ভালো থেকো বন্ধু by পাভেল রহমান
দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু শওকত জামিলকে হারালাম। অথচ পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মৃত্যুর সংবাদ শুনে একবারের জন্যও যেতে পারলাম না বন্ধুকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। দায়িত্ব পালনে আমি এখন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহতদের ছবি তুলছি। ক্ষমা করো ... বন্ধু শওকত জামিল।
পেশাগত জীবনে যেখানেই ঘটনা সেখানেই উপস্থিত ছিলেন দেশের অন্যতম আলোকচিত্র সাংবাদিক শওকত জামিল। ১৯৮২ সালে সংবাদ ছেড়ে আমি 'নিউ নেশন' যোগ দিই। এরপরেই শওকত জামিল স্পোর্টস রিপোর্টার থেকে আলোকচিত্র সাংবাদিক হিসেবে সংবাদে কাজ শুরু করেন। আর কাজের সুবাদেই তার সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে। সংবাদ থেকে শওকত জামিল কিছুদিন দৈনিক খবরে কাজ করেছেন। পরে ২০০৫ সালে ডেইলি স্টারে যোগ দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শওকত জামিল সিনিয়র ফটোসাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন । গত ১৩ মার্চ মৃত্যুর দিনেও তিনি অফিসের অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন।
কর্মজীবনের প্রথম দিকে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও গত এক দশকে আমাদের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পেশাগত কারণে প্রতিদিনই সাক্ষাৎ হতো। অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট বা এর বাইরে কখন-কোথায় ছবি তুলতে হবে, তার জন্য আমাদের যোগাযোগ ছিল সার্বক্ষণিক। আগামীকাল কী আছে, কোথায় বিশেষ ছবি তোলা যায়, তার জন্য রাতে মোবাইলে আলাপ হতো বন্ধু শওকত জামিলের সঙ্গে। হঠাৎ করে চলে যাওয়ায় এখন তাকে খুব মিস করছি।
বন্ধু শওকত জামিল ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, তবে অভিমানী। মানুষের সমস্যার কথা শুনতেন। কিন্তু নিজের কথা বলতেন না। কর্মজীবনের শেষ সময় তার মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছিল। তবে তিনি সেগুলো কারও সঙ্গে আলোচনা করতেন না। শওকত জামিলকে তার স্পষ্টবাদী মনোভাবের জন্য আমার ভালো লাগত। তার মধ্যে ধান্দাবাজি ছিল না মোটেই। কাজটাই তার কাছে ছিল মুখ্য। প্রায়শই জাতীয় প্রেস ক্লাবে দেখা হলে সদা হাস্যমুখে কুশল বিনিময় হতো শওকত জামিলের সঙ্গে। অথচ সেই নিরহঙ্কার, অমায়িক, প্রাণবন্ত স্বভাবের শওকত জামিল কিনা আমাদের ছেড়ে পুরোপুরি চলে গেলেন। প্রাণহীন দেহটাও স্থান নিল যেখান থেকে শওকতের পৃথিবীতে আগমন সেই বরিশালে।
শওকত জামিল সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ করেতন। সেতার বাজাতেন। সঙ্গীতের প্রতি তার ভালোবাসা এমনই ছিল যে, তিনি তার ছেলেকে ছায়ানটে ভর্তি করে দিয়েছেন। তার আশা ছেলেটা একজন প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত শিল্পী হবে।
আজ হয়তো ঢাকায় ফিরব। কিন্তু এবার আর তার সঙ্গে দেখা হবে না, এটা ভাবতেই আমার বুক ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে। কেননা কিছু লোক থাকে যাদের মুখ দেখলেও ভালো লাগে। তাদেরই একজন ছিলেন শওকত জামিল। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় শতাধিক লাশের স্বজনদের শোক। একের পর এক খালি শোক সংবাদ শুনতে হচ্ছে। শোক যেন আমাদের পিছু ছাড়ছে না। এবার আমাদের ছেড়ে বন্ধু শওকত জামিল তুমিও চলে গেলে ওপারের দেশে। ভালো থেকো বন্ধু, আমাদের সবার দোয়া রইল তোমার জন্য।
পাভেল রহমান :সিনিয়র ফটো সাংবাদিক, এপি
কর্মজীবনের প্রথম দিকে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা না থাকলেও গত এক দশকে আমাদের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পেশাগত কারণে প্রতিদিনই সাক্ষাৎ হতো। অফিসের অ্যাসাইনমেন্ট বা এর বাইরে কখন-কোথায় ছবি তুলতে হবে, তার জন্য আমাদের যোগাযোগ ছিল সার্বক্ষণিক। আগামীকাল কী আছে, কোথায় বিশেষ ছবি তোলা যায়, তার জন্য রাতে মোবাইলে আলাপ হতো বন্ধু শওকত জামিলের সঙ্গে। হঠাৎ করে চলে যাওয়ায় এখন তাকে খুব মিস করছি।
বন্ধু শওকত জামিল ছিলেন অত্যন্ত বিনয়ী, তবে অভিমানী। মানুষের সমস্যার কথা শুনতেন। কিন্তু নিজের কথা বলতেন না। কর্মজীবনের শেষ সময় তার মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছিল। তবে তিনি সেগুলো কারও সঙ্গে আলোচনা করতেন না। শওকত জামিলকে তার স্পষ্টবাদী মনোভাবের জন্য আমার ভালো লাগত। তার মধ্যে ধান্দাবাজি ছিল না মোটেই। কাজটাই তার কাছে ছিল মুখ্য। প্রায়শই জাতীয় প্রেস ক্লাবে দেখা হলে সদা হাস্যমুখে কুশল বিনিময় হতো শওকত জামিলের সঙ্গে। অথচ সেই নিরহঙ্কার, অমায়িক, প্রাণবন্ত স্বভাবের শওকত জামিল কিনা আমাদের ছেড়ে পুরোপুরি চলে গেলেন। প্রাণহীন দেহটাও স্থান নিল যেখান থেকে শওকতের পৃথিবীতে আগমন সেই বরিশালে।
শওকত জামিল সঙ্গীত অনুরাগী ছিলেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত পছন্দ করেতন। সেতার বাজাতেন। সঙ্গীতের প্রতি তার ভালোবাসা এমনই ছিল যে, তিনি তার ছেলেকে ছায়ানটে ভর্তি করে দিয়েছেন। তার আশা ছেলেটা একজন প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত শিল্পী হবে।
আজ হয়তো ঢাকায় ফিরব। কিন্তু এবার আর তার সঙ্গে দেখা হবে না, এটা ভাবতেই আমার বুক ভারাক্রান্ত হয়ে উঠছে। কেননা কিছু লোক থাকে যাদের মুখ দেখলেও ভালো লাগে। তাদেরই একজন ছিলেন শওকত জামিল। মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় শতাধিক লাশের স্বজনদের শোক। একের পর এক খালি শোক সংবাদ শুনতে হচ্ছে। শোক যেন আমাদের পিছু ছাড়ছে না। এবার আমাদের ছেড়ে বন্ধু শওকত জামিল তুমিও চলে গেলে ওপারের দেশে। ভালো থেকো বন্ধু, আমাদের সবার দোয়া রইল তোমার জন্য।
পাভেল রহমান :সিনিয়র ফটো সাংবাদিক, এপি
No comments