ঈদের ছুটিতে অতিরিক্ত সতর্কতা দরকার- ট্রেনযাত্রীদের নিরাপত্তা

সড়কের অবস্থা খারাপ বলে এবার ঈদে ট্রেনে বাড়তি চাপ পড়েছে। কিন্তু সেখানেও বিপদ! শুক্রবার প্রথম আলোর প্রথম পাতায় প্রকাশিত ট্রেনে ছিনতাই-ডাকাতি ও খুনের খবর যাত্রীদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। এ ধরনের ঘটনা কমবেশি আগেও ছিল। তবে সম্প্রতি যেভাবে খুনখারাবি বেড়েছে, তা উদ্বেগজনক।


ঢাকা-রাজশাহী রেললাইনের পাশে গত বৃহস্পতিবার তিন ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ছিনতাইকারী ও ডাকাতেরা ট্রেনের ছাদে ভ্রমণকারীদের টাকাপয়সা কেড়ে নিয়ে তাদের হত্যা করে রেললাইনের পাশে ফেলে দেয়। রেলওয়ে পুলিশ গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে গত সাত দিনে ১২ জন এবং গত এক মাসে ৪৭ জনের লাশ উদ্ধার করেছে।
অপরাধীচক্র যদি যাত্রীদের এভাবে খুন করে পার পেয়ে যায় তাহলে বলতে হয়, রেলওয়ের নিরাপত্তা বিভাগ নিষ্ক্রিয়, নয়তো অক্ষম। শুধু ছিনতাই-ডাকাতিই নয়, বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ট্রেন-ট্রাকের সংঘর্ষের ফলে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ আট ঘণ্টা বন্ধ ছিল। ট্রেনের ইঞ্জিন ও দুটি বগি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো যাত্রী হতাহত না হলেও ঘটনাটি উদ্বেগজনক। রেলের লেভেল ক্রসিংয়ে দুর্ঘটনাকে সঠিক অর্থে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এটা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলার নির্মম পরিণতি। সেখানে বাঁশ দিয়ে গেট বানানো হয়েছে। উপরন্তু ভোররাতে গেটম্যান অনুপস্থিত ছিলেন। আর ট্রাকচালকও ছিলেন বেপরোয়া। জানা গেছে, রেলগেট পার হয়ে লাইনে ওঠার পর নাকি ট্রাকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে যায়। ত্রুটিপূর্ণ ট্রাক অনেক বড় ধরনের বিয়োগান্তক পরিণতি ডেকে আনে। এ ক্ষেত্রে গেটম্যান, ট্রাকের মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
রেলওয়ের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার ঈদের ছুটিতে যাঁরা বাড়ি যাবেন, তাঁদের একটু দেরি সহ্য করতে হবে। কারণ, অতিরিক্ত যাত্রীর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে ট্রেন একটু ধীরে চলবে। মূল কক্ষে বসার বা দাঁড়ানোর স্থান না পেয়ে যে অনেক যাত্রী ছাদে উঠবেন, সেটা কার্যত ধরে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু শুধু ধীরে চললেই কি ট্রেনযাত্রা নিরাপদ হবে?
ছিনতাই, ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা ও রেলগেটগুলো নিরাপদ রাখার জন্য কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ এখনই নিতে হবে।

No comments

Powered by Blogger.