স্বাধীন বিচার বিভাগ কত দূর?
একজন চলে যাচ্ছেন। তাঁর জায়গায় আসছেন আরেকজন। বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নিচ্ছেন। তাঁর জায়গায় আসছেন বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন। তিনি হবেন দেশের ২০তম প্রধান বিচারপতি। একজন প্রধান বিচারপতি অবসরে যাওয়া এবং আরেকজনের তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ঠিক আগে বিচার বিভাগ নিয়ে নতুন
বাহাস হয়ে গেল। আইনমন্ত্রী বিচার বিভাগকে উদ্দেশ করে যা বলেছেন, তার মর্মার্থ দাঁড়ায়, বিচার বিভাগ জনগণের দুর্ভোগ দূর করতে আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি। এমনকি বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে আলাদা করে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার পরও বিচার বিভাগ যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারেনি। অন্যদিকে বিদায়ী প্রধান বিচারপতি বলেছেন, বিচার বিভাগের এই স্বাধীনতা হাত-পা বেঁধে সাঁতার কাটতে দেওয়ার মতো।
বিদায়ী প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। বিচার বিভাগের কাছে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে। প্রধান বিচারপতিরা যখন দায়িত্ব নেন, তাঁরাও অনেক প্রত্যাশার কথা শোনান। কিন্তু সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হয় বা পূরণ করা যায়? বিচারপতিরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন, কিন্তু তাঁদের সেই ভূমিকা রাখার পথে যে অন্তরায়গুলো আছে তা কতটুকু দূর করা গেছে, সে প্রশ্ন থেকে গেছে আজও। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি যে প্রশ্ন তুলেছেন, সে প্রশ্ন একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক নয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা সব সময়ই বলা হয়ে থাকে, কিন্তু আসলেই বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করছে, সে প্রশ্নের সমাধান এখনো হয়নি। পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর বিচার বিভাগকেই সবার আগে বিতর্কিত করা হয়। বিচার বিভাগে দলীয়করণের কথা বারবারই উচ্চারিত হতে শোনা যায়। কিন্তু এই দলীয়করণের নেপথ্যে কাদের কী ভূমিকা, সে বিষয়ে কেউ কথা বলেন না।
'বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কাঁদে'_এ সত্যটাই যেন আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বিচার বিভাগের কাজ বিচারের বাণীকে সম্মুখে নিয়ে আসা। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি কিছুদিন আগে এক মতবিনিময় সভায় বিচারপ্রত্যাশীদের মুখের দিকে তাকিয়ে সঠিক সেবা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর সে আহ্বান যথার্থ। মানতে হবে, আমাদের দেশের আদালত প্রাঙ্গণে অনেক সুবিধাবাদী লোকের ভিড়। সহজ-সরল মানুষদের ভুলিয়ে তারা নিজেদের সুবিধা আদায় করে। সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হয় মানুষ। বিচার বিভাগের দায়িত্ব বিচারপ্রত্যাশীদের সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতাও সুবিচারের অন্যতম অন্তরায়। মামলাজট আমাদের বিচারালয়গুলোতে যেন সাধারণ একটি ব্যাপার। আশার কথা, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা তিন লাখ ৫৫ হাজার থেকে দুই লাখ ৯১ হাজারে নামিয়ে এনেছেন।
বাহাদুর শাহ জাফরের একটি কবিতার ভাবার্থ এ রকম_'ঈশ্বরের কাছ থেকে আমি চার দিন সময় নিয়ে এসেছিলাম/তার দুই দিন গেল স্বপ্ন বুনতে আর দুই দিন গেল স্বপ্ন ভাঙতে।' বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কণ্ঠেও সেই সুরই যেন ধ্বনিত হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বললেও, সেই স্বাধীনতার সুফল বিচার বিভাগ কতটুকু ভোগ করছে, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার সেই দায়িত্ব পালনে কতটুকু আন্তরিক, সেটা ভেবে দেখা দরকার।
বিদায়ী প্রধান বিচারপতির এই বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। বিচার বিভাগের কাছে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের অনেক প্রত্যাশা থাকে। প্রধান বিচারপতিরা যখন দায়িত্ব নেন, তাঁরাও অনেক প্রত্যাশার কথা শোনান। কিন্তু সেই প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ হয় বা পূরণ করা যায়? বিচারপতিরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবেন, কিন্তু তাঁদের সেই ভূমিকা রাখার পথে যে অন্তরায়গুলো আছে তা কতটুকু দূর করা গেছে, সে প্রশ্ন থেকে গেছে আজও। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি যে প্রশ্ন তুলেছেন, সে প্রশ্ন একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক নয়। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা সব সময়ই বলা হয়ে থাকে, কিন্তু আসলেই বিচার বিভাগ কতটুকু স্বাধীনতা ভোগ করছে, সে প্রশ্নের সমাধান এখনো হয়নি। পঁচাত্তরের পট পরিবর্তনের পর বিচার বিভাগকেই সবার আগে বিতর্কিত করা হয়। বিচার বিভাগে দলীয়করণের কথা বারবারই উচ্চারিত হতে শোনা যায়। কিন্তু এই দলীয়করণের নেপথ্যে কাদের কী ভূমিকা, সে বিষয়ে কেউ কথা বলেন না।
'বিচারের বাণী নীরবে-নিভৃতে কাঁদে'_এ সত্যটাই যেন আমাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। বিচার বিভাগের কাজ বিচারের বাণীকে সম্মুখে নিয়ে আসা। বিদায়ী প্রধান বিচারপতি কিছুদিন আগে এক মতবিনিময় সভায় বিচারপ্রত্যাশীদের মুখের দিকে তাকিয়ে সঠিক সেবা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তাঁর সে আহ্বান যথার্থ। মানতে হবে, আমাদের দেশের আদালত প্রাঙ্গণে অনেক সুবিধাবাদী লোকের ভিড়। সহজ-সরল মানুষদের ভুলিয়ে তারা নিজেদের সুবিধা আদায় করে। সঠিক বিচার থেকে বঞ্চিত হয় মানুষ। বিচার বিভাগের দায়িত্ব বিচারপ্রত্যাশীদের সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতাও সুবিচারের অন্যতম অন্তরায়। মামলাজট আমাদের বিচারালয়গুলোতে যেন সাধারণ একটি ব্যাপার। আশার কথা, বিদায়ী প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব নেওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা তিন লাখ ৫৫ হাজার থেকে দুই লাখ ৯১ হাজারে নামিয়ে এনেছেন।
বাহাদুর শাহ জাফরের একটি কবিতার ভাবার্থ এ রকম_'ঈশ্বরের কাছ থেকে আমি চার দিন সময় নিয়ে এসেছিলাম/তার দুই দিন গেল স্বপ্ন বুনতে আর দুই দিন গেল স্বপ্ন ভাঙতে।' বিদায়ী প্রধান বিচারপতির কণ্ঠেও সেই সুরই যেন ধ্বনিত হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বললেও, সেই স্বাধীনতার সুফল বিচার বিভাগ কতটুকু ভোগ করছে, সে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও।
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। সরকার সেই দায়িত্ব পালনে কতটুকু আন্তরিক, সেটা ভেবে দেখা দরকার।
No comments