কয়লার আগুনে বিলীন হচ্ছে ঝারিয়া
মোহাম্মদ রিয়াজ আনসারি ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ঝারিয়া শহরের অধিবাসী। শহরটির সমৃদ্ধি কয়লার কারণে হলেও এর কালিতেই ঢেকে গেছে আনসারির মতো বহু মানুষের জীবন। প্রায় ১০০ বছর ধরে শহরের ভূগর্ভস্থ কয়লায় আগুন জ্বলছে। রাতে দেখা যায় এই নীল আগুনের নাচন।
আগুন তাদের জমি নষ্ট করে দিচ্ছে, ধ্বংস করছে প্রকৃতিক সম্পদ, অনেকের ভাষায় সরকারের গ্রহণযোগ্যতাও।
সহস্রাধিক বাড়িঘর বুকে নিয়ে দেবে যাচ্ছে ঝারিয়ার মাটি। আনসারিরটি এরই মধ্যে গেছে। ১৯৯৫ সালে মাত্র দুই ঘণ্টায় ২৫০টি বাড়ি ধসে যায়। ২০০৬ সালের একটি ঘটনার কথা জানা যায়। মিরা কুমারী নামের ১৪ বছরের এক কিশোরী বাড়িতে রান্না করছিল। হঠাৎ পুরো বাড়ি ৫০ ফুট মাটির নিচে দেবে যায়। মেয়েটির মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মানবাধিকার কর্মীরা জানান, এ ধরনের বহু ঘটনা ঘটেছে। অবৈধভাবে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়েও প্রাণ হারায় অনেকে। তাদের স্বজনরা জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া যাবে না। পুলিশ উল্টো মামলা ঠুকে দেবে।
সহসা এ সমস্যার সমাধান দেখছেন না অবসরপ্রাপ্ত খনি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ টি এন সিং। তিনি জানান, এটা সুনামি বা কোনো বিস্ফোরণ নয়। কাজেই তাদের (সরকার) মধ্যে কোনো তাড়া নেই। ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার মতো বিষয় এটি। বোকাপাহাড়ি নামের এক এলাকায় ১৮০টি পরিবারের বাস। সব কটি নোংরা ক্ষয়ে যাওয়া ইটের একতলা বাড়ি। স্থানীয় লোকজন জানান, সরকার তাদের ভালো জায়গায় পুনর্বাসন করবে এই আশায় স্বাস্থ্য আর নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই অপেক্ষায় আছেন তারা। এলাকায় ব্যাপক হারে হাঁপানি, যক্ষ্মা ও অন্যান্য শ্বাসপ্রশ্বাসসংক্রান্ত রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়েছে। ঝারিয়ার আগুন জ্বলতে শুরু করে ১৯১৬ সালে। এর আগেই এখানকার খনিগুলো পরিত্যক্ত করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। ধারণা করা হচ্ছে, যথাযথ নিয়মে খনিগুলো পরিত্যক্ত না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে সময় থেকেই ৭০টির বেশি অগি্নকাণ্ডে চার কোটি ১০ লাখ টন কয়লা পুড়েছে।
সরকারের অবশ্য ১৪০ কোটি ডলারের একটি পুনর্বাসন প্রকল্প রয়েছে। তারা ঝারিয়া ও পাশের বেলঘারিয়া এলাকার অন্তত ৯০ হাজার মানুষকে পুনর্বাসনের আওতায় আনতে চায়। যদিও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, নির্মাণে বিলম্ব ও স্থানীয়দের বিরোধিতার মুখে গত ১৬ বছর ধরে চলা এ প্রকল্পে মাত্র এক হাজার ১৫০টি পরিবারের পুনর্বাসন সম্ভব হয়েছে। ঝারিয়া কয়লাখনি কমিটির অশোক আগারওয়াল বলেন, 'এই গতিতে পুনর্বাসন চলতে থাকলে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ১০০ বছর লেগে যাবে। পরিকল্পনাকারীরা মানুষের সঙ্গে গরু-ছাগলের মতো আচরণ করছে। আমরা পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে নই। তবে আমরা চাই এই গরিব লোকগুলোর সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হোক।' তবে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সরকারের গৃহীত এ প্রকল্প ও এর বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। এক তদন্তে দেখা গেছে, এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ২৪০ কোটি ডলার খরচ হয়ে গেছে। অর্থাৎ মূল পরিকল্পনা থেকে ১০০ কোটি ডলার বেশি খরচ হয়েছে।
প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত বাসস্থানটিও অত্যন্ত স্বল্প পরিসরের। একটি বা দুটি কামরা এবং বাথরুম ও রান্নাঘর_এই পর্যন্তই। এ স্থানটিও বেশির ভাগ মানুষের কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল বা বাজার থেকে বেশ দূরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো নয়। পাঁচ সন্তানের মা বিধবা গীতা (৩৫) বলেন, 'আমাদের সামনে ভবিষ্যতের একটা চমৎকার ছবি এঁকে ধোঁকা দিয়েছে সরকার।' ভবনগুলোর নির্মাণকাজ দুর্বল এবং বিতরণ নিয়েও দুর্নীতি চলছে। আগের আবাস ছেড়ে আসা নিয়েই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে পুনর্বাসিতদের মধ্যে। সূত্র : লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।
সহস্রাধিক বাড়িঘর বুকে নিয়ে দেবে যাচ্ছে ঝারিয়ার মাটি। আনসারিরটি এরই মধ্যে গেছে। ১৯৯৫ সালে মাত্র দুই ঘণ্টায় ২৫০টি বাড়ি ধসে যায়। ২০০৬ সালের একটি ঘটনার কথা জানা যায়। মিরা কুমারী নামের ১৪ বছরের এক কিশোরী বাড়িতে রান্না করছিল। হঠাৎ পুরো বাড়ি ৫০ ফুট মাটির নিচে দেবে যায়। মেয়েটির মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যায়নি। মানবাধিকার কর্মীরা জানান, এ ধরনের বহু ঘটনা ঘটেছে। অবৈধভাবে কয়লা সংগ্রহ করতে গিয়েও প্রাণ হারায় অনেকে। তাদের স্বজনরা জানান, বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে যাওয়া যাবে না। পুলিশ উল্টো মামলা ঠুকে দেবে।
সহসা এ সমস্যার সমাধান দেখছেন না অবসরপ্রাপ্ত খনি নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ টি এন সিং। তিনি জানান, এটা সুনামি বা কোনো বিস্ফোরণ নয়। কাজেই তাদের (সরকার) মধ্যে কোনো তাড়া নেই। ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাওয়ার মতো বিষয় এটি। বোকাপাহাড়ি নামের এক এলাকায় ১৮০টি পরিবারের বাস। সব কটি নোংরা ক্ষয়ে যাওয়া ইটের একতলা বাড়ি। স্থানীয় লোকজন জানান, সরকার তাদের ভালো জায়গায় পুনর্বাসন করবে এই আশায় স্বাস্থ্য আর নিরাপত্তার ঝুঁকি নিয়েই অপেক্ষায় আছেন তারা। এলাকায় ব্যাপক হারে হাঁপানি, যক্ষ্মা ও অন্যান্য শ্বাসপ্রশ্বাসসংক্রান্ত রোগ-বালাই ছড়িয়ে পড়েছে। ঝারিয়ার আগুন জ্বলতে শুরু করে ১৯১৬ সালে। এর আগেই এখানকার খনিগুলো পরিত্যক্ত করে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার। ধারণা করা হচ্ছে, যথাযথ নিয়মে খনিগুলো পরিত্যক্ত না করায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সে সময় থেকেই ৭০টির বেশি অগি্নকাণ্ডে চার কোটি ১০ লাখ টন কয়লা পুড়েছে।
সরকারের অবশ্য ১৪০ কোটি ডলারের একটি পুনর্বাসন প্রকল্প রয়েছে। তারা ঝারিয়া ও পাশের বেলঘারিয়া এলাকার অন্তত ৯০ হাজার মানুষকে পুনর্বাসনের আওতায় আনতে চায়। যদিও আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, নির্মাণে বিলম্ব ও স্থানীয়দের বিরোধিতার মুখে গত ১৬ বছর ধরে চলা এ প্রকল্পে মাত্র এক হাজার ১৫০টি পরিবারের পুনর্বাসন সম্ভব হয়েছে। ঝারিয়া কয়লাখনি কমিটির অশোক আগারওয়াল বলেন, 'এই গতিতে পুনর্বাসন চলতে থাকলে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ১০০ বছর লেগে যাবে। পরিকল্পনাকারীরা মানুষের সঙ্গে গরু-ছাগলের মতো আচরণ করছে। আমরা পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে নই। তবে আমরা চাই এই গরিব লোকগুলোর সঙ্গে ন্যায়সঙ্গত আচরণ করা হোক।' তবে ব্যাপক দুর্নীতির কারণে সরকারের গৃহীত এ প্রকল্প ও এর বাস্তবায়ন অনিশ্চিত। এক তদন্তে দেখা গেছে, এই প্রকল্পে ইতিমধ্যেই ২৪০ কোটি ডলার খরচ হয়ে গেছে। অর্থাৎ মূল পরিকল্পনা থেকে ১০০ কোটি ডলার বেশি খরচ হয়েছে।
প্রকল্পের জন্য অনুমোদিত বাসস্থানটিও অত্যন্ত স্বল্প পরিসরের। একটি বা দুটি কামরা এবং বাথরুম ও রান্নাঘর_এই পর্যন্তই। এ স্থানটিও বেশির ভাগ মানুষের কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল বা বাজার থেকে বেশ দূরে। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো নয়। পাঁচ সন্তানের মা বিধবা গীতা (৩৫) বলেন, 'আমাদের সামনে ভবিষ্যতের একটা চমৎকার ছবি এঁকে ধোঁকা দিয়েছে সরকার।' ভবনগুলোর নির্মাণকাজ দুর্বল এবং বিতরণ নিয়েও দুর্নীতি চলছে। আগের আবাস ছেড়ে আসা নিয়েই অসন্তোষ তৈরি হয়েছে পুনর্বাসিতদের মধ্যে। সূত্র : লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস।
No comments