এ টি এম শামসুজ্জামানের প্রলাপ কী হলো রে, এটা কী হলো? by ওমর ফারুক
কস্তুরি, কবির, কোয়েল, কেতন, কেতকী ও কুশল। বিশিষ্ট অভিনেতা এ টি এম শামসুজ্জামান তাঁর ছয় সন্তানের নাম রাখেন আদ্যক্ষর 'ক' দিয়ে। মঙ্গলবার ছোট সন্তান কুশলের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বড় ছেলে কবির। কুশল এখন কারাগারে। ঘটনার আগমুহূর্তে বড় ছেলের আঘাতে আহত হয়েছিলেন এই অভিনেতা নিজেও।
আঘাত পাওয়ার ব্যথায় চিৎকার করে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ব্যথা এখন আর নেই। ওই ব্যথা ঢেকে দেয় পরবর্তী ভয়াবহ আঘাত। এখন তিনি পাগলপ্রায়। ঘটনায় এতটাই শোকাহত আর মানসিক বিপর্যস্ত যে আপনজনদের কাউকেই চিনতে পারছেন না তিনি। সূত্রাপুর এলাকার দেবেন্দ্রনাথ ঘোষ লেনের ৪৬ নম্বর বাড়িটি এখন শোকের বাড়ি।
গতকাল বুধবার বিকেলে এ টি এম শামসুজ্জামানের বাড়ির সামনে বিলাপ করে কাঁদছিলেন এক যুবক। তাঁর নাম কাজী সফিউল ইসলাম আল আমিন। এই পরিবারের কোনো আত্মীয় নন তিনি। পরিচয়ও নেই কারো সঙ্গে। ঘটনা জেনে অনেক দূর থেকে দেখতে এসেছেন। এ টি এম শামসুজ্জামানের এক ভক্ত তিনি। কালের কণ্ঠকে বললেন, 'আমি সিনেমায় বা টেলিভিশন নাটকে এ টি এম শামসুজ্জামানের কান্না দেখে হাসতাম। হাসি সামাল দিতে পারতাম না। কিন্তু আজ বাস্তবে তাঁর দিকে তাকাতেই কান্নায় বুক ফেটে যাচ্ছে। তিনি পাগলের মতো আচরণ করছেন। কখনো কাঁদছেন আবার কখনো হাসছেন। তাঁর এই হাসিতেও কান্না পায়।'
গতকাল দুপুরে এ টি এম শামসুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের সদস্যদেরও তিনি চিনতে পারছেন না। কেবলই আহাজারি করছেন আর বিলাপ করছেন। বারবার বলছেন, 'কী হলো রে, এটা কী হলো।' ঘরজুড়ে কাঁদছেন স্ত্রী, সন্তানরা। কাঁদছেন স্বজনরা। প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা সান্ত্বনা দিতে এসে নিজেরাই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কেউই নেই সান্ত্বনা দেওয়ার।
এ টি এম শামসুজ্জামানের চাচাতো ভাই ফজলুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি তাঁকে সান্ত্বনা দিতে গেলে আমাকে তিনি চিনতে পারেননি। তিনি শুধু জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।' শামসুজ্জামানের আরেক আত্মীয় লাবলু জানান, ঘটনার পর থেকে শামসুজ্জামান এলোমেলো কথা বলছেন। কখনো হাসছেন। কখনো কাঁদছেন।
গতকাল সকাল ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে এ টি এম কামরুজ্জামান কবিরের লাশ বাসায় নিয়ে যাওয়া হলে কান্না আর হাহাকার ধ্বনিত হতে থাকে। লাশ বাইরে না রেখে ঘরে নিয়ে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় নিচতলার দুটি গেই। বাইরের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভেতরে আহাজারি করছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী আর সন্তানরা।
অন্যদিকে ঘাতক অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত কুশলকে গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রাপুর থানার পুলিশ জানায়, বড় ভাইকে হত্যা করলেও বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই কুশলের মাঝে। তিনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেন, 'চোখের সামনে বাবাকে মারধর করায় আমার মাথা ঠিক ছিল না। কবির মাঝেমধ্যেই বাবা ও মাকে মারধর করত। ঘটনার সময় বাবাকে মারার কারণেই আমি ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরি নিয়ে তাকে আক্রমণ করি। তখন তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি হয়। মাথা গরম থাকায় কী করছি বুঝে উঠতে পারিনি। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আমার হাতও কেটে গেছে।'
ঘটনার পর রাতে সূত্রাপুর থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। এ সময় তিনি কথা বলেন ওসি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর সেই কথা ওসি তুলে ধরেন কালের কণ্ঠের কাছে, 'জীবনে অভিনয় করে যত টাকা কামাই করেছি, সব টাকাই খরচ করলাম সন্তানদের পেছনে। নিজের সুখের কথা ভাবিনি কোনো দিন। একটি গাড়ি পর্যন্ত কিনিনি। অথচ আজ আমি কী পেলাম।' এই বলেই ঝর ঝর করে কাঁদতে থাকেন এ দেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকের শক্তিমান এই অভিনেতা। থানায় বসে নিজ সন্তান কুশলকে আসামি করে মামলা দায়ের করে ঘরে ফেরেন এ টি এম শামসুজ্জামান।
মামলার এজাহারে তিনি বলেছেন, ১৩ মার্চ দুপুর আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত তিনি স্টাডি কাম শোয়ার ঘরে বসে ছিলেন। এই সময় গেটে পর পর কয়েকটি বিকট শব্দ শুনে গিয়ে দেখেন তালা-চাবিওয়ালা দ্বিতীয় দরজার তালা ভাঙছে। জানতে চাইলে সে জানায়, তাঁর ছেলে কবির তাঁকে নিয়ে এসেছেন। তখন তিনি তালা-চাবিওয়ালাকে বিদায় করে দিয়ে বাইরে বের হয়ে দেখেন কবির গলিতে দাঁড়ানো। তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে কবির বলেন, 'ডাকলে কাউকে পাওয়া যায় না তাই তালাচাবিওয়ালাকে এনেছি।' তখন তিনি কবিরের উদ্দেশে বলেন, 'তুই তো জানিস আমি কানে কম শুনি, তোর আরেক ভাই নেশা করে বিছানায় শুয়ে থাকে। তুই আমার রুমের জানালার কাচের ওপর টোকা দিলেই তো আমি শুনতে পেতাম।'
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, কবির বাসায় ঢুকে তাঁর শোয়ার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। তখন তিনি দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করলে কবির দরজা খোলেন। এ টি এম শামসুজ্জামান জানতে চান, তিনি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও কেন তালা-চাবিওয়ালা আনা হয়েছে। জবাবে কবির তাঁকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কটূক্তি করেন। এতে বেশ রেগে যান এ টি এম শামসুজ্জামান। তিনি বেয়াদবি সহ্য করতে না পেরে কবিরকে একটি থাপ্পড় দেন। সঙ্গে সঙ্গে কবিরও তাঁকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি দিতে থাকেন একং একপর্যায়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের মেঝেতে ফেলে দেন। মাথা দেয়ালের সঙ্গে ঠুকে যায়। তিনি দেখতে পান তাঁর লুঙ্গিতে রক্ত।
তিনি এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, "আমি ভাবি হয়তো মাথা ফাটিয়া রক্ত পড়িতেছে। এই সময় আমার ছোট ছেলে এ টি এম খালিকুজ্জামানের (কুশল) গলার আওয়াজ পাই। সে কবিরের বুকের ওপর বসে বলছে, 'আমার আব্বার গায়ে হাত তুললি কেন?' তখনো বুঝিতে পারি নাই, সে কী দিয়ে কবিরকে আঘাত করতেছে। তখন আমার স্ত্রী চিৎকার করলে আমার ছোট ভাই ইব্রাহীম জামান মানিক আসে, কুশলকে ধরে কাপড় দিয়ে বেঁধে বারান্দার পাশে ছোট রুমে আটকে রাখে। এরপর আমার বড় মেয়ে কস্তুরি এসে কবিরকে বিছানার ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখে। এরই মধ্যে আমার অন্য ভাইয়ের ছেলে অনিক, শোভন, শিশির এবং আরো কিছু লোক কবিরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রওনা দেয়। আমি, আমার স্ত্রী এবং পরিবারের লোকজন উৎকণ্ঠায় থাকি। একপর্যায়ে জানতে পারি সে মারা গিয়াছে।" এজাহারের শেষ দিকে এসে এ টি এম শামসুজ্জামান লিখেছেন, 'আমার বড় ছেলে কবির অত্যন্ত বদরাগী স্বভাবের ছিল। সে বেশ কয়েকবার আমার ও আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলিয়াছিল।'
থানার ওসি নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত কুশলের মাঝে কোনো অনুশোচনা না থাকায় এই মুহূর্তে তাঁকেও সুস্থ বলে মনে হয়নি। এ ছাড়া তিনি মাদকাসক্ত এবং ঘটনার সময় নিজেও আহত। তিনি ভাই কবিরকে হত্যা করার কথা স্বীকারও করেছেন। ফলে এই মুহূর্তে তাঁকে রিমান্ডে আনার প্রয়োজন পড়েনি। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ টি এম শামসুজ্জামানের পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় জুরাইন কবরস্থানে কবিরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে এ টি এম শামসুজ্জামানের বাড়ির সামনে বিলাপ করে কাঁদছিলেন এক যুবক। তাঁর নাম কাজী সফিউল ইসলাম আল আমিন। এই পরিবারের কোনো আত্মীয় নন তিনি। পরিচয়ও নেই কারো সঙ্গে। ঘটনা জেনে অনেক দূর থেকে দেখতে এসেছেন। এ টি এম শামসুজ্জামানের এক ভক্ত তিনি। কালের কণ্ঠকে বললেন, 'আমি সিনেমায় বা টেলিভিশন নাটকে এ টি এম শামসুজ্জামানের কান্না দেখে হাসতাম। হাসি সামাল দিতে পারতাম না। কিন্তু আজ বাস্তবে তাঁর দিকে তাকাতেই কান্নায় বুক ফেটে যাচ্ছে। তিনি পাগলের মতো আচরণ করছেন। কখনো কাঁদছেন আবার কখনো হাসছেন। তাঁর এই হাসিতেও কান্না পায়।'
গতকাল দুপুরে এ টি এম শামসুজ্জামানের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, পরিবারের সদস্যদেরও তিনি চিনতে পারছেন না। কেবলই আহাজারি করছেন আর বিলাপ করছেন। বারবার বলছেন, 'কী হলো রে, এটা কী হলো।' ঘরজুড়ে কাঁদছেন স্ত্রী, সন্তানরা। কাঁদছেন স্বজনরা। প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা সান্ত্বনা দিতে এসে নিজেরাই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। কেউই নেই সান্ত্বনা দেওয়ার।
এ টি এম শামসুজ্জামানের চাচাতো ভাই ফজলুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, 'আমি তাঁকে সান্ত্বনা দিতে গেলে আমাকে তিনি চিনতে পারেননি। তিনি শুধু জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন।' শামসুজ্জামানের আরেক আত্মীয় লাবলু জানান, ঘটনার পর থেকে শামসুজ্জামান এলোমেলো কথা বলছেন। কখনো হাসছেন। কখনো কাঁদছেন।
গতকাল সকাল ১১টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে এ টি এম কামরুজ্জামান কবিরের লাশ বাসায় নিয়ে যাওয়া হলে কান্না আর হাহাকার ধ্বনিত হতে থাকে। লাশ বাইরে না রেখে ঘরে নিয়ে রাখা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় নিচতলার দুটি গেই। বাইরের কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ভেতরে আহাজারি করছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান, তাঁর স্ত্রী আর সন্তানরা।
অন্যদিকে ঘাতক অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত কুশলকে গতকাল দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রাপুর থানার পুলিশ জানায়, বড় ভাইকে হত্যা করলেও বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই কুশলের মাঝে। তিনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেন, 'চোখের সামনে বাবাকে মারধর করায় আমার মাথা ঠিক ছিল না। কবির মাঝেমধ্যেই বাবা ও মাকে মারধর করত। ঘটনার সময় বাবাকে মারার কারণেই আমি ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরি নিয়ে তাকে আক্রমণ করি। তখন তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি হয়। মাথা গরম থাকায় কী করছি বুঝে উঠতে পারিনি। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে আমার হাতও কেটে গেছে।'
ঘটনার পর রাতে সূত্রাপুর থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। এ সময় তিনি কথা বলেন ওসি নজরুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর সেই কথা ওসি তুলে ধরেন কালের কণ্ঠের কাছে, 'জীবনে অভিনয় করে যত টাকা কামাই করেছি, সব টাকাই খরচ করলাম সন্তানদের পেছনে। নিজের সুখের কথা ভাবিনি কোনো দিন। একটি গাড়ি পর্যন্ত কিনিনি। অথচ আজ আমি কী পেলাম।' এই বলেই ঝর ঝর করে কাঁদতে থাকেন এ দেশের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন নাটকের শক্তিমান এই অভিনেতা। থানায় বসে নিজ সন্তান কুশলকে আসামি করে মামলা দায়ের করে ঘরে ফেরেন এ টি এম শামসুজ্জামান।
মামলার এজাহারে তিনি বলেছেন, ১৩ মার্চ দুপুর আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টা পর্যন্ত তিনি স্টাডি কাম শোয়ার ঘরে বসে ছিলেন। এই সময় গেটে পর পর কয়েকটি বিকট শব্দ শুনে গিয়ে দেখেন তালা-চাবিওয়ালা দ্বিতীয় দরজার তালা ভাঙছে। জানতে চাইলে সে জানায়, তাঁর ছেলে কবির তাঁকে নিয়ে এসেছেন। তখন তিনি তালা-চাবিওয়ালাকে বিদায় করে দিয়ে বাইরে বের হয়ে দেখেন কবির গলিতে দাঁড়ানো। তিনি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে কবির বলেন, 'ডাকলে কাউকে পাওয়া যায় না তাই তালাচাবিওয়ালাকে এনেছি।' তখন তিনি কবিরের উদ্দেশে বলেন, 'তুই তো জানিস আমি কানে কম শুনি, তোর আরেক ভাই নেশা করে বিছানায় শুয়ে থাকে। তুই আমার রুমের জানালার কাচের ওপর টোকা দিলেই তো আমি শুনতে পেতাম।'
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, কবির বাসায় ঢুকে তাঁর শোয়ার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। তখন তিনি দরজা ধাক্কা দিয়ে ডাকাডাকি করলে কবির দরজা খোলেন। এ টি এম শামসুজ্জামান জানতে চান, তিনি বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও কেন তালা-চাবিওয়ালা আনা হয়েছে। জবাবে কবির তাঁকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কটূক্তি করেন। এতে বেশ রেগে যান এ টি এম শামসুজ্জামান। তিনি বেয়াদবি সহ্য করতে না পেরে কবিরকে একটি থাপ্পড় দেন। সঙ্গে সঙ্গে কবিরও তাঁকে এলোপাথাড়ি চড়-থাপ্পড় ও কিল-ঘুষি দিতে থাকেন একং একপর্যায়ে তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ঘরের মেঝেতে ফেলে দেন। মাথা দেয়ালের সঙ্গে ঠুকে যায়। তিনি দেখতে পান তাঁর লুঙ্গিতে রক্ত।
তিনি এজাহারে আরো উল্লেখ করেন, "আমি ভাবি হয়তো মাথা ফাটিয়া রক্ত পড়িতেছে। এই সময় আমার ছোট ছেলে এ টি এম খালিকুজ্জামানের (কুশল) গলার আওয়াজ পাই। সে কবিরের বুকের ওপর বসে বলছে, 'আমার আব্বার গায়ে হাত তুললি কেন?' তখনো বুঝিতে পারি নাই, সে কী দিয়ে কবিরকে আঘাত করতেছে। তখন আমার স্ত্রী চিৎকার করলে আমার ছোট ভাই ইব্রাহীম জামান মানিক আসে, কুশলকে ধরে কাপড় দিয়ে বেঁধে বারান্দার পাশে ছোট রুমে আটকে রাখে। এরপর আমার বড় মেয়ে কস্তুরি এসে কবিরকে বিছানার ওপর রক্তাক্ত অবস্থায় পরে থাকতে দেখে। এরই মধ্যে আমার অন্য ভাইয়ের ছেলে অনিক, শোভন, শিশির এবং আরো কিছু লোক কবিরকে নিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রওনা দেয়। আমি, আমার স্ত্রী এবং পরিবারের লোকজন উৎকণ্ঠায় থাকি। একপর্যায়ে জানতে পারি সে মারা গিয়াছে।" এজাহারের শেষ দিকে এসে এ টি এম শামসুজ্জামান লিখেছেন, 'আমার বড় ছেলে কবির অত্যন্ত বদরাগী স্বভাবের ছিল। সে বেশ কয়েকবার আমার ও আমার স্ত্রীর গায়ে হাত তুলিয়াছিল।'
থানার ওসি নজরুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃত কুশলের মাঝে কোনো অনুশোচনা না থাকায় এই মুহূর্তে তাঁকেও সুস্থ বলে মনে হয়নি। এ ছাড়া তিনি মাদকাসক্ত এবং ঘটনার সময় নিজেও আহত। তিনি ভাই কবিরকে হত্যা করার কথা স্বীকারও করেছেন। ফলে এই মুহূর্তে তাঁকে রিমান্ডে আনার প্রয়োজন পড়েনি। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে তাঁকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এ টি এম শামসুজ্জামানের পারিবারিক সূত্র জানায়, গতকাল সন্ধ্যায় জুরাইন কবরস্থানে কবিরের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
No comments