গুঁড়া মসলায় ভয়ংকর রং by শরীফুল আলম সুমন
গুঁড়া মসলার চাহিদা সারা বছরের চেয়ে অনেকটাই বেড়ে যায় ঈদের সময়। এবারও তা-ই। এই সুযোগে কিছু অসৎ ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় হলুদ, মরিচ, ধনিয়া, গরম মসলা, জিরাসহ নানা মসলায় ব্যাপকভাবে ভেজাল দিয়ে বাজারজাত করছে। এসব খোলা গুঁড়া মসলার প্রায় ৮০ শতাংশ ক্রেতাই গ্রামের ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রাজধানীর
শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার, মৌলভীবাজার, টঙ্গী, মিরপুর এলাকার বিভিন্ন পাইকারি মসলার বাজার এবং মসলা ভাঙানোর কারখানাগুলোতে ঘুরে কালের কণ্ঠের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ভেজালের নানা তথ্য। দেখা গেছে, ভেজাল হিসেবে মসলায় মেশানো হচ্ছে ঘাসের বিচি, কাউন, কম দামের চাল ও ডাল। আর আসল মসলার রং আনার জন্য তাতে মেশানো হচ্ছে টেক্সটাইল (কাপড়ে দেওয়ার) রং। বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব রং বিষাক্ত। এসব মসলা খেলে ক্যান্সারও হতে পারে।
কাপড়ের রং মেশানো মসলা খেলে শরীরের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, তা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'টেক্সটাইল রং শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ভেতরে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান রয়েছে। অক্সাইড জাতীয় এসব টেক্সটাইল রং মেশানো কিছু খেলে প্রথমে হাই এসিডিটি হবে এবং একপর্যায়ে ক্যান্সার, হেপাটাইটিস ছাড়াও কিডনি ড্যামেজসহ নানা ধরনের ভয়ংকর রোগ হতে পারে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মসলায় বিভিন্ন ধরনের ভেজাল দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি সূত্রাপুর ও কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে হলুদের সঙ্গে নিম্নমানের কাউন, ধানের তুষ, রং মেশানো পাওয়া যায়। মরিচের সঙ্গে ফটকা, জিরার সঙ্গে ঘাসের বিচি এবং দারুচিনির সঙ্গে গাছের ছাল মেশানো পাওয়া যায়। তবে শ্যামবাজারে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানোয় এখানে ভেজালের পরিমাণ কমে এসেছে। তার পরও হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য স্থানে মসলায় ভেজাল অব্যাহত রয়েছে। তবে আমাদের অভিযানও অব্যাহত থাকবে।'
তিনি ক্রেতাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, 'খোলা মসলার ক্রেতা সাধারণত গ্রামের ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে মসলা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাঙিয়ে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। প্যাকেট কিনলে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের সিল দেখে কিনতে হবে, কারণ তাদের ৬৫টি আইটেমের মধ্যে মসলা একটা। তবে খোলা মসলা বর্জন করাই উচিত।'
গত মঙ্গলবার শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি খোলা মরিচ গুঁড়া ১২০ টাকা, হলুদ ৮০ টাকা, ধনিয়া ৭০ টাকা ও জিরার গুঁড়া ৫০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আস্ত মরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, হলুদ ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ধনিয়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জিরা ৫০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। একই দোকান বা কারখানায় রাখা আস্ত এবং গুঁড়া মসলার সমান দাম হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এসব মসলা বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা স্বীকার করেছেন, যেকোনো মসলা ভাঙানোর সময় প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া ভাঙানোর জন্য মিল খরচ, দোকান ও কর্মচারী খরচ মিলিয়ে আস্ত থেকে গুঁড়া করতে কেজিপ্রতি প্রায় ২০ টাকা খরচ হয়। তাহলে আস্ত আর গুঁড়া মসলার একই দাম কিভাবে হয়- এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী বলেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর আপনিই খুঁইজা লন। সস্তায় জিনিস চাইলে দুই নম্বর মাল মেশানোই লাগব।'
একই প্রশ্ন নিয়ে বেশ কয়েকজন মিল মালিকের সঙ্গে কথা হয়। শ্যামবাজার এলাকার সালাউদ্দিন মসলাঘরের মালিক সালাউদ্দিন বলেন, 'আমরা এখন আর কোনো ভেজাল দেই না। আগে হয়তো কিছু ভেজাল হতো। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরদারি থাকায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।' একই এলাকার কোরবান মিলে দেখা গেল খুবই স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা মেঝেতে মরিচের গুঁড়া ভাঙিয়ে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। মিল মালিক কোরবান বলেন, 'শুকাচ্ছি। কোনো ভেজাল নেই। আগে ভেজাল মেশানো হতো। অভিযান হওয়ায় এখন আর ভেজাল হয় না।'
শ্যামবাজার এলাকার এক মিল কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "ভাই ভেজাল ছাড়া কিছুই হয় না। হলুদের সঙ্গে কম দামের ডাল, কাউন, মোটা চাল, আটা মেশানো হয়। তবে আমরা স্বেচ্ছায় এগুলো করি না। যদি কাস্টমার অর্ডার দেয় তাহলেই করা হয়। এ ছাড়া আসল হলুদ না ভাঙিয়ে 'মোতা' হলুদ বা হলুদের মূল ভাঙিয়েও কম দামে বিক্রি করা হয়। আর মরিচের সঙ্গে সব সময়ই 'ফটকা' অর্থাৎ শুকনো কাঁচা মরিচ মিশিয়ে ভাঙানো হয়। আড়াই শ গ্রাম শুকনো মরিচের সঙ্গে সাড়ে সাত শ গ্রাম ফটকা মিশিয়ে ভাঙানো হয়। এই ফটকা ৫০ টাকা কেজি।" রং মেশানো হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত কিছু বলা যাবে না।
কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে গিয়েও একই অবস্থা দেখা যায়। এখানকার বিভিন্ন মিলে গুঁড়া মসলার সঙ্গে চাল, গমও ভাঙানো হয়। তবে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা যায়, কেউ মসলা ছাড়া অন্য কিছুই ভাঙায়নি। ক্রেতা সেজে কম দামে গুঁড়া মসলা পাওয়া যাবে কি না, জানতে চাইলে একাধিক মিল কর্মচারী বলেন, 'আপনি যা যা ভাঙাতে চাইবেন আমরা তাই ভাঙিয়ে দেব। মেশালে সেটা আপনার দায়িত্বে মেশাবেন। আপনার মাল আপনি যা করেন করবেন।' জানা যায়, বাজারের ভেতর এসব মিলের চেয়ে এখন অলিগলিতে গড়ে ওঠা মিলগুলো বেশি ভেজাল দেয়। কারণ ওখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত যান না।
সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিভিন্ন অভিযানে গুঁড়া মসলায় ব্যাপক হারে ভেজালের প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রামের বিবিরহাট এলাকায় ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট মেসার্স আকতার হোসেনের মরিচের কল (উট মার্কা) এবং ইব্রাহীমের মসলার কারখানায় (হরিণ মার্কা) অভিযান চালিয়ে টেক্সটাইলের বিপুল পরিমাণ রং উদ্ধার করে। এসব ব্র্যান্ডের খোলা মসলা সারা দেশেই বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম থেকে পাইকাররা এই মসলা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকে। গত বছর শ্যামবাজারের দুটি মসলা তৈরির মিলে অভিযান চালিয়ে ভেজালের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, রমজানে মসলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভেজাল মসলায় বাজার ছেয়ে যায়। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় এসব মসলার ব্যবহার বেশি। এখন সব মিলই কমবেশি ব্যস্ত। বিদ্যুৎ থাকলে রাতদিন ২৪ ঘণ্টাই এসব মিল চলছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ঢাকায় এক হাজারের বেশি গুঁড়া মসলার মিল রয়েছে। আর এসব মিলের অধিকাংশেই মেশানো হচ্ছে নানা ভেজাল। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি কাজী ফারুক বলেন, 'ভেজাল ছাড়া গুঁড়া মসলা এখন পাওয়া কষ্টকর। বড় বড় কম্পানিও ভেজাল দিচ্ছে। শুধু লোভনীয় প্যাকেট আর বিজ্ঞাপন দিয়ে কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। খোলা মসলার ক্ষেত্রে আসলে মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থাই নেই। মাঝেমধ্যে অভিযান হলেও ভেজালকারীরা কৌশল পরিবর্তন করে আবার একই কাজ করছে।'
কাপড়ের রং মেশানো মসলা খেলে শরীরের কী ধরনের ক্ষতি হতে পারে, তা জানতে চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'টেক্সটাইল রং শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ভেতরে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী উপাদান রয়েছে। অক্সাইড জাতীয় এসব টেক্সটাইল রং মেশানো কিছু খেলে প্রথমে হাই এসিডিটি হবে এবং একপর্যায়ে ক্যান্সার, হেপাটাইটিস ছাড়াও কিডনি ড্যামেজসহ নানা ধরনের ভয়ংকর রোগ হতে পারে।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'মসলায় বিভিন্ন ধরনের ভেজাল দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি সূত্রাপুর ও কারওয়ান বাজারে অভিযান চালিয়ে হলুদের সঙ্গে নিম্নমানের কাউন, ধানের তুষ, রং মেশানো পাওয়া যায়। মরিচের সঙ্গে ফটকা, জিরার সঙ্গে ঘাসের বিচি এবং দারুচিনির সঙ্গে গাছের ছাল মেশানো পাওয়া যায়। তবে শ্যামবাজারে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানোয় এখানে ভেজালের পরিমাণ কমে এসেছে। তার পরও হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য স্থানে মসলায় ভেজাল অব্যাহত রয়েছে। তবে আমাদের অভিযানও অব্যাহত থাকবে।'
তিনি ক্রেতাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, 'খোলা মসলার ক্রেতা সাধারণত গ্রামের ও নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে মসলা নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ভাঙিয়ে নেওয়াই সবচেয়ে ভালো। প্যাকেট কিনলে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের সিল দেখে কিনতে হবে, কারণ তাদের ৬৫টি আইটেমের মধ্যে মসলা একটা। তবে খোলা মসলা বর্জন করাই উচিত।'
গত মঙ্গলবার শ্যামবাজারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতি কেজি খোলা মরিচ গুঁড়া ১২০ টাকা, হলুদ ৮০ টাকা, ধনিয়া ৭০ টাকা ও জিরার গুঁড়া ৫০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি আস্ত মরিচ ১২০ থেকে ১৫০ টাকা, হলুদ ৬০ থেকে ১০০ টাকা, ধনিয়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, জিরা ৫০০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। একই দোকান বা কারখানায় রাখা আস্ত এবং গুঁড়া মসলার সমান দাম হওয়ার কারণ সম্পর্কে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি এসব মসলা বিক্রেতারা। তবে বিক্রেতারা স্বীকার করেছেন, যেকোনো মসলা ভাঙানোর সময় প্রায় ১০ শতাংশ কমে যায়। এ ছাড়া ভাঙানোর জন্য মিল খরচ, দোকান ও কর্মচারী খরচ মিলিয়ে আস্ত থেকে গুঁড়া করতে কেজিপ্রতি প্রায় ২০ টাকা খরচ হয়। তাহলে আস্ত আর গুঁড়া মসলার একই দাম কিভাবে হয়- এমন প্রশ্নে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী বলেন, 'এই প্রশ্নের উত্তর আপনিই খুঁইজা লন। সস্তায় জিনিস চাইলে দুই নম্বর মাল মেশানোই লাগব।'
একই প্রশ্ন নিয়ে বেশ কয়েকজন মিল মালিকের সঙ্গে কথা হয়। শ্যামবাজার এলাকার সালাউদ্দিন মসলাঘরের মালিক সালাউদ্দিন বলেন, 'আমরা এখন আর কোনো ভেজাল দেই না। আগে হয়তো কিছু ভেজাল হতো। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নজরদারি থাকায় তা বন্ধ হয়ে গেছে।' একই এলাকার কোরবান মিলে দেখা গেল খুবই স্যাঁতসেঁতে ও নোংরা মেঝেতে মরিচের গুঁড়া ভাঙিয়ে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। মিল মালিক কোরবান বলেন, 'শুকাচ্ছি। কোনো ভেজাল নেই। আগে ভেজাল মেশানো হতো। অভিযান হওয়ায় এখন আর ভেজাল হয় না।'
শ্যামবাজার এলাকার এক মিল কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, "ভাই ভেজাল ছাড়া কিছুই হয় না। হলুদের সঙ্গে কম দামের ডাল, কাউন, মোটা চাল, আটা মেশানো হয়। তবে আমরা স্বেচ্ছায় এগুলো করি না। যদি কাস্টমার অর্ডার দেয় তাহলেই করা হয়। এ ছাড়া আসল হলুদ না ভাঙিয়ে 'মোতা' হলুদ বা হলুদের মূল ভাঙিয়েও কম দামে বিক্রি করা হয়। আর মরিচের সঙ্গে সব সময়ই 'ফটকা' অর্থাৎ শুকনো কাঁচা মরিচ মিশিয়ে ভাঙানো হয়। আড়াই শ গ্রাম শুকনো মরিচের সঙ্গে সাড়ে সাত শ গ্রাম ফটকা মিশিয়ে ভাঙানো হয়। এই ফটকা ৫০ টাকা কেজি।" রং মেশানো হয় কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এত কিছু বলা যাবে না।
কারওয়ান বাজারের হাসিনা মার্কেটে গিয়েও একই অবস্থা দেখা যায়। এখানকার বিভিন্ন মিলে গুঁড়া মসলার সঙ্গে চাল, গমও ভাঙানো হয়। তবে বেশ কিছুক্ষণ অবস্থান করে দেখা যায়, কেউ মসলা ছাড়া অন্য কিছুই ভাঙায়নি। ক্রেতা সেজে কম দামে গুঁড়া মসলা পাওয়া যাবে কি না, জানতে চাইলে একাধিক মিল কর্মচারী বলেন, 'আপনি যা যা ভাঙাতে চাইবেন আমরা তাই ভাঙিয়ে দেব। মেশালে সেটা আপনার দায়িত্বে মেশাবেন। আপনার মাল আপনি যা করেন করবেন।' জানা যায়, বাজারের ভেতর এসব মিলের চেয়ে এখন অলিগলিতে গড়ে ওঠা মিলগুলো বেশি ভেজাল দেয়। কারণ ওখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত যান না।
সম্প্রতি ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিভিন্ন অভিযানে গুঁড়া মসলায় ব্যাপক হারে ভেজালের প্রমাণ মেলে। চট্টগ্রামের বিবিরহাট এলাকায় ভেজালবিরোধী মোবাইল কোর্ট মেসার্স আকতার হোসেনের মরিচের কল (উট মার্কা) এবং ইব্রাহীমের মসলার কারখানায় (হরিণ মার্কা) অভিযান চালিয়ে টেক্সটাইলের বিপুল পরিমাণ রং উদ্ধার করে। এসব ব্র্যান্ডের খোলা মসলা সারা দেশেই বিক্রি হয়। চট্টগ্রাম থেকে পাইকাররা এই মসলা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকে। গত বছর শ্যামবাজারের দুটি মসলা তৈরির মিলে অভিযান চালিয়ে ভেজালের প্রমাণ পান ভ্রাম্যমাণ আদালত।
ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা জানান, রমজানে মসলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভেজাল মসলায় বাজার ছেয়ে যায়। হোটেল-রেস্তোরাঁগুলোয় এসব মসলার ব্যবহার বেশি। এখন সব মিলই কমবেশি ব্যস্ত। বিদ্যুৎ থাকলে রাতদিন ২৪ ঘণ্টাই এসব মিল চলছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এবং ঢাকা সিটি করপোরেশনের ভাষ্য অনুযায়ী, ঢাকায় এক হাজারের বেশি গুঁড়া মসলার মিল রয়েছে। আর এসব মিলের অধিকাংশেই মেশানো হচ্ছে নানা ভেজাল। কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি কাজী ফারুক বলেন, 'ভেজাল ছাড়া গুঁড়া মসলা এখন পাওয়া কষ্টকর। বড় বড় কম্পানিও ভেজাল দিচ্ছে। শুধু লোভনীয় প্যাকেট আর বিজ্ঞাপন দিয়ে কয়েক গুণ বেশি দাম নেওয়া হচ্ছে। খোলা মসলার ক্ষেত্রে আসলে মান নিয়ন্ত্রণের কোনো ব্যবস্থাই নেই। মাঝেমধ্যে অভিযান হলেও ভেজালকারীরা কৌশল পরিবর্তন করে আবার একই কাজ করছে।'
No comments