মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি-রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প-কারখানায় শ্রমিকদের ধর্মঘট
মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা আন্দোলনে নেমেছেন। গতকাল বুধবার দেশের ৯৭টি শিল্প-কারখানার প্রায় সব কটিতে শ্রমিকেরা একযোগে কর্মবিরতি (ধর্মঘট) পালন করেন।
পাটকল শ্রমিক লীগ, পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ ও পাট ছাড়া অন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের সংগঠন সেক্টর করপোরেশন সমন্বয় পরিষদ যৌথভাবে এই ধর্মঘট পালন করে।
পাটকল শ্রমিক লীগ, পাটকল শ্রমিক-কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদ ও পাট ছাড়া অন্য শিল্পপ্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের সংগঠন সেক্টর করপোরেশন সমন্বয় পরিষদ যৌথভাবে এই ধর্মঘট পালন করে।
দাবি আদায় না হলে আরও বড় ধরনের কর্মসূচির ডাক দেওয়া হবে বলে শ্রমিকনেতারা ঘোষণা দেন।
মূলত ২০০৯ সালের জুলাই থেকে মজুরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার দাবিতে এই আন্দোলন শুরু করা হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, দেশের ২২টি সরকারি পাটকল, ১৭টি চিনিকল, ছয়টি সার কারখানাসহ ৯৭টি কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল ধর্মঘটে অংশ নেন। এতে কারখানাগুলোর এক লাখ ২০ হাজার শ্রমিক যোগ দেন। সকাল থেকে শ্রমিকেরা কারখানার ভেতর ও বাইরে মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বেশির ভাগ স্থানেই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এ বিষয়ে বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবির প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। শ্রমিকনেতাদের বলেছিলাম দাবির কথা লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরাও এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু শ্রমিকনেতারা কোনো উদ্যোগ নেননি। নিলে এর সুরাহা হতো।’
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
নিজস্ব প্রতিবেদক, ভৈরব জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন। এ কারণে কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত সাত জেলায় সার সরবরাহ করা যায়নি। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় উৎপাদন চালু রাখা হয়।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন জানান, কর্মবিরতির কারণে কোনো দাপ্তরিক কাজও হয়নি।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর): শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে যমুনা সার কারখানা থেকে গতকাল কোনো সার পরিবহন হয়নি। এতে হতাশ হয়ে পড়েন সার পরিবহনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা। ট্রাকচালক নুর উদ্দিন বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে ট্রাক নিয়ে এসেছিলাম। সার পরিবহন বন্ধ থাকায় কষ্টে দিনটি অতিবাহিত করেছি।’
পঞ্চগড়: কর্মবিরতির কারণে পঞ্চগড় চিনিকলে উৎপাদন হয়নি। শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সামসুদ্দীন আহাম্মদ বলেন, কারখানার সামনে কয়েক হাজার টন আখ পড়ে আছে। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে উৎপাদন বন্ধ।
ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীর পাবনা সুগার মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা হাজিরা খাতায় সই করে আর কাজ করেননি। পাবনা সুগার মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, কর্মবিরতির কারণে উৎপাদন বন্ধ ছিল।
এই আন্দোলন সম্পর্কে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদের (স্কপ) নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য সরকার যে কমিটি করে দিয়েছিল, তার সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো হয়েছে এবং তাঁদের সেই অনুযায়ী বেতন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কারখানার শ্রমিকদের বেলায় মজুরি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেও দেওয়া হচ্ছে না।’
শ্রমিকনেতারা জানান, শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন চার হাজার ২৫০ টাকা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ১৬০ টাকা নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ওই সুপারিশ বিবেচনায় না নিয়ে মাসিক মজুরি চার হাজার ১৪৫ টাকা ও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ১৪০ টাকা করেছে। কোনো শ্রমিক মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ৩৬ মাসের বেতন এককালীন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। এতে শ্রমিকের পরিবার কমপক্ষে দুই লাখ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা কেটে সর্বসাকল্যে ৫০ হাজার টাকা করেছে।
পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে টানা দুই-তিন দিন ধর্মঘট পালন করা হবে। প্রয়োজনে কারখানাগুলোর সামনে রাস্তা অবরোধসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনাও রয়েছে।’
মূলত ২০০৯ সালের জুলাই থেকে মজুরি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী শ্রমিকদের মজুরিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার দাবিতে এই আন্দোলন শুরু করা হয়। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, দেশের ২২টি সরকারি পাটকল, ১৭টি চিনিকল, ছয়টি সার কারখানাসহ ৯৭টি কারখানার শ্রমিকেরা গতকাল ধর্মঘটে অংশ নেন। এতে কারখানাগুলোর এক লাখ ২০ হাজার শ্রমিক যোগ দেন। সকাল থেকে শ্রমিকেরা কারখানার ভেতর ও বাইরে মিছিল, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। বেশির ভাগ স্থানেই শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালিত হয়।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান এ বিষয়ে বলেন, ‘শ্রমিকদের দাবির প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। শ্রমিকনেতাদের বলেছিলাম দাবির কথা লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে। এরপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরাও এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন। কিন্তু শ্রমিকনেতারা কোনো উদ্যোগ নেননি। নিলে এর সুরাহা হতো।’
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
নিজস্ব প্রতিবেদক, ভৈরব জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানার সহস্রাধিক শ্রমিক-কর্মচারী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন। এ কারণে কারখানার কমান্ড এরিয়াভুক্ত সাত জেলায় সার সরবরাহ করা যায়নি। তবে বিশেষ ব্যবস্থায় উৎপাদন চালু রাখা হয়।
কারখানার মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনোয়ার হোসেন জানান, কর্মবিরতির কারণে কোনো দাপ্তরিক কাজও হয়নি।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর): শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে যমুনা সার কারখানা থেকে গতকাল কোনো সার পরিবহন হয়নি। এতে হতাশ হয়ে পড়েন সার পরিবহনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা। ট্রাকচালক নুর উদ্দিন বলেন, ‘ময়মনসিংহ থেকে ট্রাক নিয়ে এসেছিলাম। সার পরিবহন বন্ধ থাকায় কষ্টে দিনটি অতিবাহিত করেছি।’
পঞ্চগড়: কর্মবিরতির কারণে পঞ্চগড় চিনিকলে উৎপাদন হয়নি। শ্রমিক-কর্মচারীরা কাজে যোগ না দিয়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সামসুদ্দীন আহাম্মদ বলেন, কারখানার সামনে কয়েক হাজার টন আখ পড়ে আছে। কিন্তু শ্রমিক-কর্মচারীদের কর্মবিরতির কারণে উৎপাদন বন্ধ।
ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীর পাবনা সুগার মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা হাজিরা খাতায় সই করে আর কাজ করেননি। পাবনা সুগার মিল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান উজ্জ্বল জানান, কর্মবিরতির কারণে উৎপাদন বন্ধ ছিল।
এই আন্দোলন সম্পর্কে শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্যপরিষদের (স্কপ) নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘শ্রমিকদের মজুরি পুনর্নির্ধারণের জন্য সরকার যে কমিটি করে দিয়েছিল, তার সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামো হয়েছে এবং তাঁদের সেই অনুযায়ী বেতন দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু কারখানার শ্রমিকদের বেলায় মজুরি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেও দেওয়া হচ্ছে না।’
শ্রমিকনেতারা জানান, শ্রমিকদের সর্বনিম্ন বেতন চার হাজার ২৫০ টাকা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ১৬০ টাকা নির্ধারণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় ওই সুপারিশ বিবেচনায় না নিয়ে মাসিক মজুরি চার হাজার ১৪৫ টাকা ও বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ১৪০ টাকা করেছে। কোনো শ্রমিক মারা গেলে তাঁর পরিবারকে ৩৬ মাসের বেতন এককালীন দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল। এতে শ্রমিকের পরিবার কমপক্ষে দুই লাখ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয় তা কেটে সর্বসাকল্যে ৫০ হাজার টাকা করেছে।
পাটকল শ্রমিক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে টানা দুই-তিন দিন ধর্মঘট পালন করা হবে। প্রয়োজনে কারখানাগুলোর সামনে রাস্তা অবরোধসহ অন্যান্য কর্মসূচি পালন করার পরিকল্পনাও রয়েছে।’
No comments