মোবাইল নেটওয়ার্কে কমেই চলেছে বিদেশি কল by কাজী হাফিজ
দেশের বাইরে থেকে আসা টেলিফোন কলের পরিমাণ কমে যাওয়ার উদ্বেগজনক তথ্য আরো স্পষ্ট হয়েছে শীর্ষ মোবাইল ফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের চিঠিতে। গ্রামীণফোন বিটিআরসিকে কয়েক মাস থেকেই জানিয়ে আসছে, তাদের নেটওয়ার্কে আসা আন্তর্জাতিক কল দ্রুত উদ্বেগজনক হারে কমে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কালের কণ্ঠে গত ২০ জুন 'ভিওআইপি : ছয় মাসেই ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে গত নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত গ্রামীণফোনের আন্তর্জাতিক কল হ্রাসের ধারাবাহিক তথ্য উপস্থাপন করা হয়। গত সপ্তাহে বিটিআরসির কাছে গ্রামীণফোনের এ-সংক্রান্ত সর্বশেষ চিঠিতে জানানো হয়েছে মে ও জুনের তথ্য। এ তথ্য থেকে দেখা যায়, গত বছরের অক্টোবরের তুলনায় ওই দুই মাসে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে ৩০৪ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক কল কম এসেছে। শুধু গ্রামীণফোনের জুন মাসে আন্তর্জাতিক কল কমেছে ৪৮ শতাংশ।
গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে জুন মাসে আন্তর্জাতিক কল আসে মোট ৬৪ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার ২৩১ মিনিট। গত বছর অক্টোবর মাসে এই পরিমাণ ছিল ৯৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭ মিনিট। গ্রামীণফোনের চিঠিতে এই বিপর্যয়ের তথ্য উপস্থাপন করে জানানো হয়, গত নভেম্বরে ২ শতাংশ, ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশ, জানুয়ারিতে ১৫ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ২১ শতাংশ, মার্চে ১৩ শতাংশ, এপ্রিলে ২৫ শতাংশ এবং মে মাসে ৩৬ শতাংশ আন্তর্জাতিক কল কমেছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, খুব সম্ভব অবৈধ কল টার্মিনেশনের কারণেই এটা ঘটছে এবং এতে রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে।
এই তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) বা অবৈধ কল টার্মিনেশনের কারণে শুধু গ্রামীণফোনের আট মাসের হিসাবে তাদের নেটওয়ার্ক থেকে ৩৩৮ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক ভয়েস কল লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আগের তুলনায় ওই আট মাসে বৈধপথে জানা হিসাবের মধ্যে আসা গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের আন্তর্জাতিক কল কমেছে মোট ১৩৯ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৬৩৭ মিনিট। প্রতি মিনিট কলের চার্জ কমপক্ষে তিন সেন্ট হিসাবে এর মূল্যমান বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৮ কোটি ১২ লাখের ওপরে। এই বিপুল অঙ্কের টাকা থেকে বিটিআরসি ৫১.৭৫ শতাংশ, গ্রামীণফোন ২০ শতাংশ, ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলো (আইসিএক্স) ১৫ শতাংশ এবং আইজিডাব্লিউগুলো ১৩.২৫ শতাংশ টাকা পেতে পারত।
দেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকদের মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৪২ শতাংশ। বাকি ৫৮ শতাংশ বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল, সিটিসেল ও টেলিটকের। এ অবস্থায় ধারণা করা হচ্ছে, গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে আট মাসে ৩৩৮ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক কল কম এলে অন্য পাঁচ অপারেটরের নেটওয়ার্কে আরো ৪৬৬ কোটি টাকার কল কম এসেছে। সব মিলিয়ে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে আট মাসে ৮০৪ কোটি টাকার কল কম এসেছে। শেষের দুই মাসে কমেছে ৩০৪ কোটি টাকার কল। এর বাইরে রয়েছে ল্যান্ডফোনের হিসাব।
গ্রামীণফোনের রেগুলেটরি ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক তাইমুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত অক্টোবরে তাঁদের নেটওয়ার্কে আন্তর্জাতিক কল এসেছিল ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫২টি, যা সময়ের হিসাবে ৯৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭ মিনিট। এর আগের মাসগুলোতেও গড়ে একই পরিমাণ কল আসে। কিন্তু নভেম্বর থেকে কল কমতে থাকে। নভেম্বরে ৯২ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৪ মিনিটের ১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭৩টি কল আসে। অক্টোবরের তুলনায় ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশ কল কমে যায়। এ মাসে ৮২ কোটি ৫৬ লাখ ২৮ হাজার ৩০৪ মিনিটের ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯০২টি কল আসে। জানুয়ারিতে কমে ১৫ শতাংশ। এ মাসে ৮০ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার ২১১ মিনিটের মোট ১২ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ১৬৭টি কল আসে। ২১ শতাংশ কমে গিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আসে ৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৮২ হাজার ৯২৬ মিনিটের মোট ১১ কোটি ৮৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৪টি কল। অক্টোবরের তুলনায় মার্চে কমে ১৩ শতাংশ। ওই মাসে ৮২ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৯ মিনিটের মোট ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭৮১টি কল আসে। এপ্রিলে ২৫ শতাংশ কমে হয় ৭১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৭ মিনিটের মোট ১০ কোটি ৮৬ লাখ চার হাজার ৩৫৫টি কল। এ মাসে অক্টোবরের তুলনায় ২৩ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ মিনিট কল কম আসে। মে মাসে আসে ৬৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ১০৭ মিনিট এবং জুন মাসে ৬৪ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার ২৩১ মিনিট। শেষের এ দুই মাসে গত অক্টোবরের তুলনায় ৫৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯৬ মিনিট কল কম আসে।
এদিকে এ বিষয়ে অন্য মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান জানান, গ্রাহক কম হওয়ার কারণে তারা এ ধরনের কোনো হিসাব রাখেন না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমাদের কমিটির সভায় গত ১ আগস্ট আন্তর্জাতিক কল হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, বিটিসিএল ও টেলিটকের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইব। কারিগরি ও বাণিজ্যিক দুই ধরনের ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিটিআরসি কল কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু তা হবে কেন? বিদেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বাড়ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে টেলিফোন নেটওয়ার্কের ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে প্রবাস থেকে দেশে স্বজনদের কাছে টেলিফোন করার সুযোগও বেড়েছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক কল না বেড়ে কমবে কেন? তাহলে কি এ নিয়ে অবৈধ কিছু হচ্ছে? এসব প্রশ্নের উত্তর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দিতে হবে এবং দ্রুত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদের পরই এ বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব।'
এদিকে ভিওআইপির অবৈধ কারবারে মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারও ক্রমশ বাড়ছে। বিটিআরসির ঘোষণা রয়েছে, এই কারবারে কোনো মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার হলে প্রতি সিমের জন্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে ৫০ ডলার করে জরিমানা করা হবে।
সূত্র জানায়, ভিওআইপিতে আগে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের সিম বেশি ব্যবহৃত হলেও সম্প্রতি এর কাছাকাছি চলে এসেছে বাংলালিংক। এর পরেই রয়েছে এয়ারটেল। ভিওআইপি কল শনাক্তকারী ব্যবস্থা মিউচি সল্যুশনের মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষিত ভিওআইপি কলগুলোতে টেলিটকের ৪১ শতাংশ, বাংলালিংকের ৪১ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৮ শতাংশ সিম ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা গেছে। মার্চে টেলিটকের ৪২ শতাংশ, বাংলালিংকের ৪২ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৪ শতাংশ; এপ্রিলে বাংলালিংকের ৪২ শতাংশ, টেলিটকের ৩৮ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৮ শতাংশ সিম ব্যবহৃত হয়েছে। গ্রামীণফোন ও সিটিসেলের সিম/রিম-এর ব্যবহার এ ক্ষেত্রে শূন্য। আর রবির সিম ব্যবহৃত হয়েছে ১ শতাংশ।
বাংলালিংকের সিনিয়র ডিরেক্টর (গভর্নমেন্ট রিলেশন, রেগুলেটরি অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স) জাকিউল ইসলাম গত ১ আগস্ট বিটিআরসিকে জানিয়েছেন, ২০১০ সালের মধ্য জুলাই থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মিউচি সল্যুউশনের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়া বাংলালিংকের ছয় লাখ ৯৩ হাজার সিমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে জুন মাসে আন্তর্জাতিক কল আসে মোট ৬৪ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার ২৩১ মিনিট। গত বছর অক্টোবর মাসে এই পরিমাণ ছিল ৯৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭ মিনিট। গ্রামীণফোনের চিঠিতে এই বিপর্যয়ের তথ্য উপস্থাপন করে জানানো হয়, গত নভেম্বরে ২ শতাংশ, ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশ, জানুয়ারিতে ১৫ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে ২১ শতাংশ, মার্চে ১৩ শতাংশ, এপ্রিলে ২৫ শতাংশ এবং মে মাসে ৩৬ শতাংশ আন্তর্জাতিক কল কমেছে। চিঠিতে আরো বলা হয়, খুব সম্ভব অবৈধ কল টার্মিনেশনের কারণেই এটা ঘটছে এবং এতে রাজস্ব আয় কমে যাচ্ছে।
এই তথ্য বিশ্লেষণে জানা যায়, অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) বা অবৈধ কল টার্মিনেশনের কারণে শুধু গ্রামীণফোনের আট মাসের হিসাবে তাদের নেটওয়ার্ক থেকে ৩৩৮ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক ভয়েস কল লাপাত্তা হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আগের তুলনায় ওই আট মাসে বৈধপথে জানা হিসাবের মধ্যে আসা গ্রামীণফোনের গ্রাহকদের আন্তর্জাতিক কল কমেছে মোট ১৩৯ কোটি ১৪ লাখ ১০ হাজার ৬৩৭ মিনিট। প্রতি মিনিট কলের চার্জ কমপক্ষে তিন সেন্ট হিসাবে এর মূল্যমান বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৩৮ কোটি ১২ লাখের ওপরে। এই বিপুল অঙ্কের টাকা থেকে বিটিআরসি ৫১.৭৫ শতাংশ, গ্রামীণফোন ২০ শতাংশ, ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জগুলো (আইসিএক্স) ১৫ শতাংশ এবং আইজিডাব্লিউগুলো ১৩.২৫ শতাংশ টাকা পেতে পারত।
দেশের মোবাইল ফোন গ্রাহকদের মধ্যে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৪২ শতাংশ। বাকি ৫৮ শতাংশ বাংলালিংক, রবি, এয়ারটেল, সিটিসেল ও টেলিটকের। এ অবস্থায় ধারণা করা হচ্ছে, গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কে আট মাসে ৩৩৮ কোটি টাকার আন্তর্জাতিক কল কম এলে অন্য পাঁচ অপারেটরের নেটওয়ার্কে আরো ৪৬৬ কোটি টাকার কল কম এসেছে। সব মিলিয়ে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে আট মাসে ৮০৪ কোটি টাকার কল কম এসেছে। শেষের দুই মাসে কমেছে ৩০৪ কোটি টাকার কল। এর বাইরে রয়েছে ল্যান্ডফোনের হিসাব।
গ্রামীণফোনের রেগুলেটরি ও করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক তাইমুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে জানানো হয়েছে, গত অক্টোবরে তাঁদের নেটওয়ার্কে আন্তর্জাতিক কল এসেছিল ১৪ কোটি ৮৯ লাখ ৮৮ হাজার ৫২টি, যা সময়ের হিসাবে ৯৪ কোটি ৫৫ লাখ ৩৩ হাজার ৯৬৭ মিনিট। এর আগের মাসগুলোতেও গড়ে একই পরিমাণ কল আসে। কিন্তু নভেম্বর থেকে কল কমতে থাকে। নভেম্বরে ৯২ কোটি ২৭ লাখ ২৮ হাজার ৩৯৪ মিনিটের ১৪ কোটি ৪৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৭৩টি কল আসে। অক্টোবরের তুলনায় ডিসেম্বরে ১৩ শতাংশ কল কমে যায়। এ মাসে ৮২ কোটি ৫৬ লাখ ২৮ হাজার ৩০৪ মিনিটের ১৩ কোটি ১৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯০২টি কল আসে। জানুয়ারিতে কমে ১৫ শতাংশ। এ মাসে ৮০ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার ২১১ মিনিটের মোট ১২ কোটি ৩৩ লাখ ৪০ হাজার ১৬৭টি কল আসে। ২১ শতাংশ কমে গিয়ে ফেব্রুয়ারিতে আসে ৭৪ কোটি ৬৬ লাখ ৮২ হাজার ৯২৬ মিনিটের মোট ১১ কোটি ৮৬ লাখ ১২ হাজার ৩৬৪টি কল। অক্টোবরের তুলনায় মার্চে কমে ১৩ শতাংশ। ওই মাসে ৮২ কোটি ৫৪ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৯ মিনিটের মোট ১৩ কোটি ২৩ লাখ ৮৭ হাজার ৭৮১টি কল আসে। এপ্রিলে ২৫ শতাংশ কমে হয় ৭১ কোটি ৩৬ লাখ ৯৭ হাজার ৪৬৭ মিনিটের মোট ১০ কোটি ৮৬ লাখ চার হাজার ৩৫৫টি কল। এ মাসে অক্টোবরের তুলনায় ২৩ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার ৫০০ মিনিট কল কম আসে। মে মাসে আসে ৬৯ কোটি ৪৮ লাখ ৯৬ হাজার ১০৭ মিনিট এবং জুন মাসে ৬৪ কোটি ২৮ লাখ ১২ হাজার ২৩১ মিনিট। শেষের এ দুই মাসে গত অক্টোবরের তুলনায় ৫৫ কোটি ৩৩ লাখ ৫৯ হাজার ৫৯৬ মিনিট কল কম আসে।
এদিকে এ বিষয়ে অন্য মোবাইল অপারেটরদের কাছে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুজিবুর রহমান জানান, গ্রাহক কম হওয়ার কারণে তারা এ ধরনের কোনো হিসাব রাখেন না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এ বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার এই প্রতিবেদককে বলেন, 'আমাদের কমিটির সভায় গত ১ আগস্ট আন্তর্জাতিক কল হ্রাসের বিষয়টি নিয়ে কিছু আলোচনা হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, বিটিসিএল ও টেলিটকের কাছে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইব। কারিগরি ও বাণিজ্যিক দুই ধরনের ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিটিআরসি কল কমে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু তা হবে কেন? বিদেশের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ বাড়ছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের সংখ্যা বাড়ছে। দেশে টেলিফোন নেটওয়ার্কের ব্যাপক বিস্তৃতির কারণে প্রবাস থেকে দেশে স্বজনদের কাছে টেলিফোন করার সুযোগও বেড়েছে। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক কল না বেড়ে কমবে কেন? তাহলে কি এ নিয়ে অবৈধ কিছু হচ্ছে? এসব প্রশ্নের উত্তর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দিতে হবে এবং দ্রুত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। ঈদের পরই এ বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব।'
এদিকে ভিওআইপির অবৈধ কারবারে মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহারও ক্রমশ বাড়ছে। বিটিআরসির ঘোষণা রয়েছে, এই কারবারে কোনো মোবাইল অপারেটরের সিম ব্যবহার হলে প্রতি সিমের জন্য সংশ্লিষ্ট অপারেটরকে ৫০ ডলার করে জরিমানা করা হবে।
সূত্র জানায়, ভিওআইপিতে আগে সরকারি মোবাইল অপারেটর টেলিটকের সিম বেশি ব্যবহৃত হলেও সম্প্রতি এর কাছাকাছি চলে এসেছে বাংলালিংক। এর পরেই রয়েছে এয়ারটেল। ভিওআইপি কল শনাক্তকারী ব্যবস্থা মিউচি সল্যুশনের মাধ্যমে গত ফেব্রুয়ারিতে পরীক্ষিত ভিওআইপি কলগুলোতে টেলিটকের ৪১ শতাংশ, বাংলালিংকের ৪১ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৮ শতাংশ সিম ব্যবহৃত হয়েছে বলে জানা গেছে। মার্চে টেলিটকের ৪২ শতাংশ, বাংলালিংকের ৪২ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৪ শতাংশ; এপ্রিলে বাংলালিংকের ৪২ শতাংশ, টেলিটকের ৩৮ শতাংশ ও এয়ারটেলের ১৮ শতাংশ সিম ব্যবহৃত হয়েছে। গ্রামীণফোন ও সিটিসেলের সিম/রিম-এর ব্যবহার এ ক্ষেত্রে শূন্য। আর রবির সিম ব্যবহৃত হয়েছে ১ শতাংশ।
বাংলালিংকের সিনিয়র ডিরেক্টর (গভর্নমেন্ট রিলেশন, রেগুলেটরি অ্যান্ড লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স) জাকিউল ইসলাম গত ১ আগস্ট বিটিআরসিকে জানিয়েছেন, ২০১০ সালের মধ্য জুলাই থেকে চলতি বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত মিউচি সল্যুউশনের মাধ্যমে শনাক্ত হওয়া বাংলালিংকের ছয় লাখ ৯৩ হাজার সিমের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
No comments