পুলিশী ভয়ে দিনাজপুরে একটি গ্রাম ১০ দিন ধরে পুরুষশূন্য- ছাত্রীর শ্লীলতাহানি

পঞ্চম শ্রেণীর স্কুলছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনার পর দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার নওগাঁ গ্রাম এখন পুরুষশূন্য। শ্লীলতাহানির শিকার নাসরিনের পিতা মামলা করে নিজেরাই এখন বাসাবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। শিক্ষকের পাল্টা মামলার কারণে নাসরিনের বাবাসহ ওই গ্রামের প্রায় ২ শতাধিক প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ পুলিশের ভয়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।


অভিযোগ রয়েছে, ওই আসনের সংসদ সদস্য শিক্ষকদের পক্ষ নেয়ায় শ্লীলতাহানির শিকার নাসরিনের পরিবার বিচার পাচ্ছে না। উল্টো তাদের ধরতেই পুলিশ এখন মরিয়া হয়ে একের পর এক ‘কথিত’ অভিযান চালাচ্ছে।
বীরগঞ্জ উপজেলার নওগাঁ গ্রামের আছির উদ্দিনের মেয়ে নাসরিন আক্তার (১১) স্থানীয় নওগাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্রী। তার পরিবারের অভিযোগ, ২৬ জুলাই সকালে পরীক্ষা চলাকালে ওই স্কুলের শিক্ষক মোঃ শামসুজ্জামান তাকে অফিস ঘরে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি ঘটায়। ছাত্রীটি বাসায় ফিরে তার মাকে ঘটনাটি জানায়। পিতা আছির উদ্দিন ঘটনার বিচার চেয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচার দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। তিনি এরপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দাবি করেন। অজ্ঞাত কারণে তিনিও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেন। কোথাও কোন বিচার না পেয়ে তিনি গ্রামের মুরব্বিদের বিষয়টি জানান। প্রধান শিক্ষক ও চেয়ারম্যানের কাছে বিচার না পেয়ে ৩০ জুলাই সকালে বিক্ষুব্ধ কয়েক শ’ গ্রামবাসী স্কুল ঘেরাও করে অভিযুক্ত শিক্ষককে গণপিটুনি দেয়। এ সময় তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসা স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহজাহান সবুজও সামান্য আহত হন। ঘটনার পর পরই উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্কুলে উপস্থিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে গ্রামবাসী শান্ত হয়ে ঘরে ফিরে যায়। কিন্তু এরপরই শুরু হয় অন্য এক নাটক।
শনিবার দুপুরে নওগাঁ গ্রামে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেল, গ্রামের মহিলাদের মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশের ভয়ে পুরুষশূন্য এই গ্রামটিতে মহিলারা তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবারের একমাত্র কর্মজীবী মানুষটি পালিয়ে থাকার কারণে অনেকের বাড়িতে ঠিকমতো উনুনে হাঁড়ি চড়ছে না।

No comments

Powered by Blogger.