বেহাল পথ ও সংসদ অধিবেশন by আসিফ আহমদ
ব্রিটেনের সাম্প্রতিক দাঙ্গা-হাঙ্গামা নিয়ে ১১ আগস্ট কমন্সসভায় বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কেন উন্নত একটি দেশে এ ধরনের সংকট সৃষ্টি হলো, সেটা নিয়ে পার্লামেন্টের সদস্যরা আলোচনা করেন। সরকারি ও বিরোধীদলীয় সদস্যরা পরস্পরের মত তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন।
দলীয় রাজনৈতিক স্বার্থবোধ দ্বারাও তারা পরিচালিত হয়েছিলেন_ তাতে সন্দেহ নেই। তবে মূল বিষয় হচ্ছে, একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে পার্লামেন্ট সদস্যদের মনোযোগ প্রদান।
ব্রিটেনকে গণতন্ত্রের পীঠস্থান বলা হয়। আমাদের স্কুলের পাঠ্যবইয়েও এ বিষয়ে লেখা থাকে। গণতন্ত্রের সঙ্গে অন্য দেশকে শোষণ-লুণ্ঠন করার বিষয়টি মেলে না। ওই দেশটি আমাদের এ ভূখণ্ডকে প্রায় দুইশ' বছর অধীনে রেখে সীমাহীন অত্যাচার চালায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর। ন্যায়বিচার সে সময় উপেক্ষিত হয়েছিল। তাই বলে তাদের সবকিছু যে খারাপ_ সেটা বলা যাবে না। যেমনটি বলা যায় একটি জরুরি বিষয় নিয়ে কমন্সসভায় আলোচনা অনুষ্ঠানের কথা। সদস্যরা আলোচনায় মিলিত হয়ে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা করেছেন।
বাংলাদেশে এ ধরনের অনেক সমস্যা দেখা যায়। এ সময়ের একেবারে হট-ইস্যু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কথাই ধরুন না। কেন একটি অতি ব্যস্ত মহাসড়কে হঠাৎ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা একজোট হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিলেন? তাদের সঙ্গে রয়েছেন একজন মন্ত্রী। তবে পেছনে থেকে নয়, সামনে থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার মোকাবেলা আরেকজন মন্ত্রীর সঙ্গে, যার নিয়ন্ত্রণে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। দেখা যাক, দু'জনে মিলে সরকারকে কতটা বিপদে ফেলতে এবং জনগণকে কতটা ভোগান্তিতে ফেলতে পারেন!
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের জাতীয় সংসদে ৫ ফেব্রুয়ারি আলোচনা হয়েছিল। তখন অনেক সদস্য বলেছিলেন, বড়-ছোট অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু মেরামতের উদ্যোগ নেই। যোগাযোগমন্ত্রী তার জবাবি ভাষণে বলেছিলেন অপ্রতুল বরাদ্দের কথা। সাড়ে ছয় মাস পরও তিনি বলছেন একই কথা_ অর্থমন্ত্রী অর্থ দিচ্ছেন না। কিন্তু এটাও তার এবং আরও অনেকের জানা যে, সরকারি বরাদ্দ যতটা সম্ভব কম ব্যয় করে ঠিকাদার ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে ভরে ফেলা যায়। এখন জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি সড়কে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ পাওয়ার একটি প্রধান শর্ত হয়ে উঠেছে দলীয় লোক হতে হবে এবং দাপট থাকতে হবে। কাজের মান খারাপ হলে নতুন বছরে ফের বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং নতুন করে কাজ মিলবে। কাজ যদি ভালো হয় তবে অনেক বছর সড়ক টিকবে এবং তাতে বছর
বছর কাজের টেন্ডার হবে না। অতএব ...।
সড়কপথের হাল আদপেই বেহাল। টানা বর্ষণকে এ জন্য কিছুটা দায়ী করা যায়। অর্থ সংকটও কারণ। তবে এটাও বলা দরকার যে, কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। জাতীয় সংসদে এ বিষয় নিয়ে বিশেষ আলোচনা হতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। দুই দশক ধরে সংসদ হয়ে আছে 'আমরা ও তোমরায়'। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সংসদে কেবল তারাই থাকে এবং বিরোধীরা চলে টানা বয়কট করে। এ অধিবেশনেও ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। শুধু বিরোধীরা যে বয়কট করে তা নয়, সরকারি দলের বেশিরভাগ সদস্যও সংসদ অধিবেশনে থাকেন গরহাজির।
তবে উভয় পক্ষের সদস্যরা অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন-ভাতা তুলে নিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেন না। এ যে তাদের হক-পাওনা!
জনগণেরও হক আছে। আর এ সূত্রেই বলব, সরকারি ও বিরোধী পক্ষ সংসদে হাজির থেকে সড়কপথের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করুন। সব সমস্যার সমাধান একদিনে করা যাবে না। কিন্তু জনগণ অন্তত একটু হলেও স্বস্তি পাবে যে, তাদের দুর্ভোগের কথা তাদের ভোটে নির্বাচিতরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে তুলে ধরেছেন।
ব্রিটেনকে গণতন্ত্রের পীঠস্থান বলা হয়। আমাদের স্কুলের পাঠ্যবইয়েও এ বিষয়ে লেখা থাকে। গণতন্ত্রের সঙ্গে অন্য দেশকে শোষণ-লুণ্ঠন করার বিষয়টি মেলে না। ওই দেশটি আমাদের এ ভূখণ্ডকে প্রায় দুইশ' বছর অধীনে রেখে সীমাহীন অত্যাচার চালায় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ওপর। ন্যায়বিচার সে সময় উপেক্ষিত হয়েছিল। তাই বলে তাদের সবকিছু যে খারাপ_ সেটা বলা যাবে না। যেমনটি বলা যায় একটি জরুরি বিষয় নিয়ে কমন্সসভায় আলোচনা অনুষ্ঠানের কথা। সদস্যরা আলোচনায় মিলিত হয়ে সমাধান সূত্র বের করার চেষ্টা করেছেন।
বাংলাদেশে এ ধরনের অনেক সমস্যা দেখা যায়। এ সময়ের একেবারে হট-ইস্যু সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার কথাই ধরুন না। কেন একটি অতি ব্যস্ত মহাসড়কে হঠাৎ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা একজোট হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিলেন? তাদের সঙ্গে রয়েছেন একজন মন্ত্রী। তবে পেছনে থেকে নয়, সামনে থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে ধর্মঘটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। তার মোকাবেলা আরেকজন মন্ত্রীর সঙ্গে, যার নিয়ন্ত্রণে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। দেখা যাক, দু'জনে মিলে সরকারকে কতটা বিপদে ফেলতে এবং জনগণকে কতটা ভোগান্তিতে ফেলতে পারেন!
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের জাতীয় সংসদে ৫ ফেব্রুয়ারি আলোচনা হয়েছিল। তখন অনেক সদস্য বলেছিলেন, বড়-ছোট অনেক সড়ক চলাচলের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে। কিন্তু মেরামতের উদ্যোগ নেই। যোগাযোগমন্ত্রী তার জবাবি ভাষণে বলেছিলেন অপ্রতুল বরাদ্দের কথা। সাড়ে ছয় মাস পরও তিনি বলছেন একই কথা_ অর্থমন্ত্রী অর্থ দিচ্ছেন না। কিন্তু এটাও তার এবং আরও অনেকের জানা যে, সরকারি বরাদ্দ যতটা সম্ভব কম ব্যয় করে ঠিকাদার ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের পকেটে ভরে ফেলা যায়। এখন জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি সড়কে কাজ শুরু হয়েছে। কাজ পাওয়ার একটি প্রধান শর্ত হয়ে উঠেছে দলীয় লোক হতে হবে এবং দাপট থাকতে হবে। কাজের মান খারাপ হলে নতুন বছরে ফের বরাদ্দ দেওয়া হবে এবং নতুন করে কাজ মিলবে। কাজ যদি ভালো হয় তবে অনেক বছর সড়ক টিকবে এবং তাতে বছর
বছর কাজের টেন্ডার হবে না। অতএব ...।
সড়কপথের হাল আদপেই বেহাল। টানা বর্ষণকে এ জন্য কিছুটা দায়ী করা যায়। অর্থ সংকটও কারণ। তবে এটাও বলা দরকার যে, কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না। জাতীয় সংসদে এ বিষয় নিয়ে বিশেষ আলোচনা হতে পারে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের অধিবেশন শুরু হবে। দুই দশক ধরে সংসদ হয়ে আছে 'আমরা ও তোমরায়'। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, সংসদে কেবল তারাই থাকে এবং বিরোধীরা চলে টানা বয়কট করে। এ অধিবেশনেও ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। শুধু বিরোধীরা যে বয়কট করে তা নয়, সরকারি দলের বেশিরভাগ সদস্যও সংসদ অধিবেশনে থাকেন গরহাজির।
তবে উভয় পক্ষের সদস্যরা অধিবেশনে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন-ভাতা তুলে নিতে বিন্দুমাত্র ভুল করেন না। এ যে তাদের হক-পাওনা!
জনগণেরও হক আছে। আর এ সূত্রেই বলব, সরকারি ও বিরোধী পক্ষ সংসদে হাজির থেকে সড়কপথের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করুন। সব সমস্যার সমাধান একদিনে করা যাবে না। কিন্তু জনগণ অন্তত একটু হলেও স্বস্তি পাবে যে, তাদের দুর্ভোগের কথা তাদের ভোটে নির্বাচিতরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে বসে তুলে ধরেছেন।
No comments