভাল পরিকল্পনা নিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। এগিয়ে যেতে হবে। পুলিশের সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা বলেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে এক পুলিশপ্রধান নিয়ন্ত্রণ করবে তা ভাবাই যায় না। তাই সময় এসেছে বিকেন্দ্রীকরণের। অধ্যাপক ড. শফিউলস্নাহ বলেন, প্রধান দু'টি রাজনৈতিক দলকে বাধ্য করাতে হবে প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতি সমর্থন করার জন্য। এজন্য জাতীয় পার্টির পৰ থেকে প্রসত্মাবনা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। অধ্যাপক ড. শরিফউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফলাফল কি হবে এ নিয়ে চিনত্মা করে লাভ নেই। প্রসত্মাবনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত বলেন, বিকেন্দ্রীকরণের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এছাড়াও সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। এ সময় জাতীয় পার্টির পৰে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিএম কাদের, মোসত্মফা জামাল হায়দার, কাজী ফিরোজ রশিদ, মাহবুবুর রহমান এবং মহাসচিব এবিএম রম্নহুল আমিন হাওলাদার।
এরশাদের প্রসত্মাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন সেমিনারে অংশ নেয়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সাংবাদিক, বৃদ্ধিজীবী, বিজ্ঞানীসহ বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা। তাঁরা বলেছেন, প্রাদেশিক সরকার বাসত্মবানের কোন বিকল্প নেই। এ পদ্ধতির বাসত্মবায়ন ঘটাতে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন আনতে হবে। আওয়ামী লীগের ছায়াতলে থেকে এ পদ্ধতি বাসত্মবায়ন সম্ভব নয়। এজন্য নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। প্রসত্মাবনা নিয়ে যেতে হবে মানুষের কাছে। জনমত গঠন করতে হবে। দেশের প্রধান দু'দলকে বাধ্য করাতে হবে প্রসত্মাবনা সমর্থন করতে। জবাবে এরশাদ বলেন, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাদেশিক সরকারের বিকল্প নেই। জীবনের শেষ প্রানত্মে এসে আমি কাউকে ভয় করি না। ভাল কিছু করে যেতে চাই। তিনি প্রাদেশিক সরকারের পৰে যুক্তি দিয়ে বলেন, এটা হলে গোটা দেশে উন্নয়নের ভারসাম্য নিশ্চিত হবে। বিশ্বের অনেক দেশে এ ব্যবস্থার প্রচলন আছে। নানা সঙ্কটের কারণে আগামী ২০ বছর পর বাংলাদেশের ভবিষ্যত কি হবে কেউ জানে না। তাই প্রাদেশিক সরকার হলে সবাই নিজের এলাকার উন্নয়ন নিয়ে ভাবতে পারবে। বেকার সমস্যা কমবে। উন্নতি হবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। ঢাকায় জনসংখ্যার চাপ কমবে। আদালতে কমবে মামলাজট। অবসান হবে এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার। এরশাদের প্রসত্মাবিত প্রদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে উত্তরবঙ্গ, বরেন্দ্র, জাহাঙ্গীরনগর, জালালাবাদ, চট্টলা, ময়নামতি, জাহানাবাদ ও চন্দ্রদ্বীপ।
বিন্যাসে উত্তরবঙ্গ প্রদেশের ৮ জেলার মধ্যে রয়েছে লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়। প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে প্রসত্মাব করা হয়েছে রংপুর। বরেন্দ্র প্রদেশের আট জেলার মধ্যে রয়েছে রাজশাহী, নাটোর, নওগাঁ, নওয়াবগঞ্জ, জায়পুরহাট, বগুড়া, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ। প্রসত্মাবিত প্রাদেশিক রাজধানী রাজশাহী। ১২ জেলা নিয়ে প্রসত্মাব করা হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর প্রদেশ। এ প্রদেশের জেলাগুলোর মধ্যে আছে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর। এর প্রাদেশিক রাজধানী হবে ময়মনসিংহ। চার জেলা নিয়ে প্রসত্মাব করা হয়েছে জালালাবাদ জেলা। জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ। প্রাদেশিক রাজধানী হবে সিলেট। ৫ জেলা নিয়ে চট্টলা প্রদেশে থাকছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবন। প্রাদেশিক রাজধানী হবে চট্টগ্রাম। ৬ জেলা নিয়ে ময়নামতি প্রদেশে থাকছে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, কুমিলস্না ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। প্রাদেশিক রাজধানী থাকবে কুমিলস্না। ১২ জেলার জাহানাবাদ প্রদেশে থাকছে খুলনা, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, যশোর, নড়াইল, সাতৰীরা ও বাগেরহাট। প্রাদেশিক রাজধানী থাকবে খুলনায়। ৯ জেলার চন্দ্রদ্বীপ প্রদেশে থাকছে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ভোলা ও বরগুনা। এরশাদ বলেন, দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে প্রসত্মাবনা দিচ্ছি না। দেশের প্রয়োজনে ও বাসত্মবতার নিরিখে প্রসত্মাব দেয়া হচ্ছে। প্রসত্মাবনায় সকলের মতামত দেয়ার অধিকার আছে।
প্রসত্মাবনায় ঢাকা হবে কেন্দ্রীয় ফেডারেল সরকারের রাজধানী। প্রেসিডেন্ট থাকবেন রাষ্ট্রের প্রধান। প্রধানমন্ত্রী হবেন সরকারপ্রধান। কেন্দ্রীয় সরকারে থাকবে ৩শ' আসন। প্রত্যেক প্রদেশের থাকবে নিজস্ব প্রাদেশিক পরিষদ। এরশাদ বলেন, প্রাদেশিক সরকার হলে কেন্দ্রীয় সরকারের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে না। সবকিছু প্রধানমন্ত্রীর কাছে ন্যসত্ম থাকবে না। শিৰা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরম্ন করে সবকিছুর বিকেন্দ্রীকরণ হবে; কমবে যানজট। হবে পরিবেশের উন্নয়ন। ঢাকা কেন্দ্রিক মানুষের যাতায়াত কমবে; লাঘব হবে বেকার সমস্যার। দেশে গড়ে উঠবে আটটি বড় বড় শহর।
সেমিনারে তত্ত্ব্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেন, প্রাদেশিক সরকার করে সব সমস্যার সমাধান মিলবে না। তবুও এর প্রয়োজন আছে। সংবিধান নিয়ে নতুন করে চিনত্মা ও সংবিধানের আমূল পরিবর্তন জরম্নরী। দেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থার প্রবর্তন না হলে ভোট জালিয়াতি কমবে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ৰমতার বিকেন্দ্রীকরণ জরম্নরী। প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থা প্রচলন করতে হলে সংবিধান কমিশন ও জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করতে হবে। প্রকৃত রাজনৈতিক নেতা সৃষ্টি করতে হলে দেশে প্রাদেশিক শাসন প্রয়োজন। এ ব্যবস্থা প্রচলনের ৰেত্রে অনেক সম্ভাবনা আছে। সমস্যার দিক থেকে ৮টি প্রদেশ হলে আরও প্রদেশ করার দাবি উঠবে, পুরো সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে, প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে হবে, রাজস্ব আদায়ে সমস্যা বাড়বে। তবে প্রাদেশিক হলেও স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী রাখতে হবে। দেশে এ মুহূর্তে প্রাদেশিক সরকার চালু করতে পারলে জাতির জন্য বড় অর্জন হবে। তিনি বলেন, এরশাদ আমলের করা স্থানীয় সরকার বর্তমানে খর্ব হলেও তিনি কথা বলছেন না। বিচারপতি আব্দুর রউফ বলেন, ঘন ঘন সংবিধান পরিবর্তন করলে জাতির মধ্যে অস্থিরতা দেখা দেয়। তাই সবকিছু ঠিক করে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। প্রশাসনিক ব্যবস্থার পরিবর্তন জরম্নরী। কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, এককেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থার অবসান জরম্নরী। প্রাদেশিক সরকার গঠনে অর্থের প্রয়োজন নেই। তবে বটতলায় থেকে এরশাদ সাহেব প্রাদেশিক সরকার করতে পারবেন না। বিকল্প ধারার মহাসচিব আবদুল মান্নান বলেন, আমরা চাই দেশ এগিয়ে যাক। একদিন হয়ত প্রাদেশিক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন সবাই অনুভব করবেন। জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে আমাদের ছেলেরা আধুনিক সরকার ব্যবস্থার প্রচলনসহ নগরায়ন নিয়ে কাজ করলেও তারা আমাদের দেশে মতামত প্রকাশের সুযোগ পাচ্ছে না। কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান ইব্রাহিম বলেন, প্রাদেশিক সরকারব্যবস্থা প্রচলনের কোন বিকল্প নেই। সাবেক উপদেষ্টা ও ইন্ডিপেন্ডেন্টের সম্পাদক মাহবুব উল আলম বলেন, স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থা জোরদার না করলে প্রাদেশিক ব্যবস্থা কাজে আসবে না। তাই ৰমতা বিকেন্দ্রীকরণ জরম্নরী। অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান শেলী বলেন, ভাল পরিকল্পনা নিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। এগিয়ে যেতে হবে। পুলিশের সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা বলেন, ১৬ কোটি মানুষের মধ্যে এক পুলিশপ্রধান নিয়ন্ত্রণ করবে তা ভাবাই যায় না। তাই সময় এসেছে বিকেন্দ্রীকরণের। অধ্যাপক ড. শফিউলস্নাহ বলেন, প্রধান দু'টি রাজনৈতিক দলকে বাধ্য করাতে হবে প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতি সমর্থন করার জন্য। এজন্য জাতীয় পার্টির পৰ থেকে প্রসত্মাবনা নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। অধ্যাপক ড. শরিফউদ্দিন আহমেদ বলেন, ফলাফল কি হবে এ নিয়ে চিনত্মা করে লাভ নেই। প্রসত্মাবনা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত বলেন, বিকেন্দ্রীকরণের জন্য প্রয়োজন রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এছাড়াও সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতাসহ বিভিন্ন সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা সেমিনারে বক্তব্য রাখেন। এ সময় জাতীয় পার্টির পৰে উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জিএম কাদের, মোসত্মফা জামাল হায়দার, কাজী ফিরোজ রশিদ, মাহবুবুর রহমান এবং মহাসচিব এবিএম রম্নহুল আমিন হাওলাদার।
No comments