দুর্নীতি রোধে পদক্ষেপ-যথাযথ শিক্ষা হবে তো?

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে শিক্ষা ভবন। এর এক পাশে সর্বোচ্চ আদালত, একটু দূরেই সরকারের সচিবালয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বেশিরভাগ কর্মকর্তা বসেন সচিবালয়ে। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট অনেক কর্মকর্তা বসেন শিক্ষা ভবনে। এ ভবনটি দুর্নীতির আখড়া, এমন অভিযোগ অনেক পুরনো।
অথচ বাস্তবে এর বিপরীত চিত্রই প্রত্যাশা ছিল। সারাদেশ থেকে শিক্ষকরা নানা প্রয়োজনে এখানে আসেন। তাদের যাতে ঝামেলা ও হয়রানি পোহাতে না হয়, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছেন অনেক কর্মকর্তা ও কর্মী। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এমন একটি নির্দেশ জারি করেছে, যা থেকে স্পষ্ট যে শিক্ষা ভবনে যারা কাজ করেন তারা অনেকেই ন্যায়নীতির তোয়াক্কা করেন না। তারা শিক্ষকদের কল্যাণে নিয়োজিত নেই, বরং ভোগান্তি-হয়রানি বাড়াতে সদাব্যস্ত। আর এ কারণেই শিক্ষামন্ত্রী এ ভবন থেকে জঞ্জাল সাফ করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ লক্ষ্য অর্জন সহজ নয়। তারপরও প্রত্যাশা থাকবে যাতে তিনি সফল হন। এ ভবনে এখন থেকে কোনো কর্মচারী একই শাখায় দেড় বছরের বেশি চাকরি করতে পারবেন না_ এ নির্দেশ জারির পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ নির্দেশ যাতে কঠোরভাবে পালন করা হয়, সেটা নিশ্চিত করা চাই। কথায় বলে, বুদ্ধি থাকলে শত উপায়ে দুর্নীতি করা যায়। অসাধুতার আশ্রয় নিতে চাইলে দেড় বছরও কম সময় নয়। আবার এটাও হতে পারে যে, দুর্নীতি করায় যেহেতু বাধা রয়েছে তাই কোনো কাজই আন্তরিকতার সঙ্গে না করা। এর ফলে স্কুল-কলেজের অনেক ক্ষতির শঙ্কা থাকে। মন্ত্রণালয় এ সমস্যা বিবেচনায় রেখে নজরদারি বাড়াবে, এটা প্রত্যাশিত। স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের সচেতনতাও থাকা চাই। এক হাতে কখনও তালি বাজে না। অনিয়ম থাকলে তা প্রতিকার করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কিছু লোক টু পাইস কামিয়ে নিতে চায়। শিক্ষকরা এ বিষয়ে সচেতন থাকলে দুর্নীতি দমনে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ থেকে আরও বেশি সফল মিলবে। আমরা চাইব যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শুভ উদ্যোগ সবার জন্য শিক্ষণীয় হবে।
 

No comments

Powered by Blogger.