নগরে অবাধে ঢুকছে ইয়াবা by একরামুল হক
চট্টগ্রামের মাদকের হাটে ফেনসিডিল সরবরাহ কমে গেছে। বেড়েছে ইয়াবা। পুলিশ ও র্যাবের বিভিন্ন অভিযানের পর এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, ইয়াবা ট্যাবলেট আকারে খুব ছোট। এ কারণে একটি দেশলাইয়ের বাক্সে প্রায় লাখ টাকার ইয়াবা পরিবহন সম্ভব।
সেই তুলনায় ফেনসিডিল পরিবহনে ঝুঁকি বেশি। এ কারণে মাদক ব্যবসায়ীরা ফেনসিডিলের চেয়ে ইয়াবা ব্যবসাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের মাদকের হাটে ফেনসিডিল আসে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও সদর উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্ত দিয়েও প্রচুর ফেনসিডিল ঢোকে বাংলাদেশে। চোরাইপথে তা চলে আসে চট্টগ্রামের মাদকের হাটে। তবে সম্প্রতি চট্টগ্রামে ফেনসিডিলের সরবরাহ কমে গেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অভিযানে ধরা পড়া প্রতি ১০টি মাদকের চালানের মধ্যে অন্তত ছয়টিতে ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে। এক সময় উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণ-তরুণীরা ইয়াবা সেবন করলেও দাম কমে যাওয়ায় এখন নিম্নবিত্ত লোকজনের কাছেও এই নেশা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেনসিডিল পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ বলে মাদক ব্যবসায়ীরা তা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। ইয়াবার আকৃতি ছোট হওয়ায় সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া পাচারকারীকে ধরা সম্ভব হয় না। তাই নানা পথে ইয়াবা ঢুকছে চট্টগ্রামে। পাচার পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে চট্টগ্রামের নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে “ডগ স্কোয়াড” নামাতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, নগরের প্রবেশপথ কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু এলাকা, কাট্টলীতে সিটি গেট ও অক্সিজেন মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। এতে মাদক ব্যবসায়ীরা কিছুটা সতর্ক হয়েছেন। এর পরও সড়কপথে ইয়াবা ঢুকছে। তবে বড় ধরনের চালান আসছে বিকল্প পথে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিলের তুলনায় ইয়াবা ট্যাবলেট বেশি হারে উদ্ধার করছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নেশার জন্য এখন ইয়াবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ কারণে ইয়াবার সরবরাহ বেড়ে গেছে চট্টগ্রামে।’ বিকল্প পথ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, চট্টগ্রাম নগরের নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে তল্লাশি এড়ানোর জন্য সমুদ্রপথে এই মাদক পরিবহন হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে ইয়াবা পাচার করছে। শহরতলরি কাট্টলীর উপকূলে এই মাদক খালাস হয়। সেখান থেকে চলে যায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের অভ্যন্তরে।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাতে নগরের পুরোনো রেলস্টেশনে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় আবদুল্লাহ (২১) নামের এক যুবক গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁর দেহে তল্লাশি চালিয়ে ৩০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তিনি পায়ুপথে ইয়াবা বহন করছিলেন।
পাচারকারী আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে জানান, মিয়ানমারের নাগরিক সৈয়দ হোসেনসহ একটি চক্র টেকনাফের যুবকদের মাধ্যমে ইয়াবা ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা দেশে। উদ্ধার করা ৩০০ ইয়াবা ট্যাবলেট ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এ জন্য তাঁকে আগাম পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন উপপরিদর্শক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুল্লাহর ঘোরাফেরা সন্দেহজনক ছিল। এ কারণে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল্লাহ ইয়াবা পাচারের কথা স্বীকার করেন। পায়ুপথে তিনি ৩০০ ইয়াবা নিয়ে টেকনাফ থেকে রওনা হয়েছিলেন।’
এদিকে ইয়াবা ফেনসিডিল কিংবা হেরোইনের মতোই ক্ষতিকর মাদক বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মুনতাসীর মারুফ জানান, ইয়াবার মূল উপাদান মেথঅ্যামফিটামিন। উত্তেজক এই রাসায়নিক গ্রহণে ঘুমের সমস্যা, উচ্চরক্তচাপ, মানসিক রোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিয়মিত ইয়াবা গ্রহণ মৃত্যুর কারণও হতে পারে। (সূত্র: স্বাস্থ্যকুশল, প্রথম আলো, ১৮ এপ্রিল সংখ্যা)
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের মাদকের হাটে ফেনসিডিল আসে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম ও সদর উপজেলার সীমান্ত এলাকা থেকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সীমান্ত দিয়েও প্রচুর ফেনসিডিল ঢোকে বাংলাদেশে। চোরাইপথে তা চলে আসে চট্টগ্রামের মাদকের হাটে। তবে সম্প্রতি চট্টগ্রামে ফেনসিডিলের সরবরাহ কমে গেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অভিযানে ধরা পড়া প্রতি ১০টি মাদকের চালানের মধ্যে অন্তত ছয়টিতে ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া গেছে। এক সময় উচ্চবিত্ত পরিবারের তরুণ-তরুণীরা ইয়াবা সেবন করলেও দাম কমে যাওয়ায় এখন নিম্নবিত্ত লোকজনের কাছেও এই নেশা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমেনা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফেনসিডিল পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ বলে মাদক ব্যবসায়ীরা তা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। ইয়াবার আকৃতি ছোট হওয়ায় সুনির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া পাচারকারীকে ধরা সম্ভব হয় না। তাই নানা পথে ইয়াবা ঢুকছে চট্টগ্রামে। পাচার পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে চট্টগ্রামের নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে “ডগ স্কোয়াড” নামাতে হবে।’
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানান, নগরের প্রবেশপথ কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু এলাকা, কাট্টলীতে সিটি গেট ও অক্সিজেন মোড়ে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। এতে মাদক ব্যবসায়ীরা কিছুটা সতর্ক হয়েছেন। এর পরও সড়কপথে ইয়াবা ঢুকছে। তবে বড় ধরনের চালান আসছে বিকল্প পথে।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার এস এম তানভীর আরাফাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিলের তুলনায় ইয়াবা ট্যাবলেট বেশি হারে উদ্ধার করছে। মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা নেশার জন্য এখন ইয়াবাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ কারণে ইয়াবার সরবরাহ বেড়ে গেছে চট্টগ্রামে।’ বিকল্প পথ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, চট্টগ্রাম নগরের নিরাপত্তা চৌকিগুলোতে তল্লাশি এড়ানোর জন্য সমুদ্রপথে এই মাদক পরিবহন হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা কক্সবাজার থেকে সমুদ্রপথে ইয়াবা পাচার করছে। শহরতলরি কাট্টলীর উপকূলে এই মাদক খালাস হয়। সেখান থেকে চলে যায় ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের অভ্যন্তরে।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাতে নগরের পুরোনো রেলস্টেশনে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করার সময় আবদুল্লাহ (২১) নামের এক যুবক গ্রেপ্তার হন। পরে তাঁর দেহে তল্লাশি চালিয়ে ৩০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। তিনি পায়ুপথে ইয়াবা বহন করছিলেন।
পাচারকারী আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে জানান, মিয়ানমারের নাগরিক সৈয়দ হোসেনসহ একটি চক্র টেকনাফের যুবকদের মাধ্যমে ইয়াবা ছড়িয়ে দিচ্ছে সারা দেশে। উদ্ধার করা ৩০০ ইয়াবা ট্যাবলেট ঢাকায় পৌঁছে দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। এ জন্য তাঁকে আগাম পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন উপপরিদর্শক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবদুল্লাহর ঘোরাফেরা সন্দেহজনক ছিল। এ কারণে তাঁকে চ্যালেঞ্জ করা হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল্লাহ ইয়াবা পাচারের কথা স্বীকার করেন। পায়ুপথে তিনি ৩০০ ইয়াবা নিয়ে টেকনাফ থেকে রওনা হয়েছিলেন।’
এদিকে ইয়াবা ফেনসিডিল কিংবা হেরোইনের মতোই ক্ষতিকর মাদক বলে মন্তব্য করেছেন চিকিৎসকেরা। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মানসিক রোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মুনতাসীর মারুফ জানান, ইয়াবার মূল উপাদান মেথঅ্যামফিটামিন। উত্তেজক এই রাসায়নিক গ্রহণে ঘুমের সমস্যা, উচ্চরক্তচাপ, মানসিক রোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিয়মিত ইয়াবা গ্রহণ মৃত্যুর কারণও হতে পারে। (সূত্র: স্বাস্থ্যকুশল, প্রথম আলো, ১৮ এপ্রিল সংখ্যা)
No comments