জাতিসংঘ দিবস-সহযোগিতার চার দশক by কাজী আলী রেজা
১৯৭৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। সদস্যপদ লাভের ঠিক এক সপ্তাহ পরেই, ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে মাতৃভাষা বাংলায় ভাষণ দিয়ে বলেন, ‘বর্তমানের মতো এত বড় চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা জাতিসংঘ অতীতে
কখনো করেনি। এই চ্যালেঞ্জ হচ্ছে একটা ন্যায়সংগত আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য যুক্তির শক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা।’ তখন থেকেই বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মধ্যে সম্পর্ক ও সহযোগিতা উত্তরোত্তর শক্তিশালী হতে থাকে।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ তার লাল-সবুজ পতাকা জাতিসংঘে উত্তোলন করলেও বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সাহায্য-সহযোগিতার নিদর্শন আমরা স্বাধীনতার সময় থেকেই দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে ডব্লিউএইচও, আইএলও, আইবিআরডি ও গ্যাটের এবং ১৯৭৩ সালে এফএওর সদস্যপদ লাভ করে।
১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের পরেই, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে, মি. হ্যাগেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল বাংলাদেশ সফরে আসে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে ত্রাণ-সহায়তার ব্যাপারে আলোচনা করে। তার পরই ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ ত্রাণ দলের প্রধান মি. পল মার্ক হেনরির বাংলাদেশ সফর। ওই বছরের মার্চে দেশের জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএন রিলিফ অপারেশন ইন ঢাকা-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
দেশ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে, চালনা বন্দর থেকে যুদ্ধের সময় ডুবিয়ে দেওয়া জাহাজগুলো অপসারণেও জাতিসংঘের সহায়তা উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ভাড়া করা বিমানে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করেছিল জাতিসংঘ।
১৯৭৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়েল্ডহাইম বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের পথ খুঁজতে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পর্ক আরও জোরদার করেন।
যখন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের ছয় কোটি লোক দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছিল, ১৯৭৪ সালের জুনে ৩০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে ইউএনডিপি, যা ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় করা হয়। তখন থেকেই আবহাওয়া পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন, মানবাধিকার ও সুশাসন, সংসদ ও নির্বাচনের মতো বিষয়সমূহে অংশীদারির নবসূচনা হয়। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮-এর নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতির নিদর্শন বহন করে।
শিক্ষা ও পুনর্বাসন খাতে আর্থিক সহায়তা দিতে ইউনিসেফই প্রথম ১৯৭৩ সালের ২৮ জুন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তার চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই সংস্থা সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবনে, জাতীয় শিশুনীতির প্রয়োগে, সিআরসি ও সিডও, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষানীতিতে সরকারের উদ্যোগসমূহে সহায়তা করে যাচ্ছে। এ ছাড়া পুষ্টি, পানি ও পয়োনিষ্কাশন এই সংস্থাটির মূল কার্যক্রম।
বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধন করেছে। লাখ লাখ মা প্রসবজনিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছেন। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে। নারীর ক্ষমতায়নেও ইউএনএফপিএ সরকারকে সাহায্য করছে। এসটিআই ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধেও এই সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।
এ দেশের কৃষকেরা পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, সুযোগসন্ধানী ও ঐতিহ্যবাদী; পাশাপাশি নতুন নতুন প্রথার প্রবর্তক। তাঁদের গবাদিপশু, মৎস্য ও বনাঞ্চল দেখাশোনা করতে, স্বনির্ভরতা অর্জন করতে এবং স্থায়ী উন্নয়নে এফএওর সাহায্য অব্যাহত রয়েছে। এই সংস্থা পরিকল্পনা প্রণয়নে, ধারণক্ষমতা উন্নয়নে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে, এইচপিএআই মোকাবিলা এবং প্রাণী ও পশুরোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে। এফএওর সহযোগিতায় বাংলাদেশ ২০০০ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এবং এ বছর ৩০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড করেছে।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা; যারা নারী ও পুরুষের জন্য স্বাভাবিক ও উৎপাদনশীল কাজের পরিবেশ, স্বাধীনতা, সমতা, নিরাপত্তা এবং মানবিক মর্যাদার সুযোগ প্রসারে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। শ্রমিকদের জন্য উন্নততর কাজের পরিবেশের মান ও নিয়মাবলি নির্ধারণ করা, তাদের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধ করাই মূলত এই সংস্থার প্রাথমিক কাজ।
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ইউনেসকোর উদ্যোগে বিশ্বদরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। কান্তজির মন্দিরের পোড়ামাটির শিল্প, তারা মসজিদ, লালবাগ দুর্গ মসজিদ, সোনামসজিদ এবং ষাটগম্বুজ মসজিদের মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন—সুন্দরবনও বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেয়েছে। লালন শাহর লোকগীতিও এখন বিশ্বসংস্কৃতির অংশ। ইউনেসকো এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বব্যাপী সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে অংশ নিয়েছে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশকে ১৯৭৪ সাল থেকেই সাহায্য করে আসছে। এই সংস্থা জরুরি অবস্থায় জীবন বাঁচাতে ও জীবিকা রক্ষায়, চরম ক্ষুধা প্রতিরোধে, খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা ও পুষ্টিহীনতা মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে থাকে।
ডব্লিউএইচও জাতীয় গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত সাহায্য করে আসছে। জাতীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং সেগুলোর জন্য নীতিমালা ও মান নিরূপণেও এই সংস্থা সহায়তা করেছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি সমালোচকদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। ডব্লিউএইচওর সহায়তায় ছয়টি মারাত্মক শিশুরোগ প্রতিরোধে প্রায় শতভাগ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। ডায়রিয়া ও কলেরা প্রতিরোধে ওরাল স্যালাইন আবিষ্কারে বাংলাদেশ পথিকৃৎ।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে এবং ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ভিশন ২০২১-এর আলোকে এ দেশের ১৫ কোটি মানুষকে বৃহত্তর স্বাধীনতায় উন্নততর জীবন যাপনে সক্ষম করতে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার ইউএনডিএএফ ২০১২-২০১৬ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
কাজী আলী রেজা: অধিকর্তা, জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র, ঢাকা।
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ তার লাল-সবুজ পতাকা জাতিসংঘে উত্তোলন করলেও বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সাহায্য-সহযোগিতার নিদর্শন আমরা স্বাধীনতার সময় থেকেই দেখতে পাই। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ ১৯৭২ সালে ডব্লিউএইচও, আইএলও, আইবিআরডি ও গ্যাটের এবং ১৯৭৩ সালে এফএওর সদস্যপদ লাভ করে।
১৬ ডিসেম্বরের বিজয়ের পরেই, ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে, মি. হ্যাগেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল বাংলাদেশ সফরে আসে এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে ত্রাণ-সহায়তার ব্যাপারে আলোচনা করে। তার পরই ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ ত্রাণ দলের প্রধান মি. পল মার্ক হেনরির বাংলাদেশ সফর। ওই বছরের মার্চে দেশের জনগণের কল্যাণে বাংলাদেশ সরকার ও ইউএন রিলিফ অপারেশন ইন ঢাকা-এর মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
দেশ গঠনের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে, চালনা বন্দর থেকে যুদ্ধের সময় ডুবিয়ে দেওয়া জাহাজগুলো অপসারণেও জাতিসংঘের সহায়তা উল্লেখযোগ্য। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ভাড়া করা বিমানে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থাও করেছিল জাতিসংঘ।
১৯৭৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের মহাসচিব কুর্ট ওয়েল্ডহাইম বাংলাদেশ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেশের অর্থনীতি পুনর্গঠনের পথ খুঁজতে আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে জাতিসংঘের সম্পর্ক আরও জোরদার করেন।
যখন যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের ছয় কোটি লোক দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করছিল, ১৯৭৪ সালের জুনে ৩০ মিলিয়ন ডলারের আর্থিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসে ইউএনডিপি, যা ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় করা হয়। তখন থেকেই আবহাওয়া পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ, গণতন্ত্র ও উন্নয়ন, মানবাধিকার ও সুশাসন, সংসদ ও নির্বাচনের মতো বিষয়সমূহে অংশীদারির নবসূচনা হয়। ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮-এর নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নে জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতির নিদর্শন বহন করে।
শিক্ষা ও পুনর্বাসন খাতে আর্থিক সহায়তা দিতে ইউনিসেফই প্রথম ১৯৭৩ সালের ২৮ জুন বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তার চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই সংস্থা সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবনে, জাতীয় শিশুনীতির প্রয়োগে, সিআরসি ও সিডও, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষানীতিতে সরকারের উদ্যোগসমূহে সহায়তা করে যাচ্ছে। এ ছাড়া পুষ্টি, পানি ও পয়োনিষ্কাশন এই সংস্থাটির মূল কার্যক্রম।
বাংলাদেশ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যথেষ্ট অগ্রগতি সাধন করেছে। লাখ লাখ মা প্রসবজনিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছেন। পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে বাংলাদেশ সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে। নারীর ক্ষমতায়নেও ইউএনএফপিএ সরকারকে সাহায্য করছে। এসটিআই ও এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধেও এই সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।
এ দেশের কৃষকেরা পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, সুযোগসন্ধানী ও ঐতিহ্যবাদী; পাশাপাশি নতুন নতুন প্রথার প্রবর্তক। তাঁদের গবাদিপশু, মৎস্য ও বনাঞ্চল দেখাশোনা করতে, স্বনির্ভরতা অর্জন করতে এবং স্থায়ী উন্নয়নে এফএওর সাহায্য অব্যাহত রয়েছে। এই সংস্থা পরিকল্পনা প্রণয়নে, ধারণক্ষমতা উন্নয়নে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে, এইচপিএআই মোকাবিলা এবং প্রাণী ও পশুরোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছে। এফএওর সহযোগিতায় বাংলাদেশ ২০০০ সালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করে এবং এ বছর ৩০ মিলিয়ন টন খাদ্যশস্য উৎপাদনের রেকর্ড করেছে।
১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা; যারা নারী ও পুরুষের জন্য স্বাভাবিক ও উৎপাদনশীল কাজের পরিবেশ, স্বাধীনতা, সমতা, নিরাপত্তা এবং মানবিক মর্যাদার সুযোগ প্রসারে বাংলাদেশকে সহায়তা করে আসছে। শ্রমিকদের জন্য উন্নততর কাজের পরিবেশের মান ও নিয়মাবলি নির্ধারণ করা, তাদের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধ করাই মূলত এই সংস্থার প্রাথমিক কাজ।
বাংলাদেশের সমৃদ্ধ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ইউনেসকোর উদ্যোগে বিশ্বদরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। কান্তজির মন্দিরের পোড়ামাটির শিল্প, তারা মসজিদ, লালবাগ দুর্গ মসজিদ, সোনামসজিদ এবং ষাটগম্বুজ মসজিদের মুসলিম স্থাপত্য নিদর্শন বিশ্ব ঐতিহ্যে স্থান পেয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন—সুন্দরবনও বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পেয়েছে। লালন শাহর লোকগীতিও এখন বিশ্বসংস্কৃতির অংশ। ইউনেসকো এ বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিশ্বব্যাপী সার্ধশততম জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনে অংশ নিয়েছে।
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশকে ১৯৭৪ সাল থেকেই সাহায্য করে আসছে। এই সংস্থা জরুরি অবস্থায় জীবন বাঁচাতে ও জীবিকা রক্ষায়, চরম ক্ষুধা প্রতিরোধে, খাদ্যনিরাপত্তাহীনতা ও পুষ্টিহীনতা মোকাবিলা করতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে থাকে।
ডব্লিউএইচও জাতীয় গণস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নিয়মিত সাহায্য করে আসছে। জাতীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন এবং সেগুলোর জন্য নীতিমালা ও মান নিরূপণেও এই সংস্থা সহায়তা করেছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি সমালোচকদের প্রত্যাশা ছাড়িয়ে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। ডব্লিউএইচওর সহায়তায় ছয়টি মারাত্মক শিশুরোগ প্রতিরোধে প্রায় শতভাগ শিশুকে টিকাদান কর্মসূচির আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। ডায়রিয়া ও কলেরা প্রতিরোধে ওরাল স্যালাইন আবিষ্কারে বাংলাদেশ পথিকৃৎ।
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যসমূহ অর্জনে এবং ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও ভিশন ২০২১-এর আলোকে এ দেশের ১৫ কোটি মানুষকে বৃহত্তর স্বাধীনতায় উন্নততর জীবন যাপনে সক্ষম করতে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকার ইউএনডিএএফ ২০১২-২০১৬ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
কাজী আলী রেজা: অধিকর্তা, জাতিসংঘ তথ্যকেন্দ্র, ঢাকা।
No comments