অনুজ্জ্বল তারা
ফেবারিট হয়েই নিজ নিজ ইভেন্টে লড়েছিলেন। এমন অনেক তারকাকেই খালি হাতে ফিরিয়ে দিয়েছে লন্ডন অলিম্পিক। লিখেছেন সোলায়মান পলাশ এক সেকেন্ডের এক শতাংশ। এতটুকু সময়ই বদলে দিল সব। সোনালি হতে হতেও হলো না। রুপা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো জেমস ‘মিসাইল’ ম্যাগনুসেনকে।
১০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল সাঁতারে অস্ট্রেলীয়দের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে ছিলেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ম্যাগনুসেন। ৪৪ বছর পর অলিম্পিকে এই ইভেন্টে সোনা জিতবে অস্ট্রেলিয়া, কাছে-পিঠের পারফরম্যান্স দিয়ে অস্ট্রেলীয়দের মনে এই বিশ্বাসের বীজ বুনে দিয়েছিলেন ম্যাগনুসেন। শুধু সোনাই নয়, তাঁর কাছ থেকে একটি বিশ্ব রেকর্ডও আশা করেছিল সে দেশের মানুষ। কিন্তু হলো না কিছুই। দলের সেরা সাঁতারুই সোনা জিততে পারলেন না। পুলে অস্ট্রেলিয়ার বিপর্যয় তো আর এমনি এমনিই হয়নি!
পুরুষ ৪–১০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল রিলেতেও ফেবারিট ছিল ম্যাগনুসেনের অস্ট্রেলিয়া। অসিরা ঝড়ের অশনিসংকেত দিয়েছিল ওই ইভেন্টই। সবাইকে অবাক করে দিয়ে কোনো পদকই পায়নি দলটি। চার নম্বরে সাঁতার শেষ করে প্রাক-ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া। ফ্রি-স্টাইলের রুপার সঙ্গে ১০০ মিটার মিডলে রিলেতে একটি ব্রোঞ্জ। অস্ট্রেলিয় সাঁতারের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে যিনি গিয়েছিলেন লন্ডন অলিম্পিকে, তিনি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ তারকা।
ম্যাগনুসেন তা-ও দুটি পদক জিতেছেন। তাঁর সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকে তিনটি সোনাজয়ী স্টেফানি রাইসকে লন্ডন ফিরিয়েছে খালি হাতে। নিজের দুই প্রিয় ইভেন্ট ২০০ ও ৪০০ মিটার মিডলেতে চতুর্থ ও ষষ্ঠ হয়েছেন ২৪ বছর বয়সী সুন্দরী। লন্ডনের ব্যর্থতা একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নই তুলে দিয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে। অবসরের চিন্তাভাবনাও করছেন কাঁধে চোটের কারণে ঠিকমতো প্রস্তুতি নিতে না পারা এই সাঁতারু।
রাইস এখনো চূড়ান্তভাবে কিছু না জানালেও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আরেক ব্যর্থ তারকা ফেদেরিকা পেলেগ্রিনি। না, অবসরের নয়; এক বছরের ছুটির। এক বছর সাঁতার থেকে দূরে থাকবেন ইতালিয়ান জলকন্যা। লন্ডনে পুলে নেমেছিলেন ফেবারিট হিসেবেই। গত দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও মেয়েদের ২০০ ও ৪০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। বেইজিং অলিম্পিকে ২০০ মিটারের সোনাজয়ীর দখলেই এই দুই ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ড। পুলে মনোযোগ ধরে রাখার জন্য পায়ে ঠেলে ছিলেন লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী মার্চ পাস্টে দেশের পতাকা বইবার দায়িত্ব। কিন্তু সবই বিফলে গেল। দুটি ইভেন্টেই পঞ্চম হয়ে ফেবারিটের ফাঁপানো বেলুনটাকে দিলেন চুপসে।
ব্যর্থ গত দুটি অলিম্পিকে ব্রেস্টস্ট্রোক সাঁতারের সমার্থক হয়ে যাওয়া জাপানিদের ‘ব্যাঙ রাজা’ কোসুকে কিতাজিমাও। অলিম্পিকে ব্রেস্টস্ট্রোকের ডাবল জয়ের হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু পারলেন না। এই দুই ইভেন্টের একটিতে চতুর্থ ও আরেকটিতে পঞ্চম হলেন ২৯ বছর বয়সী তারকা। অবশ্য জাপানকে ১০০ মিটার মিডলের রুপা এনে দিয়েছেন কিতাজিমা।
ফ্রান্সের তারকা সাঁতারু লরা মানাদুও পুরোপুরি ব্যর্থ। অলিম্পিক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যাকস্ট্রোকের সাবেক এই চ্যাম্পিয়ন অবসর থেকে ফিরেছিলেন গত বছর। এবার ১০০ ও ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকের হিটই পেরোতে পারেননি মানাদু। অংশ নিয়েছিলেন ১০০ মিটার মিডলে রিলেতেও। সেখানেও একই অবস্থা।
সাঁতারের টানেই অবসর ভেঙে মানাদু ফিরেছিলেন পুলে। লন্ডন অলিম্পিকেও। নিজেরও হয়তো অত প্রত্যাশা ছিল না। কিন্তু দান মেরেছেন মানাদু পরিবারেরই আরেকজন ফ্লোরেন্ত মানাদু। লরার ছোট ভাই কেড়ে নিয়েছেন সিজার সিয়েলোর স্বপ্ন। ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলের ফেবারিট ছিলেন ব্রাজিলের দুবারের বিশ্ব ও বেইজিং অলিম্পিকের চ্যাম্পিয়নই। শুধু ৫০ মিটারই নয়, ১০০ মিটারের বিশ্ব রেকর্ডও দখলে যাঁর, সেই সিয়েলো দুই ইভেন্ট থেকে কুড়িয়েছেন একটি ব্রোঞ্জ।
ব্যর্থ হয়েছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিস্টি কভেন্ট্রিও। এথেন্স ও বেইজিংয়ে ২০০ ব্যাকস্ট্রোকে সোনাজয়ী এই তারকা এবার পাননি কোনো পদকই। নিজের প্রিয় ইভেন্টে হয়েছেন ষষ্ঠ।
খুঁজলে সাঁতার থেকে এ রকম ব্যর্থ নাম আরও কয়েকটি পাওয়া যাবে। এবার অন্য খেলার দিকে চোখ ফেলা যাক। কয়েক বছর ধরে টেনিস-বিশ্ব দেখেছে তিন রাজার রাজত্ব। রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ ও রজার ফেদেরারই ছড়ি ঘুরিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে চোটের কারণে নাদাল অলিম্পিক থেকে সরে দাঁড়ালেও ছিলেন নোভাক জোকোভিচ ও ফেদেরার। তাঁদের ছাপিয়ে পুরুষ টেনিসের সোনা জিতেছেন অ্যান্ডি মারে। ফাইনাল খেলে ফেদেরার তবু রুপা পেয়েছেন। কিন্তু ব্রোঞ্জ পদকটাও ভাগ্যে জোটেনি জোকোভিচের, গত বছরটা যিনি কাটিয়েছিলেন স্বপ্নের মতো।
পোল ভল্টের রানি ইয়েলেনা ইসিনবায়েভার সোনা না জিততে পারাটাও বিস্ময়। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়া এই রুশকন্যা এবার লাফিয়ে পেরোতে পারলেন না ৪ দশমিক ৭০ মিটারের বেশি। টানা তৃতীয়বার অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হতে এসে ব্রোঞ্জ পেলেন ইসিনবায়েভা। এ রকম ব্যর্থ বলা চলে ১০ হাজার মিটার দৌড়ে চতুর্থ হওয়া কেনেনিসা বেকেলেকেও। মেয়েদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টের গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভেরোনিকা-ক্যাম্পবেল ব্রাউনের কোনো পদক না পাওয়াটাও একটা ব্যর্থতা।
দলীয় খেলায় হিসাব করলে ফুটবলে স্পেনের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়াটা অবশ্যই বড় ঘটনা। হকিতে উপমহাদেশের দুই দল ভারত ও পাকিস্তান ব্যর্থ। ওয়াটার পোলোতে গত তিনবারের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন ও সর্বোচ্চ নয়বারের চ্যাম্পিয়ন হাঙ্গেরির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায়ও বড় অঘটন।
পুরুষ ৪–১০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল রিলেতেও ফেবারিট ছিল ম্যাগনুসেনের অস্ট্রেলিয়া। অসিরা ঝড়ের অশনিসংকেত দিয়েছিল ওই ইভেন্টই। সবাইকে অবাক করে দিয়ে কোনো পদকই পায়নি দলটি। চার নম্বরে সাঁতার শেষ করে প্রাক-ফেবারিট অস্ট্রেলিয়া। ফ্রি-স্টাইলের রুপার সঙ্গে ১০০ মিটার মিডলে রিলেতে একটি ব্রোঞ্জ। অস্ট্রেলিয় সাঁতারের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয়ে যিনি গিয়েছিলেন লন্ডন অলিম্পিকে, তিনি শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ তারকা।
ম্যাগনুসেন তা-ও দুটি পদক জিতেছেন। তাঁর সতীর্থ বেইজিং অলিম্পিকে তিনটি সোনাজয়ী স্টেফানি রাইসকে লন্ডন ফিরিয়েছে খালি হাতে। নিজের দুই প্রিয় ইভেন্ট ২০০ ও ৪০০ মিটার মিডলেতে চতুর্থ ও ষষ্ঠ হয়েছেন ২৪ বছর বয়সী সুন্দরী। লন্ডনের ব্যর্থতা একটা প্রশ্নবোধক চিহ্নই তুলে দিয়েছে তাঁর ক্যারিয়ারে। অবসরের চিন্তাভাবনাও করছেন কাঁধে চোটের কারণে ঠিকমতো প্রস্তুতি নিতে না পারা এই সাঁতারু।
রাইস এখনো চূড়ান্তভাবে কিছু না জানালেও সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আরেক ব্যর্থ তারকা ফেদেরিকা পেলেগ্রিনি। না, অবসরের নয়; এক বছরের ছুটির। এক বছর সাঁতার থেকে দূরে থাকবেন ইতালিয়ান জলকন্যা। লন্ডনে পুলে নেমেছিলেন ফেবারিট হিসেবেই। গত দুটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপেও মেয়েদের ২০০ ও ৪০০ মিটার ফ্রি-স্টাইল চ্যাম্পিয়ন ছিলেন। বেইজিং অলিম্পিকে ২০০ মিটারের সোনাজয়ীর দখলেই এই দুই ইভেন্টের বিশ্ব রেকর্ড। পুলে মনোযোগ ধরে রাখার জন্য পায়ে ঠেলে ছিলেন লন্ডন অলিম্পিকের উদ্বোধনী মার্চ পাস্টে দেশের পতাকা বইবার দায়িত্ব। কিন্তু সবই বিফলে গেল। দুটি ইভেন্টেই পঞ্চম হয়ে ফেবারিটের ফাঁপানো বেলুনটাকে দিলেন চুপসে।
ব্যর্থ গত দুটি অলিম্পিকে ব্রেস্টস্ট্রোক সাঁতারের সমার্থক হয়ে যাওয়া জাপানিদের ‘ব্যাঙ রাজা’ কোসুকে কিতাজিমাও। অলিম্পিকে ব্রেস্টস্ট্রোকের ডাবল জয়ের হ্যাটট্রিকের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিন্তু পারলেন না। এই দুই ইভেন্টের একটিতে চতুর্থ ও আরেকটিতে পঞ্চম হলেন ২৯ বছর বয়সী তারকা। অবশ্য জাপানকে ১০০ মিটার মিডলের রুপা এনে দিয়েছেন কিতাজিমা।
ফ্রান্সের তারকা সাঁতারু লরা মানাদুও পুরোপুরি ব্যর্থ। অলিম্পিক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের ব্যাকস্ট্রোকের সাবেক এই চ্যাম্পিয়ন অবসর থেকে ফিরেছিলেন গত বছর। এবার ১০০ ও ২০০ মিটার ব্যাকস্ট্রোকের হিটই পেরোতে পারেননি মানাদু। অংশ নিয়েছিলেন ১০০ মিটার মিডলে রিলেতেও। সেখানেও একই অবস্থা।
সাঁতারের টানেই অবসর ভেঙে মানাদু ফিরেছিলেন পুলে। লন্ডন অলিম্পিকেও। নিজেরও হয়তো অত প্রত্যাশা ছিল না। কিন্তু দান মেরেছেন মানাদু পরিবারেরই আরেকজন ফ্লোরেন্ত মানাদু। লরার ছোট ভাই কেড়ে নিয়েছেন সিজার সিয়েলোর স্বপ্ন। ৫০ মিটার ফ্রি-স্টাইলের ফেবারিট ছিলেন ব্রাজিলের দুবারের বিশ্ব ও বেইজিং অলিম্পিকের চ্যাম্পিয়নই। শুধু ৫০ মিটারই নয়, ১০০ মিটারের বিশ্ব রেকর্ডও দখলে যাঁর, সেই সিয়েলো দুই ইভেন্ট থেকে কুড়িয়েছেন একটি ব্রোঞ্জ।
ব্যর্থ হয়েছেন জিম্বাবুয়ের ক্রিস্টি কভেন্ট্রিও। এথেন্স ও বেইজিংয়ে ২০০ ব্যাকস্ট্রোকে সোনাজয়ী এই তারকা এবার পাননি কোনো পদকই। নিজের প্রিয় ইভেন্টে হয়েছেন ষষ্ঠ।
খুঁজলে সাঁতার থেকে এ রকম ব্যর্থ নাম আরও কয়েকটি পাওয়া যাবে। এবার অন্য খেলার দিকে চোখ ফেলা যাক। কয়েক বছর ধরে টেনিস-বিশ্ব দেখেছে তিন রাজার রাজত্ব। রাফায়েল নাদাল, নোভাক জোকোভিচ ও রজার ফেদেরারই ছড়ি ঘুরিয়েছেন। শেষ মুহূর্তে চোটের কারণে নাদাল অলিম্পিক থেকে সরে দাঁড়ালেও ছিলেন নোভাক জোকোভিচ ও ফেদেরার। তাঁদের ছাপিয়ে পুরুষ টেনিসের সোনা জিতেছেন অ্যান্ডি মারে। ফাইনাল খেলে ফেদেরার তবু রুপা পেয়েছেন। কিন্তু ব্রোঞ্জ পদকটাও ভাগ্যে জোটেনি জোকোভিচের, গত বছরটা যিনি কাটিয়েছিলেন স্বপ্নের মতো।
পোল ভল্টের রানি ইয়েলেনা ইসিনবায়েভার সোনা না জিততে পারাটাও বিস্ময়। রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়া এই রুশকন্যা এবার লাফিয়ে পেরোতে পারলেন না ৪ দশমিক ৭০ মিটারের বেশি। টানা তৃতীয়বার অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হতে এসে ব্রোঞ্জ পেলেন ইসিনবায়েভা। এ রকম ব্যর্থ বলা চলে ১০ হাজার মিটার দৌড়ে চতুর্থ হওয়া কেনেনিসা বেকেলেকেও। মেয়েদের ২০০ মিটার স্প্রিন্টের গত দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভেরোনিকা-ক্যাম্পবেল ব্রাউনের কোনো পদক না পাওয়াটাও একটা ব্যর্থতা।
দলীয় খেলায় হিসাব করলে ফুটবলে স্পেনের প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়াটা অবশ্যই বড় ঘটনা। হকিতে উপমহাদেশের দুই দল ভারত ও পাকিস্তান ব্যর্থ। ওয়াটার পোলোতে গত তিনবারের হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন ও সর্বোচ্চ নয়বারের চ্যাম্পিয়ন হাঙ্গেরির কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই বিদায়ও বড় অঘটন।
No comments