গার্মেন্ট খাতে অব্যবস্থা-শ্রম আইনের পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন চাই
আমাদের গার্মেন্ট খাত নিয়ে বহু সমালোচনা আছে। শ্রমিকদের বেতন-ভাতা কম, অন্যান্য আর্থিক সুবিধা প্রায় নেই বললেই চলে। কোনো কারখানায়ই নৈমিত্তিক-চিকিৎসা ছুটি, এমনকি উৎসব ছুটিও দেওয়া হয় না। অনেক কারখানায় মাতৃত্বকালীন ছুটিও দেওয়া হয় না। দৈনিক ১৪ ঘণ্টা কাজ করিয়েও ঠিকমতো ওভারটাইম দেওয়া হয় না।
এমনকি শ্রমিকদের নিয়োগপত্র, পরিচয়পত্র পর্যন্ত দেওয়া হয় না বহু কারখানায়। কথায় কথায় চলে ছাঁটাই-নিয়োগ-ছাঁটাই। বকেয়া বেতন আদায়, এমনকি নির্যাতনের প্রতিকার চাওয়ার জন্য কোনো শ্রমিক যে শ্রম আদালতে যাবে, তারও সুযোগ নেই। বহু কারখানায় কাজের পরিবেশও যাচ্ছেতাই। নারী ও পুরুষ-শ্রমিকদের জন্য আলাদা টয়লেটের ব্যবস্থাও নেই অনেক কারখানায়। এসব কারণে শ্রমিকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষ আছে। রাস্তায়, কারখানায় প্রায়ই তার ভয়াবহ প্রতিফলন আমরা দেখতে পাই। যানবাহনে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। আর এসব তথ্যের সত্যতা অনেকটাই বেরিয়ে এসেছে বাংলাদেশ সরকারের শ্রম মন্ত্রণালয়, গার্মেন্ট প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজেএমইএ এবং বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফেকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) জরিপ প্রতিবেদনে। এসব কারণে কেবল যে দেশের ভেতরেই সমালোচনা রয়েছে, তা নয়। আমাদের তৈরি পোশাক যেসব দেশে রপ্তানি করা হয়, সেসব দেশের ক্রেতারাও ইতিমধ্যে অনেক আপত্তি জানিয়েছেন। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে হুঁশিয়ারিও উচ্চারণ করা হয়েছে। তার পরও কেন আমাদের গার্মেন্ট খাতে এ ধরনের অব্যবস্থা? কেন কিছুসংখ্যক কারখানার জন্য পুরো গার্মেন্ট খাত বিপদের ঝুঁকি মাথায় নিচ্ছে- তাও আমাদের বোধগম্য নয়।
গার্মেন্ট কারখানার একজন শ্রমিক দৈনিক ১৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে মাসে যে বেতন পায়, তা দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বস্তির একটি ঘরে সিট ভাড়া আর নিজের প্রতিদিনের খাবার জোটাতেই তার পুরো টাকা চলে যায়। গ্রামে থাকা মা-বাবা কিংবা পরিবারকে সহযোগিতা করা তো দূরে থাক, তেল-সাবান আর কাপড়চোপড়ের মতো নিজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষমতাও তাদের থাকে না। এ চিত্র দেশের অধিকাংশ গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের। পত্রিকায় এসব নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি হচ্ছে। অথচ বিপরীতক্রমে পোশাকশিল্পের মালিকরা দেশের বিত্তবানদের শীর্ষ সারিতে চলে এসেছেন। সরকারও তাঁদের নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শ্রমিকদের জন্য গৃহনির্মাণের নাম করে অনেক মালিক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে সেই অর্থ অন্যত্র ব্যয় করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শুল্ক ও কর রেয়াত তো আছেই। দেশের একজন নাগরিক বিপদে পড়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলেও তাঁকে ১৮ শতাংশ সুদ দিতে হয়, অথচ রপ্তানি খাত হওয়ায় গার্মেন্ট মালিকরা ব্যাংক থেকে মাত্র ৭ শতাংশ সুদে ঋণ পেয়ে যান। এমন ছাড় তাঁদের আরো অনেক ক্ষেত্রেই দেওয়া হচ্ছে। তার পরও একজন শ্রমিকের বেঁচে থাকার নূ্যনতম চাহিদাটুকু পূরণ করতে তাঁদের এত কার্পণ্য কেন? সরকারকে দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। গার্মেন্টশ্রমিকরাও মানুষ। তাদের জন্য দেশের শ্রম আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
গার্মেন্ট কারখানার একজন শ্রমিক দৈনিক ১৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করে মাসে যে বেতন পায়, তা দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। বস্তির একটি ঘরে সিট ভাড়া আর নিজের প্রতিদিনের খাবার জোটাতেই তার পুরো টাকা চলে যায়। গ্রামে থাকা মা-বাবা কিংবা পরিবারকে সহযোগিতা করা তো দূরে থাক, তেল-সাবান আর কাপড়চোপড়ের মতো নিজের প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ক্ষমতাও তাদের থাকে না। এ চিত্র দেশের অধিকাংশ গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের। পত্রিকায় এসব নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি হচ্ছে। অথচ বিপরীতক্রমে পোশাকশিল্পের মালিকরা দেশের বিত্তবানদের শীর্ষ সারিতে চলে এসেছেন। সরকারও তাঁদের নানাভাবে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এমনকি শ্রমিকদের জন্য গৃহনির্মাণের নাম করে অনেক মালিক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ১ শতাংশ সুদে ঋণ নিয়ে সেই অর্থ অন্যত্র ব্যয় করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। শুল্ক ও কর রেয়াত তো আছেই। দেশের একজন নাগরিক বিপদে পড়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে গেলেও তাঁকে ১৮ শতাংশ সুদ দিতে হয়, অথচ রপ্তানি খাত হওয়ায় গার্মেন্ট মালিকরা ব্যাংক থেকে মাত্র ৭ শতাংশ সুদে ঋণ পেয়ে যান। এমন ছাড় তাঁদের আরো অনেক ক্ষেত্রেই দেওয়া হচ্ছে। তার পরও একজন শ্রমিকের বেঁচে থাকার নূ্যনতম চাহিদাটুকু পূরণ করতে তাঁদের এত কার্পণ্য কেন? সরকারকে দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। গার্মেন্টশ্রমিকরাও মানুষ। তাদের জন্য দেশের শ্রম আইনের পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
No comments